বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -- ১৮
চোরে ভরা
ভাস্করব্রত পতি
আরে ছ্যা ছ্যা! হরি হরি! আর পিছু ডেকোনা,
চারিদিকে এতো চুরি, আর নিতে পারিনা।
যেতে চাই ধরা ছেড়ে চাইনাকো থাকিতে,
হেথা শুধু বাঁকা পথে চায় সব বাগাতে!
প্রতি দিন চুরি দেখে ভয়ে মরি তরাসে,
চেপে রাখা বুকখানা আতঙ্কে ভরা সে।
চুরি যায় বালি - মাটি - গরু শত গণ্ডা,
কয়লাও চুরি যায় আছে বড় পাণ্ডা।
চাকরিটা চুরি করে খেয়ে চপ ঘুগনি,
লাখ টাকা দিয়ে নাও, যদি পাও শূন্যি!
আজ আমি ভয়ে আছি -- কত মুখ খুলবো?
'প্রতিবাদ' চেপে রাখি, তবে প্রাণে বাঁচবো।
চারিদিকে কত চোখ, সিভিকের পাহারা
হুমকি ও হুঁশিয়ারি দেয় রোজ তাঁহারা।
টাকামারা জেলখাটা পাল - দাস - বোস - ঘোষ,
প্রতিদিন মিডিয়াতে করে এঁরা ফোঁসফোঁস।
আমি বাপু বুঝিনাকো এতসব মারপ্যাঁচ,
ভয় হয় কখন বা ঘাড় মোর হবে ঘ্যাঁচ।
এই ভেবে থাকি আমি এসবের আড়ালে,
ছেঁটে যদি দ্যায় মোর হাত পা বাড়ালে।
প্রাণখানা হাতে নিয়ে বেঁচে থাকা যায়না,
সাহসের ঝুড়ি খানা তল খুঁজে পায়না।
চোর ধরা
সুকুমার রায়
আরে ছি ছি! রাম রাম! ব'লো নাহে ব'লো না,
চলছে যা জুয়াচুরি, নাহি তার তুলনা!
যেই আমি দেই ঘুম টিফিনের আগেতে,
ভয়ানক ক'মে যায় খাবারের ভাগেতে!
রোজ দেখি খেয়ে গেছে, জানিনাকো কারা সে,
কালকে যা হ'য়ে গেল ডাকাতির বাড়া সে!
পাঁচখানা কাটলেট, লুচি তিন গণ্ডা,
গোটা দুই জিবে গজা, গুটি দুই মণ্ডা,
আরো কত ছিল পাতে আলুভাজা ঘুগনি
ঘুম থেকে উঠে দেখি পাতাখানা শূন্যি!
তাই আজ ক্ষেপে গেছি—কত আর পারব?
এতদিন স'য়ে স'য়ে এইবারে মারব৷
খাড়া আছি সারাদিন হুঁশিয়ার পাহারা,
দেখে নেব রোজ রোজ খেয়ে যায় কাহারা৷
রামু হও, দামু হও, ওপাড়ার ঘোষ বোস্
যেই হও, এইবারে থেমে যাবে ফোঁসফোঁস্
খাবে না জারিজুরি আঁটবে না মারপ্যাঁচ্
যারে পাব ঘাড়ে ধ'রে কেটে দেব ঘ্যাঁঘ্যাঁচ্৷
এই দেখ ঢাল নিয়ে খাড়া আছি আড়ালে,
এইবারে টের পাবে মুণ্ডুটা বাড়ালে৷
রোজ বলি 'সাবধান!' কানে তবু যায় না?
ঠেলাখানা বুঝবি তো এইবারে আয় না!
0 Comments