দেশান্তরী -৩০
হিল্লোল রায়
শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২৮, ১৯৭৬
ফার্গাস ফলস, মিনেসোটা
আজ ঘুম থেকে উঠেছি সকাল ৭-৩০। চারিদিকে কুয়াশা জমে আছে। তবে বাইরের দৃশ্য বেশ ভালই লাগছে। মিঃ বব ওয়ালিন(আমেরিকান) এর এ্যাপার্টমেন্টে গতকাল রাত কাটিয়েছি। ওর বাড়ীতে আমার ডিনারের নেমন্তন্ন ছিল। নিমন্ত্রিতদের মধ্যে কানাডিয়ান দম্পতিও ছিলেন। ডিনারে ছিলঃ কোল্ড ড্রিংক্স, জুস, কেক ইত্যাদি। খুব উপভোগ্য হয়েছিল। রাত্রে সবার সংগেই গল্পগুজব করে আমেরিকান পদ্ধতিতে “Good 'Night” জানিয়ে শুতে যাই রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। নতুন পরিবেশে, নতুন জায়গায় এসে ঘুমাতে বেশ মেহনত করতে হচ্ছিল। তবুও কখন ঘুমিয়েছি ঠিক নেই।
রাত কাটতেই শনিবারের সকাল। ব্রেকফাস্টে ছিল বেকন, ব্রেড, ড্রিংক্স, কফি। মিঃ ওয়ালিন নিজেই ব্রেকফাস্ট গুছিয়েছেন। খুব সুন্দর ভদ্রলোক। নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি কোথায় এলাম। যাই হোক সকাল ৯-০৫ নাগাদ বব ও আমি ওর এ্যাপার্টমেনট (৬১১ W . Alcott Avenue, Fergus Falls, MinnesoTa 56537) থেকে বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্যস্থল YMCA অফিস। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম। বিভিন্ন দেশের বন্ধুরাও জড়ো হচ্ছেন ওখানে।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই প্রোগ্রাম শুরু হল। YMCA Director Mr. Clifford Maxwell উদ্বোধন করলেন। খুব সুন্দর হাসিখুশী ভদ্রলোক। এই অনুষ্ঠানে পৃ্থিবীর বিভিন্ন দেশেরবিশেষ করে চিলি, ব্রাজিল, পেরু, লেবানন, জাপান, গ্রীস, নরওয়ে, চিন , ভারত, পাকিস্থান, ইথিওপিয়া, ঘানা, ফ্র্যান্স, কানাডা, হংকং ছাত্রেরা (কেউ কেউ বা সস্ত্রীক) উপস্থিত হয়েছেন। আমেরিকানদের সাদা চামড়ার সংগে মিল খাওয়ানো বেশ কষ্টকর। তাই স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল বিভিন্ন দেশের আবহাওয়ার প্রভাব মানুষের উপর কতখানি ছাপ ফেলেছে।
মিঃ ম্যাক্সওয়েল এর উদবোধনী জাতীয় সংগীত শেষ হবার পর প্রোগ্রাম স্থির করবার মহড়া শুরু হল। জর্ডনের জনৈক ছাত্র মিঃ সায়ীদ আয়ুব Jordon Jokes শোনাবে বলে স্থির হল। মীঃ ম্যাক্সওয়েল কাগজ় কলম নিয়ে প্রস্তুত। পাকিস্থানী ছাত্র মিঃ মুহম্মদ আশরাফ (বর্ত্তমানে আমার স্কুলে Industrial Engineering এ M.S. করছেন)। সস্ত্রীক তার দেশীয় ভাষায় গান শোনাবে । এর পরের পালা আমার । সবাইকে অংশ গ্রহণ করতেই হবে। বিরাট হলঘর ভর্তি শ্রোতার সামনে গিয়ে আমাকে যাই হোক একটা কিছু করতে হবে। জীবনে কোন দিন এই ধরনের কাজ করি নি। কি করব না করব ভাবছি। রবীন্দ্রসংগীত শোনাবো ঠিক করলাম...
বড় আশা করে এসেছি গো......কাছে ডেকে লও
ফিরাও না......
