জ্বলদর্চি

দেশান্তরী -২৭ /হিল্লোল রায়


দেশান্তরী -২৭

হিল্লোল রায় 

ডেট্রয়েটকে টা-টা ফিলাডেলফিয়ার পথে !!


আমার ঘড়ি এখনও অবশ্য ফার্গো সময় দিচ্ছে অর্থাৎ এখন বিকাল ৪-৫৫ মিঃ। এবার ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের যাত্রা। ডেট্রয়েট বিমানবন্দরের রানওয়ের উপর আমার প্লেন চলতে শুরু করেছে। বাইরে বেশ অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। প্লেনের পাখাও নড়াচড়া শুরু করেছে। রানওয়ের নীল সবুজআলোগুলো দেখে দেশের কালীপূজার কথা মনে পড়ছে। দেওয়ালী উৎসবের সময় প্রদীপ ও বাতি জ্বালিয়ে বাড়ী সাজাতাম। রানওয়ের আলোগুলোকে ভারী মিষ্টি লাগছে। ঠিক ৫-০৪ মিনিটে ডেট্রয়েটের মাটি ত্যাগ করে প্লেন আকাশে উঠল। প্লেনের মধ্যে বসে রাত্রের বর্ণনা দিতে কি মজাই না লাগে। প্লেনের থেকে নীচে তাকালে মনে হচ্ছে আলোর বন্যা বইয়ে দিয়েছে কেউ যেন। ঘরবাড়ি অবশ্য কিছুই দেখা যায় না। শুধু আলো আর আলো। ভারী মিষ্টি দৃশ্যভিষণ সুন্দর। অদ্ভুত দৃশ্যএক কথায় অবর্ণনীয়। নীচের আলো লালনীলসবুজহলদে মিলেমিশে রয়েছে। আকাশ অন্ধকার। নীচের দৃশ্য তাই আরো সুন্দর লাগছে। নীচে তাকালে মনে হয় যেন স্বর্গপুরী ছেড়ে আকাশের মধ্যে দিয়ে কোথায় উড়ে চলেছি। মনে হয়ঐ স্বর্গপুরীতে যেন কারও কোনো কষ্ট নেইসবাই সুখী, “আবাদ করে-বিবাদ করেসুবাদ করে তারা”(যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত)। এখন অবশ্য ক্রমশই উঁচুতে উঠছি। ঘন কালো অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে উড়ে চলেছি। নীচের আলো তারার মতো মিটিমিটি জ্বলছে।


ফিলাডেলফিয়ার পথে!!

তন্দ্রা আসছে। কান কটকট করছে মাঝে মাঝে। চোখ বুজছিখুলেছি বাইরের দৃশ্য দেখবার জন্য কিন্তু কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। ঘন অন্ধকার জুড়ে রয়েছে চারিদিকে। ক্ষিদে পেয়েছে অল্পবিস্তর। আমার ঘড়ি অর্থাৎ ফার্গোর সময় অনুযায়ী বিকাল ৫-২০ দেখে মনে হচ্ছে। আসলে স্থানীয় সময় ৬-২০ সন্ধ্যে। ডিনারের সময় হয়ে এসেছে। এয়ার হোস্টেস -রাও দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে ডিনার সার্ভ করবার জন্য । এইমাত্র আমার ডিনারের প্লেট এসে গেল। ডিনারের মধ্যে আছে ব্রেড বাটার স্যালাডড্রেসিংপুডিংকফিডিনারটা বেশ ভালই হল। পঁচিশ মিনিট লাগল ডিনার শেষ করতে। ফিলাডেলফিয়ার মধ্যে ঢুকে পড়েছি।

