জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /রূপকুমার কর্মকার

গুচ্ছ কবিতা 
রূপকুমার কর্মকার

এক যে আছে দেশ

এক যে আছে দেশ 
তার ভারতবর্ষ নাম
চাইলেই তুমি স্বপ্ন কিনবে 
 ......ভর্তি করা খাম

সবকিছুই দেদার বিক্রি
ধরতে হবে( ঠিক) লোক
বিক্রি ..খাদ্য পণ্য চাকরি
বিক্রি শিশু নারী.. শোক

নিমিষেই হাসিল কাজ
কিছু দিলেই ট্যাকে গুঁজে
সৌভাগ্য আসবে ধেয়ে
তোমায় খুঁজে খুঁজে

হাসপাতালে দালাল চক্র
পুজো দিতেও ঘুষ
মাথা খানা আগেই বিক্রি
...শুধু নিজের ফুসফুস

রোদ জলে যে ফসল ফলায়
সে থাকে  অর্ধাহারে
জিএসটি ঋণের বোঝা
মৃত্যু কড়া নাড়ে

প্রধানমন্ত্রী সেনা সাজে
আর মুখ্যমন্ত্রী কবি
চাইলেই তুমি দেখতে পাবে
হরেক রকম ছবি

মিথ্যে দিয়ে মিথ্যে ঢাকে
পাপ ঢাকা হয় পাপে
দিন ফুরোলে সবই মুকুব
আইন কানুনের চাপে

মাতৃরূপে নারীর পূজা
ধর্ষিতা সে  নিজে
চায়ের কাপে হালকা চর্চা 
মুচমুচে দহলিজে

রোগীর পথ্য খুবই সহজ
গরুর গোবর ...চোনা 
গরুর পুজোও মাতৃরূপে
গরুর দুধে সোনা

ধর্ম সেথা  ষোলআনায়
পাকাক যতই ঘোঁট
আকাশেতে শকুন ওরে
আসলে পরে ভোট
🍂

যাদবপুরে স্বপ্ন শেষ
(সাম্প্রতিক কালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় হোস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদ্বীপের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে লেখা)

মফস্বল... শিক্ষা নিতে আসা
দুচোখ জুড়ে স্বপ্নে ভরপুর
বাতাসে শুধু রক্ত বাষ্প ভাসে
রক্ত পাঁকে আটকে যাদবপুর

শহর কাঁদে স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যু
যাদবপুর ? নাকি মৃত্যু ফাঁদ?
কারা এমন স্বপ্ন ভেঙে ফেলে?
গল্প জানে হোস্টেলের ওই ছাদ

কি চায়  এরা ?সর্বনাশ?
শিক্ষা তবে নয়?
সে তো তাদের বন্ধু ভাই
কি করে এমন হয়!

কার কি এলো!কার কি গেলো?
কার কি গেল ভেসে?
সোহাগ গেল  স্বপ্ন গেল
মধ্য বয়সে এসে

সে ছিল তাদের সবকিছু
সে ছিল বুকের বল
সে শুধু আজ স্মৃতির পাহাড়
......শুকনো চোখের জল


আয়না

হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাই
নিজেরই পোতা গোঁজ
ডাকলেই তুমি আমায় পাও
সস্তা ভাবো রোজ

সস্তা ভাবো বৃষ্টি মানুষ
সস্তা কবির চোখ
"সব কিছুতেই আদিখ্যেতা
বড্ড আহাম্মক"

লাঙ্গল ফলায় আগুন জ্বলে
বন্ধ্যা বড় জমি
বীজ ছড়াই,ফসল ফলাই
অন্তিমে সংযমী

লুকিয়ে ফেলো স্রোত
লুকাও মায়া নদী
আড়াল করো চোখ
সব ধরতে পারি যদি

শব্দ   কিছু শব্দ
শুধু শব্দ লিখে রাখি
শব্দ   কিছু  শব্দ
তবু শব্দ দিয়ে ঢাকি

গুলিয়ে ফেলি প্রেম
আর সঘন সম্পাতে
দিনভর আমি সহ্য করি
.......আয়না ভাঙ্গি রাতে

Post a Comment

0 Comments