মিঃ ম্যাক্সওয়েল প্রোগ্র্যাম স্থির করতেই ব্যস্ত। কেউ কেউ বা সলজ্জভাবে এড়িয়ে যেতে চাইলেন। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল নাছোড়বান্দা। কিছু করতেই হবে। অন্ততঃপক্ষে সশরীরে মাইকের সামনে উপস্থিত হয়ে নিজের সম্পর্কে, দেশের সম্পর্কে ইত্যাদি... ইত্যাদি বলতে হবে।
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আজকের কর্মসূচী স্থির হয়ে গেল। এরপর সবাই হল ছেড়ে বাস্কেটবল, ভলিবল, বিলিয়ার্ড ইত্যাদি খেলায় মগ্ন হলেন। কেউ কেউ বা স্থানীয় পরিবেশ দর্শনে বেরিয়ে পড়লেন। আমি আজকের এই আনন্দোৎসবে এত আনন্দ পাচ্ছি যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। দেশের থেকে এখন সাড়ে দেড় হাজার মাইল দূরত্বে অবস্থান করছি বলে মনেই হচ্ছে না। আজকের এই আনন্দ ভীষণ আনন্দ।
দেশে থাকতে কোনদিন এ ধরণের সুযোগের মুখোমুখী হইনি। আজ সু্যোগ পেয়েছি কাজেই সদবাবহার অবশ্যই করব। সবাই মিলেমিশে আজ একাকার, সাদা-কালো চামড়ার পাশাপাশি অবস্থান। আজকের এই আয়োজনকে স্মরণে রাখবার জন্যই এই ডায়েরির শেষ দিকে autograph নিয়েছি। অনেকেই অবশ্য বাদ পড়ে গিয়েছেন। যাই হোক, সত্যি আনন্দ পাচ্ছি। ভলিবল, বিলিয়ার্ড খেল্লাম দুপুর ১টা পর্য্যন্ত । এরপর লাঞ্চ। পট্যাটো চিপ্স, দুধ, কফি, স্যান্ডুইচ, ডেসার্ট, কেক, পুডিং-দিয়েই ভরপেট লাঞ্চ সেরে নিলাম। স্থানীয় অনেক ছেলেই এসেছে। আমাদের উৎসাহ যোগাতে। সত্যিই তাঁরা অত্যুৎসাহী।
🍂আজ মনে হচ্ছে যেন চারিদিকে আনন্দের জোয়ার। সবাই সেই আনন্দ জোয়ারের অবগাহনে উৎসুক। দুপুর ১-৩০ নাগাদ লাঞ্চ সেরে নিলাম সবাই। এরপর চল্লাম সুইমিং পুলে। স্থানীয় ছেলে মিঃ রণ ক্লার্ক ও তাঁর স্ত্রী জুডি(JUDI) এসেছে তার গাড়ী নিয়ে আমাদের সুইমিং পুলে নিয়ে যাবে বলে। আমি ও আমার বন্ধু Nadir Jal Billimoria(মুম্বাই থেকে আগত) (বর্ত্তমানে Industrial Engineering এ M.S. করছেন আমার স্কুলে।) মিঃ ক্লার্কের গাড়ীতে চললাম সুইমিং পুলে। জীবনে কোনদিন সাঁতার কাটি নি। সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে যাওয়া আমার এই প্রথম অভিজ্ঞতা। জামাকাপড় খুলে শুধু 'সুইম ট্রাঙ্ক ' পরে সুইমিং পুলে নামলাম বেলা দুটোর কাছাকাছি। মিঃ ক্লার্কের স্ত্রী জুডি সাঁতার কাটতে খুবই ভালবাসে। কিন্তু বর্তমানে বহুলাকাঙ্ক্ষিত শিশু ওর দেহাভ্যন্তরে অবস্থান করায় সাঁতারে অংশগ্রহণ করতে রাজী হননি। তবে গ্যালারী থেকে আমাদের সাঁতার কাটায় খুব উৎসাহ দিচ্ছিলেন। আমরাও সবাই উৎসাহী। একটা কথা লিখতে ভুলে গিয়েছি। সুইমিং পুলে নামবার আগে “স্টীম বাথ নিতে হয়। তাই খুব তাড়াতাড়ি স্টীম বাথ নিয়ে নিলাম। সুইমিং পুল থেকে বে্রিয়ে আবার স্টীম বাথ নিয়ে শরীরটাকে শুকিয়ে নিচ্ছি।
YMCA বিল্ডিং এ ফিরলাম দুপুর ৪টার কাছাকাছি। মিঃ ক্লার্ক তার নিজের গাড়ী করে আমাদের পৌঁছে দিলেন। মিঃ ক্লার্ক-কে 'বাই বাই' জানিয়ে YMCA অডিটোরিয়ামে ঢুকলাম। বন্ধুবান্ধবদের সাথে গল্প করছি।
বেলা ৪-১৫ নাগাদ আমার হোস্ট ফ্যামিলি থেকে মিঃ বব ওয়ালিন এসেছেন আমাকে নিতে। বিভিন্ন দেশের ছাত্ররা তাদের দেশীয় খাবার রান্না করবে তাদের নিজের নিজের হোস্ট ফ্যামিলিতে। মিঃ বব ওয়ালিনের গাড়ীতে করে ওর বাড়ীর দিকে রওনা হলাম। আমি কিন্তু রাঁধুনী নই। দেশে থাকতে কস্মিনকালেও রান্না করি নি। কিন্তু আমেরিকায় এসে হঠাত রান্না শিখে ফেলেছি। রসগোল্লা তৈরীর পদ্ধতি সেজমামা সূত্রে লব্ধ। তাই সেজমামা ফিয়ালডেলফিয়া শহরে এই রসগোল্লা সূত্রে খুবই সুনাম কিনেছেন। আর আমার তল্লাটে অর্থাৎ ফার্গো , নর্থ ডাকোটায় আমিই একমাত্র রসগোল্লা তৈরী করলাম। বিকাল ৪-৩০ থেকে শুরু হল আমার প্রস্তুতি। হাতে সময় খুবই কম। কারণ ঠিক ৬টার সময় এই খাবার YMCA Building এ পৌঁছানো চাই। মিঃ ওয়ালিন (বয়স ৫০ এর কাছাকাছি) খুবই উৎসাহী। ওনার নিজের প্রেসার কুকার কাজ করছিল না। তাই প্রতিবেশী মিঃ জন এরিক্সনের কাছ থেকে উনি প্রেসার কুকার ধার করে নিয়ে এসেছেন। প্রতি পদঙ্কেপ লক্ষ্য করছিলেন মিঃ ওয়ালিন। বিকাল ৫-৫০ নাগাদ রসগোল্লা তৈ্রী করে ফেললাম। সংখ্যায় ৪৫ এর কাছাকাছি । তারপর একটা রসগোল্লা রেখে দিলেন মিঃ ওয়ালিন ওর স্ত্রী ANNAMAE র জন্য। মিঃ ওয়ালিন ও আমি বেরিয়ে পড়লাম খাবার নিয়ে YMCA-এর দিকে সন্ধ্যা ৬টার কাছাকাছি। এখন একটা ঝোড়ো হাওয়া বইছে । স্নো ও পড়ছে মাঝে মাঝে।
বিভিন্ন দেশীয় লোক ও বিভিন্ন দেশীয় খাবার জড়ো হয়েছে YMCA তে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ডিনার শুরু হল। সবার মুখেই হাসি, হৈ চৈ । ভীষণ ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে পৃথিবীতে যখন কোন দুঃখ কষ্ট নেই। সবখানেতে আনন্দ। সত্যি কথা বলতে কি দেশে থাকতে এ ধরণের সুযোগ ও আনন্দ পাই নি। তাই আনন্দের আতিশয্যটা পাচ্ছি পুরোমাত্রায়। কোনটা কোন দেশের খাবার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না কারণ প্রত্যেক খাবারের উপর লেবেল দেওয়া ছিল। আজ কোনও ভেদাভেদ নেই বলেই মনে হচ্ছে। সাদা-কালো চামড়ার লোক পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া করছে। গল্পগুজব হৈ চৈ তে সবাই মত্ত। সন্ধ্যা ৭-১৫ নাগাদ ডিনার শেষ হল। রসগোল্লা খেয়ে সবাই প্রশংসা করছেন। কেউ কেউ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইছেন। মিঃ ওয়ালিন আমার কাছ থেকে পদ্ধতি জেনে নিয়েছেন। কাজেই ভবিষ্যতে উনিই সবাইকে পদ্ধতি শেখাবেন বলে স্থির হল।
ডিনার শেষ হতেই বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন সন্ধ্যা ৭-৩০ থেকে। MR. WESLEY WALACE (President, Fergus Falls, Community College & President, Rotary Club) অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন আমেরিকা ও কানাডার জাতীয় সংগীত দিয়ে। রোটারী ক্লাবের বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরলেন। মঞ্চে রয়েছে বিভিন্ন রঙের মোমবাতি এবং পৃ্থিবীর সব দেশের জাতীয় পতাকা ও রোটারী ক্লাবের সূচক সংকেত। মিঃ ওয়ালেস এর বক্তৃতা শেষ হলেই YMCA এর ডিরেক্টর MR. CLIFFORD MAXWELL বিচিত্রানুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারীদের নাম ডাকতে শুরু করলেন। প্রথমে জর্ডনের ছাত্র মিঃ সায়ীদ আয়ুব তার দেশীয় Jokes (চুটকী) শোনালেন। করতালিতে চারিদিকে মুখরিত। শ্রোতৃবৃন্দের মধ্যে আমেরিকান ছাড়া ও বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোক ও তাদের স্ত্রী ছেলে-মেয়ে রয়েছেন। সবাই উৎসাহ দিচ্ছেন। এরপর পাকিস্তানের ছাত্র মিঃ মুহাম্মদ আশরফ তার দেশীয় ভাষায় প্রেম সংগীত (Love Song) গাইলেন। একটা কথা লিখতে ভুলে গিয়েছি। মিঃ ওয়ালেসের বক্তৃতা শেষ হবার পর বিভিন্ন হোস্ট ফ্যামিলি তাদের বিদেশী অতিথি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিলেন। মিঃ বব ওয়ালিন আমার পরিচয় দিতে গিয়ে বল্লেনঃ
-I have got a distinguished visitor Mr. Hillol Ray from India . He had his bachelor's degree in Civil Engineering and is now doing M.S. in Environmental Engineering at North Dakota State University..
