যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ৯৯
মেয়েটা আমার এত বছর বিলেতে থেকেও সাড়ি আর পান্তা ভুলতে পারল না। ওখান থেকে একটা সাড়ি বুক করেছিল।আজ এখানে ডেলিভারি দিয়ে গেল। সাড়িটা মন্দ নয়। আমাকে পরে ছবি তুলে পাঠাতে বলেছে ।সে হবে এখন। আমি ভাবছি আগামিকাল ইদুজ্জোহা, রানী তো ও বাড়ি চলে যাবে। আমি কী করব? কোথায় যাব?
আজ সকাল থেকেই সবার বাড়িতে কত ব্যস্ততা, কত আনন্দ। ছেলে-বুড়ো সবাই স্নান করে জামাকাপড় পরে আতর লাগিয়ে নামাজে যাবার জন্য অপেক্ষা করছে। রান্নাঘরে মা, কাকি, বউদিরা রান্নায় ব্যস্ত। ইদে খাবার খেয়ে নামাজে যাওয়া নিয়ম বা বিধান। তাই ইদের নামাজ একটু দেরিতে হয়। ইদুজ্জোহাতে নামাজ পড়ে এসে খেতে হয়। তাই ইদুজ্জহার নামাজ তাড়াতাড়ি হয়। তারপর কোরবানি দেওয়া, হিসেব অনুযায়ী তা বিতরণ করা, এসব কাজ তো থাকেই। আমি এসব থেকে মুক্ত। সকালবেলা এক প্রস্থ কান্নাকাটি করে উঠে নিত্য দিনের কাজে মন দিলাম। দুপুরে সামান্য রান্নাও করলাম এই ভেবে যে, শাহাবাজ যদি আসে? বিকেলে বেশ কিছুক্ষণ লিখলাম। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচুর মানুষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।অনেকে ফোনও করছেন। বাবলির সঙ্গে কথা হল, জারা ইদের শুভেচ্ছা জানাল। এভাবেই আমার ইদ কাটল।
লেখাটা শেষ করে আজ ‘আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ’এ মেল করলাম। কেমন হয়েছে, কে জানে। মানুষ যেমন ইমানদার হয়, তেমন মানুষই বেইমান হয়। পশুরা কিন্তু কখনো বেইমানি করেনা। অতীতটা মানুষ খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায়, যদি তাতে অন্যের সাহায্য সহযোগিতা থাকে। আশেপাশের ২/১ টা পরিবার সেইরকমই। যখন যার থেকে পায়, তারই গুণ গায়।
আজ নিপার(পরিবর্তিত নাম)সঙ্গে অনেক কথা হল, কয়েকদিন আগে ফোন করে আমাকে জিজ্ঞেস করছিল আমি ওদের সঙ্গে অভিনয় করতাম যদি, আমি না করে দিয়েছি। আজ ফোন করে জানাল, এইটুকু বয়সে কী কঠিন পরিস্থিতি পার হয়ে এসেছে! অল্প বয়সে ভুল পথে পা বাড়ালে এই পরিস্থিতিতে মেয়েরাল পড়তে হইয়। ১৪ বছর বয়সে নিপা পালিয়ে গিয়ে একটি মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করেছিল। সে তাকে ভিন রাজ্যে নিয়ে গিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তোলে এবং তার ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাতে থাকে। শেষে মেয়েটি বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাবা পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।কিন্তু তাকে আইন অনুযায়ী হোমে রাখা হয়। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত হোমেই ত্থাকতে হয়েছে। ফলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বাড়ি ফিরে আবার একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেটাও স্থায়ি হয়নি। এখন টিক টক করে সময় কাটছে। বেশকিছু ছেলে বন্ধু রয়েছে, তাদের নিয়ে কিছু করতে চায়।
আজ মনটা খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। পুরনো কথা যত মনে পড়ছে,তত কান্না আসছে। থেকে থেকে কেঁদেই চলেছি। আর এটাও ভাবছি, নিজেকে লেখায় ও অন্য কাজে ব্যস্ত না রাখলে হয়ত পাগল হয়ে যেতাম। আমি যে একেবারে একা হয়ে গেলাম।খোদা ,তুমি মৃত্যুর সময় আমার মেয়ে, জামাই, নাতনিকে কাছে রেখো। আর আমার বাকশক্তি ও চলৎশক্তি কেড়ে নিও না।
