জ্বলদর্চি

আমেরিকার আদিম মানুষের খোঁজে-৫/ মলয় সরকার

আমেরিকার আদিম মানুষের খোঁজে 

মলয় সরকার

পর্ব-৫ (পঞ্চম পর্ব)


এখান  থেকে আমরা গেলাম San Miguel Chapel এ।এই চার্চটিও একেবারে মাটির তৈরী একটু গ্রাম্য ভাবেই। ঢংও কোনো আলাদা বিশেষত্বের দাবী করে না।একটু উঁচু আর মাথার উপরে একটি ক্রশ আছে এই যা।উপরে একটি ঘন্টাও আছে।

কথা হচ্ছিল, এখানকারই এক স্থানীয় অধিবাসীর সঙ্গে।তিনি নিজেই এগিয়ে এলেন এই চার্চের ব্যাপারে বোঝাতে। আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম, এই এগিয়ে আসার মানসিকতায়। বিদেশী পর্যটকের কাছে নিজেদের কথা বলার মধ্যে যে অহংকার প্রচ্ছন্ন রয়েছে, তার মধ্যে থেকে ফুটে বেরিয়ে এল, ওনার নিজেদের সম্পদ নিয়ে গর্ব, স্বাজাত্যপ্রীতি ইত্যাদি গুণ, যা অবশ্যই প্রশংশনীয়।

উনি বলছিলেন, চার্চটি যদিও দেখতে সাধারণই, তবে এই ক্যাথলিক চার্চটির অন্য বিশেষত্ব অবশ্যই আছে, যেটি জেনে এনং দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। তা হল, এটি সারা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীনত্বের দাবীদার।কাজেই এটি একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বের দাবীদার তো নিশ্চয়ই।যদিও এটির উত্থানপতনের মধ্যে নানা পরিবর্তন হয়েছে, তবে মূল দেওয়ালগুলি একই আছে বলে বলা হয়।এর মধ্যে একবার একে ধ্বংস করা হয় ১৭১০ সালে পুয়েব্লো বিদ্রোহের সময়ে।

এই চার্চটি আসলে পূজার্চনা বা প্রার্থনার জন্য তৈরী হয় নি।এখানে নানা ধরণের মানুষের জমায়েতের জন্য এটির সৃষ্টি।সেটি সম্ভবতঃ ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ। পরে বিগত প্রায় চারশত বছরের উপর এটি বিভিন্ন রাজত্বকালে চার্চ হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
এটিও একটু সরু লম্বাটে ধরণের। দুপাশের দেওয়ালে তেমন কারুকাজ কিছুই নেই।তার বদলে বেশ কিছু ছবি টাঙানো রয়েছে নানা ধরণের।ভিতরে লোকজনও বিশেষ নেই আমরা ছাড়া।উপরে কাঠের কড়িবরগা। শুধু মাটির উপরে রয়েছে প্রার্থনা করার বেঞ্চের সারি। আর দূরে সামনের দেওয়ালে খ্রীষ্টীয় ধর্মীয় ছবি বা কিছু ছোট ছোট মূর্তি। কার বা কিসের তা বোঝার উপায় নেই।তবে সামনের তরোয়াল ধরা এবং মাথায় শিরস্ত্রাণ পরা মূর্তিটি নাকি Archangel Michael এর।এখানে যে সমস্ত ছবি বা মূর্তি আছে, সেগুলি বিভিন্ন সময়ে কেউ না কেউ দান করেছেন।

এখানে দর্শনীয় হিসাবে রাখা রয়েছে একটি বিশাল ঘণ্টা।এটি১৮৭২ সালের আগে পর্যন্ত চার্চের মাথার উপরে ঝুলত।পরে এই ৩৫০ কিগ্রা ওজনের তামার ঘণ্টাটি নীচে নামানো হয়। এটি সম্ভবতঃ ১৮৫৬ সালে তৈরী হয়।দেখলাম সেই বিশাল ঐতিহাসিক ঘণ্টা। 
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇

আমরা এর পরেও দেখেছি মেক্সিকোতে, রাজবাড়ির মাথার উপরে একই রকম ঘণ্টা, যেটি বিখ্যাত নেতা মিগুয়েল হিদাল্গো (MIguel Hidalgo) বাজিয়েছিলেন।
অর্থাৎ স্পেনীয়দের , গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘণ্টা ঝোলানোর একটা রীতি ছিল বলেই মনে হয়। মেক্সিকোতে অন্যত্রও দেখেছি এরকম ঘণ্টা। 
আর আজও মেক্সিকো শহরে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সারা মেক্সিকো শহর জুড়ে ঘণ্টা বাজিয়ে স্মরণ করা হয় স্প্যানিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার ১৮১০ সালের সেই বিখ্যাত  ডাক।এর নাম হল “El Grito”। 

