জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-৯৩/রোশেনারা খান

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান
পর্ব ৯৩

মঙ্গলপোতার (আমার বাপেরবাড়ি) আশপাশের বেশ কিছু গ্রামে করোনা আক্রান্তদের  খোঁজ মিলেছে। সম্ভবত পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকেই ছড়াচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে কাজের সময়। আমার মত বয়সের মানুষদের মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। এই অবস্থাতেও আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অফিস দোকেন, ধর্মস্থান খোলার অনুমতি দিয়েছেন। কলকাতায় অফিসে ২ শিফটে কাজ হচ্ছে।  

    চন্দ্রিমা আজ দুপুরে আমার কাছে খাবে বলেছিল। সেইমত রান্না করলাম, ও নিজেও কিছু সবজি রান্না করে নিয়ে এসেছে। বিকেলে বাড়ি ফিরে গেল। ও অনেকদিন পরে এসেছিল। এসে জামাকাপড় ছেড়ে, হাতমুখ ধুয়ে সেনিটাইজার স্প্রে করে হাতে লোশন লাগিয়ে তারপর কাছে আসে। ভীষণ সাবধানী।

    গত ইদ থেকে তনভির নাসরিন ‘কণ্ঠস্বর’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করছে। শুধু দুইবাংলার মহিলারাই লেখেন। আজ সেই পত্রিকাটি হাতে পেয়ে খুব ভাল লাগছে। মহিলাদের এই পত্রিকাটির আত্মপ্রকাশ কিছু পুরুষ মেনে নিতে  পারছেন না।গালিব ইসলাম নামে এক ভদ্রলোকের একটি মন্তব্যকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে সারাদিন বাকবিতণ্ডা চলেছে। এটা হবেই,তার জন্য মহিলাদের পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ হয়ে যাবে না। এই লকডাউনে বেশ কিছু লেখালিখি করলাম। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আর্টিকেল আনন্দবাজার, আজকাল, এই সময় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। বেশিরভাগ লেখাই করোনা ও লকডাউনের ওপর।

    এখন বাড়ির সমস্ত কিছুর ভার আমার ওপর, এত সবকিছু নিয়ে আমাকেই ভাবতে হবে, কোনদিন ভাবিনি। SBI ব্যাঙ্কে একটা ফর্ম জমা দেওয়া হয়নি বলে ১৪৫০/ টাকা কেটে নিয়েছে। খান সাহেব থাকলে ঠিক মনে করিয়ে দিতেন। শরীরটাও কয়েকদিন ধরে ভাল  যাচ্ছে না। আজও লিকুইড খেয়ে কাটালাম। একটু  অসুবিধা হচ্ছে, উঠতে গেলে চোখে অন্ধকার দেখছি। সারাদিন সংসারের কাজ করে, এখন ডেক্সটপ খুলে বসেছি। ‘এই সময়’ কাগজের সাব এডিটর হিরক ব্যানারজির সঙ্গে কথা বলে একটা লেখা পাঠালাম।

      আজও বেশ ক্লান্ত লাগছে। তাতেই রান্না করলাম। বেঁচে থাকতে হলে খেতে তো হবেই। সব মিলিয়ে সারাদিনে ১০ খানা ট্যাবলেট খেতে হয়। ওষুধের সাইড এফেক্টের জন্য ওজন বেড়ে যাচ্ছে। মায়ের শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছে। যে কোন দিন অঘটন ঘটে যেতে পারে। তখন কী হবে? ভেবে উঠতে পারছি না। মনটাও ভাল নেই। রানী আমি ঠিক করলাম আগামিকালই মায়ের কাছে যাব। ড্রাইভারকে বলে রাখলাম,সকাল ৯ টার দিকে রওনা হব। করোনার কারণে ভাড়াটিয়া তুলে দিয়েছি। ওদের নিয়ে সমস্যা ছিল না। যখন অসুস্ত বাবা মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসে রাখবে বলল, তখন আমি আপত্তি জানাই। এতবড় বাড়িতে কেউ  থাকবে না। তাই সব গুছিয়ে বন্ধ করে ঘুমোতে গেলাম রাত ১ টার সময়। ভোর তিনটেই ফোন পেলেম, মা নেই। মঙ্গলাপোতার  সঙ্গে নাড়ির টানটুকুও ছিন্ন হয়ে গেল। ড্রাইভারকে ডেকে সকালেই রওনা হয়ে ৮ টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম।   আমাদের সঙ্গে মাসতুতো বোন আজরাও এসেছে। এমনই দুর্ভাগ্য, বাবার সঙ্গেও শেষ দেখা হয়নি, মায়ের সঙ্গেও হলনা। বাড়িতে আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীরা ভিড় করেছে, কাউকে কিছু বলা যাচ্ছে না।মা এই বংশের বড়বৌ ছিলেন। সবাই  খুব সম্মান করত। কারো বাড়িতে নতুন জামাই বা বৌ এলে মাকে সালাম করিয়ে দোয়া(আশীর্বাদ)নিয়ে যেত। বাচ্চাদের অন্নপ্রাশন হলে মাকে নিয়ে যেত। বাচ্চার মুখে মাকে দিয়ে প্রথম ক্ষীর মুখে দেওয়া হত।

