জ্বলদর্চি

অরূপ তোমার বাণী থুড়ি জীবনী/ (প্রথম পর্ব )/ অরূপ পলমল

অরূপ তোমার বাণী থুড়ি জীবনী 
                  ( প্রথম পর্ব )
  
অরূপ পলমল 
 

জনৈকা মহিলা ১ ::
     "আমি শিখেছি জীবনে কিছু কিছু জিনিসের প্র্যাকটিস থাকা ভালো। যেমন, একলা সিনেমা হলে যাওয়ার, একলা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার, একলা শপিং করার, ইচ্ছা করলে ছুটির দিনগুলোয় শহরের পছন্দের জায়গাগুলোয় একলাই উপস্থিত হওয়ার এবং একলা কয়েকটা গোটা দিন কারোর সাথে কথা বলে বা দেখা না করে কাটানোর। 

      কারণ আজ জীবন মহা সমারোহে কাটলেও কাল হয়তো তেমনটা হবে না। কাল হয়তো ভালোবাসার মানুষটার সঙ্গ ছেড়ে যাবে। কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগ নিভে যাবে। বন্ধুরা হয়তো ব্যস্ত হয়ে পড়বে নিজের নিজের জীবনে। তখন তোমার মুষড়ে পড়া হাতে, নিজেকেই হাত রাখতে হবে। দরজা জানালা বন্ধ করা অন্ধকার ঘরটা থেকে নিজেকেই জোর করে বার করতে হবে। একটা ভালো সিনেমা দেখতে হবে। একটা পছন্দের জামা কিনতে হবে। একটা দারুণ প্ল্যাটার খেতে হবে। একটা গোধূলি বিকেলে গঙ্গার ধারে বসে সূর্যাস্ত দেখতে হবে। পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক... "

জনৈকা ভদ্রমহিলা ২ :
"খুবই জরুরী এবং মাঝে মাঝে চেষ্টা করি। আনন্দও পাই।"    
  
 জনৈকা মহিলা ১:
  "আমিও কিছু কিছু জিনিস একা একা করেছি। তবে রেস্টুরেন্টে একা খাওয়াটা কেমন যেন লাগে..."

  শ্রীকাঙাল-অরূপ :    
              "ঠিক ঠিক ! নারীবাদী স্বাধীন সমাজে আমরা মানে পুরুষরা এখনো অনেক পিছিয়ে .. ..                                 আমরা তো আর তোদের মতো পুরুষ সমাজের বাসিন্দা বলে জোর গলায় প্রচার- প্রসার ও  চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে  উঠতে পারি না .. .                                                 তাই জীবনচর্যার  হওয়াটাকেই জীবন বলে আঁকড়ে ধরে বুকে তোদের আসন পেতে রাখতেই প্রস্তুত হয়ে আছি বহু বছর পূর্ব থেকে !                                                 তাকেই হয়তো ভালোবাসা বলে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে থাকি বা নিজের মতো করে ভালোবাসার সংজ্ঞা বলে টিকিয়ে রেখেছি !                                                         তোদের বোধ ও যন্ত্রণা তো প্রাক বিদ্যাসাগর পর্ব থেকে চলে আসছে অনন্তকাল !
 বুঝি !
আর আমরা সেই প্রায়শ্চিত করে আসছি ব্যক্তিগত ভাবে !
     অথচ আমরা কে যে কবে তোদের উগ্র নারীবাদী চেতনার কাছে পাপ বা দোষ করলাম তাই বুঝিনা ?  যেমন করে পাপের প্রায়শ্চিত করে চলেছি .. . আমরা সবাই  দেশের কাছে পাপের প্রায়শ্চিত করে চলেছি 'General Catagory ' হিসেবে !            তাই তোরা তোদের আন্দোলন ও অভিমত এবং  চেতনা জোর গলায় প্রচার করেই যা .. . 
আমাদের কোন ক্ষতি নাই ক ! . .. . 
     কান আছে তাই শুনে যাবো ! জায়গা দখল করে যা রে .. .     
অধিকার আর অধিকার !                    আর শোন , আমাদের কোন জায়গা নেই ! পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে তবুও আমরা জায়গার জন্য ভিখিরি নয় ! তোদের ছেড়ে দিয়ে আমার তাতেই খুশি ও আনন্দিত এবং  প্রেমিকও !

