জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-৯৬/রোশেনারা খান

"একুশের সম্মান" তুলে দিচ্ছেন  বেলদার গঙ্গাধর এ্যাকাডেমির প্রাক্তন শিক্ষক যুগজিৎ নন্দ মহাশয়

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান

পর্ব  ৯৬

গতকাল মলয়বাবু নান্টু রায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিয়েছিলেন। লেখা নিয়েই কথা  হল।মলয়বাবু একজন কবি  এপারে বাড়ি হলেও ওপারেই ওনার পরিচিতি বেশি।  এই লেখালেখির জগতে পা রাখার আগে আমার ধারণা ছিল, সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের মানুষরা খুব উদার প্রকৃতির হন। কিন্তু পরবর্তী কালে উপলব্ধি করি এখানে ঈর্ষা, সঙ্কীর্ণতা আরও বেশি। আমি যে আনন্দবাজারে লিখি সেটা কেউ কেউ মেনে নিতে পারছেন না, তা বুঝতে পারলাম যেদিন অঞ্জন ব্যানারজি আমি লেখা পাঠাব কিনা জিজ্ঞেস করলে, বলেন, ‘এখন থাক’। এবং পরেও একই কথা    বলাতে আমার সন্দেহ হয়। কিন্তু উনি কিছুতেই স্বীকার করছিলেন না যে কেউ  কিছু বলেছে। তবে কিছুদিন পরে আমার লেখা আবার নিতে শুরু করেন এবং সেই মহান(?) সাংবাদিক নিজের অজান্তেই একদিন আমার কাছে ধরা পড়ে যান। তবে তাঁকে আমি আজও কিছু বুঝতে দিইনি।

    ২০২০ শেষ হতে আর কয়েকটা দিন বাকি আছে। আজ অখিলবন্ধু ফোন করে একটি কবিতা চাইতে তখুনি Wtat’s App এ কবিতা লিখে পাঠিয়ে দিয়ে ফোন করে জিজ্ঞেস করি, কেমন হয়েছে? ও বলে, ‘আপনার লেখার বিচার করব আমি? মরে জন্ম নিলেও সে ধৃষ্টতা হবে না’। ও নিজেও একজন কবি ও সঞ্চালক। এ ছাড়াও একুশে ফেব্রুয়ারি ‘একুশে’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে।

    ২০২০ শেষ হল আজ। কী ভয়ঙ্করভাবে কাটল বছরটা। আমাকে তো শূন্য করে দিয়ে গেল। জানিনা সামনে কী দিন অপেক্ষা করছে।  

    আজ  তো শুভেচ্ছার ছড়াছড়ি। যদিও আমার মনকে এসব স্পর্শ করেনা। তবুও দুপুরে সাহবাজের কার বাজারের পার্টিতে যেতে হয়েছিল। অনন্যার আমন্ত্রনে সন্ধ্যায় কলেজ মাঠে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গেছলাম রানীকে সঙ্গে নিয়ে। কিছুটা সময় অন্যভাবে কাটালাম। অনেকের সঙ্গে দেখা হল, কেউ প্রণাম করল, কেউ জড়িয়ে ধরল। অনন্যার অনুরোধে পরেরদিন এবং তার পরেরদিন ৩  জানুয়ারিও গেছলাম। ওইদিন পার্থর(পার্থসারথি শ্যাম) স্মরণসভা ছিল, সেখানে   যেতেই হত। পার্থ একাধারে ফিল্ম মেকার, কবি ও সম্পাদক ছিল। আমাদের  সম্পর্কটাও ছিল দিদি ভাইয়ের মত। ওরও দুটি কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে গেলে শেষ চিকিৎসা ডায়ালিসিস শুরু হয়। মেদিনীপুর নার্সিংহমে খান সাহেবের ও পার্থর ডায়ালিসিস হত। দুজনে একই টোটোতে যাতায়াত করতেন। খান সাহেব চলে যাওয়ার কয়েকমাস পরে  কোভিডে আক্রান্ত হলে ওকে শালবনির কোভিড হাসপাতালে অ্যাডমিট করা হয়। পার্থ ওখানে পরের দিনই মারা যায়।
বসন্ত উৎসবে জেলাশাসক রেশমি কমল ও আমরা আবির খেলায়।

