জ্বলদর্চি

আমি আমার মতোপর্ব- ২২সুকন্যা সাহা

আমি  আমার মতো
পর্ব- ২২
সুকন্যা  সাহা

কি লিখি কেন লিখি

যারা  কষ্ট করে  ধৈর্য্য  ধরে  পড়ছেন আমি  আমার মতো ধারাবাহিকের  প্রতিটি পর্ব ; তাদের   কাছে জবাবদিহি  করার  একটা দায়বদ্ধতা থেকে  যায় আমার ... কি  লিখি কেন লিখি  এ প্রসঙ্গে ... অনেকেই যারা  এই লেখাটা পড়ছেন  তাদের মনে  সঙ্গত প্রশ্ন  জাগতেই পারে  আমি বারে বারে   এই লেখায় আমার ছোটোবেলার  কথা  আনতে চাই কেন ? কেনই বা  তুলনা টানি   সেই  সময়ের  সঙ্গে এই  সময়ের ? আসলে ভুলে যাওয়া কিছু ছোটোবেলার স্মৃতি , ফেলে আসা  কিছু  সময়ের দলিলধরে  রাখতে চাই এই লেখার পরতে পরতে... কিছু  ভুলে যাওয়া সম্পর্ক , কিছু ভুলে  যাওয়া গন্ধ অনুভব বাঁচিয়ে  রাখতে চাই জন্ম জন্মান্তরের জন্য  তাই এই ছোট্ট প্রয়াস। আজ থেকে বিশ বছর  পরেও  যদি এই লেখা কেউ পড়ে তবে তার চোখে   যেন জীবন্ত  হয়ে ওঠে  আমার হারানো ছোটোবেলার  সেই গন্ধ অনুভব ।
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇
পাঠকের কাছে ছাড়াও  আরেক ধরণের  দায়বদ্ধতাও আছে আমার ... সেটা  নিজের কাছে । মানুষ স্বভাবতঃই প্রকাশ করতে চায় ... নিজেকে ... নিজের ভাবনাকে ... এখন  এই প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কেউ বেছে নেয় রং তুলি কেউ বাদ্যযন্ত্র কেউ বা গান ... আমার মাধ্যম লেখা ... লেখা আমার চিন্তা চেতনার প্রকাশ ... সোচ্চার বিদ্রোহ ... নীরব তিরস্কার । মানুষ  যেমন নিজেকে প্রকাশ না করে   থাকতে পারে না তেমনি না লিখে থাকতে পারি না আমি। অন্তরের অন্তঃস্থল  থেকে কিছু কথা উৎসারিত   হয়  স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে  সেটাই লেখার  মধ্যে ধরে রাখার চেষ্টা করি। সে লেখায় কতখানি জীবন বোধ    থাকে ... কতখানি দার্শনিকতা থাকে তা  বিচার   করার ভার পাঠকের ... আমার  নয়... 

      তবে আমি লিখি আপন আনন্দে , নিজস্ব স্বতঃস্ফূর্ততায় ... ফরমায়ইশি  লেখা আমার পক্ষে   সম্ভব  নয় ...পাহাড়ী ঝর্নার উদ্দাম জলস্রোতের মতো যে লেখা বেরিয়ে আসে  স্বতোঃস্বারিত   সেই লেখা আমার একান্ত আপন ... শব্দ   সংখ্যা মেপে জুকে, নির্বাচিত  বিষয়ের  গন্ডীর  মধ্যে লেখা আমার পক্ষে অসম্ভব। সেই লেখা মাঝে মাঝে  লিখলেও তাতে  খুঁজে পাই না স্বকীয়তার  তৃপ্তি ,মনের শান্তি, আত্মার আনন্দ , প্রাণের আরাম । তাতে যদি আমার প্রফেশনাল রাইটার না হওয়ায় হয় তবে আমি চিরদিন অ্যামেচারই থেকে যেতে চাই ... আসলে  আমার সব লেখাই আত্ম-অন্বেষণ ... বিম্বিত মুকুরে   নিজেকে ফিরে দেখা ... সার্চ ফর লাইফ; যা আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ অন্তরমহল  থেকে শুরু  হয়েছিল  এবং অনুভবে হয়ে অস্তিত্ব পর্যন্ত প্রবহমান।

     আসলে  এই সব বই এই সব লেখা সবই নিজেকে খুঁজে  ফেরা... আত্মোপলব্ধির চেষ্টামাত্র।  সফল হলাম কিনা   সে  কথা   বলবেন পাঠক... তার আগে আমার কাজ  নিরন্তর  আত্ম-অন্বেষন ... "আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না ... এই জানারই সঙ্গে সঙ্গে তোমায় চেনা ..."একজন প্রকৃত মানুষের যাপন কেমন হয় মেয়েমানুষের গন্ডী  থেকে  বেরিয়ে  সেই অস্তিত্বের  অন্তরমহলে আত্মানুসন্ধানই আমার জীবন পথের যাত্রা। জার্নি অফ লাইফ  অ্যান্ড  অলসো জার্নি টুওয়ার্ডস লাইফ ...আমার লেখাগুলোয়  ধরা আছে  সেই যাত্রা পথের  বিবরণ...নানা স্টেশানের  ইতিবৃত্ত...আমার জীবন পথের এই চলায় আমি পাঠককেও সঙ্গী করেছি ... সুতরাং  এই জার্নি আমার একার  নয় আমাদের জার্নি... আমার স্থির  বিশ্বাস  আমার এই যাত্রাপথ  নিরাশ করবে  না আপনাদেরও ...

🍁
বাড়িতে বসেই রেজি.ডাক মাধ্যমে জ্বলদর্চির বিশেষ সংখ্যাগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। যোগাযোগ  হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৭৩২৫৩৪৪৮৪

Post a Comment

0 Comments