জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৪২

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৪২
সম্পাদক -মৌসুমী ঘোষ 
চিত্রগ্রাহক - অপু পাল

সম্পাদকীয়,
সত্যি বলতে কী, আমরা ছোটো বড়ো প্রত্যেকেই কম বেশি প্রকৃতি প্রেমী। একদম ছোটোরাও ফুল দেখলেই নিতে চায়। নদী বা সমুদ্রের জল পেলেও ঝাপাই জুড়ে দেয়। খোলা মাঠ পেলেই ছুটে আসে। এগুলো তো প্রকৃতি প্রেমেরই লক্ষণ। আজকের প্রচ্ছদের প্রকৃতির ছবি তুলে পাঠিয়েছে অপু দাদা। আহা মন কাড়া ছবি, তাই না? এবারের সংখ্যায় তোমাদের বন্ধু অনুভব আর সাথীও অপূর্ব দুটো প্রকৃতির ছবি এঁকে পাঠিয়েছে। জায়গায় জায়গায় প্রকৃতি তার রূপের ডালি সাজিয়ে রাখে। আমাদের দেশের কাশ্মীরে প্রকৃতি তার রূপের বাহার ঢেলে দিয়েছেন তা তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু সেই রূপের তোয়াক্কা না করে সেখানে মাঝে মাঝেই লড়াই হয়।  কেন? সে তো দেশের স্বার্থেই। যেমন হয়েছিল কার্গিলে। সেই কার্গিল দিবস স্মর্যম করেই দোলনচাঁপা আন্টি লিখেছে এবারের স্মরণীয় দিবস। কাশ্মীরের কথায় কী বেড়াতে যেয়ে ইচ্ছে হচ্ছে তাই তো? আরে যাবে তো। গ্রীষ্মের আর পুজোর ছুটি আসুক তবে তো যাবে। যেমন শৌনকশৌর্য গ্রীষ্মের ছুটিতে আঁকার ক্যাম্পে গেছিল। জয়দেব জেঠু ছড়া পাঠিয়েছে। একটি ছেলের মনের দুঃখের কথা বলে। আর শর্মিষ্ঠা আন্টি লিখেছে অবনী বটব্যালের গল্প। কি তোমরা চেনো নাকি তাঁকে। আমার তো লহুব চেনা চেনা লাগছিল। এদিকে শ্রীকান্ত আঙ্কেলের লাচুঙ কেমন লাগছে। জানিও কিন্তু সবিতা পিসির মতো পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখে। যাবার আগে বলে যাই তোমাদের বন্ধুদের বোল ১৫০ তমের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি গল্প আর আঁকা পাঠাও। --- মৌসুমী ঘোষ।
ধারাবাহিক উপন্যাস
লাচুঙের নেকড়ে
শ্রীকান্ত অধিকারী