         আর শোন. ..  থাকলো পড়ে  খাওয়া দাওয়া কথা !
 ক্ষুধা কাকে বলে জানিস তোরা ?
 জানিস না ?
 সেলফি সেলফিস বাচ্চা সব !          "আমায় খিদে পেয়েছে .. . খেতে দে .. ."-- এটা বহুবছর বহুজনকে বলতে পারিনি একটা জন্মে !
খিদে পেলে বলতে নেই. ..                    হজম করতে শিখতে হয় .. .এটাই ছিলো আমাদের এককালীন শিক্ষার আরও একটা সমান প্রবাহমান জীবন চর্যার বিষয় !                                 বুঝলি ?

আর গল্প শুনাচ্ছে বিরিয়ানি ? রেস্টুরেন্ট. .. . ধাবা .. . ঘোরা .. . একা একা .. .
 অনেক বড় হয়ে গেছিস তো তাই !

     আরে ভাই তোদের পাশে কেউ  না কেউ  দাঁড়িয়ে বড় করেছে .. .  আর আমরা লাথি খেতে খেতে বড় হয়েছি .. ..                               ফুটবল দেখেছিস. ..?                          খেলা .. ..                                         ওটাই জীবন খেলা মোদের. .. . !

      আর তোরা তো এখন 'রেফারি' ! 'হুইসেল' হাতে - ঠোঁটে লিপটিক্স লাগিয়ে ওপরকে খেলাবি .. ..
  হা হা হা ...
হা হা হা .. .                   
 আমরা তাতেও খুশি .. ..  আনন্দিত !. ..                         গর্বিত. ..                                               এটাই আমাদের তোদের প্রতি প্রায়শ্চিত্তজনিত প্রেম -পছন্দ ও ভালোবাসা ---- 
"কোন মালাতে করবো বরণ?
পাতবো কোথায় তোমার আসন?
পাই না ভেবে মনের মতন
কি উপহার আনবো এখন
বাঁধবো তোমায় কোন সে গানে
কোন দুরাশায়?
তুমি নেবে কি আমায়?
ডেকে নেবে কি আমায়?

যত ভাবনা ছিল
যত স্বপ্ন ছিল
সব দিলাম তোমায়
আমি দিলাম তোমায়
তুমি নেবে কি আমায়?
ডেকে নেবে কি আমায়?"

আর. ..                                               একা একা .. . 
হা হা হা .. . 
তোমার বিরহে .. . 
অভিমানে .. .
ওহো .. . 
কী বেচারা রে .. . 
উহু উহু .. .
বুকটা ফেটে যায় .. ..                        তোমার বিরহে .. ..  Good !!  
                                                          শোন. .. 
 জীবনের প্রথম জীবন পর্বটা মানে ছাত্রজীবনের শুরু থেকে একেবারে শেষপর্যন্ত. ..            
আমরা একাই হেঁটেছি .. . ঘুরেছি .. .কেঁদেছি .. ..    
 "যে তৃষা জাগিলে তোমারে হারাবো
সে তৃষা আমার জাগায়ো না,
যে ভালবাসায় তোমারে ভুলিব
সে ভালবাসায় ভুলায়ো না ।

যে জ্ঞানের দীপ তোমারে লুকায়
সে জ্ঞানের দীপ জ্বালায়ো না,
যে যাতনা পেলে তোমারে লভিব
সে যাতনা মোর হরিও না।

যে নেশা আমায় তোমা ছাড়া করে
সে নেশা আমার জাগায়ো না,
যে সুখ লভিলে তোমারে ভুলিব
সে সুখ সাগরে ভাসায়ো না।

যে কথার মাঝে তব কথা নাই
সে কথা আমারে শুনায়ো না,
যে আঁখি ঝরিলে তোমারে লভিব
সে আঁখির ধারা মুছায়ো না।

যে তৃষা জাগিলে তোমারে হারাবো
সে তৃষা আমার জাগয়ো না।"
       
        ভোগবাদী সময়কালের বাসিন্দা নই তো .. .
তাই আফশোষ করতে হয়নি কারও কাছে আজও. ..                                         এখনো করি না .. .. 

জয় হোক !                                      তোদের বিরহী আত্মা !                          জয় হোক তোদের কাটলেট !                জয় হোক তোদের স্বাধীনতা .. .             জয় হোক তোদের রেস্টুরেন্ট গন্ধ.. . ব্যক্তি ভোগী কেনাকাটার জৌলুস ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে .. .                                     যেন সূর্য এর খাটনি কিছুদিন কমে যায় .. . 
মা ! আসছে বলে কথা .. . 
মহিষাসুর নিপাত যাক ! 
হোক কলরব !

 শেষ কথা, 
বৌ -বাচ্চা -মা -বাবা - নিয়ে অনেক দিন ঘর করছি তো ! 
তাই একটা বাজে অভ্যাসের কথা শোনাই. .. 