ঘণ্টাটি প্রার্থনা বেঞ্চগুলির সামনেই একটি শক্ত স্ট্যাণ্ডের সঙ্গে ঝোলানো রয়েছে। কাছেই রয়েছে একটি হাতুড়ি। অর্থাৎ এটি রোজ বাজানো হয় বুঝলাম। পাশের ঘরে রয়েছে নানা ক্রয়যোগ্য জিনিসপত্র।
এই চার্চটিও একটি স্কুলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি।

আজকের মত সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আমরা ফিরলাম হোটেলের দিকে। ফেরার পথে দেখি সকালে দেখা সেই প্লাজা সেজেছে অদ্ভুত আলোকমালায়।সমস্ত গাছে লাগানো রয়েছে লাল, নীল সাদা নানা বৈদ্যুতিক আলোর মালা। ফলে তাদের সম্মিলিত সৌন্দর্য্যে প্লাজায় এক স্বর্গীয় মোহময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, যেটা দিনের বেলায় বুঝতেই পারি নি।সেখানে গেলাম, কিছুক্ষণ কাটিয়ে এই মোহময় দৃশ্যের সাক্ষী হতে। বাইরে তখন বেশ শীত নামছে,নিঃশব্দে ধীর পায়ে, রাত্রিকে আরও কোমলতার চাদরে মুড়ে দিতে। যদিও সারাদিনই শীত রয়েছে, এবং আমরাও গায়ে চাপিয়ে রয়েছি নানা ভারী পোষাক।

যতই দেখছি এবং ভাবছি, ততই যেন আচ্ছন্নের মত লাগছে, যে এই সমস্ত মানুষেরা কবে থেকে এখানে আছে, কোথা থেকে এসেছিল, সেই চিন্তায় মনটা চিন্তাকুল হয়ে থাকছে। 

পরে দেখলাম,এই সমস্ত মানুষেরা যে কোথা থেকে এখানে এসেছিলেন, এ নিয়ে মতভেদ আছে।আর এদের যেহেতু কোন লিখিত ভাষা নেই ফলে এদের কাছ থেকে বিশেষ কিছু অতীতের কথা জানা যায় না।যা পাওয়া যায়, তা মৌখিক, কিছু গল্পের বা ‘মিথ’ এর আকারে। তবে যেটি অনুমান করা হয়, তা হল,এই যে, ইউরেশিয়া থেকে একটি দল সাইবেরিয়া হয়ে আলাস্কার মধ্যে দিয়ে এখানে পৌঁছায় এবং পরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।আগেই বলেছি হোয়াইট স্যাণ্ডস এ পাওয়া ফসিল থেকে মনে হয় ২৩০০০ বছর আগেই এখানে মানুষের পায়ের ছাপ পড়েছিল।


পরদিন সকালে বেরিয়ে আগে গেলাম Palace of the Governorsএ।এটি প্লাজার উত্তর দিকে। এখানেই রয়েছে New Mexico History Museum ।

এটি ১৬১০ সালে তৈরী এবং এটিই সবচেয়ে প্রাচীন এই ধরণের বাড়ি।এই প্রাসাদ (যদিও প্রাসাদ বললে যে ধারণা তৈরী হয় মনে, তার কিছুমাত্র নেই) সেই ইউরোপীয়ানদের সময় থেকে স্প্যানিশ যুগ ও মেক্সিকান যুগ পেরিয়ে আজ আমেরিকান যুগের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পুয়েব্লো বিদ্রোহেরও সাক্ষী এই প্রাসাদ। এটি একটি টানা লম্বা বারান্দাওলা একতলা মাটির তৈরী বাড়ি, যার কড়ি বরগার অংশগুলো রাস্তার দিকে বেরিয়ে রয়েছে।ভিতরে যদিও আধুনিক ব্যবস্থা প্রায় সবই আছে, বাইরেটা কিন্তু ঐ একই।