    লেখা ছাড়া বাঁচা মুশকিল। তাই সব সামলে যেটুকু সময় পাই, লিখেই চলি। আজ গ্রামীণ মেলার ওপর একটি লেখা ঋত্বিককে পাঠামাল। পরদিন সকালে ঋত্বিক লেখাটি আবার পাঠাতে বলল। বিকেলে ছবিসহ লেখাটি আবার  পাঠালাম।

   আজ তিনটের সময় সোমা মণ্ডলের নাচের প্রোগ্রাম দেখতে গিয়ে ছিলাম।আমাকে হলে ঢুকতে দেখেই সোমা সঞ্চালিকাকে(মৈথেলি) আমাকে মঞ্চে ডাকার জন্য বলল। সোমা  আমার পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করল। এসব আজকাল দেখাই  যায় না। আজ রাতেই সাহবাজের জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিতে খড়গপুর যেতে হয়েছিল। আজও ফিরতে অনেক রাত হল।

    তানি কয়েকদিন আগে এসেছিল, আজ ফিরে গেল। ও ২৯ জানুয়ারি নার্সিং  পড়তে ব্যাঙ্গালুরু রওনা হবে। ইংলিশে অনার্স নিয়ে পাস করে সবার বাধা উপেক্ষা করে নার্সিং পড়তে  যাচ্ছে। শুধু ওর ডাক্তারমামা খোকন আর স্বপ্নামাসি এনকারেজ করছে।ওদের বক্তব্য, চাকরি নেই এর বাজারে নার্সিং পড়ে আন্তত বেকার থাকতে হবে না।
🍂
     নিজেকে যতই ব্যস্ত রাখি না কেন, তবুও মন ভাল থাকে না। আজ বন্ধু নন্দিতার ছেলের বিয়ের রিসেপ্সন পার্টি। স্টেশনের কাছে কোন এক লজে হচ্ছে।  গাড়ি নিয়েই আমি রানী গেলাম। আর এক বন্ধু নন্দিনী আগেই এসে গেছে। এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ছিলাম। নন্দিতার স্বামী কবি বিপ্লব মাজির সঙ্গে যোগাযোগটা বেশি। নন্দিতা নেহেরু যুব কেন্দ্রের আধিকারিক।ও বেশ কয়েকবছর রাজ্যের বাইরে। ফেরার সময় নন্দিনীকে ড্রপ করে এলাম।

     খড়গপুরে সরকারি বইমেলায় কবিতা পাঠের আমন্ত্রণ পেয়েছি। এখানে যে  কবি নয়, সেও আমন্ত্রণ পায়। এর ওর কবিতা থেকে লাইন চুরি করে কবিতা লিখে কবি হয়ে যাচ্ছে। যে গানের গ জানেনা সেও মঞ্চে ছবি তোলার জন্য সমবেত সঙ্গিত গায়িকাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ছে। টাকা দিয়ে মেমেন্টো পাচ্ছে। কিছু  অসাধু ব্যক্তি এ সব করে মেদিনীপুরের সাহিত্য সংস্কৃতির জগতটাকে কলুষিত করে তুলেছে। আসল গুণী ব্যক্তিরা ডাক পাছেন না। তাই ঠিক করেছি, আমি যাবনা।  বাড়িতে বসে দুলাইন লিখলে কাজ দেবে। আজ তানি নিয়ে ওর বাবা মা আর  দিদি ব্যাঙ্গালুরু রওনা দিয়েছে।

      আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাময় দিন আজ, অনেক কষ্ট বুকের মধ্যে চাপা দিয়ে ঢেকে রেখেছি। এভাবেই বেঁচে আছি। কেউ বুঝবে না, কী কষ্ট মনটাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। আজ ১ ফেব্রুয়ারি, একবছর পূর্বে আজকের দিনে আমার সম্রাট ঘুমের মধ্যে আমাকে লুকিয়ে পালিয়ে গেছে। কোভিডের কারণে ওনার নতুন বাড়ি নিয়মিত দেখতে যেতে পারিনি। একবারই গেছলাম। আজ সেখানে  গিয়ে আমার  সম্রাটের ঘরখানা খুঁজে পেলাম না, সে জায়গাটি একেবারের সমতল করে দিয়েছে। মাথার কাছে একটা আম গাছ লাগানো হয়েছে। কোভিডের জন্য নেমপ্লেট লাগানোর সুযোগ হয়নি। কী করে আমি ওঁর সমাধি উদ্ধার করব জানি না।সাহাবাজের বাবাকে বলতে  মহলদারকে নিয়ে  দেখতে এসেছিল, আমিও সঙ্গে ছিলাম। ওরা স্বীকার করছে না এখানে কোন সমাধি ছিল বলে। ওরা অন্য একটা দেখাছে। সেটা কিছুতেই হতে পারে না। আমি বলেছি, ওই জায়গা খুঁড়ে দেখব।

    মেদিনীপুর ফোটোগ্রাফার এ্যাসোসিয়েশনের  প্রদর্শনীতে গেছলাম। আজই  উদ্বোধন হল। আমি, অনন্যা ও বাইরের দুজন অতিথি মঞ্চে ছিলাম। সংক্ষিপ্ত  বক্তব্যও রাখতে হল। রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে ফুল দিয়ে  হেমন্ত মুখারজির প্র্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে, প্রদর্শনীর ছবি দেখতে ঢুকলাম, আমাদের শহরের ছেলেরা খুব সুন্দর সব ছবি তুলেছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের অনুষ্ঠানে আমার সংগে  অধ্যাপিকা সর্বশ্রী ও অপরনিতা।
     
আজও PAM এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছিল। অনন্যাও এসেছিল। আমরাই পুরস্কার তুলে দিলাম বিজয়ীদের হাতে। পরদিন অনন্যা ডেকেছিল, ওর অফিসে যাওয়ার আগে ব্যাঙ্কে গেলাম। অনন্যার আফিসে কবি নির্মাল্য ও আমার সঙ্গে বিশেষ একটি বিষয়ে আলচনা হল। ওখান থেকে ফিরলাম্ ৬টার সময়।

     মিস্ত্রি এসে সব মেজারমেন্ট করে আপাতত  ৫০,০০০ টাকা চেয়েছে। বাকি

 

 

 

 

 

 টাকা কাজ শেষ হলে হিসাব করে নেবে। নিচেও কাজ করাতে হবে। আজ  খড়গপুর বই মেলায় কবিতা পাঠ ছিল। যাব না,আগেই সিধান্ত নিয়েছি। বিকেলে  শহরের সেকপুরায় একটি সচেতনতা শিবিরে গেছলাম। রাতে একটা নতুন লেখায় হাত দিয়েছি। সে বিষয়ে তথ্যের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। লেখাটি কোন নামী সংবাদপত্রে দেওয়ার ইচ্ছে আছে। এদিকে বাড়ির কাজ পুরোদমে চলছে। শেষ হলে বাঁচি।What’s Appএ আজ জানতে পারলাম, বেলদা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি আমাকে একুশের সম্মান জানানো হবে।

     আজ আমার বকুলের জন্মদিন, ওর পছন্দের ছানার পায়েস বানিয়েছি। মুর্শিদাবাদের লালগোলা থেকে আজ একটি পত্রিকা এলে সম্পাদককে ফোন করে  জানতে পারি সিরাজুল নামে এক ডাক্তার আমার বিষয়ে বলেছেন। তিনিই আমার ঠিকানা দিয়েছেন। দুঃখের বিষয় ওই নামে আমি কাউকে মনে করতে পারছি না। মনটাই আমার সব গোলমাল করে দিচ্ছে।

     তাপস সিংহ কে দিয়ে  ২০১৯ এর মার্চে আবার আমার লেখা চাওয়া হলে। সেই লেখা প্রকাশিত হয় ৮ মার্চ। তারপর পরেও বেশকিছু লেখা লিখি। তার মধ্যে দুর্গাপুজো নিয়ে একটি লেখা পড়ে ত্রিদিব  চট্টোপাধ্যায় মেসেজ করেছিলেন, চমৎকার লেখা, হৃদয় ছুয়ে গেল।