স্থানীয় সময় ৬-৪৫ সন্ধ্যা। প্লেন ক্রমশ:ই নীচুতে নামছে। এখন নীচের ঘরবাড়ীআলো সব কিছুই দেখা যাচ্ছে। বেশ আনন্দ হচ্ছে আর অল্পক্ষণের মধ্যে ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দরে অবতরণ করব। মেজমামাসেজমামা আসবে রিসিভ করতে। নামবার সময় ক্রমশ:ই এগিয়ে আসছে। মাটির দিকে তাকালে চারিদিকে শুধু আলোর মেলা দেখছি। পাশের যাত্রীরা কেউ বা তন্দ্রাচ্ছন্ন কেউ কেউ কাগজ পাঠে মগ্ন। নীচের আলোগুলো অবশ্য তারার মতো জ্বলছে। প্লেনের মধ্যে বসে এ দৃশ্য দেখতে কী ভালই না লাগে। সত্যিই উপভোগ্য।

🍂

ফিলাডেলফিয়া বতরণ !!

প্লেনের গর্জন কমে গেল। ক্রমশ:ই নীচুতে নামছে। যাত্রীরাও সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন নামবার। পাশের ভদ্রমহিলা মেক আপ নিয়ে নিলেন। কান কটকট করছে এখন। কারো কোনো কথা শুনতে পাচ্ছি না। ঘড়িতে এখন ৬-৫৫। নীচে আলোর মালা। নীচের দৃশ্য ক্রমশ:ই পরিষ্কার হচ্ছে। যাত্রীদের কলরব বৃ্দ্ধি পাচ্ছে নামবার সময় এগিয়ে আসার সংগে সংগে। “ঝিকমিক জোনাকীর দীপ জ্বলে শিয়রেআয় ঘুম নিঃঝুম “ গানের কলি মনে ভেসে আসছে। প্লেন এখন দুলছেমনে করিয়ে দিচ্ছেনাম্বার সময় হয়ে এলপ্রস্তুতি নাও।” ঠিক ৭-০৭ মিনিটে প্লেন ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে ছুটছে। সাতটা -দশে স্থির হল প্লেন। মেজমামামামিমাআর তাঁদের সদ্যজাত মেয়ে কাকলী ফিলাডেলফিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে আমাকে রিসিভ করতে এসেছে। প্রায় আড়াই মাস বাদে ফিলাডেলফিয়ায় এলাম নর্থ ডাকোটা থেকে। ব্যাগেজ ক্লীয়ারেন্স বিভাগ থেকে আমার ব্যাগ নিয়ে নিলাম। তারপর এয়ারপোর্টের বাসে করে বাড়ী পৌঁছালাম রাত ৮ টার কাছাকাছি। সমস্ত কিছুই একসঙ্গেবিশ্রামগল্পগুজব করেশুতে গেলাম রাত সাড়ে বারোটায়। সত্যিই বেশ ক্লান্তএত দূর (প্রায় ১৫০০ মাইলের মতযাত্রা করে এসে। নির্বিঘ্নেনিরাপদে এসে পৌঁছেছি ফিলাডেলফিয়া। ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি নেব আগামী কাল।

ফিলাডেলফিয়া হ্যারিসবার্গ

বাসের মধ্যে বসে যাত্রাপথের বর্ণনা

=সোমবার=

ফিলাডেলফিয়ানভেম্বর ২৪১৯৭৫

গ্রে হাউন্ড বাসের মধ্যে বসে

সকাল ৭-২৫ মিঃ

জীবনের প্রথম ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি আজ চাকরীর জন্য । দেশে থাকতে চাকরী করেছি নয় মাস। কিন্তু সেটার জন্য ইন্টারভি এর প্রয়োজন হয় নি। আমেরিকায় এসেছি মার্চ ২৩১৯৭৫। ফিলাডেলফিয়ায় তখন চাকরীর বাজার ভীষণ খারাপ। নর্থডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এনভায়রণমেণ্টাল ইঞ্জিনিয়ারীং এ M.S. করবার জন্য 'Research Assistantship নিয়ে পড়তে চলে যাই সেপ্টেম্বর ২১৯৭৫। অবশ্য ওখানে যাওয়ার আগে চাকরীর চেষ্টাও করেছি। পেন্সিল্ভ্যানিয়া স্টেট সিভিল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় শতকরা ৮০ ভাগ নম্বর পেয়ে ইন্টারভিউ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি। নর্থ ডাকোটা থেকে গত শনিবার অর্থাৎ নভেম্বর ২২১৯৭৫ রাত ৭-১০ এ ফিলাডেলফিয়া পৌঁছাই। তারপর এয়ারপোর্ট থেকে সোজা মেজমামার এ্যাপার্টমেন্ট E 102 তে। আমাকে রিসিভ করতে এসেছিলেন মেজমামামামিমাকন্যা কাকলী। রবিবার রাত কাটতেই সোমবার সকাল। আজকের দিনটা নিশ্চয়ই স্মরণ রাখবা মত।

