বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -১৩
আজকের সংকল্প
ভাস্করব্রত পতি
থাকবো না আর ঘরের কোনে দেখবো সারা ভারতটাকে,
কেমন করে দেশের নেতা দেশবাসীকে বসায় ফাঁকে।
গ্রাম হতে গ্রাম গ্রামান্তরে
মারছে তাঁরা কেমন করে,
কেমন করে পড়ছে মানুষ নেতার তৈরি দুর্বিপাকে।
হাড় মাংস মজ্জা চুষে ঘষছে ঝামা দেশের নাকে।।
কেমন করে বীর নেতারা নিজের কোলে ঝোলটা টানে,
জনগনের অর্থ মেরে আখের গোছায় নিয়ম মেনে।
আঁকড়ে ধরে দেশের টুটি
সততাকে দিয়েই ছুটি,
কেমন করে কেলেঙ্কারি সব মুছে যায় সংগোপনে।
দেশপ্রেমিক নেতা সেজে সেবায় মজে জনগনে।।
কেমন করে মিথ্যা ভরা প্রতিশ্রুতির ফুলকি ওড়ে,
'হ্যান করেগা ত্যান করেগা, বাঘ মারেগা' সবার তরে।
দিবস রাতি পার হয়ে যায়
মানুষ কেবল মিথ্যা আশায়,
পাঁচটি বছর বেবাক থেকে শেষে লবডঙ্কা ওড়ে।
নেতা আবার ভাষণ ছোটায় সভামঞ্চে মাইক ধরে।।
কোন বিমানের টিকিট কেটে ভারত ছেড়ে পালায় 'জাতি',
কেমন করে বানিয়ে বোকা আনন্দেতে উঠছে মাতি।
লক্ষ কোটি লোনটি করে
ব্যাঙ্ক গুলোকে দেনায় ভরে,
কেমন করে চুপিসাড়ে দেশ ছেড়ে যায় রাতারাতি।
কেমন করে কোষাগারে উঠছে জ্বলে লম্ফ বাতি।।
রইবো নাকো চোখ বুজে আর, দেখবো এসব ভারত ঘুরে,
হিল্লি দিল্লি পুনে মুম্বাই, দেখবো বাংলা বিহার জুড়ে।
সকল নিয়ম নীতি টুটে
সরকারি ধন দেদার লুটে,
তাপ্পি মুখে, ঠুলি চোখে, বেবাক মানুষ দেখেই মরে।
এই ভারতের কোনে কোনে নেতার দাপট কেবলই বাড়ে।।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
সংকল্প
কাজী নজরুল ইসলাম
থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে,
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে।
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তাঁরা কেমন করে,
কিসের নেশায় কেমন করে মরছে যে বীর লাখে লাখে,
কিসের আশায় করছে তারা বরণ মরণ যন্ত্রণারে।।
কেমন করে বীর ডুবুরী সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে,
কেমন করে দুঃসাহসী চলছে উড়ে স্বর্গ পানে।
জাপটে ধরে ঢেউয়ের ঝুঁটি
যুদ্ধ জাহাজ চলছে ছুটি,
কেমন করে আনছে মানিক বোঝাই করে সিন্ধু যানে,
কেমন জোরে টানলে সাগর উথলে ওঠে জোয়ার বানে।।
কেমন করে মথলে পাথার লক্ষী ওঠেন পাতাল ফুঁড়ে,
কিসের অভিযানে মানুষ চলছে হিমালয়ের চুড়ে।
তুহিন মেরু পার হয়ে যায়
সন্ধানীরা কিসের আশায়;
হাউই চড়ে চায় যেতে কে চন্দ্রলোকের অচিন পুরে।
শুনবো আমি, ইঙ্গিত কোন 'মঙ্গল' হতে আসছে উড়ে।।
কোন বেদনার টিকিট কেটে চন্ডু খোর এ চীনের জাতি
এমন করে উদয় বেলায় মরণ খেলায় ওঠল মাতি।
আয়ার্ল্যান্ড আজ কেমন করে
স্বাধীন হতে চলছে ওরে,
তুরষ্ক ভাই কেমন করে কাটল শিকল রাতারাতি!
কেমন করে মাঝ গগনে নিভল গ্রীসের সূর্য বাতি।।
রইব না কো বদ্ধ খাঁচায়, দেখব এ সব ভুবন ঘুরে,
আকাশ বাতাস চন্দ্র তারায় সাগর জলে পাহাড় চূড়ে।
আমার সীমার বাঁধন টুটে
দশ দিকেতে পড়ব লুটে,
পাতাল ফেঁড়ে নামব নীচে, উঠব আবার আকাশ ফুঁড়ে।
বিশ্ব জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।।
2 Comments
বেশ লিখছেন। ভালো হচ্ছে লেখা।
ReplyDeleteধন্যবাদ
ReplyDelete