কয়েকটি রম্য কবিতা- ২২ / শুভশ্রী রায়
পথ হারাল রাজকুমার
দুধ নদী, সুজির পার
পথ হারাল রাজকুমার!
মধুর বন, গহন সবুজ
সেথা ঢুকে পড়ল অবুঝ।
বলল- আমি মৌলি হ'ব,
প্রাসাদে আর কেন রব?
সবুজ আমায় টানছে ভারি,
বনেই গড়ব মাটির বাড়ী।
খবর পেয়ে এল বাবা-মা,
ছেলে বলল- আমি যাব না,
মন লাগে না রাজ-কাজে!
তোমরা এসো মাঝেমাঝে।
সেই থেকে গ্রাম রাজপুর
প্রাসাদ থেকে অনেক দূর,
সবুজ পেয়ে খুশি কুমার;
কোন কুমার? উপকথার।
কেমন লাগল- রূপকথা?
জিজ্ঞাসা করাই প্রথা!
জানি ভালো লাগবেই,
মন মায়াডাক ডাকবেই।
দুধ নদী সুজির পার,
পথ হারাল রাজকুমার।
গহন বন, মায়া শ্যামল,
রুপকথার চির আমল!
বাদলসঙ্গতে
আকাশের কান্না বন্ধ থাকছে না আজ একটুও,
ঝরেছে না থেমে কখনো হাল্কা কখনো দ্রুত লয়ে,
মেঘেদের কাজ কী, নিজেদের কষ্ট গলিয়ে দেওয়া;
জল জমুক নিচে, তাদের মনখারাপ তো যাচ্ছে বয়ে!
বর্ষা এমনভাবে ঘুরে ফিরে চলে আসে বছর বছর,
কান্নাকে বৃষ্টিতে সাজায় মেঘেরা সজল অন্য বেশে,
বাদবাকি সময়ে তারা হাসিখুশি, হাল্কা ভেলার মতো;
বাদলসঙ্গতে জলের আদরে মাটি ওঠে সবুজ হেসে।
সোহম ও প্রজাপতি
ভারি হাল্কা, চঞ্চল অপূর্ব এক চিরাচরিত প্রজাপতি
আমাদের সাত বছরের সোহম সরকারের কী এমন করেছিল ক্ষতি?
ঘটনা ভেঙে বলি, কোনও এক দিন সকালে
শিশু অঙ্ক করছিল, ঘরে ঢুকে পড়েছিল প্রজাপতি নিজের খেয়ালে।
কমলা-হলুদ ডোরা ডানায়, কিনারে সাদাকালো বুটি,
সোহমের মনে হ'ল আপাতত অঙ্ক ফেলে প্রজাপতিটার পেছনে ছুটি,
সেই সময় সে করছিল একখানি সহজ বিয়োগ;
সেটাতে ভুল হয়ে গিয়েছিল, মনার্ক বাটারফ্লাই-কে দিয়ে মনোযোগ!
অ্যাকোয়ারিয়ামের পদ্য
যে মাছটা গনগনে লাল আর ভারি নম্র ও লাজুক,
আমার তো ইচ্ছা সেও রোজ সকালে দাঁত মাজুক!
যে হরিৎ মৎস্য কুটকুট করে কাটে গুল্ম জলজ,
তার কীর্তির একখানা ছবি তুলে রাখা খুবই সহজ।
কত কী যে করে বাহারী মাছগুলো কাঁচের ভেতর,
সারা দিন সাঁতার কাটে অক্লান্ত নিচ থেকে ওপর,
একটা বদরাগী নীল মাছ আবার গুন্ডা প্রকৃতির!
অন্য মাছগুলোকে লেজের ঝাপটায় করে অস্থির।
খিদের কুটুম
ওরে বড় আপন আমার খিদের কুটুম নিখাদ খাঁটি সোনা,
তোর আমার মাঝে দুঃখ আর ধৈর্যের অদৃশ্য জাল বোনা,
এ জাল চোখে না পড়লেও কাটানো অসম্ভব, জেনে রাখিস;
0 Comments