একুশ  

হঠাৎ এমন ভাবে অপদস্থ হবে মামা ভাগ্নে কেউই আগে থেকে আঁচ পায়নি। দু’দিন 
ধরে সৌন্দর্যের সোনা ঝরা প্রকৃতির মাঝে থেকেও ভালো করে ঘুরে ফিরে দেখতে পায়নি। অথচ আগে থেকে লোক মুখে বিভিন্ন ট্যুর গাইডের মাধ্যমে লাচুঙের কি সুখ্যাতিই না শুনে এসেছে। তাই এত কাছে এসে সেই সুযোগকে হাতছাড়া করা বোকামিই হবে।
ওরা দু’জনে প্রথমে আপেলের বন,তারপর এলাচের ঝোঁপ-জঙ্গল পেরিয়ে কখন যে 
হাজারো ঝোড়া ঠাণ্ডা শিরশিরানি জল ছুঁয়ে কখন যে বাঁশ ঝোপ, ডেওয়ো ডুমুর আর পাইনের ঘন জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিল খেয়াল নেই। তখন পাহাড়ের চূড়াগুলোতে সোনা গলে পড়ছে। সারাদিনের পশু-পাখি না দেখার আশ মিটিয়ে দিয়েছিল এই পড়ন্ত বিকেলের আলোছায়ায় ছোট বড় পাখিদের শিস আর কলকাকলি। যত ওরা ঝোড়ার ধার ধরে পাহাড়ি ঘূর্ণাবর্তে এগিয়ে যায় তত কিচিরমিচির করে ওঠে পাখিদের দল। কিন্তু আফসোস থেকে যায় এখনো পর্যন্ত দু একটা ধেড়ে ইঁদুর গিরগিটি ছাড়া কিছুই দেখতে পায়নি। হারিয়ে যাবার কোনও ভয় ছিল না। কারণ তার আগে মামাভাগ্নেতে গুগুল ম্যাপ আর কিছু লোকাল লোকজনের কথা মত জায়গাটা চিনে ফেলেছিল। অন্তত ছোট মামার তাই ধারণা হয়েছিল। গোটা কতক ফোটো তুলে এনে আর সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া যাবে। বড় মামা তো সেই প্রথম দিন থেকে বলে আসছে এখানে সে রকম বুনো জীব-জন্তুর ভয়ের কিছু নেই। যেটুকু ভয় বা চিন্তা আছে সে সব তিব্বতের বর্ডারে মানে চীনের সীমান্তে। সেখানে হানা দেয় স্নো লেপার্ড কিংবা বীয়ার্ড। আর আছে পৃথিবী বিখ্যাত ধূসর কিংবা সোনালি চুলের নেকড়ের দল। 
কিন্তু সে সব মিথ্যে প্রমাণ করে দেখা মিলল সেই জ্বলন্ত ভাটাগুলোর। আগুনের গোলা। আর একটু হলেই ওদের ওপর চড়াও হত। ওহ! ভাবলে এখনো বুক ঢিপ ঢিপ করছে। 
এখনও যে করছে না তা নয়, কিন্তু এটা বুঝে গেছে ওরা যাদের খপ্পরে পড়েছে আর যাই হোক চতুষ্পদ নয়। 
হাত দুটো পেছন থেকে বাঁধা। সেও এক রকম লতা আর ঘাঁস দিয়ে বানানো সরু দড়ি। চোখে দেখা যায় না তবে অনুভব করা যাচ্ছে। হাতে সুঙ সুঙ করছে। এই রকম অস্বস্তি লাইলন কিংবা প্রচলিত দড়িতে হয় না। বাবুইয়ের দড়িতে হয়। তবে বাবুই তো এক রকম ঘাস। সেখান থেকে একটা উদ্ভিজ তীব্র গন্ধ নাকে এসে লাগে। ওরা হাঁটছে। মানে হাঁটানো হচ্ছে। তখন টুপ করে কারা যে টুপির মত কি পরিয়ে দিল বোঝা গেল না। গলা সমেত মাথা ঢেকে গেল। তবে কোনো গাছের লতাপাতা দিয়ে বানানো তা বোঝা যাচ্ছে। পাতার গন্ধটা অনেকটা চেনা, ঠিক তেজপাতা বা এলাচের মত গন্ধ নাকে সর্বদা গেঁথে রয়েছে। রাত বলে হয়তো আশপাশ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু মাথায় যে পত্রমুকুট পরেছে তাতে যথেচ্ছ ছিদ্র রয়েছে এবং শ্বাস ক্রিয়ায় কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। 