      ১২ টা নাগাদ চন্দ্রিমা এসেছে গাড়ি ভাড়া করে। ওর সঙ্গে ছোট মাসির ছেলে বৌমা এসেছে। আমার ছোট পিসির আর মেজকাকার ছেলে বউমারাও  এসেছে। সাহবাজ ও খোকন (FRK)এসেছে। লতায় পাতায় জড়ানো অনেক আত্মীয়  এসেছে। আমার ছোট দেওর এসেছে। আর কাউকে খবর দেওয়া সম্ভব হয় নি। পর্দা ঘিরে মাকে গোসল দেওয়া হচ্ছে। এই কাজটি খুব নিখুঁত ভাবে করতে হয়, শরীরের কোথাও যেন একবিন্দু নোংরা না থাকে। প্রথমে কয়েকজন সাবান দিয়ে স্নান করানোর পর, যারা গোসলের নিয়ম কানুন  জানেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে ভাইঝি মুসকান দোয়া পড়ে পড়ে দাদিকে(ঠাকুমা) গোসল দিল। তার পর বিশেষভাবে বানানো নতুন সাদা পোশাক পরিয়ে দেওয়া হল। আমার মাকে জোহরের নামাজের পর নিয়ে যাওয়া হবে। এত মানুষ আসেছেন, তাঁদের খাবার আয়োজনও করা হয়েছে। মায়ের মুখটি খুলে রাখা হয়েছে, শেষবার দেখার জন্য।  বার বার দেখেও আশ মিটছে না।কত কথা মনে পড়ছে। কান্না বাধা মানছে না। মা আমাকে খুব যত্ন করে বড় করেছেন। শেষ সময়ে সেই মায়ের মুখে একটু জলও দিতে পারলাম না।

    আমরা ভাইবোনেরা বাদে সবাই ফিরে গেছেন। আমিও পরদিন বাড়ি ফিরে যাব ভেবেছিলাম, কিন্তু ৩ দিনে মায়ের কাজ থাকায় থেকে যেতে হল। ৭ জুলাই এখান থেকে ড্রাইভার নিয়ে আমি রানী বাড়ি ফিরলাম। মায়ের সঙ্গে হারিয়ে গেল ওই গ্রামের প্রতি আজন্মের আকর্ষণ। এসব ভাবলেই বুকের ভিতরটা হু হু করে উঠছে। কয়েক মাসের ব্যবধানে জীবন থেকে হারিয়ে গেল দুই প্রিয়জন।                                  

     আমার মেয়ের জন্য আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। যারা আমার ওপর একটু খানি হলেও নির্ভর করে, আমার কথায় মনে জোর পায়, তাদের কথাও ভাবি। এরাই আমাকে মায়াডোরে বেঁধে রেখেছে। এদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। মানসিক চাপে মাথায় রোজ কষ্ট হচ্ছে। শনিবার চন্দ্রিমার মেয়েকে নিয়ে Dr. F R Khan এর কাছে যেতে হবে গলাতে কি যেন হয়েছে। আজ চন্দ্রিমা এসে কপালে বাম লাগিয়ে দিল, ওষুধ খাওয়াল।মাথার কষ্ট একটু কমেছে।

      রাত ৮ টার দিকে ‘এই সময়’এর অফিস থেকে ফোন এল। আমার ইমেল আইডি চেয়ে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে একটি ফর্ম মেলে পাঠাল। এই ফর্মটি ফিলাপ করে, প্যানকার্ড ও একটি ক্যানসেল চেক স্ক্যান করে ওঁদের পাঠাতে হবে। পরদিন সাইবার কাফেতে গিয়ে রানী আমি কাজটা করে এলাম। এত কাগজে লিখি, ব্যাংক ডিটেলস ছাড়া আর কিছু পাঠাতে হয়নি। আসলে এঁদের সিস্টেম এই রকমই।কাল রবিবার পালবাড়িতে একটি শর্টফিল্মের শুটিং আছে।দেবনাথ মাইতি(সাংবাদিক ও ফোটোগ্রাফার) একটি ছোট্ট রোল করে দেবার জন্য অনুরোধ করলে আমি না করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ও রাজি করিয়েই ছাড়ল। রবিবার সকালে তাপস মাইতি (উপত্যকা লোকাল কাগজের সম্পাদক ও লেখক) নিজে গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। আমি রানীকে সঙ্গে নিয়ে গেছলাম। ফিল্মের নাম ‘লকডাউনে প্রেম’। আমার রোল এক বিধবা মায়ের।পরিচিতরা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি দেখে নানান প্রশ্ন করছেন।

