কয়েকটি রম্য কবিতা - ১৭ / শুভশ্রী রায়
মিঠে পংক্তি
আহা! আমাদের বাংলার মিষ্টি, নেই, নেই তার কোনও তুলনা,
বন্ধুরা যে কোনও সময়, পরবে বে-পরবে খেতে যেন ভুলো না!
ধবধবে সাদা রসগোল্লা ও কমলাভোগ সুখসাঁতার কাটে রসে,
দেখা পেলে এ গ্রহের কোন সে সংযমীর রসনা থাকতে পারে বশে?
ল্যাংচা ও লেডিকেনি মেরুন রঙের অপূর্ব মিষ্টত্বের স্বাদু খণি,
দেখলেই কদরদান জিভ চিৎকার করে তোলে "খাব, খাব" ধ্বনি!
মধুময় তুলতুলে, মুখে দিলেই মিলিয়ে যায় চিরাচরিত চমচম,
অনেক চাই আমার, কখনো যদি খাওয়াও, দিও না যেন কম-কম;
আর কত রকম সন্দেশ, ছানা ও চিনির মিশেলে অপূর্ব কারিগরি!
চোখে পড়লে বাসনা জাগে প্রমাণ সাইজের বেশ কয়েকটা মুখে চালান করি,
নিখুঁতি আহা নিখুঁতি, তার জন্য সদাই কাঁদে আমার এ বেচারা প্রাণ!
তারিয়ে তারিয়ে না খেলে বাংলার সমৃদ্ধ মিঠাই শিল্পকে করা হয় অপমান।
বোঁদে কি ভালো খেতে যদি হয় ঠিকঠাক মোদকের হাতে গড়া,
দেখা মাত্র অনেকটা মুখে পুরতে ইচ্ছে করে, কি আর যাবে করা?
তারপরে বাংলার নিজস্ব অসামান্য অমৃতের কাছাকাছি সুমিষ্ট দই,
ভূভারতে পাওয়া যাবে না তেমন সুস্বাদ, নির্দ্বিধায় এমন কথা কই!
মিষ্টি, আহা প্রাণ জুড়নো একটার পর একটা লোভনীয় বাংলার মিষ্টি,
খেয়ে ফুরোয় না; বলেও শেষ হ'বে না মিঠে কথা, বাঙালির সেরা সৃষ্টি!
ছড়া লেখালিখি
ছড়া লিখে নিজে নির্মল আনন্দ পাই,
জানি না তো পাঠককে দিতে পারি কতটুকু হর্ষ,
একেকটা ছড়া যেন হয় মিঠে, টলটলে
তেমন উদ্দেশ্যে কেটেই যাক না বেশ ক'টা বর্ষ!
ছড়া রোদমাখা, কখনো বা মেঘলা
পক্ষীরাজের পিঠে উঠে সে ছুটুক মাঝেমাঝে,
তেপান্তরের মাঠ পার হয়ে যাক না!
কেন সারা দিন বেঁধে রাখি কাজে অকাজে?
নতুন দৃষ্টি
প্রতি দিন সাবেকি শুরু সেই একভাবে
নতুন দেখার দৃষ্টি রোজ কে বা পাবে?
নিয়মিত একটা তারিখের জন্ম পালন
পাওয়া না পাওয়া এবং পাপস্খালন,
তাকে বলি বেঁচে থাকা সুখ আর দুখে
খিদে, খাবার ও অর্থের শত সহস্র মুখে
নরমগরম চলে বিচিত্র জীবনের চাকা
সুখ-স্বস্তি অভাবের মানচিত্রটি আঁকা;
তারই মাঝে একটু অন্য রকম পাই গন্ধ
যদি পংক্তির সাথে মেশে কল্পনা-ছন্দ!
ধান
ফসল সে পেকে গেলে সোনালি!
পরিপক্ব নয় যখন সবুজ ঘন,
"ভাত দে, মা" - মাটির কাছে চাই;
অভুক্ত না থাকুক এক জনও।
যথেষ্ট অন্ন নেই মানুষের পাতে
অথচ মাটি চিরকাল অকৃপণ,
তার পরে কেন ফসল ও ক্ষিদে
থেকে যায় না মেলা সমীকরণ?
0 Comments