সামনে পেছনে দ্বিপদের সঙ্গে ওরাও হাঁটছে। তবে ওরা মুক্ত হয়ে। আর এরা বাঁশবন্ধ হয়ে। অর্থাৎ একটা বাঁশেই লম্বা আড়াআড়ি করে দুজনের কাঁধে বসিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে দুজনেই বিষণ্ণ, চুপ। কেউ কাউকে কথা বলছে না। কেবল সময় সময় খসখস আওয়াজ কিংবা কখনো একবারেই চুপ। মাঝে মাঝে একটানা ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক।  
কান পেতে থাকে শাদুল মামা। ডিটেকটিভ কিংবা কোনো অ্যাডভেঞ্চার বইয়ে পড়েছে, যে এই রকম শোচনীয় পরিস্থিতিতে কান সজাগ রাখা জরুরি। কারণ সঙ্গে থাকা লোকজনদের কথা  থেকেই কিছু না কিছু ক্লু পাওয়ায় যায়। কিন্তু সে সুযোগ যেন একেবারেই বন্ধ। মুখে তালা। 
  ওদের প্রথম প্রথম মনে হয়েছিল নদীর ধারে বনের ছায়ায় নিরীহ মানুষজনের চলাফেরায়  আপন কথা বার্তায় নীল পাহাড়ে ঢাকা কচি সূর্যটা মেঘেদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে জঙ্গলেই কোথায় হারিয়ে যায়।সাক্ষী থাকে এই সুন্দর গ্রাম, লাচুং। মানুষ এখন তো দার্জিলিঙের চেয়ে সিক্কিমের উত্তর পূর্ব দক্ষিণ সব জায়গায় ঢুঁ মারে। কিন্তু সেই শান্তির আড়ালেও যে ভয় লুকিয়ে আছে কে জানত! 
নৈশব্দ ভাঙে রামসিং। ফিসফিসিয়ে বলে,- মামা,লোকগুলো আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? 
মায়ান সভ্যতায়! 
মানে? 
মানে আমরা এখন খ্রিস্টপূর্ব হাজার বছর আগে যাচ্ছি। 
টাইম মেসিন! 
ইয়েস! ভয় পাস না। 
রামসির মুখে কোনো কথা নেই। শাদুলমামা কখন যে কী বলে তার নেই ঠিক। কিন্তু এইবার রামসি ভয়ই পেল।  
রামসি চুপ করে আছে দেখে শাদুলমামা বলে,-ভেবে দ্যাখ। এইরকম ঘন অন্ধকারে জঙ্গলের মাঝে দক্ষিণ মেক্সিকো কিংবা উত্তর মধ্য আমেরিকার গ্রাম থেকে পাকড়াও করে নিয়ে যাচ্ছে কোনো উজটেক সভ্যতার মানুষ। মায়ান সভ্যতার কোনও মানুষ তার প্রতিবাদ করছে। কিংবা উলটোটাও হতে পারে। তারা প্রকৃতি দেবতার জন্য। উৎসর্গ করবে। তারপর সব শেষ! 
-কিন্তু মামা সে তো ছাগল ভেড়াদের দেয়। 
-মহিষদেরও দেয়। কখনো কখনো মানুষদেরও। 
-সেই নরবলি তো হাজার হাজার বছর আগে দেওয়া হত। তাও কোন অজানা দেশে,আমেরিকায়। অ্যাপোক্যালিপ্টোর যুগে।  
-আমাদের দেশেও এক সময় এই রীতি ছিল। ওরা প্রকৃতি দেবতাকে খুশি করতে পুজো শেষে যুদ্ধবন্দীদের বলি দিত। 
-এই সিক্কিমেও এই রীতি আছে নাকি মামা? রামসির গলার স্বর বন্ধ হয়ে যাবার যোগাড়। 
আর কতক্ষণ হাঁটতে হবে কে জানে। তবে মাঝে মাঝে বুনো জন্তুর বিশ্রী গন্ধও উড়ে আসছে। কীসের ধরতে না পারলেও ইয়াকের নয় তা মালুম হয়। ছোটমামার এ অভিজ্ঞতা পূর্বে হয়েছে। বেশ খানিকক্ষণ এবড়ো খেবড়ো ঝোঁপ ঝাড়ে পা ঘষে ঘষে চলার পর পাশ থেকে পাহাড়ের খাতে পড়া নদীর ভয়ঙ্কর শব্দ ভেসে আসছে জোড়ালো ভাবে।
-তার মানে আমরা লাচুঙ চু’র কাছাকাছি আছি।-ছোট মামা বেশ জোরেই বলে। আর সেটা শুনেই হয়তো বা অন্য কারণে পিছনের দলের একজন ছোটমামার মাথায় কিছু দিয়ে আঘাত করে। মামা ছোট একটা শব্দ করেই থেমে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রামসির ঘাড়ে ভীষণ চাপ লাগে। শরীর অবশ হয়ে আসে। 
(ক্রমশ)