সৌনককে আড্ডা তে খোঁজ নিতে বলে ছিলাম। ও আজ ফোন করে জানাল ওরা এখুনি বুক করতে বলছে, কোভিডের কারণে যদি অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়, তাহলে ওরা টাকা ফেরত দেবে। অন্য কোন কারণে বাতিল করলে টাকা ফেরত দেবে না। হাতে বেশি সময় নেই, একাকেই যখন সব করতে হবে, তখন সময় থাকতে কাজ গুছিয়ে নেওয়া ভাল।
ধীমান ফোন করে জানাল, ২/৩ দিনের মধ্যে ‘আবর্ত’ বেরিয়ে যাবে। জানতে চাইলেন কীভাবে আমাকে বই পাঠাবেন। বই প্রকাশিত হবে অনলাইনে। ৮ আগস্ট কলকাতায় কফি হাউসে বই উদ্বোধনের কথা ভেবে ছিলাম, কিন্তু রবিবার কফি হাউস বন্ধ থাকে। তাই ৭ আগস্ট শনিবার ডেট ফ্যাইনাল হল। কিন্তু মনটা ভাল নেই, সেই সঙ্গে শরীরটাও খারাপ। শাহবাজের বাবা রাতে ফোন করে জানিয়েছেন ২৯ অক্টোবর বিয়ে। সেইমত লজ বুক হবে। রানীর বাবা টাকা দেবে বলেছে, কবে দেবে? কত দেবে? সে বিষয়ে কিছু বলেনি। সব আমার একার হেডেক। অথচ আমার জন্য কেউ ভাবে কি? যেটুকু ভাবে, সে চন্দ্রিমা। ওই আমার একমাত্র ভরসা।
কলকাতা যাওয়া বাতিল, বই শুভাশিষের কাছে পৌঁছে দিতে বলেছি, ও আমাকে যে ভাবে হোক পৌঁছে দেবে। বহুদিন পর আজ চন্দ্রিমা এসেছিল, মেয়েটার চেহারা এত খারাপ হয়ে গেছে যে তাকানো যাচ্ছিল না।আগামিকাল অনন্যা আসবে, আমার হাতের খেতে চেয়েছে। সকালে বাজার করতে হবে। আমার মনখারাপের রাত। সব চেপে রেখে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কী আছে জীবনে? স্বপ্নে আসা যাওয়া করে যারা তাদের যদি ধরে রাখতে পারতাম! জানি এসব আলীক কল্পনা।
অনন্যা আসবে বলে ওর জন্য স্পেশাল কিছু বানিয়ে রাখতে হবে। বাড়ির রান্নার পর। ছোলার ডালের হালুয়া, চিকেন রেজালা আর কুলচার জন্য সব রেডি করে রাখলাম। ও এল অফিস ছুটির পর সন্ধ্যায়। প্রথমে চিকেনফ্রাই, হালুয়া আর চা দিয়েছিলাম। ও তো হালুয়া খেয়ে একেবারে ফিদা। খেতে খেতে বলল, ‘দিদি আমি লোভ সামলাতে পারছিনা’। কয়েক টুকরো খেয়ে বলল, ‘বাকিটা কৌটোতে ভরে দিয়েদিন, আগামীকাল আমার হাসবেণ্ড আর ছেলে আসবে, ওদের জন্য নিয়ে যাব। আরও কিছুটা হালুয়া ওকে কৌটোতে ভরে দিয়েদিলাম।ডিনারে দিলাম, কুলচা আর চিকেন রেজালা। ও চিকেন খুব পছন্দ করে। অনেক গল্প হল, ছবি তোলা হল। শাহবাজও রাতে খেয়ে গেল, রেজালা ওরও খুব পছন্দের খাবার। এক সময় রান্নায় মন ছিল। রান্নার সুখ্যাতিও ছিল। এখন এসব করতে হয়, তাই করা।
গতরাতে কী হয়েছিল জানি না। ডাইরিতে অসংলগ্ন কিছু কথা ঘুমের ঘোরে লিখেছি। ‘কোন পুরুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়া মানে তার প্রেমে পড়ে যাওয়া’? তারপর এলো মেলো আঁকাবাঁকা কিছু শব্দ, যা উদ্ধার করতে পারিনি। প্রেম নীরবে নয় সরবে দুয়ার প্রান্তে বহুবার এসেছে। তবে সেটা প্রেম ছিল, না লালসা? সে বিষয়ে ভাব্বার প্রয়োজন মনে হয়নি।
আজ শরীরটা অনেকটা ভাল। তাই বাবলির সাড়ি দুটো পরে ছবি তুলে ওকে আর যেখান থেকে নিয়েছে, সেই ‘কারুবাসা’য় ছবি পাঠালাম। বাবলি ও ‘কারুবাস’র মন্তব্য, দারুণ মানিয়েছে। এখন আর এসব কথা মনে আনন্দ দেয় না।
