বার্লিন ওয়াল
বার্লিনের ডায়েরি -৬
চিত্রা ভট্টাচার্য্য
বার্লিন গেটের পরবর্তী অংশ
অদ্রিজার গল্পে বিভোর হয়ে শ্রীময়ী বিস্মৃত প্রায় সেই ইতিহাসের পাতায় ডুব দিয়েছে । কালো ছাপা অক্ষর গুলো ওর চোখের সামনে চক্রাকারে ঘুরে ক্রমশঃ উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে। বাস্তব থেকে লক্ষ যোজন দূরে অতীতের সিঁড়ি পেরিয়ে সম্মোহিতের মত চলেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, বাতাসে গোলা ,বারুদের গন্ধ। কামানের গগন বিদারী গর্জন , বোমাবর্ষণ অগ্নিসংযোগে মৃত্যু লীলার ধ্বংস স্তুপ। সমগ্র পৃথিবী জুড়ে চলছে অস্থিরতা ,অত্যাচারীর বিধ্বংসী রূপ, হিংসার উন্মত্ততায় নিষ্ঠুর দ্বন্দ্বে দেশ থেকে দেশান্তরে চলছে ক্ষমতার লড়াইয়ের তান্ডব নৃত্য।
অদ্রিজার হাত ধরে বার্লিনের গর্ব ঐতিহ্যপূর্ণ
ব্রান্ডেনবার্গ ফটক বা তোরণ দ্বারের এপার ওপার করে এসে শ্রীময়ী স্তব্ধ। এক রোমাঞ্চ কর অনুভূতির স্পর্শ যেন ওর সারা শরীরে শিহরণ জাগিয়েছিল , ঋষভ হাতের রোড ম্যাপ মিলিয়ে আরো কিছুটা পথ এগিয়ে ব্রান্ডেনবার্গ গেট থেকে পূর্ব দিকের প্রসিদ্ধ রাস্তা " উন্টারডেন লিন্ডেনে ''সোজা চলে এসে পৌঁছলো হামবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে বেবেলপ্লাৎস এর বিশাল ক্যাম্পাসে। এখানে প্রতিষ্ঠিত আছে একটি বিখ্যাত পুরানো লাইব্রেরী ,একটি ক্যাথেড্রাল চার্চ ও স্টেট অপেরা যা মূলত রাজপ্রাসাদ ছিল। যত দূর চোখে পড়ে গাছ গাছালিতে , সবুজ ঘাসে ভরে আছে প্রাসাদ প্রাঙ্গণ ।
এখানের প্রোথিত ইতিহাসে ওরা তন্ময় , মলিন হয়ে যাওয়া পাথরের গায়ে লেখা আছে ১৭৪৩ সালে (Prosier) প্রোশিয়ার হোহেঞ্জোলিয়াম (Hohenjolearn)রাজবংশের রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক কর্তৃক 'ও পার্নপ্লাৎস ' নামে এই রাজপ্রাসাদ টি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিধ্বংসী বোমার আঘাতে এই বিল্ডিংগুলো প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত হওয়ায় বিশ্ব যুদ্ধের অবসানে শান্তি ফিরলে এ শহর কে নতুন ভাবে সংস্কার করে পুনর্নির্মাণ করা হলো। ১৯৪৭ সালে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নেতা অগাস্ট বেবেলের নাম পরিবর্তিত করে বেবেলপ্লাৎস রাখা হলো।
বার্লিন রেলস্টেশন
শ্রী একটু ভেবে ঋষভ কে বলে ,তোমার মনে আছে কিনা জানিনা ? জার্মান নাৎসী বাহিনী দের আরেকটি বিশ্ব নিন্দনীয় লজ্জা জনক ঘটনায় সারা পৃথিবী তোলপাড় হয়েছিল। অদ্রিজা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালে, ও বলে , ১৯৩৩ সালে হিটলারের অনুসরণ কারী যুব সম্প্রদায় ও নাৎসী বাহিনী ইয়ুথ দলের সদস্যরা এখানে মূলত ইহুদি কবি ,লেখক ,দার্শনিক ও বিজ্ঞানী দের প্রায় ২০,০০০ বই পুড়িয়ে দেয়। ওরা ভেবেছিল পুস্তকে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্বব্যাপী বিশাল প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে । ওদের মূল মন্ত্র ছিলো ইহুদি বুদ্ধিজীবি দের হাত থেকে জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতিকে কোনো প্রকারে রক্ষা করা। নাৎসী বাহিনীর এই নির্মম পুস্তক যজ্ঞের ঘটনা --সেই সময় সমস্ত পৃথিবীতে নিন্দা ধিক্কারের সাড়া ফেলে ছিল। এই পুস্তক নিধন যজ্ঞে বিশ্ববাসী যে কত ক্ষতি হয়েছিল তা শুধু তৎকালীন বিজ্ঞানী দার্শনিক সাহিত্যিক ,ছাড়াও জ্ঞানের আলোক প্রাপ্ত বিশ্ববাসী বেশ বুঝেছিলো। আধুনিক সভ্যতার আলোর দিকে এগিয়ে যাওয়া থেকে পৃথিবী ব্যাপক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছিল এবং সে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দেওয়া ও সহজ নয়। এই অভাবনীয় ঘটনায় পাল্টা প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল বিশ্বের বুদ্ধিজীবী মহলের সাথে,ও নানা সম্প্রদায়ের জনগণের চেতনায়।
একসময় ,ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীহলে কত সময় কাটাতো ওরা বিশ্ব ইতিহাসের নানা বইয়ের পাতা উল্টে সন,তারিখ ,নানা দেশের ঘটনার বিবরণ লিখতে। তৎকালীন ইতিহাসের একচ্ছত্র নায়ক প্রবল পরাক্রম শালী হিটলার এবং তাঁর সাথে জড়িত জার্মানি দেশ টির কার্য্য কারিতা ঘটনাক্রম মনে রাখা ও ছিল অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ কাজ ।
১৪১৭ সালে হোলি রোমান এম্পায়ারের রাজত্ব কালে এই বার্লিন রাজধানীর মর্যাদা পেয়েছিল। এই শহর একাধারে জার্মানির একটি বিরাট প্রসিদ্ধ নগর ,একটি বহুজাতিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের দরবারে আজ ও যার খ্যাতি আকাশছোঁয়া। পরিসংখ্যান বলে ৩৪ লাখের বেশী এর জনসংখ্যা হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন কোণ থেকে আগত ৪ লক্ষ ৩০ হাজার অভিবাসী এখানে বসবাস করেন। শহরটি আয়তনে ৩৪৩ বর্গ মাইল এবং প্যারিস শহর থেকে প্রায় ৯ গুন বড়ো।ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে লন্ডনের পরই সব থেকে জনসংখ্যা বেশী এ শহরে।
আবহমান কাল থেকে রীতি নীতি অনুযায়ী বার্লিনে বহুসংস্কৃতির ধারা প্রবহমান। আন্তর্জাতিক মানের থিয়েটার,চলচ্চিত্র উৎসব পরিবশেনা ,ও সমালোচনা,শিল্প শৈলী প্রদর্শনী এবং দৃষ্টি নন্দন জাদুঘর গুলো যা আধুনিক বিশ্বের বুদ্ধিজীবী জনসমাজ কে প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে।এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ,বড়ো কর্পোরেশন এবং প্রচুর বিখ্যাত স্টার্টআপ কোম্পানীর মূল কেন্দ্র হওয়ায় আধুনিক সভ্যতার গতির সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে উত্তোরত্তর সমৃদ্ধিতে বিলাস ব্যাসনে ভেসে সদা ব্যস্ত বার্লিনের চোখ থেকে রাতের ঘুম মুছে গিয়েছে।
ম্যাপ দেখে কিছুটা হেঁটে 'ফ্রিডরিশস্ট্রাসের রাস্তা টি তে ওরা পৌঁছেছিল। জার্মানির ও ইউরোপের জন্মলগ্নের তৎকালীন সময় থেকে আজো অপরিসীম গুরুত্ব পূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে এই বিখ্যাত স্ট্রীট টি। চেনা রাস্তায় এসে অদ্রিজা বেশ উত্তেজিত। বলে, --আলেক্সেই ,ক্রিস্টিনাদের কাছে শুনেছি পুরোনো দিনের মত এখানের আধুনিক জীবন যাত্রায় ও বিনোদন এবং উপভোগের সব রকম উপকরণ সুন্দর মজুত রয়েছে। অবসর যাপনে সেলিব্রেটিদের মনোরঞ্জন এবং বর্তমানের ইয়ং গ্রূপ ও নানা স্তরের মানুষের পছন্দ অনুযায়ী সময় কাটানোর জন্য নারী ,নর্তকী পান ভোজনের সব সুবিধা রয়েছে। জার্মান দেশ টির অভ্যন্তরীণ অশান্তি ও দেশ বিভাজনের ফলে ঠান্ডা লড়াইয়ের যে কালো ছায়া নেমে এসেছিলো তার প্রথম সূত্রপাত এই ফ্রিডরিশস্ট্রাসে রাস্তাটিতেই হয়েছিল এবং ১৮৮২ সালে ঐ নামে এখানে যে রেল স্টেশন টি খোলা হয়েছিল আজ তা অবলুপ্ত হলেও রাস্তার নামটি আজ ও ' ফ্রিডরিশস্ট্রাসে 'নামেই বিশেষ পরিচিত হয়ে আছে ।
শ্রীময়ী বলে-জার্মানির বিভাজনে ইতিহাসের পাতায় এই রাস্তাটির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। রাজধানী বার্লিনে আসার আকুলতা বোঝানোর জন্য এই নামটি ই সেই সময় থেকে জনগণের মুখে প্রচলিত ছিল। ঐ রাস্তার নামে ক্রমশঃ প্রচুর জনসমাগম ও ঘন বসতি গড়ে উঠতে থাকে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ ঘর বাড়িই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বোমার আঘাতে নির্মূল ,ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিলো। এবং দ্বিখণ্ডিত বার্লিন ওয়ালের কয়েকটি সুবিখ্যাত সীমান্ত পারাপারের কেন্দ্র এই রাস্তাটি যেমন চেকপয়েন্ট চার্লিতে সীমান্ত রক্ষীরা , বিদেশী আর্মির লোকজন ও কূটনীতিক বিদদের চলাচলের পক্ষে সুগম ছিল। এই চেকপয়েন্ট দিয়ে ভারী বুটের আওয়াজ তুলে তারা,পশ্চিম বার্লিন থেকে পূর্ব বার্লিনে স্বদর্পে অস্ত্র শস্ত্র হাতে পাহারা দিত, রাইফেল উঁচিয়ে তারা যাতায়াত করত। অথচ সাধারণ বার্লিন বাসীর বেলায় ছিল বিস্তর নিষেধাজ্ঞা। রাতের বার্লিন এখান থেকেই আরো কয়েক কদম হেঁটে ,ঋষভ দেখায় অদূরেই রয়েছে একটি উন্মুক্ত মিউজিয়াম। পিতা কন্যায় কম্পিটিশন চলে -- কে আগে পৌঁছবে? শ্রীর পা শাড়িতে জড়িয়ে যায় ওদের দ্রুত গতির সাথে তালে তাল মিলিয়ে ওর আড়ষ্ট পা চলতে চায় না। ,ধীর গতিতে সেখানে পৌঁছলে,রোয়াকের মত বাঁধানো একটি জায়গা দেখে সেখানেই বসে পড়ে।ঋষভ দেখায় ফলকে লেখা আছে বার্লিন প্রাচীর পতনের ১৫ বছর পর চেক পয়েন্ট চার্লির কাছে একটি বেসরকারি উদ্যোগে এই স্মৃতি সৌধ গুলো গড়ে তোলা হয়েছিল। ঐ যে ক্রশ চিহ্ন দেয়া ছোট্ট ছোট্ট টুম্ব গুলো দেখছো ,ও গুলো সব সমাধি।
ও ভুল সংশোধন করে বলে আসলে ',শহীদ স্মৃতি। ঘটনাটি হলো বার্লিন প্রাচীর অতিক্রম করতে গিয়ে যাঁরা প্রাচীর রক্ষীর বেয়নেটের আঘাতে বুলেটের গুলিতে বুটের লাথিতে অত্যন্ত নৃশংস ভাবে মৃত্যু বরণ করেছিল সেই মৃতদের স্মরণে ১০০০ এর ও বেশী ক্রশ এবং দেওয়ালের অংশ বিশেষ দিয়ে গড়া স্মৃতি সৌধগুলো এখানে স্থাপন করা হয়েছিল। অদ্রিজা বলে ,প্রথম বার যখন এসেছিলাম ,সে সময় প্রবীণ গাইড মি; ফিওদরের কাছে শোনা সেই মর্মান্তিক কাহিনী মনে পড়ছে ।