আমি কোনোদিন মানে আজও. ..
  আজও. ..  
রাস্তায় বেরোলে দশ টাকার ফুচকা .. . কাটলেট. ..  ঘুগ্নি .. .  আইসক্রিম খাই  না .! 
তোর খিদে পায় .. .
আমার পায়  না .. .এটা ভাবিস না !
খিদে  আমাদেরও পায় .. . 
তবুও খাই না !
কৃপণ !
 আমরা !
 নিজের প্রতি !
 সব গুলো আমরা চার অক্ষর !

আরে.... খেতে পারি না !
বাচ্চাটার মুখ মনে পড়ে যায় !
এক দুবার যে চেষ্টা করিনি তা নয় .. . আসলে টেস্ট পাই না !
বৌ- বাচ্চা টাকে ছাড়া !
ছেলেটা আমার খুব পছন্দ করে রে .. .. .আইসক্রিম. .. ঘুগ্নি .. .  কাটলেট. ..  ! 
ওকে ছাড়া একা একা খাই কী করে বলতো ?
বোধহয় মোর বাপও এমন করেই একদিন আমার কথা ভাবতো .. . পারতো না .. . 
না হলে মুই বা পেলাম কোথা থেকে ?
 এমন ভাবনাটা বলতো ?
 হয়তো তোর বাপ- কাকুও আমার বাবার মতোই ভাবতো !                               অবশ্যই ভেবেছিলো ও এখনো ভাবে হয়তো !
 এই আমার ও আমাদের একা ঘোরা ও একা খাওয়া ও একা ভোগ করার. ..       পথের পাঁচালী !
 একা ভোগের ইতিবৃত্ত !
🍂
      মনে আছে আমি  প্রায় গাইতাম একটা গান --
" পথ হারাবো বলেই এবার পথে নেমেছি
সোজা পথের ধাঁধাঁয় আমি অনেক ধেঁধেছি,
পথ হারাব বলেই এবার পথে নেমেছি।

নিষেধের পাহারাতে ছিলেম রেখে ঢেকে
সে কখন গেছে ফিরে আমায় ডেকে ডেকে,
নিষেধের পাহারাতে ছিলেম রেখে ঢেকে
সে কখন গেছে ফিরে আমায় ডেকে ডেকে,
নয়ন মেলে পাবার আশায় অনেক কেঁদেছি
এই নয়নে পাব বলেই নয়ন মুদেছি,

সোজা পথের ধাঁধাঁয় আমি অনেক ধেঁধেছি
পথ হারাবো বলেই এবার পথে নেমেছি।

চেনা শোনা জানার মাঝে কিছুই চিনি নি যে
অচেনায় হারায়ে তাই আবার খুঁজি নিজে. .. "

হা হা হা .. .. 

বুঝলা ?

এই আমাদের পৃথিবী !
এই আমাদের ইতিবৃত্ত !
এই আমাদের পথ চলা ! 
এই আমাদের ক্ষুধা !
এই আমাদের প্রেম ! 
এই আমাদের জীবন !
এই আমাদের শিক্ষা !

যাইহোক,
নারীবাদী চেতনা ও মুখের সামনে - এই মূর্খ কখনো কোনদিন পেরে উঠেনি !
পেরে উঠবেও না আজীবন !
অগত্যা তোদের জয় হোক !
শুভ কামনা !
শুভেচ্ছাও ! 

জয় হো .. .. 
জয়ী হও ! 

বুঝে নে 
ও 
বুঝিয়ে দে তুই কে .. .!

জয়ী হোক 
তোদের পৃথিবী !
                                                        একদিন পড়িয়ে ছিলাম তো তোকে !  তুই সেদিন একজন ভালো ও মেধাবী ছাত্রী ছিলি ! আজ নয় অবশ্যই ! আজ তুই নারী !
     সেদিন তো আর এসব শিক্ষা দেওয়া যায়নি !
 আজ বলে রাখলাম. ..                         যদি একটা লাইন তোর ভালো লেগে থাকে .. .তাই !                                             যদিও আমি কারো লেখায় মতামত দিই না .. . 
পছন্দও করি না খুব একটা .. ..         আমার কাজও তা মনে করি না .. . 

খারাপ লাগলে উড়িয়ে দিবি লেখাটা ও সাথে আমাকেও !

হা হা হা .. .. 

[ পরবর্তী অংশ বিরতির পর ]

🍁
বাড়িতে বসেই রেজি.ডাক মাধ্যমে জ্বলদর্চির বিশেষ সংখ্যাগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। যোগাযোগ  হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৭৩২৫৩৪৪৮৪

Post a Comment

0 Comments