রানীর বাবার মতলব বুঝতে পারছি না, মেয়ের বিয়েতে কত্ টাকা দিতে পারবে? সে প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে। তার প্রশ্ন, মামারা কী দিচ্ছে? কারণ মামার বাড়িতে বড় হয়েছে। এসব কোন যুক্তিই নয়। আমি ওকে মাইনাস করে রাখছি। আর মামা মামিরা, বিশেষ করে দুই মামি এই বিয়েতে মোটেও খুশি নয়, এক মামি আগেই বলে দিয়েছে্, তারা কিছু দিতে পারবে না। এক মামাও এখানে বিয়ের কথাবার্তা চলার সময়ই বলে ছিল, ‘এত বড়লোকের বাড়িতে বিয়ে দেবার কী দরকার? আমার ছেলেকে পড়াতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে, আমি কিছুই দিতে পারব না।
বন্ধু (মনোবিদ)তটিনীর সঙ্গে কথা বললাম, অনেকক্ষণ কথা বলার পর বললেন, ‘আপনি গভীর ডিপ্রেশনে আছেন’। একজন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলা দরকার। উনি খুবই হাল্কা ডোজের ওষুধ দেবেন.১০/১২ দিন পর থেকে ধিরে ধিরে সুস্থ বোধ করবেন। আপনাকে এর থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে, না হলে কঠিন অসুখে পড়ে যেতে পারেন’। বললেন, ডাক্তার দেখানোর পর প্রেসক্রিপশনের যেন একটা ছবি তুলে পাঠাই। আরও বললেন, আমি যেন বাইরে বের হই, যা ভাল লাগে তাই করি। লোকের কথায় যেন কান না দি। তটিনীর সঙ্গে কথা বলে মনটা অনেক হাল্কা লাগছে।
গতকালই সাইফুল্লাকে(আলিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক) লেখাটা মেল করেছি। দুপুরবেলা কি যেন করছিলাম, ‘ফোরথ পিলার’ চ্যানেল থেকে সুদীপ্তর ফোন পেলাম। বললেন ‘আই মুহূর্তে আফগানিস্থানের মহিলাদের অবস্থা নিয়ে একটি এক ঘণ্টার লাইভ প্রোগ্রাম করব, আপনি যদি অংশগ্রহণ করেন’ বাড়িতে বসে অনলাইনে প্রোগ্রাম, তাই রাজি হয়ে গেলাম। আমি ছাড়া আর যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন, দুঃখের বিষয় তাঁদের নাম মনে নেই। এটুকু মনে আছে, দিল্লি থেকে দুজন আনন্দবাজারের প্রাক্তন সাংবাদিক ছিলেন, তারা দুজনেই আফগানিস্থান গিয়েছিলেন। আর ছিলেন যাদবপুর ইউনিভার্সিটির এক তরুণ অধ্যাপক। এটা তাঁর বিষয় বলে চর্চায় আছেন, খুব ভাল বলেছেনও। অনুষ্ঠান শেষে নিজেদের মধ্যে মিনিট ১০ আলোচনা হল। প্রসঙ্গত জানাই সুদীপ্ত একমাত্র ভারতীয় সাংবাদিক, যিনি গতবছর আফগানিস্থান গিয়েছিলেন।
ইদানিং শহরে শর্টফিল্ম বানানোর একটা উন্মাদনা দেখতে পাচ্ছি। নাচ, গান ও কবিতার ভিডিও তো অনেকেই করছে। আজ ফিল্ম ফেয়ারে গেছলাম। সঙ্গীত শিল্পী ও ফিল্ম মেকার সুমন্ত সাহা( সঙ্গীত শিল্পী জয়ন্ত সাহার ছেলে) আমাকে কিছু বলার জন্য মঞ্চে ডাকলে, কিছু বলতেই হল। সুমন্তই জানিয়ে দিল’ ‘ভ্যাক্সিন’ ফিল্মের কাহিনী ও চিত্রনাট্য আমার লেখা। সবাই জেনে গেলেন। আজ ফিল্ম ফেয়ারের রেজাল্ট ও পুরষ্কার দেওয়া হল। অরিজিতের ‘পোস্ট মাস্টার’ প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। দর্শকের বিচারে রাকিবুলের ‘আঁধার শেষে’ প্রথম হয়েছে। এই জগতের প্রতি একটা আকর্ষণ অনেকেরই থাকে। একটা সময় আমারও ছিল। এখন আর এসবে জড়াতে চাইনা। কয়েকটি শর্টফিল্মে, বিজ্ঞাপনে ও গানের ভিডিওতে অভিনয় করার পর অনেকেই আসছে স্ক্রিপ্ট লিখে দেবার বা কারেকশন করে দেবার আবদার নিয়ে। অভিনয়ের জন্যও কেউ কেউ বলছে। কয়েক জনের স্ক্রিপ্ট কারেকশন করেও দিয়েছি। কেউ আমার থেকে লিখিয়ে নিয়ে গিয়ে নিজের লোকের নাম বসিয়ে দিয়েছে। আমার জগৎ ভিন্ন। এসব করলে আসল কাজটাতেই সময় দিতে পারবনা।
🍂
