গুচ্ছ কবিতা / তন্দ্রিমা ঘোষ

গুচ্ছ কবিতা 
তন্দ্রিমা ঘোষ

আলোর প্রাঙ্গনে

খোদাই পাথরে পাথরে দেবতার নাম
সহস্রদল পদ্ম,শঙ্খের সুর
জেগে ওঠে দ্বার,জেগে ওঠে 
শুধু অসীম আনন্দের আহ্বান
তাকিয়ে আমার দিকে প্রসন্ন বিগ্ৰহ
খুঁজতে হয় না জল স্থল অন্তরীক্ষ।

সমস্ত যাত্রার শেষ,সমস্ত ক্লান্তিরও 
ভেসে যেতে যেতে আলোর প্রাঙ্গনে
ঘোষিত অনন্ত উৎসব,ঘোষিত হয়
দিগন্তে দিগন্তে বাজে মন্ত্রের উচ্চারন
পবিত্র আগুনের মাঝে হারিয়ে যাই আমি।


প্রথম থেকে

একবার প্রথম থেকে শুরু করলে ভালো হতো 
পাহাড়ের জায়গায় পাহাড়,সমুদ্রের জায়গায়  সমুদ্র
আজ আর নেই অরন্যের জায়গায় অরন্য
চন্দ্রমল্লিকা গাছে কি ফুল ফুটে আছে?
নাম জানা নেই,পরিচয়ও
তোমার গানের স্বরলিপি সম্পূর্ণ ভুল
সমস্ত কমা,হাইফেন,সেমিকোলন কিংবা পূর্ণছেদ
ভোলা হল না আর কোনদিনই।

একদম প্রথম থেকে শুরু করলে ভালো হতো
হাসির জায়গায় হাসি,কান্নার জায়গায় কান্না
কলহের জায়গায় কলহ ছিল না কখনও।
বৃক্ষ হয়ে গেছি আজ
জীর্ণ পাতা ঝরে ঝরে স্তুপ হয়ে চারপাশে।
শব্দের বানান লিখতে ভুল হয়ে যাচ্ছে বার বার
পরিবর্তিত হচ্ছে ঋতু,পরিবর্তিত সূর্যাস্ত
ভিড়ের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে মানুষ মানুষের মধ্যে ভিড়
অনেক দূরে দাঁড়িয়ে প্রমান খুঁজছি আমি।
🍂

আজগুবি
 
আকাশকুসুম কী সমস্ত লেখা!
জানালায় সূর্যাস্তের মেঘের রঙ
এখুনি শাঁখ বেজে উঠবে ঘরে ঘরে।
প্রতিটি নিয়ম একই ভাবে মেনে চলা 
তুমি আলো জ্বালতে নাই পারো
দিনের শেষে খাতা যেন ভর্তি থাকে।
সবুজ আলো,নীল আলো,হলুদ আলো
কোনো নাম লেখা নেই আকাশের গায়ে 
শাখা প্রশাখা থাকে না সমস্ত গাছে  
সোজা লম্বা উঠে মাথার পাতা
শিরদাঁড়া সোজা কথা কটা লোকে বলে!
একদম ভালো নয় আজগুবি চলা!



যাপনকথা

প্রতিদিনই শুনতে পাই একঘেয়ে যান্ত্রিক ধারাপাত
লুকোচুরি খেলছে আকাশ আবাসনের ফাঁকে
উধাও হয়েছে গন্ধ ভিজে মাটির
এখানে অবসর নেই একটুও।
ছুটন্ত বেপরোয়া জীবন হাতছানি দেয়
কাঁপে না হৃদয় দেখি শেষ নাটকেও।

কেউ কেউ আবির মাখিয়ে দেয় সকলের গায়ে 
ভেঙে-চুরে পথ রোদে-জলে
অতিক্রান্ত দিন মাস বছরের হিসেব ।
কখনও দেখেছি জোয়ারের জল
পূর্ণিমায় বদলে যায় সমুদ্রের রং
অনেক গল্প হলো পাখিদের ।
বার বার তাকায় মানুষ সন্তানের মুখে
এবার ফিরতেই হবে নীড়ে,আর কিছু নয়।

Post a Comment

0 Comments