অনুভব বোস
নবম শ্রেণী, প্রফুল্ল নগর বিদ্যামন্দির, উত্তর ২৪ পরগণা

ছেলের প্রশ্ন
জয়দেব সাঁতরা

নাইবা হলাম হীরের টুকরো
নাইবা হলাম অনেক দামী,
কষ্ট কি মা পাও গো শুধুই
তোমার কাছে থাকলে আমি?

ধন্য আমি পূর্ণ ওরে
তোকে আমি গর্ভে ধরে
তোর বিহনে ঘুম আসে না 
কেমন করে বোঝায় তোরে!

তবে কেন পড়ার নামে 
দাও আমারে আঘাত আরো,
সেই আঘাতে পাই যে বেদন 
তুমি কি মা বুঝতে পারো?

গত বছর পাশ দিয়ে ওই 
ঘোষ বাবুদের মেজো ছেলে, 
স্টেটসে গিয়ে বাঁধলো বাসা
মা-বাবাকে একলা ফেলে।

সেই যে গেল আর আসে না 
পিতা মাতার কাছে ফিরে,
ভালো ছেলের জন্য এখন 
ভাসেন তাঁরা নয়ন নীরে।

আমিও যেদিন ভালো হবো
চলে যাবো অনেক দূরে,
কষ্ট কি মা পাবে তুমি 
পড়বে কি জল আঁখি ঝুরে?

