গুচ্ছ কবিতা
ভাস্বতী বন্দ্যোপাধ্যায় রায়চৌধুরী
ডাকনাম
মন থেকে, মন পালিয়ে গেলে
যে আমি পড়ে থাকি
তার নাম পলাতকা ,
ডাকনাম।
ব্যথা থেকে ব্যথা
যা আমায় পেয়ে বসে
যন্ত্রণার রক্তফোঁটা ভিজিয়ে দিয়ে যায়,
ব্যথাতুর।
শ্বাস থেকে অবিশ্বাস
মুক্ত থেকে বন্দী
মন থেকে দেহ, না কী দেহ পারাপার,
প্রেমহীন।
আছে কি না নেই ,
ধরা না অধরা !
ছুঁয়ে থাকি যেই, ছুঁয়ে দিয়ে যায়
সে , কবিতাই ।
দুরূহ
যে অবিচল বিশ্বাসে মেয়েটি
শক্ত করে ধরে থাকে
ভুল ছেলেটির হাত,
যে অবিচল বিশ্বাসে প্রতিটি সমাবেশে
শূন্যস্থান পূরণ করতে গ্রাম থেকে আসা
অন্ধকার মুখগুলো আবার
ফিরে যায় ধর্ষিত ভবিষ্যতে,
যে অপত্য -সুতোয় বিদ্রোহী বিবর্ণ দাম্পত্য
আবার কুড়িয়ে -গুছিয়ে ফেলে নিজেদের
যে অনিবার্যতায় সমস্ত অনিচ্ছাদের
পায়ের তলায় ফেলে দিয়ে
কোমল স্পর্শে ছুঁয়ে ফেলি নিজেকে
সেই দুরূহ আত্মশুদ্ধির নাম,
ভালোবাসা।
গুপ্তফ্রন্ট
লুকিয়ে রাখব তোকে
বলব না কাউকে তোর কথা,
পৃথিবীর কোনও কালো ধোঁয়া
আমাদেরকে যেন ছুঁতে না পারে!
কোনও মহামহিম দৃষ্টি, যা সর্বক্ষণ
নজর রাখছে আমাদের ওপর
কী খাই, কী পরি, কোন্ ধরণের সঙ্গমে লিপ্ত আমরা,
তাদের কাউকে জানতে দেব না
মিলেমিশে নতুন স্রোততরঙ্গে
পাঠিয়ে দিতে পারি পৃথিবীর ঘূর্ণন।
চুপিসাড়ে, খুবই সঠিক উচ্চারণে
কোনও এক নতুন সম্পর্কে
পৃথিবীকে কম্পোস করে নেব আমরা।
বার্তায়ন
বাতাসে পরাভবের গন্ধ,
তবু, স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল হাসি।
পৃথিবীর ভয়ার্ত মুখ থেকে
মুখবন্ধনীর নিশ্চুপতা সরিয়ে দিয়ে
প্রজন্মান্তরে অক্ষরগুলো উইলবদ্ধ করে রাখি।
ভাষার অন্দরে থাকুক ফিরে পাওয়া
আর, স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল হাসি।
0 Comments