বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -- ৩৭
কাঁদাকাঁদি বুড়ো
ভাস্করব্রত পতি
ভুল করেও কভু যেওনা চলে যেথায় কাঁদনগ্রাম!
সেথায় থাকে কাঁদুনে বুড়ো সবাই জানে নাম!!
কাতুকুতু বুড়োর নাম শুনেছো? সে হয় এরই ভাই!
কাঁদায় কেবল সকাল বিকেল, গিলিয়ে ঘুঁটের ছাই!!
আজব যে তাঁর কাণ্ডরে ভাই, আজব রকম কথা!
নেইকো যে তার অর্থ কিছুই, নেইকো মুণ্ডু মাথা!!
আগুন জ্বেলে লঙ্কা পোড়ায়, ঝাঁঝ লাগে যেই নাকে!
হাজার খানেক হেঁচেই হাঁচি, জল পড়ে দুই চোখে!!
তবুও যদি সেটাই করে, তাও থাকা যায় সয়ে!
চোখের তারায় ড্রপিং করে পেঁয়াজের রস লয়ে!!
অন্ধ হয়ে তোমার তখন, বন্ধ চোখের পাতা!
চেঁচাও যদি 'গেলুম বলে', মারবে মাথায় ছাতা!!
কাঁদতে হবে তোমায় তখন, কাঁদার যত ধরন!
যেমন ধরো -- চিকন মিহি, কিংবা শিশুর মতন!!
তবুও তুমি ছাড় পাবেনা, বাপরে সে কি জ্বালা!
হাতে পায়ে দেয় নুনের ছিটে, কেটেই ফালাফালা!!
কাঁদোই যদি তখন তুমি, বিকট আওয়াজ তুলে!
খাওয়াবে তোমায় গুবরেপোকা, তেঁতুল জলে গুলে!!
কাঁদার চোটে যেইনা তুমি, বলবে, 'করো ক্ষমা'!
আসবোনা আর তোমার গ্রামে, দিচ্ছি হলফনামা!!
তখন তোমায় পাঠিয়ে দেবে, কাতু বুড়োর ঘরে!
হাতে পায়ে দড়ি বেঁধে, সপ্তসাগর পারে!!
কাতুকুতু বুড়ো
সুকুমার রায়
আর যেখানে যাও না রে ভাই সপ্তসাগর পার,
কাতুকুতু বুড়োর কাছে যেও না খবরদার!
সর্বনেশে বৃদ্ধ সে ভাই যেও না তার বাড়ি-
কাতুকুতুর কুলপি খেয়ে ছিঁড়বে পেটের নাড়ি।
কোথায় বাড়ি কেউ জানে না, কোন্ সড়কের মোড়ে,
একলা পেলে জোর ক’রে ভাই গল্প শোনায় প’ড়ে।
বিদ্ঘুটে তার গল্পগুলো না জানি কোন দেশী,
শুনলে পরে হাসির চেয়ে কান্না আসে বেশি।
না আছে তার মুণ্ডু মাথা না আছে তার মানে,
তবুও তোমায় হাসতে হবে তাকিয়ে বুড়োর পানে।
কেবল যদি গল্প বলে তাও থাকা যায় সয়ে,
গায়ের উপর সুড়সুড়ি দেয় লম্বা পালক লয়ে।
কেবল বলে, “হোঃ হোঃ হোঃ, কেষ্টদাসের পিসি-
বেচ্ত খালি কুমড়ো কচু হাঁসের ডিম আর তিসি।
ডিমগুলো সব লম্বা মতন, কুমড়োগুলো বাঁকা,
কচুর গায়ে রঙ‐বেরঙের আল্পনা সব আঁকা।
অষ্ট প্রহর গাইত পিসি আওয়াজ করে মিহি,
ম্যাও ম্যাও ম্যাও বাকুম বাকুম ভৌ ভৌ ভৌ চীঁহি।”
এই না বলে কুটুত্ ক’রে চিম্টি কাটে ঘাড়ে,
খ্যাংরা মতন আঙুল দিয়ে খোঁচায় পাঁজর হাড়ে।
তোমায় দিয়ে সুড়সুড়ি সে আপনি লুটোপুটি,
0 Comments