সাথী পুইল্যা। নবম শ্রেণী। কেশপুর গার্লস হাই স্কুল। পশ্চিম মেদিনীপুর

উইজার্ড ক্লাবের মজা
শৌনকশৌর্য দাস
অষ্টম শ্রেণী,  বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনপশ্চিম মেদিনীপুর

যখন আমাদের স্কুলে গ্রীষ্মকালের ছুটি শুরু হলো, দিনগুলো খুব বিরক্তিকরভাবে কাটছিল হঠাৎ আমাদের স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি বিজ্ঞপ্তি এল, বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনে একটি মাল্টি ফেজ় গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের। আমি তখন আগে রেজিস্টার করলাম আঁকার ওয়ার্কশপের জন্য যেটা আমাদের উইজার্ড ক্লাবের তরফ থেকে হচ্ছিল (যেই ক্লাবের আমি মেম্বার ছিলাম!) আমি এই সুযোগটাকে ছাড়লাম না কারণ আমি সব সময় সৃজনশীল কাজের জন্য অপেক্ষা করি। আর আমার সব থেকে পছন্দের কাজ রং করা আর কাগজের জিনিস বানানো। 
যেই দিনটার আমি অপেক্ষা করছিলাম শেষ পর্যন্ত এল। আমার বাবা আমাকে স্কুলে ছেড়ে দিলো, আমি স্কুলের ভেতরে ঢুকলাম একটু ভয়ে ভয়ে। কারণ আর পাঁচটা দিনের থেকে এই দিনটা আলাদা। এরপর আমি আমাদের এসেম্বলি মাঠে গেলাম যেখান থেকে আমাদের বলে দেওয়া হলো আমাদের যেতে হবে রুম নম্বর নাইনে। সেখানে আমার নিজের শ্রেণীর কেউ ছিলনা। আমি একটা সুযোগ পেলাম নিজেকে পরিচয় করানোর আমার স্কুলের অন্য ক'জন বন্ধুর সাথে। আমার সৃজনশীল মনের সাথে বন্ধুত্ব হলো আরো অন্য তিন জনের: অঙ্কিত, অর্পিত‌ আ‌র তিয়াস। 
আমরা আমাদের জিনিসপত্র বের করে আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছিলাম আমাদের ক্যাম্প শুরু হওয়ার জন্য। আমাদের শহরের একজন স্বনামধন্য শিল্পী আমাদের শেখাতে এলেন।
তিনি বললেন, আমরা আজকে জগন্নাথ আঁকবো একটা কাপড়ের টুকরোতে। আমার বন্ধু আমাকে কাপড়ের টুকরোর ভাগ দিল আর আমরা শুরু করলাম আমাদের শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী। মাঝে বিরতি হলো। আমাদের ইস্কুল থেকে আমাদেরকে আম পান্না এক গ্লাস করে দিল। প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেলাম। আমরা আমাদের সেদিনের কাজ শেষ করে, পরের দিন কিছু উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। 
দ্বিতীয় দিন আমরা একই সময়ে স্কুলে পৌঁছে আমাদের শিল্পের জন্য দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে প্রস্তুত হলাম। আমাদের শিক্ষক শীঘ্রই এসেছিলেন এবং তিনি যা করছেন তা অনুসরণ করতে বলেন। এক এক স্ট্রোক করে তিনি ধীরে ধীরে বোর্ডে বুদ্ধের মুখ জীবন্ত করে তুললেন। আমরা তাকে অনুকরণ করলাম। তারপর আরেকটি তরতাজা করা আম পান্না টনিকের পরে আমরা আমাদের ছবি রঙ করি এবং কাজ শেষ করি। কর্মশালা শেষ হয়েছে, এবং আমরা আমাদের অতিথি শিক্ষককে কিছু ছোট উপহার দিলাম ।আমরা এখন বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুত।
🍂


