জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২৫ / শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২৫ / শুভশ্রী রায়

ঝালেঝোলে গালেগোলে

রসুইঘরে কাছাকাছি মুগ আর মুসুর
সারা দিন চলছে কি সব ফুসুর ফুসুর,
তাল মিলিয়ে কি কি যেন কয় রাঁধুনি,
ধোঁয়া ছাড়া কে বা শোনে তার কাঁদুনি!
যাক গে, পাকঘরের ও সব রাগরাগিণী,
রান্নার মস্ত কাজে আমরা তো লাগিনি,
যা যা করা, প্রাণের দায়ে ঝালেঝোলে;
হয়নি জানা, কত খুঁত যে ছিল অম্বলে!

হাত খুলে মন ভরিয়ে হয় না রান্না করা,
অভাব আর চাহিদার নিয়মিত ওঠাপড়া, 
সব্জি ও মাছের বাড়াবাড়ি দাম বাজারে,
সওদার থলি থেকে জিভে স্বল্প হাজারে,
তাও ঝোলেঝালে মেলামেশা দুঃখ-সুখে!
কী বা তফাত পৌঁছে গেলে খিদের মুখে?
পাশাপাশি ডাল, রসুন-আদা এবং লঙ্কা;
তাও অতৃপ্তি অধিক, খাইয়েও লবডঙ্কা।


বেড়াল মামণি

সোনা সোনা গাবলুগুবলু বেড়াল মামণি,
কাল চারশো ক্ষীর খেয়েও তুমি থামোনি!
অনেক দুধভাত খেয়েও কী করেছ আজ?
লুকিয়ে মাছ খেয়েছ যেই করছিলাম কাজ।
এক টুকরোও আমার জন্য দাওনি রেখে,
শিক্ষা হ'ল, এবার থেকে মাছ রাখব ঢেকে।


বিল্লি বুঝদার

দুষ্টুর দুষ্টু নাকি ওই বেড়াল পুষি?
তা একটু চঞ্চল দেখেশুনে যা বুঝি!
তবে এ কথাও তো ভুল নয় মোটে,
সবটাই দুষ্টু নয়, বলছি সোজাসুজি।

এই যে আমি এত ছড়াটড়া লিখি,
শোনে কে বা সোনা বেড়াল ছাড়া?
ধৈর্য নিয়ে শোনে, দেখায় না বিরক্তি,
এমন শ্রোতা পাব নাকি গোটা পাড়া?

🍂
হইচই ছড়া কই?

সকাল হয়ে গেছে, সোহম সরকার চেঁচাচ্ছে, "আমার ছড়া কই?"
লিখে রেখেছিলাম, তার জায়গায় কী করে এল মোটা একটা বই!
ছড়ার জায়গায় পড়া, ও মা! মুহূর্তের মধ্যে তাও নয়, চিঁড়ে আর দই,
কী হ'চ্ছে , দই-এর জায়গায় এবার লাফাচ্ছে জ্যান্ত একটা কই!
জলজ্যান্ত মাছ টলটলে মায়াপুকুরে, ঘর এক্কেবারে থই থই,
পলক ফেলতে না ফেলতেই গায়েব, বদলে সোজাসাপটা মই!
তবে আমরা এত এত আজব দেখেও থেমে যাওয়ার লোক নই;
সোহম আমি আর আনন্দ মিলে মই বেয়ে উঠে করব কত হইচই!
একঘেয়েমি থেকে বাঁচতে আমরা দু'জন জাদুর অপেক্ষায় বসে রই,
আগাগোড়া ভেলকি ঘটাতে ইন্দ্রজালের প্রভুকে বলেছি পইপই।


নাম ধান

"জলকুমারী" শুনে প্রাণ-জুড়নো ভালো লাগে, তাই না!
সবে জানলাম জলকুমারী বাংলার এক সাবেক ধানের নাম,
আমাদের পূর্বপুরুষ শুধুই কৃষিজীবী ছিলেন এমন নয়,
অন্তরে কবি ছিলেন যদিও প্রধানত করতেন মাটি ঘেঁষা কাম।

কৃষি করতে করতে, দেখতে দেখতে প্রকৃতির নতুন নতুন রূপ,
ঋতুতে ঋতুতে মাটির অঙ্গে বায়ু জলের খেলা কত বিচিত্র,
জীবনের গভীরতর মানে খুঁজে পেতেন অহোরহ মনের চোখে;
প্রকৃতির সুন্দরকে লৌকিক রূপ দিয়ে গেছেন, শুনে দু'কান তৃপ্ত।

সংগ্রহ করতে পারেন। হোয়াটসঅ্যাপ -৯৭৩২৫৩৪৪৮৪

Post a Comment

0 Comments