জ্বলদর্চি

শ্যামল জানা ও মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া-র কবিতা

শ্যামল জানা ও মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া-র কবিতা 

মধ্যবিত্ত কলোনী / শ্যামল জানা

নিচু হয়ে দুঃখ লিখছি...
ওপরে খুব ব্যস্ত চাঁদ। কেমন জ্যোৎস্না মিশিয়ে 
সাদা, এবড়ো-খেবড়ো ফাল্গুন ছেটাচ্ছে 
মধ্যবিত্ত কলোনীর ওপর!

একটু আগেই, নুয়েপড়া মাঘমাস থেকে 
গোপনে নেমে এসেছে 
শার্টের বোতাম খোলা একরোখা শীত। 
কলেজ চত্বরে, ভীতু করিডরে, একটা-দুটো 
লুকোনো চুম্বনের মাঝখানে, দু-পায়ে দাঁড়িয়ে আছে মাঘমাস...
অথচ তাকে তুমি কিছুতেই টের পাচ্ছ না 
নিজেরই আস্তিন গোটানো উষ্ণতার জন্য, 
অথচ জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে কলেজের ফার্স্ট ইয়ার।
প্রতিটি শীতের ভেতরে বোকার মতো ঢুকে পড়ছে চকরাবকরা অনমনীয় সব বয়ঃসন্ধি...

এইবার সে, পুরো কলেজ চত্বর জুড়ে পেতে দেবে 
যৌনতার চাদর। তার ওপরে, যেভাবে শস্যদানা শুকোয়, সেভাবে, যাবতীয় ঝুরঝুরে শীতগুলি ঢেলে 
শুকতে দেবে ওই চাদরের ওপর!

এইবার মধ্যবিত্ত কলোনীর সমস্ত চকচকে যৌবন কলেজশেষে ওই যৌনতার চাদরের ওপর উঠে আসবে। সাদা, ছেটানো ফাল্গুন গায়ে মেখে, একসাথে 
ভার্চুয়াল ‘বরবউ গেম' খেলবে তার ওপর। 
একজনও বলবে না— এসো, ঘর বাঁধি...

নিচু হয়ে দুঃখ লিখছি..., আর ওপরে শীতকাল,
কামড়ে ধরে রেখেছে শুধু চাঁদের কলঙ্কটুকু; 
নিচে পাশ ফিরে শুয়ে আছে মধ্যবিত্ত কলোনী...


পাড়ার জলসা 
মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া

নিজস্ব চাঁদ হয় খুব
টিভি সিরিয়ালের ঠাসাঠাসি আলো
চোখে এসে পড়ার আগেই চাঁদ হয় এক একদিন
হাওয়ার পাল্লা ঠেস দিয়ে হেসে ওঠে পাড়ার মেয়েরা
অসুখের দেওয়ালে মাথা ঠুকে ঠুকে একঘেয়ে
বিকেলের পর এমন সন্ধে এলো 
দুচোখেই  আলো লেগে গেছে তার
উদ্দাম নেচে ওঠে গোধূলি কোরাস 
মেকআপের ঘামতেলে অলৌকিক ঘূর্ণি মুদ্রায়
সোনার পিত্তলমূর্তি অবিরল ঝরে ঝরে যায়
স্টেজ নিবে এলে পাড়ার মেয়েরা নেমে আসে
আমাদের চিলেকোঠা ছাদ ও আকাশে
হাওয়ার গম্বুজে..চলো,উড়ে যাব আজ
 মাঠভর্তি কালো বেলুনের মতো মাথা
আর হাততালি কখনোই ভালবাসোনি
ভিড়ের ভেতরে ও নিষিদ্ধ চোখ
বিষাদের গোপন ফণা,তুমি শুধু দূরে থাকো

এলেবেলে পাড়ার জলসায় তুমি কখনো আসোনি...

🍂

Post a Comment

0 Comments