১৬১০ সালে এটি তৈরী করেন Pedro de Peralta, যিনি ছিলেন নিউ মেক্সিকোর প্রথম স্প্যানিশ গভর্ণর।
আমরা গতকাল সকালে প্লাজার পাশে যে টানা বারান্দায় সমস্ত আদিবাসী ফুটপাথ বিক্রেতাকে দেখেছিলাম, সেই টানা বারান্দাটিই আসলে এই প্যালেসের বারান্দা।এই প্যালেস থেকেই একসময় রাজত্ব চলত সেকালের নিউ মেক্সিকোর (Santa Fe de Nuevo México) Texas, Arizona, Utah, Colorado, Nevada, New Mexicoর উপর।যখন প্রথম নিউ মেক্সিকো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়, এখান থেকেই তখন সমস্ত শাসন কার্য চলত।

আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এটি যুক্ত। তা হল ১৮৮০ সালে লিও ওয়ালেস (Lew Wallace) তাঁর পৃথিবী বিখ্যাত বই Ben-Hur:A Tale of the Christ এখানেই লেখেন।

পরবর্তী কালে ২০০৯ সালে এটি New Mexico History Museum নামে জাতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়। ১৯৬০ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এই প্রাসাদের সম্মানে একটি পোস্টাল স্ট্যাম্পও বের করে।

এর ভিতরে রয়েছে নানা যুগের নানা ঘটনার ছবি ও জিনিসপত্র। একটি ভাঙ্গা নৌকার মত ঘোড়ার গাড়িও দেখলাম। ভিতরে ঢোকার একটু পরেই আমাদের দিকে এগিয়ে এলেন এক ভদ্রমহিলা। তিনি যেচেই নিজে সমস্ত ঘটনা বোঝাতে শুরু করলেন। আমাদের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন এগিয়ে এলেন বুঝতে। কিন্তু উনি আমাদের এমন ভাবে বোঝাতে লাগলেন, মনে হল আমরা একেবারেই শিশু। ফলে এত সময় লাগতে লাগল একটা সাধারণ জিনিস বোঝাতে, যে আমাদের ধৈর্যচ্যুতি হতে লাগল। বুঝলাম, উনি যেভাবে বোঝাচ্ছেন, তাতে আমাদের সব বুঝতে সারাদিনেও শেষ হবে না। আর আমরা তো এত বুঝে কোন পরীক্ষা দেব না। তাই এখান থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার চেষ্টা করতে লাগলাম।একসময় সরে এলামও, যদিও খুবই খারাপ লাগছিল ব্যাপারটায়, এবং উনি বোঝাচ্ছিলেন যত্ন করেই।আমার মনে হল, সেই ছেলে বেলার কথা। কোন মাষ্টার মশাই যখন খুব মন দিয়ে ভাল করে পড়াচ্ছেন, দুষ্টু ছাত্রের যদি পড়াতে মন না বসে, তখন সে যা করে, আমরাও তাই করলাম।

এই মিউজিয়ামের ভিতর রয়েছে স্পেনীয়দের দখলের ইতিহাসের নানা ছবি, সেই সময়ের গভর্ণরদের বা রাজকীয় শাসনযন্ত্রে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং এ ছাড়াও সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত জিনিসপত্র।এর মধ্যে সপ্তদশ শতাব্দীর একটি হাতীর দাঁতের চিরুণি, উনবিংশ শতাব্দীর একটি হাতকড়া, স্পেনীয় মুদ্রা ইত্যাদিও রয়েছে।

আমি যেখানেই যাই , বিশেষতঃ নতুন দেশে, মিউজিয়ামে অবশ্যই যাই, কারণ একটা দেশকে অন্ততঃ একটুও বুঝতে গেলে, সেই দেশের মিউজিয়াম দেখা উচিত বলে আমার মনে হয়।

যাই হোক, এখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে যখন বেরোলাম, তখন বেলা হয়েছে। সূর্য তখন একটু তেরছা ভাবে দৃষ্টিপাত করছে পৃথিবীর দিকে।আমরা এখান থেকে গেলাম Cathedral Basilica of St. Francis of Assisi তে।এটি Santa Feর একটু শহরতলিতে।এই রোমান ক্যাথলিক চার্চটি অবশ্য একটু অন্য ধরণের। এটি মোটেই মাটির তৈরী নয় অন্যান্য সমস্ত সৌধের মত। এটি রীতিমত ইঁটের তৈরী। মাঝে প্রধান দরজাএবং তার উপরে একটি ত্রিকোণাকার দুদিক ঢালু ছাদ। তার দুপাশে দুটি জোড়া  উঁচু টাওয়ার ধরণের রয়েছে।সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে পাশাপাশি তিনটি ঘর, যার মাঝেরটি উচ্চতায় অল্প নীচু এবং পাশের দুটি অল্প উঁচু। অবশ্য তিনটেরই মাথা ত্রিভুজাকার ।এটি লাল ইঁটের তৈরী।এর মাঝের অংশের উপরে একটি গোলাকার রঙীন কাচের জানালা আছে, যেটির অর্থ, মনে করা হয় Holy Spirit। এখানকার রঙীন কাচগুলি আনা হয়েছিল ফ্রান্স থেকে।