      আজ ডঃ আশীষ দত্তের নিরন্তর পত্রিকাটি পেলাম। ইনি অধ্যাপক অম্বিকেশ  মহাপাত্রের ভাইরাভাই। অম্বিকেশের মাধ্যমেই আলাপ। ওনারা কয়েকজন ডাক্তার  মিলে বছরে চারবার এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। আমিও লিখে থাকি।সেদিন কিন্নর রায়ের সঙ্গে ফোনে বেশ কিছুক্ষণ কথা হল এই আত্মকাহিনী লেখার বিষয়ে। বললেন, ‘তাড়াতাড়ি শুরু করুন, নইলে ভুলে যাবেন’। ভুলে তো আনেক কিছুই  গিয়েছি, কিন্তু যা ভুলতে চাই তা ভুলতে পারিনি।

      সবাই মিলে ঠিক করেছে, আজ সাহবাজ রানীর কাবিলনামার ৬ মাস  পূর্তি সেলিব্রেট করবে। ঘরদোর গুছোতে অনেকটা সময় লাগল পরিশ্রমও হল। তাই স্নান করে রেস্টে ছিলাম। রাতের জন্য বিরিয়ানি, চিকেন তন্দুরি, চিকেন কাবাব, আরও কি সব, রানী একাই রান্না করেছে। বসারঘর সাজানো হয়েছে বেলুন দিয়ে। রানীর বোন তানির বন্ধু তুহিনা আর ওর বর মস্তবড় কেক নিয়ে এসেছিল। সাহবাজ ওর মাকে নিয়ে এসেছিল, চন্দ্রিমা ওর মেয়ে ডলকে নিয়ে এসেছিল। খুব আনন্দ করল ওরা। আমিও ছিলাম ঠিকই, কিন্তু বুকের ভিতরটা ব্যাথায় টনটন করছিল।

     আজ সকাল থেকে বেশ কিছুটা লিখেছি। ভাবলাম ২১ শে জুলাই কয়েক দিনের জন্য মঙ্গলাপোতা যাব। রাতে একজনের মেসেজ থেকে জানলাম, এখানকার জমির রেকর্ডের জন্য ২০ জুলাই BLRO অফিস যেতে হবে। আমি তো কিছুই জানতাম না। সাহবাজ বলছে, ওর পাপা সব করে দেবে। তবুও মনে হয় আমার নিজেরও যাওয়া উচিৎ। কত ভিড় হবে? কি নিয়ে যেতে হবে? কিছুই জানিনা। এক প্রতিবেশী বললেন, উনি অফিসে গিয়ে জেনে আমাকে জানাবেন। ভীষণ টেনশন হচ্ছে। রেকর্ড তো হবে খান সাহেবের নামে। প্রতিবেশী ভদ্রলোক ওখানে গিয়ে ফোন করে জানালেন, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ও দলিলের জেরক্স কপি লাগবে। সাহবাজ ফোনে বলল একটা অথারাইজ লেটার লিখে রাখতে। যাতে ওর পাপা কাজটা করতে পারেন। ও এসে সমস্ত কিছু নিয়ে গেল, বলল জেরক্স করে নেবে, আর প্রয়োজন হলে আমাকে এসে নিয়ে যাবে। কিন্তু তার প্রয়োজন হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে কাজ হয়ে গেছে, আমি কাগজপত্র হাতে পেয়েও গেছি। যাক, চিন্তামুক্ত হলাম।

       আজকেই সকালে একটি মেয়ে (সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন বন্ধু হয়েছে),  মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়েছে যে সে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়েছে, এ বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা  বলতে চায়। আমি তাকে নাম্বার দিয়ে বিকেলে ফোন করতে বলেছিলাম। মেয়েটি ফোনে জানাল, ও মেদিনীপুর কলেজের আংশিক সময়ের  অধ্যাপিকা। ওর বাড়ি গ্রামে, মেদিনীপুরে একটি রুম ভাড়া করে থাকত। বিয়ে  করে এখানেই থাকবে বলে ও একটি দু’কামরার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। ও বাড়ির  মালিককে  যখন জানায় যে সে এক মুসলিম অধ্যাপককে বিয়ে করছে, তখনই তিনি তাঁর বাড়ি ভাড়া দেবেন না, জানিয়ে দেন। ভদ্রলোক যে সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মেয়েটির বক্তব্য, যেখানে আমার বাবা মা ও অন্যান্যদের এই বিয়েতে আপত্তি নেই, সেখানে ওনার কেন আপত্তি বুঝতে পারছি না। এ সমস্যা নতুন কিছু নয়, আমরা সকলেই কম বেশি এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। তবে সবার মানসিকতা এক রকম নয়, তাই এখনো পৃথিবীটা মানুষের বাসযোগ্য আছে। আমারই এক ভ্রাতৃপ্রতিম উদারমনস্ক শিক্ষক তার বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন। অবশ্য স্ত্রীর কোনও আপত্তি আছে কিনা আগেই জেনে নিয়েছিলেন। এই বাড়িতেই দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। সেই বিয়েতে বাড়ির মালিক সপরিবারে  অংশগ্রহণ করেন।

