গুচ্ছ কবিতা / দেবকুমার শুঁই
যোগ-বিয়োগ
কোনো এক মন খারাপের রাতে
তোমার গুছিয়ে বলা মিথ্যেগুলো
আরেকটি বার শোনার অজুহাতে
আমি সকাল-দুপুর গুছিয়ে রাখি
অপাপবিদ্ধ অজস্র গোলাপ
তুমি দিব্যি হেসে উড়িয়ে দিলে :
ছিঃ, এসব স্বপ্ন দেখাও পাপ।
একদিন সেই একলা মেয়ে
বললো ডেকে - এই ছেলেটা, শোন্
বলতো দেখি, একটা মনে
আরেকটা মন,কটা হৃদয় গোন্
আমি বললাম, এ এমন কি, দুটো
মেয়েটা বলে, চল্ না তবে
ওই দুটোকে একটা করে
একটু করে বানাই বাসা
কুড়িয়ে খড়কুটো।
জীবন এবার
এবার জীবন ভরলো পলাশে কিংশুকে
উতরোল ওঠে নিতল হৃদয়ে, নির্মোকে
অভিনয় শেষ। ক্লান্ত দু'চোখে পিপাসা
দূর দেউড়ীতে কার আশাবরী -- জিজ্ঞাসা।
এবার জীবন ভরলো পলাশে কিংশুকে
অযুত পাওনা ভরে নেবো আমি দু'বুকে
ধূলো আর খড়ে, শুকনো পাতায় উড়ন্ত ঝড়
নিমেষে থামলো। সব অনুভূতি ক্লান্তিতে জড়।
এবার জীবন ভরলো প্রথম বসন্তে
দূর নীলিমায় তোমাকেই খুঁজি, -- দিনান্তে
তোমার আসনে বিবর্ণ কিছু লাল পলাশ
শুধু পড়ে থাকে, আমি খুঁজি তাতে নীল আকাশ।
নদীর সাথে কথা
খুবই অদেখা এক নদী
আমায় একলা দেখে অবাক খুবই :
তোর দু'চোখেও দেখি জল ছলছল
জলের উৎসে কি তোর পানসি টলমল?
পানসি তো নেই, তাই পানসে জীবন,
দুঃখেরই সাথে আজ নিত্য রমণ,
তবু মনে হয়, কি জানিস নদী
জলভাসি হলে তার আমাকেই মনে পড়ে যায় যদি....!
চাঁদ ও সেই মেয়েটি
রিমঝিম এক পশলার পরে
আদুল গায়ে আলুথালু চাঁদ
বললো হেসে মেঘআকাশে:
টালবাহানা ছাড় না এবার
চাঁদপানা ওই মেয়েটার হাত দু'হাতে ধর
বেশী তো নয়, একটুখানি
একটা জীবন তার সাথে হোক বরবাদ,
এই দেখ না, আকাশনীলে জোছনা রাতেও
আমার গায়েও অনেক যে অপবাদ।
নৈশব্দে তুমি
আজ সারাদিনই ছিল মুঠো মুঠো অলস সময়
স্বপ্নের সাথে শুধু ফিরে চাওয়া জীবনযাপন
তারি মাঝে কোনো এক পাটভাঙা শাড়ীর আঁচলে
মেঘভাঙা রোদ হাসে বুকের উঠোনে
অনেক অনেক খুশী বিগলিত হৃদয়ের ভীড়ে
কেন জানি বারবার আল বেয়ে ছুটে আসা
সেই মুখ, চোখদুটো আবীর-অরুণ
ভিন গাঁয়ে লাল পেড়ে হলুদ শাড়ীর রাজকন্যে
কৈশোরের কোনো এক টলমলো দীঘির ওপাড়ে
রোজ রোজ লক্ষী হওয়া এই বাউন্ডুলে, অলুক্ষণের জন্যে ….
🍂
0 Comments