জ্বলদর্চি

সৎপাত্রী /ভাস্করব্রত পতি

বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব --  ৪১
সৎপাত্রী

ভাস্করব্রত পতি

তোমার নাকি ছেলের বিয়ে, 
খুঁজছো নাকি যোগ্য মেয়ে? 
আমার হাতে আছে তবে
চাইলে তুমি পাবেই পাবে। 
জানতে চাও সে কেমনতরো? 
বয়স তুমি তিরিশ ধরো, 
কাজে কর্মে সুনিপুনা -
খাতায় লিখে যাবে না গোনা! 
গায়ের রঙ ঠিক আলকাতরা
চোখ দুটি তাঁর কুমড়ো চেরা! 
পড়াশুনা? বলছি দাদা -
এক্কেবারে নিরেট হাঁদা, 
দশটি বছর পালা করে -
হাজির হত ফোরের ঘরে;
ছাড়লো শেষে মনের দুঃখে, 
এখন তবে আছেই সুখে! 
ব্যবহার? মিস ভয়ঙ্করী! 
এক হাতে ঝাঁটা, এক হাতে ছড়ি! 
গলা তেড়ে সে জাগায় পাড়া
ডাকনাম তাঁর 'লক্ষ্মীছাড়া'। 
বোন ছ'খানি রক্ষাকালী, 
কথায় কথায় গালাগালি;
বড় বোনটি যাত্রা করে -
এ গ্রাম ও গ্রাম ঘুরে ফিরে। 
মেজ সেজ ঘরেই থাকে, 
কনিষ্ঠটি ছবি আঁকে। 
জমিজমা? নেইকো মোটে, 
পরের জমি ভাগে খাটে। 
পাত্রী যেটি বায়না ভারী, 
ক্রিম মোবাইল সোনার চুড়ি! 
কিন্তু তাঁদের গোত্র দামি, 
জেনেই রাখুন কালনেমি! 
ট্যাংরাখালির গুণ্ডা হাবু -
পাত্রীর এক জামাইবাবু;
যাহোক এবার পাত্রী পেলে, 
দাওনা ওরে ছেলের গলে। 
এরচে ভালো পাত্রী খোঁজা, 
এই বাজারে নয়কো সোজা। 
🍂

সৎপাত্র
সুকুমার রায়

শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে?
জান্‌‌তে চাও সে কেমন ছেলে?
মন্দ নয় সে পাত্র ভাল -
রঙ যদিও বেজায় কালো, 
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন।
বিদ্যে বুদ্ধি? বলছি মশাই
ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়!
উনিশটি বার ম্যাট্রিকে সে
ঘায়েল হয়ে থাম্‌ল শেষে।
বিষয় আশয়? গরীব বেজায়
কষ্টে-সৃষ্টে দিন চলে যায়।
মানুষ ত নয় ভাই গুলো তার
একটা পাগল একটা গোঁয়ার;
আরেকটি সে তৈরি ছেলে,
জাল ক'রে নোট্‌ গেছেন জেলে। 
কনিষ্ঠটি তব্‌লা বাজায়
যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায়।
গঙ্গারাম ত কেবল ভোগে
পিলের জ্বর আর পাণ্ডু রোগে। 
কিন্তু তারা উচচ ঘর
কংসরাজের বংশধর!
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কি যেন হয় গঙ্গারামের।
যাহোক্‌, এবার পাত্র পেলে,
এমন কি আর মন্দ ছেলে?

Post a Comment

0 Comments