মলয় পাহাড়ী ও তাহের আলি-র কবিতা
ভাটা শ্রমিক
মলয় পাহাড়ী
দহনের এতটা পর মাটির শরীর থেকে নিভে গেছে আগুন। ডাম্ফার পাশে লাট মেরে রাখা আছে নতুন অহঙ্কার, মাটি পোড়া লাল। পাশের অলিতে দু'চাকার গোটা তিরিশেক ঠেলা বিশ্রামে, তেলতেলে বাঁশের হাতল থেকে তাদের ঠিকরে পড়ছে শ্রম।
কালো দুই ডানা মেলে উড়ে যায় এক ঝাঁক রেজা, ভাটার পরী এরা, পাথাই এর হাতে কাটা কাঁচা ইঁট তুলে আনে গর্ভের ভিতর। সাজানো সম্পূর্ণ হলে রাতে আগুন পড়বে, তখন কালপুরুষ নেমে আসবেন আকাশ থেকে, তাঁর ধনুক থেকে ছুটে যাবে নীল রঙা আগুনের বাণ, ধোঁয়া উঠবে চোঙ ঠেলে, বছরের প্রথম ধোঁয়া...
সাড়ে চার ফুট টিনের চালার নীচে দিন আটেকের খোরাকি রাখা আছে, কেলাসের পড়া দেখে নিচ্ছে মনা। রঙ ভরা ছবির বই। ভাটায় আগুন পিটে হাঁড়ি ফুটছে টগবগিয়ে, পুঁটি মাছ। আকাশ গায়ে মেখে আজ দীর্ঘ সহবাস হবে, পোড়ার মুখো, এখনও কোথায় ? অঙ্গ যে অবশ হয়ে এলো...
লহ প্রণাম কবিগুরু
তাহের আলি
অনুভূতির নীলে ভেসে উঠো তুমি,
মনের আকাশে উড়ো শঙ্খচিল হয়ে।
ঘন ছায়ে তপ্ত দাহে বসন্ত দিনে
যেন ছবি তুমি, নির্মল কান্তি মূর্তি।
তোমাকে দেখি কবিতায় ঘন বর্ষণে,
ভেসে উঠো তুমি বাঁশির সুরে, গানে।
তুমি যুগ যুগান্তরের চলমান নদী,
বয়ে চলো জীবন বেয়ে নিরবধি।
কবিতার ছন্দে তুমি এক এবং অনন্য,
সঙ্গীতের মূর্চ্ছনায় মর্মস্পর্শী, বরেণ্য।
গল্পে নাটকে তুমি নিরুপম অনুপম
ভাবে ভালোবাসায়, দরদী প্রেমিক।
ফুল মালায় সাজো তুমি পঁচিশে বৈশাখ।
প্রাণের কবি রবি ঠাকুর, কবিগুরু তুমি,
তুমি লহ প্রণাম! তুমি মরমী তুমি প্রণমী।
0 Comments