এখনকার এই ডাইরীর বর্ণনা গ্রে হাউন্ড বাসের মধ্যে বসেই লিখছি। এয়ার কন্ডিশন্ড বাস।খুব সুন্দর জার্ণি।

কাল রাত্রে ঘুমিয়েছি একটু তাড়াতাড়ি ৮-৩০ নাগাদ। বেশ ভালই ঘুম হয়েছে। সকালে উঠেছি ঠিক ৬টায়। জামাপ্যান্ট পরে বেরুতেই সাতটা । সেজমামার গাড়ীতে করেই সেজমামামেজমামার সংগে চলে এলাম 17th & Market Street এ অবস্থিত গ্রে হাউন্ড টার্মিনালে। আমার গন্তব্যস্থল হ্যারিসবার্গ (Harrisburg) ফিলাডেলফিয়া থেকে একশো মাইল দূর। মেজমামা বাসের টিকিট করে দিলেনরাউন্ড ট্রিপ টিকিট ভাড়া ১৪ ডলারের কাছাকাছি। পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে আমার বাস ধরলাম।

মনে হচ্ছিল বাসখানা যেন আমাদের সাদর আহ্বান জানাচ্ছে। সকাল ৭-১৫ নাগাদ বাসের মধ্যে ঢুকে পড়লাম। বাস ছেড়ে দিল ৭-২৫ মিনিটে। আজ সকাল থেকেই আকাশটা কেমন যেন মুখ গোমরা করে রয়েছে। বাইরের তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর কাছাকাছি। আত্মরক্ষার্থে অবশ্য টপ কোট চাপিয়ে নিয়েছি।

সোমবারঅফিসমুখী যাত্রীদের গাড়ী শশব্যস্ত হয়ে ছুটছে। আমার বাসও ছুটছে সেই সংগে। ছোট বড় রাজপথ ঘুরে চলেছে আমার বাস। প্রথম এসে পৌঁছালাম KING OF PRUSSIA নামক এক জায়গায়। ঘড়িতে তখন ৭টা। যাত্রীরা ওঠনামা করছেন। সাতটা দশে বাস আবার দৌড়ানো শুরু করলো “কিং অব প্রাসিয়া”-কে টা-টা জানিয়ে। শতসহস্র রাস্তা অতিক্রম করে চলেছে আমার বাস। রাস্তার হদিশ রাখা খুবই শক্ত। তবুও চেষ্টা করব দুএকটা নাম ল্লেখের। মাঝে মাঝে তন্দ্রামত আসছে। অবশ্য যে কোন যানবাহনে চাপলেই আমার তন্দ্রা আসে। আমার পাশের মহিলা যাত্রী ফিলাডেলফিয়া এনকয়ারার (Philadelphia Inquirer) দৈনিক সংবাদপত্র এ চোখ বোলাচ্ছেন। আমার ডায়েরি লেখা দেখে সবিশেষ কৌ্তূহলী হয়ে উঠলেন। অবশ্য বাংলা অক্ষরে লিখছি বলে উনি বুঝতে পারছেন না। তাই ওর সাগ্রহ প্রশ্ন আমাকে...

হয়ার আর য়্যু ফ্রম ?

-ইন্ডিয়া

-হুইচ পার্ট?

