আমার অনুভূতিরা -পর্ব :৪
সুবর্ণা নাগ
অনুরোধের লিপি
আজ হঠাৎ বৃষ্টি নামতে পারে,
ছাতা নিও।
একলা যদি লাগে , একটু
কথা নিও।
কত ব্যস্ততার মাঝে, খানিক
জিরিয়ে নিও।
সব শেষে নিজের কিছু
কুড়িয়ে নিও।
জমাট বাঁধা অভিমানদের
ভাসিয়ে দিও।
রাগ,অবসাদ মিটিয়ে নিয়ে
কাঁদিয়ে দিও।
নতুন নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে
হারিয়ে যেও।
না হয় তখন তিক্ত কিছু
ধোঁয়াই খেও।
ইচ্ছে গুলো বাঁচিয়ে রাখতে
সময় দিও।
সেই সব কিছুকে আগলে রেখো
যেটাই প্রিয়।।
অন্তে- অন্তরে
মরণ - পরম আলোকবর্তিকা।
মায়ার কোলে ঘুম পাড়িয়ে রাখো,
নিশ্চিন্ত শিশুর মতো ঘুমিয়ে থাকা
মুখের দিকে দেখো।
মৃত্যু --
তুমি চরম সত্য লিখন।
মৃতদেহে রাখোনা প্রত্যাশা,
না থাকে ক্ষোভ।
তবুও শ্বাসহীন বুকে থাকে,
শালুক মালার লোভ।
দেশ -দেশান্তর
যান্ত্রিকতা মৃত্যুর অন্য রূপ।
মৃত্যু যদি সত্য হয়, তবে
যন্ত্র- দেহ, মৃত্যু- লাশ ।
বস্তুবাদ এক প্রাণহীন যাপন
কি জানি, সব টুকু পাওয়া
না কি সর্বনাশ?
স্বপ্নহীনতা এক মৃত্যুর নাম।
মৃত্যু যদি মুক্তি হয়,
স্বপ্ন ও মুক্তি তবে আলাদা দেশ।
অবিশ্বাসে মনের মরণ,
কি জানি, শেষের শুরু
না কি শুরুর শেষ?
স্থাবর
যেদিন তুমি নদীর ঢেউ দেখতে দেখতে বলেছিলে,
'তুমি এমনি করেই বও।'
আর আমি শুনেছিলাম,
'তুমি আর সবার মতো নও'।
যখন তুমি নব্বই দশকের
প্রেমের গান শুনতে শুনতে বলেছিলে,
'তুমিও গুনগুন করো সুধা '।
আমি ভেবেছিলাম ,
ওই গান আমার জন্যই লেখা
হয়েছিল বোধহয়
কলেজের অবসরে।
যতবার তুমি মাঠে শুয়ে তারাদের দেখেছো,
আর বলেছো
'ওগুলো তারা নয়
তোমার চুলের কাঁচপোকা ক্লিপ '।
আমি কি বুঝেছিলাম -
তুমি আমার কাছে গভীর রাতের আবেগ চেয়েছো।
খুব বৃষ্টির পর,
আকাশ স্বচ্ছ হতেই দেখি,
তুমি রাজা দুশমন্তের মতো
ভুলেছো সব।
আর আমার আঙ্গুলও শূন্য।
ভুলে গেছ,
অপলক বিস্ময় মাখা বিশ্বাসে চেয়েছিলো দুটি চোখ।
আজ আমার হাত হাতরায়
স্মৃতির গীতবিতান।
আমার উত্থান নেই,
নেই পতন,
অক্ষুন্ন অবস্থান।।
মর্যাদা
কথা দিয়েছিলাম তোকে,
তোর উইশ লিস্টের একটা উইশও বাকি রাখবো না।
বড়ো অদ্ভুত ইচ্ছে গুলো তোর!
তোর সাধ ছিলো
রাতের কলকাতা দেখার,
গড়ের মাঠে নিঝুম রাতে চাঁদ দেখবি বলেছিলি ।
বহু দূরের যাত্রী জেনেও
আমার পান্থশালায় কাটিয়ে গেলি
পাক্কা একটা বছর।
আজ চলে যাচ্ছিস তোর গন্তব্যে -
সেই মেঘেদের দেশে।
'স্বর্গপথ' গাড়িটার ড্রাইভারকে বললাম,
'আজ স্টেয়ারিং-এ আমি বসি?
পিছনের সিটে বসে
ওর 'লং ড্রাইভে ' যাওয়ার
ইচ্ছেটা পূরণ করি অন্তত'।।
0 Comments