জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /নবকুমার মাইতি

গুচ্ছ কবিতা 
নবকুমার মাইতি
      
  মৃত্যু ও অনন্ত 

 অনন্তের বাগানে ফুল ফোটাতে
 কখন যেন বেলা গড়িয়ে যায়
 রক্তাক্ত হয় আমার হৃদয় 
ব্রহ্মসাধন অক্ষর শৈলী 
তবু দিনান্তে দেখেছি আমি 
মানুষের জয়, নিবিড় প্রত্যয়

অস্তিত্বের চারপাশ ঘিরে ঘনান্ধকার
 অন্ধকারের অনুজ্জ্বল আলোয়
 নির্মাণ করেছি অমূর্ত্য প্রাসাদ
 দেখেছি নদী, নারী হয়তোবা
 কচি শিশু কিংবা পর্বতের চূড়া 
 হতাশায় শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে
 গলা, আকন্ঠ পিপাসা নিয়ে 
বসে আছি শূন্য করতলে-
 দেখবো বলে নিরস্তিত্তের মাঝে
 অস্তিত্বের সঙ্গম, উজ্জ্বল পরমায়ু
 পাশাপাশি জেগে থাকে
 মৃত্যু ও অনন্ত!

       
 আবহমান

আমরা সবাই নতুনের প্রত্যাশী
 বাতিলের খাতায় ফেলতে ফেলতে
 এককালে সবই পুরনো হয়ে যায়
 বাবা-মা- স্ত্রী- ভাই- বন্ধু......... 

সর্বত্রই নতুনের বিজ্ঞাপন 
দ্রুততর গতিতে এগিয়ে চলেছে
 পৃথিবী, আদিম যুগ, প্রস্তর যুগ
 আধুনিক,  প্রাক্আধুনিক যুগ
 কালের আবর্তে আপাদমস্তক
 নিজের দেহটাই বাতিল মনে হয়

 সবাই যখন নতুনের দাবি নিয়ে
 পথ চলতে চাইছে, ঠিক তখনই
 বিশ্বের চিরন্তন মানবতার 
পথ ধরে আবহমান কাল
হেঁটে চলেছেন বিরামহীন 
বুদ্ধ, যীশু, কনফুসিয়াস, আরো অনেকে.........

জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇

পথ হাঁটা

ঘর থেকে বেরোলেই পথের
 ডাক আসে 
আজীবন আমরা পথেই দাঁড়াই
 ঘরে অথবা বাইরে

 সংকল্পের অভিষ্ট যাই হোক না কেন 
কেউ ভালোবেসে পথে দাঁড়ায়
 কেউবা খুনকরে পথে নামে
 জীবনের অভ্যন্তরে অথবা বাইরে 
 মানবের মননে অথবা খেয়ালে
 চরাচরে সকলেই আমরা পথ চলছি
 অদৃশ্যশক্তি পথ হাটার ডাক দিয়ে যায়!


নন্দনকানন 

আকাশ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে জ্যোৎস্নায়
 একটি ফুলের উন্মোচন দেখতে দেখতে 
একটি ফুল ম ম করে সৌরভে 
জ্যোৎস্নার উদ্ভাস দেখতে দেখতে  

একটি সুন্দরী মেয়ে ব্যান্ডেল স্টেশনে 
আমার সিটের পাশে বসে পড়ে
 আলুলায়িত কেশ, খোঁপায় কুসুম তেলের গন্ধ
 আমার কল্পনা ক্রমশ ঘনীভূত হয়
 সুদূর পিয়াসী মন প্রেমের আসমান 
ছুঁয়ে যায়, ভ্রমণ পথের মানষ বারানসি

বর্ধমান স্টেশন রোডে নেমে
 হোটেল পল্লীসমাজের কাছ দিয়ে
 কয়েক পা এগিয়ে গোলাপ বাগান
 ভালোবাসা ও সৌন্দর্যে মোড়া নন্দনকানন!


ধর্ম ও ধর্ষকাম

নিরন্তর ধ্বংসের লেলিহান শিখায়
 জ্বলতে জ্বলতে বিচ্ছিন্ন প্রত্যয় মন্ত্র উপল ভূমিতে 
সতীর্থ রোদের মতো আলোকিত করে 
রেখেছে আমাকে। বিস্ময় বিমূঢ়
 আমি ক্রমাগত চমকিত হই মানুষের 
দুর্নিবার লোভ ও লালসার উন্মাদনা দেখে 
কৈশোরের শোনিতস্রোতে কাঁপন ধারায় 
কিছু প্রাচুর্য আর কিছু নিষ্প্রভ বিলাপ 
অবাঞ্ছিত ক্রোমোজোম, যৌগ ও জনন 
বিপ্রতীপ আলোয় কাপে পাপের প্রাসাদ 
পাশবিক শক্তির গায়ে উন্মত্ত  উল্লাস
 নিস্তার নেই দামিনী নির্ভয়া তথা অনূঢ়া তনয়া
 স্নায়ুর ভেতরে সৃজিত হয় নিষিদ্ধ বজ্রকিট 
বিঘ্নিত হয় সত্য শিব ও সুন্দরের সাধনা 
সমাজের নিগুঢ় সত্য, অবক্ষয় রিরংশা 
 তপশ্চর্যার পথ ধরে হেঁটে যায়  প্রেমিক পুরুষ 
নশ্বরতা চেটে নেয় পূণ্যতোয়া মেদিনী
 ক্ষণিকের অন্ধকার, অন্ধ উন্মাদনায়
নাসকরে অবিনাশী সৃষ্টির উজ্জ্বল আলো 
ফসিল সম পড়ে থাকে ধর্ম ও ধর্ষকাম!
🍁
বাড়িতে বসেই রেজি.ডাক মাধ্যমে জ্বলদর্চির বিশেষ সংখ্যাগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। যোগাযোগ  হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৭৩২৫৩৪৪৮৪


Post a Comment

0 Comments