একে একে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হল। ভীষণ আনন্দ হচ্ছিল। দেশে থাকতে কেউ তো এমন আন্তরিকভাবে আদর করে পরিচয় করিয়ে দেয় নি। আজ সেই সমস্ত কিছুই পাচ্ছি বিদেশে এসে, আমেরিকানরা আমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন...।
মুহাম্মদ আশরফ-এর গান শেষ হবার পর আমার ডাক পড়লো। জীবনে কোনদিন বিরাট হলঘরে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিই নি। গান গাওয়া তো দূরের কথা। উৎসাহের ঝোঁকে গান গাইব ঠিক করেছি। এই প্রসঙ্গে একটা মজার ঘটনা ঘটল। সেটা বলি সংক্ষেপে......
আমার দুজন স্বদেশী বন্ধু (মুম্বাই)থেকে Mr. Nadir Jal Billimoria এবং Srikant Tamhane (Mechanical Engineering)। ওরা কিছুই জানে না অর্থাৎ জীবনে বক্তৃতা দেয় নি কিংবা গান, চুটকী ইত্যাদিতে অভ্যস্ত নয়। কিন্তু YMCA Director Mr. Clifford Maxwell নাছোড়বান্দা, সবাইকেই কিছু না কিছুতে অংশগ্রহণ করতেই হবে। তাই ওরা দুজন হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছে শেষ মুহূর্ত্তে আমার কাছে।
শেষ পর্য্যন্ত স্থির হল ওরা দুজন আমার সংগে গান গাইবে। অর্থাৎ Chorus । আমি নিজেই খুব ঘাবড়ে যাচ্ছি। হলভর্ত্তি জনতার সামনে গিয়ে কি করে গান গাইব । ব্যাপারটা আরোও মজার হল এই কারণে, ওরা বাংলা ভাষাই জানে না। কিন্তু আমি গাইব রবীন্দ্রসংগীত। কথা প্রসংগে আমি বলে ফেলেছিলাম যে ভারবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের লোক বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে। তাই কারো কারো মনে সন্দেহ হচ্ছিল আমার বাংলা ভাষার সংগে নাদির ও শ্রীকান্ত এর পরিচিতি আছে কিনা এবং থাকলে কতখানি। যাই হোক আমি গান শুরু করলাম ...প্রথমে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে একটু সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়ে ...তারপর আমি যে গান গাইছি তার সম্পর্কে ইরাজীতে অনুবাদ করলাম। প্রথমে গাইছি “পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে”। নাদির ও শ্রীকান্ত আমার দুপাশে দাঁড়িয়ে। ওরা আমার ভাষা বোঝে না । নাদির আমার সংগে সংগে মুখ নাড়ছে, শ্রীকান্ত মিনিটখানেক পরে থেমে গিয়েছে। বেশ ঘাবড়ে যাচ্ছি প্রথম গান গাইতে গিয়ে। তা ছাড়া গানটার সম্পূর্ণ লাইন আমার মনে নেই। তাই অন্য গানের কলির সংগে মনে পড়া আধুনিক গান থেকে দুচার লাইন জুড়ে দিয়ে গান শেষ করলাম। চারিদিকে করতালি ধ্বনি।
-One more.....
মনে মনে রবিঠাকুরের কাছে ক্ষমা চেয়েনিলাম নিজের অজ্ঞতার জন্য ...। বেশ উৎসাহ পেলাম। সবশুদ্ধ তিনখানা গান করলাম। সব গুলোই অবশ্য জোড়াতালি দেওয়া। দ্বিতীয় গান---”তুমি এলে অনেকদিনের পরে যেন বৃষ্টি এল...এই রাত তোমার আমার” এবং তৃ্তীয় গান......তুমি কেমন করে গান কর হে গুণী......সেখানেও একই ফর্মুলা ব্যবহার করলাম।
দর্শকেরা ছবি তুলছেন দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠছে। মঞ্চ থেকে নামছি একের পর এক ফ্লাস লাইট জ্বলে উঠছে। আনন্দের জোয়ারে আমি তখন। এরপর আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, পেরু ইত্যাদি দেশের সংগীত , গান চললো। রাত ৯-৩০ নাগাদ বিচিত্রানুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি। এরপর আমার একটা অনুরোধ শ্রোতৃবৃন্দ-এর কাছে রাখলাম।
সেই অনুরোধে বলেছিলাম...
ক্রমশ
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করুন। 👇
0 Comments