-ক্যালকাটা।

-ওঃ আই সি। ইটস এ বিউটিফুল প্লেস। আই স্পেন্ট টু এ্যান্ড হ্যাফ ইয়ারস দেয়ার।

-হাউ ডিড য়্যু লাইক ইট?

-ও ফ্যান্টাস্টিক। ইটস এ বিউটিফুল সিটি। আই হ্যাভ বিন টু ডেলহী(DELHI ), কাশ্মীরতাজমহলরিয়্যালী ওয়ান্ডারফুল।

অর্থাৎ ভদ্রমহিলার ভাষায় ভারতবর্ষের কলকাতাদিল্লীবোম্বাইকাশ্মীর যেন হেভেন (Heaven) অনেক কথাই চলছে ওঁনার সংগে। উনি বেশ হাসিখুশী। বাস এখন ছুটছে ঘণ্টায় ৫৫ মাইল গতিবেগ নিয়ে রুদ্ধশ্বাসে। হাইওয়ের দুধারে গাছপালা যেন অবাক হয়ে দেখছে। সবুজ ঘাস তার উপর শিশিরবিন্দু জমে রয়েছে। ফিলাডেলফিয়ার তাপমাত্রা এখন ২৯ ডিগ্রী ফারেনহাইটের কাছাকাছি। স্নো এখনও পড়ে নি নর্থ ডাকোটার মত।

বাসের মধ্যে বেশ ঘুমিয়ে নিলাম। খেয়াল নেই হঠাত কখন ঘুমিয়ে গিয়েছি। যখন চোখ খুলল তখন দেখি সকাল ৯-১০। চারিদিকে বেশ পরিষ্কার সূর্যের আলো। বাসে যাত্রীরাও অবশ্য কেউ কেউ ঝিমুচ্ছেন। কেউ কেউ বাসের মধ্যে বসে ব্রেকফাস্ট সারছেন। হাইওয়ের দুধার দিয়ে কিছু কৃষিক্ষেত্র দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন হোটেল (হাওয়ার্ড জনসন)এর বিঞ্জাপন দেখতে পাচ্ছি। মিনিট পাঁচের মধ্যেই হ্যারিসবার্গ পৌঁছে যাব। পরিষ্কার আবহাওয়াভীষণ সুন্দর লাগছে বাসের জানলা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে। গন্তব্যস্থল যতই এগিয়ে আসছে যাত্রীরাও ততই উসখুস করছেন। ঠিক ৯-৪০ এ আমার বাস হ্যারিসবার্গের ডাউন টাউন (অর্থাৎ অফিস পাড়ায়পৌঁছালো। বাইরে বেশ হাওয়া বইছিল। টপ কোটটার বোতামগুলো আটকে নিলাম।

আমার গন্তব্যস্থল ২১২ এভাঞ্জেলাইন্স বিল্ডিংসথার্ড এ্যান্ড রাইলে স্ট্রীটহ্যারিসবার্গপি এ(পেন্সিল্ভ্যানিয়া১৭১২৩ সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গা। তাই এদিক ওদিক জিজ্ঞাসা করেই বেলা দশটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম। তারপর মিঃ কিলবার্ট কাইল এর অফিসে ঢুকে ইন্টারভিউ দিলাম হাইড্রলিক ইঞ্জিনীয়ার পদের জন্য।

-ডু য়্যু লাইক টু হ্যাভ সাম টী অর কফিমিঃ রে?

-টি

-উইথ অর উইথআউট সুগার?

-উইথ

-.কে

-ডু ইউ হ্যাভ এনি রেসুমে (RESUME) উইথ ইউ?