     আনন্দবাজার ও এই সময়এ দুটি লেখা পাঠানো আছে। গতকাল তাপস  অনিন্দ্য জানার ইমেল আইডি পাঠিয়ে লেখাটি আরও একবার অনিন্দ্যকে পাঠাতে বলেছিলেন। সেই মত পাঠিয়েও দিয়েছি। বাড়ির কাজের জন্য লেখা বন্ধ রেখেছি। নন্দিনি ওর জন্য নারী  দিবসের ওপর একটি বক্তব্য লিখে দিতে বলছে।   বিমলদা(গুড়িয়া)আজ ফোন করে বললেন ‘কালকের ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে  আপনার লেখা একটি কবিতায় বিশ্বেস্বর বাবু সুর দিয়ে গানে রুপান্তরিত করেছেন, সেই গান ভাষা দিবসে  উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে ওনার ছাত্রছাত্রীরা গাইবেন। উনি আপনার উপস্থিতি চাইছেন’। বিকেলে প্রোগ্রাম, সকালের দিকে বেলদা যেতে হবে।  এছাড়াও শহরের তরুণ কবিদের অনুষ্ঠানে ও  কুইজ কেন্দের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ আছে। ওদের ‘যাব’ বলে কথাও দিয়েছি।

     সকালেই গাড়িতে বেলদা রওনা হয়েছিলাম। সঙ্গি হয়েছিল বাচিক শিল্পী রত্না। অনুষ্ঠান ভালই হল, আমার সঙ্গে আরও তিনজনকে ‘একুশের সম্মান’ জানানো হল, নাচ,গান ও কবিতাপাঠের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত  হল। একটি মেয়ে এসেছিল তার একটি পা নকল। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। এটাই আজ আমার কাছে সবথেকে আনন্দের খবর। দুপুরের মধ্যে বাড়ি ফিরে ‘গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী  সঙ্ঘ’র অনুষ্ঠানে গেলাম। আমার লেখা গানটি খুবই শ্রুতিমধুর হয়েছে। ওখানে কবি নির্মাল্য, অধ্যাপিকা সর্বশ্রী ও অপরনিতার সঙ্গে দেখা হল ওদেরও গানটি ভাল লেগেছে। আরো অনেকেই ছিলেন। আমার তাড়া ছিল, সৌনক আমাকে নিয়ে যাবে বলে অপেক্ষা করছিল। অরিন্দমের বাড়ির ছাদে ওদের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। জায়গাটা বলতে গেলে মেদিনীপুর শহরের বাইরে। ওখান থেকে ফিরে অভিনন্দনের অনুষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব হল না।

      মেঘ সরিয়ে আলোর সন্ধান করেই চলেছি।কিন্তু মনে হচ্ছে আমি ক্রমশ  কুয়াশার অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছি। ডুবে আছি কাজের মধ্যে। আজ টাইলসের কাজ শেষ হল, এর পর রঙের কাজ শুরু হবে। ২০ মার্চ খাকুড়দায় যে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল, সেটা ক্যানসেল হয়েছে। সামনে ভোট থাকায় পারমিশন মেলেনি.২৭ ফেব্রুয়ারি পাথরায় বসন্ত উৎসব পালিত হবে। ইয়াসিনদা, আজহারুল বার বার যাওয়ার জন্য বলছে।

    আমি রানী আগে চলে গেছলাম, স্বপ্না পরে এল।DM রেশমি কমল এলেন  তিনটের সময়। নাচ চলছিল, ম্যাডাম পাশেই বসে ছিলেন, উনি যখন আবির ওড়াতে গেলেন, তখন মহিলাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল ওনার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য। আমি একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কে যেন ডাকলেন, ‘দিদি আপনি সামনে আসুন’। স্বপ্নাও ছিল, ও পরে গাড়ি ভাড়া করে এসেছে।ফেরার সময় ওকে  সঙ্গে নিলাম।