       ‘এই সময়’ সংবাদপত্র থেকে হিরক বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে বললেন, তাড়াতাড়ি আপনার একটা ছবি পাঠান। ছবি পাঠানোর কিছুক্ষণ পর মেসেজ করে জানালেন, আমার আর্টিকেলটি আগামিকাল প্রকাশিত হবে। কাগজটি হাতে পেয়ে খুব ভাল লাগল।ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করলাম। Wtat’s App লিংক সেয়ার করলাম। দেখলাম অপরিচিত কয়েকজন লেখাটি তাঁদের  ওয়ালে পোষ্ট  করেছেন। দেশ পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক হর্ষ দত্ত লিখেছেন, সচ্ছ ও ইতিবাচক ভাবনা চিন্তা ব্যক্ত করেছেন অভিনন্দন। এছাড়াও শুভদীপ বাগচি, কুইজ মাস্টার রাজীব স্যান্যাল জয়ন্ত ও আরও অনেকে মেসেজ করেছেন। লেখার বিষয় হল, ‘ সুন্দর বন থেকে কীভাবে নারী পাচার হচ্ছে এবং তা প্রতিরোধ করতে হলে কি কি করতে হবে’?।শিরোনাম ‘নারী পাচার রোধে সক্রিয় হতে হবে সাধারণকেও’।

      দুপুর ১২ টায় মঙ্গলাপোতা পৌঁছালাম। বিকেলে ভেজা পায়ে মায়ের রুমের মেঝেতে পা রাখতেই স্লিপ করে পড়লাম। কোমরে চোট পেয়েছি। প্রচণ্ড ব্যথা, মনে হচ্ছে কাল আর হাঁটতে পারব না। তবে তেমন কিছু হয়নি  ডাক্তার এসে দেখে গিয়ে ওষুধ দিয়েছেন। এখানে সারাদিন খাচ্ছি আর ঘুমচ্ছি। মেজদি এসেছে। তাই  আরও দুদিন থেকে রবিবার বাড়ি ফিরলাম।

     চন্দ্রিমার আবদার শিবানীদির(ওর মা) জন্মদিনে একটি কবিতা লিখে দিতে হবে। ওকে তো অদেও কিছু নেই। দিলাম একখানা কবিতা লিখে। জন্মদিনে পড়ে শোনালামও। আগামিকাল ইদুজ্জহা, আমার কোন আয়োজনের ব্যপার নেই। আমি আমার লেখা নিয়ে, রানী ওর পড়া আর কাজ নিয়ে কাটিয়ে দিলাম। পরশু রাখী  বন্ধন উৎসব। সাহবাজদের বাড়িতে রাতে নিমন্ত্রণ আছে। ইচ্ছে না থাকলেও যেতে হবে।  চন্দ্রিমা আজকের দিনটিকেই রানী ও সাহবাজকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানোর জন্য বেছে নিয়েছে। রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বাড়িতেই সব হল।

   এই লকডাউনে ব্যাঙের ছাতার মত অজস্র সংগঠন গড়ে উঠেছে। এ ব্যপারে মহিলাদের উৎসাহ খুব বেশি। বিভিন্নভাবে খাদ্য সামগ্রি, জামাকাপড়, টাকাপয়সা  সংগ্রহ করে বিতরণ করছে। এটাও শোনা যাচ্ছে, সংগ্রহকারিরা  তার থেকে কিছু খাবার গোপনে নিজেদের বাড়িতে মজুদ করছে। কয়েকটি সংগঠনকে কিছু টাকা  দিয়েছি। একটু বেশি পরিমাণ টাকা ‘মাসা’র ফারুককে ডেকে ওর হাতে দিয়েছি। ও টাকাটি ঠিক কাজে লাগাবে, এবিষয়ে আমার সন্দেহ নেই। এই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর  ত্রাণ তহবিলে দিলে খবরে আমার নাম বলা হত, কাগজেও নাম বের হত। আমি সেটা চাইনি। তাই ফারুকের হাতেই টাকাটা তুলে দিয়েছি।

🍂

Post a Comment

0 Comments