আজ আমার ‘আবর্ত’ হাতে পেলাম। ভালই হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। রাখির দিন আসতে পারেনি বলে সৌনক আজ এসে বৃষ্টিতে আটকা পড়ে ছিল। অনেক কথা হল। ওকেই সুস্নাত জানা আর শক্তিনাথ ঝাকে স্পীড পোষ্টে পাঠানোর জন্য দুখানা বই দিলাম। স্বপ্না ৫ কপি রাখতে বলেছে। মল্লিক পুস্তকালয়ে ৫ কপি, আরও যারা নেবেন বলেছেন, তাঁদের দিতে হবে। সাংবাদিক বরুণ আসবে, ওকে এক কপি দিতে হবে। সব মিলিয়ে ৩০ কপি চলে যাবে। ধীমান রয়ালিটি দেবে মাত্র ৫%। বরুণ এসেছিল আজ, অনেক প্রশ্ন করল। অনেক কথও হল।
সামনের কয়েকটা দিন খুব ব্যস্ততার মধ্যে কাটবে। এতেই অবশ্য ভাল থাকি। শুধু একটা ভুল সিদ্ধান্ত কাঁটার মত বিঁধছে। কারো সঙ্গে প্রতিশোধ নিয়ে কোন লাভ হয় না। এদিকে কবরস্থানের ঝামেলা মেটাতেই পারছি না। আজ আরিফ আহমেদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললাম। উনি বললেন, ওরা কী বলতে চাইছে, আগে জানুন, তারপর কবরস্থান কমিটির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেব।
সন্ধ্যাবেলা বরুণ ফোন করে বলল, দিদি আমি বাইরে আছি, আপনি আপনার বইগুলির মলাট ও ভিতরের পাতায় যেখানে বইগুলির সমস্ত তথ্য রয়েছে, সেই পাতা দুটির ছবি তুলে এবং আপনার ছবি ও পরিচিতি আমাকে পাঠিয়ে দিন। কলকাতার অফিস থেকে চেয়েছে’। পরদিন কড়চায় আমার ছবি সহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হল। সোশ্যাল মিডিয়াতে সুদীপই পোস্ট করেছে দেখলাম।
কবরস্থানের ব্যপারটা তাড়িয়ে নয়ে বেড়াচ্ছে। মহলদার সোভানের সঙ্গে কথা বলেছি। জামালকেও ফোন করলাম। ওরা বৃহস্পতি বার বিকেলে সমাধিস্থলে উপস্থিত থাকবে, আমাকেও থাকতে হবে। কবে যে কাজটা করে উঠতে পারব, জানি না।
আজ ১ সেপ্টেম্বর, ব্যস্ততার মধ্যে থাকি বলে মনে হচ্ছে দিনগুলো যেন দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। আজ সুস্নাত জানা ফোন করেছিলেন। অনেক কথা হল। কথা প্রসঙ্গে বলছিলাম অনেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কোন কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়ান’? কেউ বলেন, ‘কোন কলেজে পড়ান’? শুনে বললেন, ‘আপনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট লেকচারার বিশেষণটি নামের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন। জানিনা উনি মজা করে বললেন কিনা। তবে ওরকম কোনো বাসনা আমার নেই, আমি যা, আমি তাই। আমি চাই আজীবন যেন মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারি।
আজ ভাস্কর পতিকে ফোন করতে, ও বলল ‘আমিই আপনাকে ফোন করতে যাচ্ছিলাম। ‘মেদিনীপুর ছাত্র সমাজ’ ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষকদিবসে আপনাকে সম্বর্ধনা দিতে চায়। আমাকে মানপত্র লিখে দিতে হবে। তাই আপনার কাছে কয়েকটা কথা জানার ছিল’ আমি ওকে রাতের দিকে ফোন করতে বললাম। রাত ৮ টার দিকে একটি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন এল, রিসিভ করতে ওপ্রান্ত থেকে একটি পুরুষ কণ্ঠ বলল, ‘মাসি আমি অসীম বলছি(অসীম আমার বন্ধুর দিদির ছেলে)। খড়গপুরের কাউন্সিলার মুনমুনদা আনন্দবাজারে তোমার কথা পড়ে, মঙ্গলাপোতা গ্রামটি আমি চিনি কি না জানতে চাইছিলেন, আমি বললাম, আমার বাড়ি ওই গ্রামেই,’ তোমার ‘রোশেনারা’ নাম আমার জানা ছিলনা, তবে মনে হচ্ছিল, ওটা তুমিই। মনিমামাকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হলাম। মুনমুনদা ওনাদের একটি ক্লাব তোমাকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে চান। তোমার নাম্বারটা কি ওনাকে দেওয়া যাবে? আমি সম্মতি দিলাম।
ক্রমশ
0 Comments