-য়্যা

-থ্যাঙ্ক য়্যু ।

চা খাচ্ছি মিঃ কাইলের সংগে। উনি হচ্ছেন এ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেকটরব্যুরো অব এনভায়রণমেণ্টাল রিসোর্সেস ওনার সাথে কথা বলছি। কথা প্রসংগে উনি ওঁর ছেলের কথা বল্লেন। ইঞ্জিনীয়ারিং পাশ করে বসে আছে। ওকেই ঢোকাতে পারছি না কোথাও। যাই হোকবিস্তারিত আলোচনা ও গল্পগুজবের পর বেলা ১১-১০ নাগাদ বেরিয়ে এলাম মিঃ কাইলের অফিস থেকে। খুব ক্ষিদে পেয়েছিল। অনেকটা পথ পায়ে হেঁটেই চলে এলাম। এসে কাছাকাছি CAPITOL নামে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়লাম। একটা হ্যামব্যার্গারআইস্ক্রিম ও কোক (১ ডলার ৩০ সেন্ট-এর মতদিয়েই লাঞ্চ সারলাম। ওখান থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটেই গ্রে হাউন্ডের বাসগুমটিতে চলে এলাম। সময় বেলা ১২-১৫ ফিলাডেলফিয়া আসবার বাস দুপুর ২-১৫অর্থাৎ হাতে ২ ঘন্টা পুরো সময়। কি করব ভাবছি। তারপর কয়েকটা দোকানে ঘুরে একটা মানিব্যাগ কিনে ফেললাম ১ ডলার ৯৯ সেন্ট ও সেইসংগে বারো সেন্ট ট্যাক্স অর্থাৎ ২ ডলার ১১ সেন্ট দিয়ে। বেলা ১-৩০ তখন গ্রে হাউন্ডের বাসডিপোতে এসে বসে আছি। ইতস্ততঃ ঘোরাঘুরি করছি। কিছুই করণীয় নেই। স্টলে ঢুকে ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাচ্ছি।

দুটো বাজতে বেশী সময় লাগল না। বাস ছাড়বে ২-১৫ তে। বেলা ২-০৫ এ ঘোষণা এল। ৬ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে আমার বাস ছাড়বে ২-১৫ এ। ২-০৫ এ বাসে উঠে পড়লাম। যাত্রী সংখ্যা বেশি নয়। তবুও সবাই বেশ হাসিখুশী। আসন্ন “থ্যাঙ্কসগিভিং হলিডে” (নভেম্বর২৭১৯৭৫উপলক্ষ্যে সবাই এদিক ওদিক যাচ্ছে। তাই খুশী খুশী ভাব সবার মনেই।

ফিলাডেলফিয়ার দিকে ছুটে চলেছে আমার বাস। বাইরের তাপমাত্রা এখন ৮ ডেগ্রী ফারেনহাইট। নির্মেঘনীলাকাশ সূর্‍্য্যের আলো পড়ে ঝকঝক করছে। দু ধারের গাছপালা মাথা উঁচু করে সূর্যমামাকে আহ্বান জানাচ্ছে।

তোমার কিরণ বিকিরণ করে আমাদের সজীব করে তোল। আশ্বাস দাও বেঁচে থাকবার। শীতের আগমনে আমরা বিবর্ণ হতে চলেছি।”

সূর্য্যিমামা হয়তো সেই কাতর আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। বাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫৫ মাইল। যাওয়ার সময়কার দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি দেখছি। তাই ফেরত যাত্রাপথের বর্ণনা আর কি-ই বা লিখব। বেশ ক্লান্ত লাগছে। পরিচ্ছন্ন আবহাওয়া ফিলাডেলফিয়াতে । বেশ ঘুমঘুম পাচ্ছে। একটু ঘুমিয়ে নিই। আপাততঃ ডায়েরি লেখা বন্ধ। ঘড়িতে এখন ৩-৩০ বিকাল। ফিলাডেলফিয়ায় পৌঁছাবো ৪-৩০ । এতক্ষণ বাসের মধ্যে বসে ক্লান্তই বোধ করছি। যাই হোক ৪-৩৫ মিঃ ফিলাডেলফিয়ার গ্রে হাউন্ড বাস টার্মিনালে আবার এসে পৌছালাম । ওখান থেকে হেঁটে ইউনাইটেড ইঞ্জিনীয়ার্স মামার অফিসে গেলাম।

ক্রমশঃ


Post a Comment

0 Comments