অন্য মানুষ 
শর্মিষ্ঠা বসু 

অবনী বটব্যালের বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে। তাঁর সমন্ধে আলাদা করে বলার মতো কিছুই নেই। পাঁচজনের ভিড়ে তাঁকেমনে রাখাও বেশ মুশকিল। ফর্সা, গোলগাল, বেঁটেখাটো চেহারা তাঁর, নাকের নীচে একজোড়া লম্বা গোঁফ, চোখে মোটা ফ্রেমেরচশমা। এরকম চেহারার মানুষ রাস্তাঘাটে হামেশাই চোখে পড়ে।
খুব নরম স্বভাবের মানুষ অবনীবাবু। শান্ত, নিরীহ, গোবেচারা। এককথায় যাকে ভালোমানুষ বলে। কথা কম বলেন, কখনওকোন সাতেপাঁচে থাকেন না, সর্বদা বিরোধ বিবাদ এড়িয়ে চলেন। তবে নিন্দুকেরা বলে থাকেন অবনীবাবু একজন ভীতু প্রকৃতির মানুষ।
কথাটা অবশ্য খুব একটা মিথ্যে নয়। অবনীবাবু কিসে ভয় পান না সেটা রীতিমত একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। ভয়ের তালিকাটি  দীর্ঘ।
টিকটিকি, আরশোলা, ইঁদুর, ছুঁচো, ব্যাঙ, ভূত - প্রেত পোকামাকড় সবই তিনি ভয় পান।
রোজ সকালে অফিস যাওয়ার আগে বড়বাবুর রক্তচক্ষুর কথা ভাবলেই তাঁর বুক ধড়ফড় শুরু হয়ে যায়। সন্ধ্যাবেলায় অফিস থেকে  বাড়ি ফেরার পথে বাজার করার সময় ভয়ে তিনি দরদাম অবধি করেন না। দোকানদার রাগ করবে ভেবে বেশী দাম দিয়েজিনিসপত্র কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
এছাড়াও দুর্ঘটনার ভয়ে পারতপক্ষে তিনি বাসে, ট্রেনে বা, রিক্সায় চাপেন না। তিনমাইল হেঁটে প্রতিদিন অতি সাবধানে অফিস যান, হেঁটেই ফিরে আসেন। এখানেই শেষ নয়। বর্ষাকালে আকাশে মেঘ দেখলে অতিবৃষ্টির আশঙ্কায় ,কিংবা টিভি তে ঝড়েরপূর্বাভাস শুনলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে অবনীবাবু রামনাম জপ করতে থাকেন।
আসলে যে কোন পরিস্হিতিতে তাঁর ভয় করে। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই ভয়ে তাঁর হাত পা কাঁপে ,মাথা ঘোরে, শরীর বরফের  মতো ঠান্ডা হয়ে যায়, পেটে গুড়গুড় শুরু হয়।
এতদিন অবশ্য এই ভয়ভীতি নিয়ে অবনীবাবুর তেমন কোন সমস্যা হচ্ছিল না। কিন্তু ইদানীং পরিস্হিতি বেশ জটিল হয়েউঠেছে।
মাস ছয়েক আগে ফুলডাঙায় বদলী হয়ে এসেছেন অবনীবাবু। আর এখানে আসার পরেই বড় অশান্তিতে দিন কাটছে তাঁর। প্রথম কয়েকমাস বেশ ভালোই কেটেছিল। ছোট্ট শহর ফুলডাঙা। শহরের মাঝখানে একটা বড় দীঘি, চারিদিকে অজস্রগাছগাছালি। বোন সুলতাকে নিয়ে অবনীবাবু দিব্যি গুছিয়ে বসেছিলেন তাঁর নতুন কোয়ার্টারে।
কিন্তু মাসখানেক হলো এখানে খুব চোরের উপদ্রব শুরু হয়েছে। মাঝেমাঝেই চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর সেই খবর পাওয়ারপর থেকেই ভয়ে চোখের ঘুম উধাও হয়ে গেছে তাঁর।
সারারাত ভয়ানক অস্বস্তিতে থাকেন অবনী বটব্যাল। কখনও ঘরের ভেতরে একাই পায়চারী করে বেড়ান। কখনও একটু খুট্ করে শব্দ  হলে চমকে ওঠেন। ভয়ে, আতঙ্কে বুকের ভেতরে সর্বক্ষণ একটা দমচাপা কষ্ট হয়।
কিছুদিন আগে রাতের বেলায় চালের বস্তাকে চোর ভেবে ভয়ে তাঁর প্রায় অজ্ঞান হওয়ার অবস্হা হয়েছিল। মাঝরাতে গোঁ গোঁ আওয়াজ শুনে সুলতা দেবী উঠে দেখেন মেঝেতে শুয়ে ঠকঠক করে কাঁপছেন অবনীবাবু। ভয়ে চোখদুটো ঠেলে বেরিয়ে এসেছে, মুখ ছাইয়ের মতো সাদা। দাদাকে এই অবস্হায় দেখে সুলতা দেবীর দুচোখ ছানাবড়া। বিস্ময়ের প্রথম ধাক্কা সামলে তিনিসেদিন সজোরে এক ধমক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন,
“এসব কী হচ্ছে দাদা? এবার ওঠো।
ভালো করে দেখো।
ওটা চালের বস্তা। ভয়ে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।“
মুখে রাগ দেখালেও মনে মনে দাদার কথা ভেবে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন সুলতা দেবী। এভাবে খুব বেশিদিন চললে মানুষটা নির্ঘাত অসুস্হ হয়ে পড়বে। এসব ভেবে তিনি আর বিলম্ব করলেন না। পরের দিনই আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তিনিভীতু দাদাকে চিন্তামুক্ত করার একটা উপায় স্হির করলেন।
এই ঘটনার ঠিক তিনদিন পরের কথা। সেদিন রবিবার ।সকালবেলা সবে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে খবরের কাগজে চোখবোলাচ্ছিলেন অবনীবাবু, এমন সময় হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠল। দরজা খুলতেই সামনে দাঁড়ানো ছেলেটি একগাল হেসে বলল,
“আজ্ঞে, আমি লাড্ডু গড়াই , ভীমপুর থেকে আসছি। এটা কি অবনীবাবুর বাড়ি?“ ভুরুতে ভাঁজ পড়ল অবনীবাবুর। টিনের বাক্স  হাতে দাঁড়ানো বছর কুড়ির এই ছেলেটিকে তিনি কখনও কোথাও দেখেছেন বলে তাঁর মনে পড়ছিল না।
“এসো বাবা। তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। বাড়ি চিনতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো?“ অবনীবাবু কিছু বলার আগেইসুলতা দেবী দরজায় এসে দাঁড়ালেন। ছেলেটিকে দেখে তাঁর মুখ। উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
বেশ কিছুক্ষণ মন দিয়ে সুলতা দেবী আর লাড্ডুর বিরামহীন কথোপকথন শুনে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করলেন অবনীবাবু। কিন্তুছেলেটি কে বা কী উদ্দেশ্যে এখানে এসেছে কিছুই তাঁর বোধগম্য হলোনা।
অবনীবাবুর হতভম্ব অবস্হা সুলতা দেবীর নজর এড়ালো না। মুচকি হেসে তিনি বললেন, “আজ থেকে লাড্ডু এ বাড়িতেই থাকবে  দাদা, ফাইফরমাশ খাটবে। শুনলাম খুব সাহসী ছেলে। একবার নাকি
গ্রামে একাই ডাকাত দলকে শায়েস্তা করেছিল …. ”
ডাকাত ধরার ঘটনাটা আর মন দিয়ে শোনার আগ্রহ বোধ করলেন না অবনীবাবু। এতক্ষণে পুরো বিষয়টা তাঁর কাছে জলেরমতো পরিষ্কার হয়ে গেছে। মনে মনে তিনি ছোট বোনের বুদ্ধির তারিফ না করে পারলেন না। এরকম একটা সমাধানের কথা তাঁর নিজেরই  ভাবা উচিত ছিল।
এমন বিপদের দিনে লাড্ডুর মতো একজন সাহসী ছেলে পাশে থাকা সত্যিই খুব দরকার। নিজের নির্বুদ্ধিতার কথা ভাবতেভাবতে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেললেন অবনীবাবু তারপর চাপা গলায় লাড্ডুকে বললেন“, এখানে বড় চোরের উপদ্রব।