এটি তৈরী হয়েছিল ১৮৬৯ থেকে ১৮৮৬ সালের মধ্যে। সম্প্রতি ২০০৫ সালে পোপ বেনেডিক্ট (ষোড়শ) এটিকে ব্যাসিলিকাতে উন্নীত করেছেন।এর দরজাগুলি ব্রোঞ্জের, যেগুলি ১৯৮৬ সালে পরিবর্তিত হয়েছিল।

ভিতরে ঢুকে দেখলাম, চার্চের নিয়ম অনুযায়ী দুদিকে যেমন প্রার্থনার বেঞ্চ থাকে, রয়েছে । কিন্তু ছাদ ডোমের মত এবং দুপাশে থাম গুলো আমাদের মত দুর্গাদালানের গোলাকার খিলান সম্বলিত।উপরে কাচের জানালা হওয়ায় ভিতরে বেশ আলো।আর একেবারে সামনের দেওয়ালে তিন সারিতে অনেক সাধুসন্তদের মূর্তি।উত্তরে রিয়েছে ঈস্টার ক্যান্ডল স্ট্যাণ্ড।একদম উপরে রয়েছে আলোকোজ্জ্বল একটি ক্রশ।মাঝে রয়েছে সেন্ট ফ্রান্সিসের একটি মূর্তি, যেটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরী হয়েছিল।এই সেন্ট ফ্রান্সিস সান্টা ফের একজন ধর্মপ্রাণ সন্যাসী।

আসলে এখানে সর্ব প্রথম যে চার্চটি হয় সেটি হয়েছিল ১৬১০ সালে। সেটির জায়গায় ১৬৩০ সালে একটু বড় চার্চ তৈরী হয়, যেটি আবার ১৬৮০ সালা পুয়েব্লা বিদ্রোহের আগুনে ধ্বংস হয়ে যায়।পরে ১৭১৪সালে আবার স্প্যানিশরা এটি তৈরী করে।পাশেই পুরানো চ্যাপেলে একটি ভার্জিন মেরীর মূর্তি রয়েছে, যেটি না কি, স্পেন থেকে আনা এবং আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীন মূর্তি।
সব মিলিয়ে এক শান্ত সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে এর  ভিতরে। লোকজনও বিশেষ নেই।আসলে এই সমস্ত জায়গায় জনবসতি এমনিতেই খুব কম, তাছাড়া আমাদের মত দর্শনার্থী পর্যটক কিংবা স্থানীয় মানুষ সাধারণ দিনে কমই আসেন। তাই বেশি মানুষ চোখে পড়ে না। সবাই কাজে ব্যস্ত। তবে উৎসবের দিনে যথেষ্টই ভিড় হয়।


এ ছাড়া এখানে রয়েছে একটি দেখার মত আর্ট মিউজিয়াম ,Georgia O’Keeffe Museum যেটি ও’ কেফের ভক্তরা পরে বানিয়েছেন। এখানে তাঁর সৃষ্টি শিল্প সম্ভার, ছাড়াও রয়েছে একটি লাইব্রেরি।আমরা এখানে একটু অল্প সময়ের জন্য ঝাঁকিদর্শন করে এলাম।শিল্পীর শিল্পকলা সত্যিই অপূর্ব। তবে সময় একটু কম। আজই আমরা চলে যাব অন্য জায়গায়।
এখানেও রাস্তাঘাটে লোকজন বেশ ফাঁকা ফাঁকা,অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ কাউকে দেখাই যাচ্ছে না।
সহৃদয় পাঠকের কাছে অনুরোধ, সঙ্গে থাকুন, আরও নতুন নতুন দৃশ্যে যাওয়ার জন্য–

ক্রমশঃ–

🍁
বাড়িতে বসেই রেজি.ডাক মাধ্যমে জ্বলদর্চির বিশেষ সংখ্যাগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। যোগাযোগ  হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৭৩২৫৩৪৪৮৪

Post a Comment

0 Comments