আজ ডায়েরির বিবর্ণ হয়ে যাওয়া পাতা গুলো শ্ৰীময়ীর দিকে সকাতরে চেয়ে আছে। সেদিনের সেই অভিজ্ঞতা, সমাধি ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে ওর উপলব্ধির কলমে আঁচড় টানা কয়েকটি পাতায় চোখ বোলায়। এক বেদনা বিধুর মর্মান্তিক ইতিহাস মন কে নাড়া দিয়ে চোখের ওপর ভেসে ওঠে। আদিম হিংস্র লোলুপ সর্বস্ব গ্রাসের ,দুর্বলের ওপর সবলের হামলা,লুঠতরাজের রাজনীতি , প্রভুত্ব স্থাপন ,বলাৎকারের অন্ধকারে ডোবা অত্যাচারে জর্জরিত মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের এক নীরব চালচিত্র i সম্পূর্ণ সান্ধ্য পরিবেশ কে এক গভীর বিষণ্ণতায় ঢেকে দিয়ে বাতাসে তার হাহাকার ভেসে বেড়ায়। কান পাতলে শোনা যায় অতীতের তলে চাপা পরে থাকা রুদ্ধ গোঙানি। তাঁদের নীরব পদ ধ্বনির সাথে হাজার হাজার অত্যাচারিত অতৃপ্ত বিদেহী আত্মার কান্না। ফিসফিসিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় আজো যেন তারা নালিশ জানিয়ে নিশুতি রাতে গুমরে মরে। কিন্তু কে দেবে উত্তর ? তাঁরা যে কবেই অবহেলায় অনাদরে মাটির সাথে মিশে গিয়েছে।
বার্লিনের স্থাপত্য শিল্প।
তারপর কখন ধূসর বিকেল পার হয়ে বিষণ্ণ সাঁঝের শেষে কালো ওড়নার আড়ালে রাত নেমে এলো । সে সান্ধ্য রাতের সন্ধিক্ষণে আকাশের বুক জুড়ে কুলায়ে ফেরা পাখিদের কলকল রবের সাথে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তিতিরের হাত শক্ত করে ধরে বার্লিন গেট পার হয়ে শ্রী হেঁটে চলেছে বাস স্ট্যান্ডের দিকে। উন্মুক্ত সবুজ প্রাঙ্গনের ,ওপর দিয়ে চলার সময় কানের পাশে তীব্র হাওয়ার এক শিরশিরানি পরশ নিশির ডাকের মতো সম্মোহিত করেছিল। সন্ধ্যার আলো আঁধারিতে এ যেন এক দুঃস্বপ্নের বিভীষিকার রাজ্য। অদূরে দেবী ভিক্টরিয়ার সোনালী ভাস্কর্য্যের মূর্তি আর জোনাকির আলো জ্বলার মত অজস্র ক্ষুদে বাতি র মিটমিটে আলোর সাথে এক রহস্য ময় পরিবেশ। মাথার ওপরে তারায় ভরা কালো আকাশে কাস্তের ফলার মত এক ফালি ভাঙা চাঁদ। শ্রীময়ী যেন পেরিয়ে এসেছে এক অন্ত বিহীন পথ। মানুষের ক্রূর পাশবিক চরিত্র হিংস্রতার নির্লজ্জ্ব সকরুণ কাহিনী তার একরাশ কদর্য দাঁত , লেলিহান জিহ্বা মেলে করাল রাক্ষসীর রূপ নিয়ে-মনে গভীর দাগ কাটলো। সব মিলিয়ে খারাপ ভালোর মিশ্র এক অন্যরকম অনুভূতি।
এবার সময় হয়ে গেছে ঘরে ফেরার। ক্যামেরা হাতে অনেক ছবি তুলেছিলো যদিও আবছা আলোয় সব অস্পষ্ট। তিতিরের বড্ড মন খারাপ। তবুও আজকের বেড়ানো ,বার্লিন কে প্রথম দর্শনে শ্রীময়ী যেমন দেখেছিল-সে ছবি ওর মনের গভীরে আঁকা রইলো। এক অনবদ্য স্মৃতি সুধায় অতুলনীয় রূপে ধরা রইলো আধুনিক বার্লিন।
হুফহাফ বাস এসে গিয়েছে ,একবারে ফাঁকা এবার আর খোলা ছাতে নয় রাত বাড়তে থাকায় ঠান্ডাও পাল্লা দিয়ে নামছে। সীটে ঠিক মত বসতেই সে আপন গতিতে নিজের ছন্দে চলতে শুরু করেছে। ক্রমশ:
0 Comments