     বাবলির তাড়াতে আজ ১০ মার্চ কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন নিলাম। লাইন দেবার মত লোক ছিল না, তাড়াতাড়ি নেওয়া হয়ে গেছল। ৩০ মিনিট বসতে বলেছিলেন। আমি মিনিট ১৫ বসে, চলে এসেছিলাম। বাড়ি ফিরে দিব্যি আছি, জ্বর আসেনি। চন্দ্রিমাকে বলিনি, কারণ ও সবসময় ভ্যাক্সিনের বিপক্ষে।

     প্রকাশক ধীমানের সঙ্গে কথা হল। উনি বললেন, ‘প্রথমে ৫০ কপি ছাপাব।বই যদি ভাল কাটতি হয়, তখন আবার ছাপা হবে।লেখাগুলো তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিন’। পরদিন ওনার কথামত সাইবার কাফেতে গিয়ে সব লেখা পাঠিয়েদি। ২২ মার্চ বিকেলে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের বক্তব্য শুনতে গেছলাম। অনুষ্ঠান শুরুর আগে  ওনার সঙ্গে আলাপ করে আমার  এককপি বই ওনার হাতে তুল দিলাম।  

    আজ সুভাষের সঙ্গে ওর স্কুলে(কলাইমুড়ি নেতাজি সুভাষ বিদ্যালয়)   চলেছি।সঙ্গে গৌতম বাবু,আল্পনা আর স্বর্ণলতা। গৌতমবাবু শিক্ষারত্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক, আলপনাও শিক্ষিকা(গৌতম বাবুর স্ত্রী), স্বর্ণলতা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। স্কুলে বাল্যবিবাহ রোধ’ এর একটি সচেতনতা শিবিরে যোগ দিতে এসেছি আমরা। ছাত্রী ও মা’দের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। আমাদের বক্তব্য ওঁরা মন দিয়ে শুনছিল। মায়েরা যদি বিষয়টা ঠিকভাবে বুঝে থাকেন, তাহলে অনেক মেয়েই রক্ষা পাবে, পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে পারবে। ফেরার সময় জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আসতে খুব ভাল লাগছিল। রাস্তার দুধারে সারি সারি শালগাছ ফুলে ছেয়ে আছে।বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে মৃদুমন্দ সুবাস। আমরা গাড়ি থেকে নেমে পড়েছিলাম। কী যে ভাল লাগছিল, বলে বোঝাতে পারবনা।

     বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে রঙের কাজ চলছে। এই সময়েই বসার ঘরে  একটা এসি লাগিয়েনিলাম। দিন দিন গরম বেড়েই চলেছে।এসি না হলে আর চলছিল না, লোক জনের আসা যাওয়া লেগেই আছে। তাদের বেডরুমে তো বসাতে  পারি না।

      আজ (২৭/৩) ভোট দিয়ে এলাম। খবরে শুনলাম ভোট চলাকালে কোথাও কোথাও গণ্ডগোল হয়েছে। আজই চন্দ্রিমা খান সাহেবের নেমপ্লেটটি দিয়ে গেছে। কিন্তু সমাধি না খুঁজে পেলে লাগাব কোথায়? তবে খুঁজে আমি বের করবই।কত দিকে কত লড়াই যে করতে হচ্ছে, না হয় আরও একটা লড়াই যোগ হবে।এই সমস্ত ঝামেলার ও মানসিক অবস্থার মধ্যে লেখাগুলো কী করে ঠিক ঠাক  উতরে যায় জানি না।             

  বিকেলে চিত্তর ‘কাব্য কলা’র অনুষ্ঠানে গেছলাম। বক্তব্য রাখলাম। অনুষ্ঠানের শেষ নেই। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আমন্ত্রণ থাকছে। ওদের আবদার রাখতে ২/১ টা বাদ দিয়ে সব অনুষ্ঠানেই যেতে হচ্ছে। তবে বেশিদিন পারব না, অনেক সময় চলে যায়, শরীরও সায় দেয় না।

 আজ(১ এপ্রিল) আমাদের জারা সোনার জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। প্রচুর বন্ধু শুভেচ্ছা, ভালবাসা জানিয়েছেন। আধখানা জীবনে এইটুকুই তো আনন্দ।

                                  ক্রমশ

Post a Comment

1 Comments

  1. অপেক্ষা..... পরের কিস্তির জন্য

    ReplyDelete