শুরু হয়েছে। রাতে প্রায় রোজই চোর আসে।  তুমি সেসব সামলাতে পারবে তো?“

একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল লাড্ডু। তারপর নিজের শরীরের দৃঢ় মাংসপেশীর গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, ”ওসব নিয়েভাবতে হবে না দাদাবাবু।আমি লাড্ডু গড়াই। সাত সাতখানা ডাকাতকে একা হাতে কাবু করেছিলাম একবার। ভীমপুর গাঁয়ে আমার  নাম শুনলে তাবড় বীরেরও বুকের রক্ত হিম হয়ে যায়।“

( ক্রমশ)
স্মরণীয় দিবস
কার্গিল দিবস
( ২৬শে জুলাই)
কলমে - দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে


বুধবার ২৬ শে জুলাই কার্গিল যুদ্ধের ২৪ বছরে পা দিয়েছে ভারতীয় ফৌজ।
কার্গিল যুদ্ধে(১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে জুলাই) দেশের জন্য আত্মত্যাগ কারী ভারতীয় সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রতি বছর ২৬ শে জুলাই কারগিল দিবস স্মরণ করা হয়। দিনটি অপারেশন বিজয়ের বিজয়কে স্মরণ করে পালন করা হয়, যা ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিজয় ছিল।
জম্মু-কাশ্মীরের কারগিল জেলার নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এল ও সি) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কারগিল যুদ্ধ হয়েছিল, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী 'অপারেশন বিজয়ের' অধীনে পাকিস্তান সৈন্যকে টাইগার' হিল' থেকে উচ্ছেদ করে এবং তারা আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল গুলি পুনরুদ্ধার করেছিল।
এই যুদ্ধ দুই দক্ষিণ এশিয় প্রতিবেশীর মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সংঘাত ছিল। এই সংঘাত তথা যুদ্ধের ফলে জীবন ও সম্পদের প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি হয়েছিল। কার্গিল যুদ্ধটা ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শেষ যুদ্ধ। এ বছর  কার্গিল যুদ্ধের ২৪ তম বিজয় দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে কার্গিল যুদ্ধ ছিল জম্মু-কাশ্মীরে অবস্থিত কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত এক সশস্ত্র সংঘর্ষ। সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে যখন প্রায় পাঁচ হাজার পাকিস্তানি সৈনিক ও জঙ্গিরা ভারতীয় ভূখণ্ডে বলপূর্বক প্রবেশ করে, যা পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের অজান্তে পাকিস্তান সেনাপ্রধান পারভেজ মোশারফ এর নির্দেশে, এল ও সি অঞ্চলে (উচ্চতর  অঞ্চলে)  কৌশলগতভাবে পাকিস্তানি সৈন্যরা দখল নিয়েছিল, যেখানটা ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চল।
এই যুদ্ধটি তে ভারত অবাক হয়ে গিয়েছিল কারণ পাকিস্তান অনুপ্রবেশ 'সিমলা চুক্তি' লঙ্ঘন করে, ১৯৭২ এর এই চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের শান্তি রক্ষার জন্য। পাকিস্তানি সৈন্যদেরা অনুপ্রবেশের লক্ষ্য ছিল শ্রীনগর থেকে লেহ সংযোগকারী সড়কটি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া যা ভারতের নিরাপত্তা এবং লাদাখের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হুমকি মূলক বার্তা বলে মনে করা হয়।
ভারত সরকার দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়, পাকিস্তান বাহিনী ও জঙ্গিদের উচ্ছেদ করতে। এছাড়া অনুপ্রবেশকারী এলাকাগুলি  পুনরুদ্ধার করতে ১৯৯৯ সালের ২৬শে মে তারিখে 'অপারেশন বিজয়' শুরু হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারতীয় বায়ু সেনা পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দেওয়ার জন্য চড়াই উৎরাই ভূখণ্ডে ও খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে পাকিস্তানি সেনা ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে। স্থলভাগ আক্রমণের জন্য আইএএফ, যুদ্ধের সময় মিগ২ আই,মিগ ২৩, মিগ ২৭, জাগুয়া, এবং মিরাজ ২০০০ ডিমান্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। ভারত সরকার দু'লক্ষ সৈন্য একত্রিত করে 'অপারেশন বিজয়' চালিয়ে বিজয়ী হাসিল করে। ১৯৯৯ সালের ২৬ শে জুলাই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সৈন্যদের তাদের দখলকৃত অবস্থান থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে। দুঃখের বিষয় এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রায় ৫২৭ জন সৈন্য মারা যান।
কারগিল বিজয় দিবস প্রতিবছর ২৬ শে জুলাই শহীদ বীর সৈন্যদের সম্মানে, স্মরণের উদ্দেশ্যে পালিত হয়। এই দিনটি সারা ভারতে এবং দেশের রাজধানী দিল্লিতে পালিত হয়। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়া গেটে অমর জোয়ান জ্যোতিতে ভারতীয় সৈন্যদের শ্রদ্ধা জানান। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদান কে স্মরণ করার জন্য সারা ভারতবর্ষে বীর শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালিত হয়।

পাঠ প্রতিক্রিয়া
( ১৪১ তম ছোটোবেলা সংখ্যাটি পড়ে পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখে পাঠিয়েছেন সবিতা বিশ্বাস)


ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৪১ নিশ্চয় পড়ে ফেলেছ! আমি তো রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষাই করতে পারিনা। আসলে তোমাদের মৌসুমী আন্টি সকলের লেখায়, আঁকায় এত সুন্দর করে পত্রিকাটি সাজান, না পড়ে থাকাই যায় না।
প্রথমেই বলি প্রচ্ছদের ছবিটার কথা, নীলাব্জ ঘোষ কি ভালো ছবি তুলেছেন! নীল ভেড়া বা ভারালদের কি মজা! ওদের বাড়ি অনেক উঁচু পাহাড়ে, সেখান থেকে আমাদের কেমন দেখছে দ্যাখো! 
শ্রীকান্ত অধিকারীর লাচুঙের নেকড়ে পুরো জমে গেছে। এজেন্টের সাথে একদেশ থেকে অন্যদেশে বেড়াতে এসে মেয়ে বিটলেকে নিয়ে কি অসহায় অবস্থা চুয়াডাঙ্গার মহিলার। তবে মনে হচ্ছে এই এজেন্টরা খুব সন্দেহজনক, বিরাট একটা র্যাকেট। আগামী পর্বে আরো অনেককিছু জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ওহ্ কি ভালো ছবি এঁকেছে সৌমী মন্ডল। বড় বড় চোখের মিষ্টি মেয়েটাকে দেখেই আদর করতে ইচ্ছে করছে।
যদিও শ্রাবণ মাস, কিন্তু খুব বৃষ্টি হচ্ছেনা।  তাতে কি! সোনালির বর্ষা বাদল ছড়ায় পুরো বর্ষার আমেজ উপভোগ করলাম। খুব মজার ছড়া।
শুভশ্রী সরকারের ছবিটাও খারাপ হয়নি, আমার ভালোই লেগেছে। শুভশ্রী, এর পরের কোনো সংখ্যায় তোমার আঁকা খুব ভালো একটা ছবি দেখতে চাই।
বহ্নিশিখা ঘটকের কল্পবিজ্ঞানের গল্প ‘সুন্দর এক পৃথিবীর জন্য’ পড়ে একটু ভয়ই পেলাম। যেভাবে সবুজ নিধন চলছে, বন্যপ্রাণী নিধন চলছে তাতে প্রকৃতির ভাঁড়ার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সত্যি কি পৃথিবী মৃত গ্রহ হয়ে যাবে?  এসো আমরাও রকির মত সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি আর সেই স্বপ্নকে সার্থক করে তুলি।
শুভশ্রী শুধু ছবিই আঁকেনি, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ছোট্ট একটি নিবন্ধও লিখেছে। খুব  ভালো হয়েছে লেখাটা।

বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবস নিয়ে দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে খুব প্রয়োজনীয় তথ্য জানিয়েছেন আমাদের। কি সাংঘাতিক অবস্থা! চোরাশিকার, বনাঞ্চল ধ্বংস ও বেআইনি ব্যবসা ইত্যাদির কারণে বিগত দেড়শো বছরে বিশ্বে প্রায় ৯৫% বাঘ কমেছে। বাঘের কথা পড়তে গিয়ে বহ্নিশিখা ঘটকের গল্পটা মনে পড়ে গেল। এখনো যদি আমরা সতর্ক না হই আমরা একদিন হারিয়ে যাবো সবাই।

মাননীয়া সম্পাদিকা বোন মৌসুমী প্রত্যেকটা সংখ্যা এত সুন্দর সুন্দর লেখা দিয়ে সাজান যা পড়ে আমরা সমৃদ্ধ হই।  ভালোলাগা তো আছেই। আর একটা কথা চুপিচুপি বলি, আমার তো বড় হতেই ইচ্ছে করেনা।|
তোমাদেরকে ভালো মানুষ করে গড়ে তুলতে তোমাদের প্রিয় মৌসুমী আন্টি খুব চেষ্টা করে চলেছেন।
একটা কথা মনে পড়ে গেল, এই বর্ষায় গাছ লাগাতে ভুলোনা বন্ধুরা।  গাছের পরিচর্যা করবে নিয়মিত। আমাদের শপথ, এই গ্রহকে আমরা সবুজে সাজিয়ে রাখবোই। 
আর সব শেষে বলি পাঠ প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে | ১৪০ সংখ্যা কেমন লেগেছে তা জানিয়েছেন সুরশ্রী ঘোষ সাহা| 
আমিও জানালাম আমার মনের কথা | ভালো থেকো  বন্ধুরা, নতুন নতুন গল্প ছড়া লিখে ফেলো ছোটবেলার জন্য | সামনেই আসছে উত্সব সংখ্যা, তার মানে ‘তাকুড় নাকুড় তাক, বাজবে পুজোর ঢাক’|

Post a Comment

0 Comments