যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ১০১
আজ ‘ বুক করে এলাম। ডেকোরেশন বাদে ১,১০,০০০/ টাকা দিতে হবে। সাহবাজের বাবা মা দাদা এখনো প্ল্যান করছে, একসাথে বিয়েবাড়ি করা যায় কি না।সাহবাজ রানিকে বলেছে, ‘অ্যান্টিকে এখন লজ বুক করতে না কর। ভাবছি গ্রিনল্যান্ডে একসঙ্গে বিয়ে আর রিসেপসন পার্টির আয়োজন করব, তোমাদের নিশ্চয় ৩ লাখ টাকার মত খরচ হবে, ওই টাকাটা আমাদের দিয়ে দিলে বাকিটা আমরা দিয়ে দেব’ কিন্তু আমি কেন ওদের সঙ্গে করব? আমি আমার মত করব।
এর পরেও অনেক কথা হয়েছে। আমি ওসব কানে নিইনি। এই নভেম্বরেই যত কাজ একসঙ্গে পড়েছে। এই মাসেই আনন্দপুর কোর্টে যেতে হবে, লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। আজ রবীন্দ্রভারতী থেকে বাসবী চক্রবর্তী ফোন করেছিল ওর বিভাগের স্টুডেন্টদের জন্য একদিন অনলাইনে ১ ঘণ্টার লেকচার দিতে হবে। এই একই কথা সবিতাও বলে রেখেছে। কী ভাবে সব সামাল দেব জানিনা।
আজ ডেকোরেটার এসেছিল, ও কাঁচাফুলে সাজাবার জন্য ৪০,০০০/হাজার নেবে।আমি ৩০,০০০/ বলেছি। একা কতদিক সামলাব? সময়ে কুলচ্ছে না। এইমাত্র ভাস্কর জানাল, ওরা কালীপুজোর আগেই আমাকে সম্বর্ধনা জানাতে আসবে। ডেটটা জানালে ভাল হত। ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির ফিলোজফির HOD ১৬ নভেম্বর থাকবে না। আমি ১৫ বা ১৭ নভেম্বর ডেট করতে বলেছি। ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা বক্তব্য রাখতে হবে, ৩০ মিনিট প্রশ্ন উত্তর পর্ব। এই মাসেই রবীন্দ্রভারতীর সোশিয়লজি বিভাগ ও ডেট চেয়েছিল। বিভাগীয় প্রধান বাসবীকে আমার অসুবিধার কথা জানাতে ও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ডেট করল।
ছবি আর রানি, মা মেয়ে ডাক্তার দেখিয়ে এসে বলল, কাল সকালেই ছবিকে চোখের জন্য কলকাতা নিয়ে যেতে হবে। পরদিন সকালে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলাম। আজ আবার সাহজামাল ফোন করে আমাকে যেতে বলছিল, কী নাকি আলোচনা আছে। আমি বলেছি, যা আলোচনা করার ছিল, তা তো হয়ে গেছে। আমি যেতে পারি, তোমার বড় ছেলের থাকা চলবে না। ওর কথাবার্তা আমার ভাল লাগেনা। বড়ছেলের কথায় সবকিছু হয়। তাই পরে রানীকে ফোন করে বলে, তোমার অ্যান্টিকে আসতে হবে না। তোমরা তোমাদের মত করেই কর।
ফিউচার কেয়ারের আমন্ত্রণে আজ সন্ধ্যায় অলিগঞ্জে ওদের অফিসে গেছলাম প্রসূনের সঙ্গে। ৩ অক্টোবর সুস্নাতর বাড়ি বারগোদা গেছলাম। তাই ওদের অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। সে জন্য আজ অফিসে ডেকে অমল ভ্যুইয়া উত্তরীয় পরিয়ে, স্মারক তুলে দিলেন হাতে।
অক্টোবর মাস শেষ হয়ে গেল, বিয়েবাড়ি হতে আর ১ মাসও সময় নেই। কাল একবার দোগাছিয়া যাব ভাবছি। ঝামেলাগুলো তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলতে হবে। সকালে ড্রাইভার না পেয়ে বহুদিন পর বাসেই গেলাম এবং ছোটর বাড়িতেই উঠলাম, খেলাম। যে আলোচনা হল তা হল এরা বড় ও সেজ বোনের জমি নিজেদের নামে দানপত্র করিয়ে নিয়েছে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে। বাকি যে দুজনকে জমি দিচ্ছে তা বাকি চারভাইয়ের জমি থেকে টুকরো টুকরো অংশ। যাতে ওরা বিক্রি করতে না পারে। এইসব কুবুদ্ধি সেজো দেওরের। এখানে থাকার সময়ই মেদিনীপুর ছাত্র সমাজ থেকে ফোন পেলাম, ওরা আজই আসবে আমার হাতে মানপত্র তুলে দিতে। আমি ৬ টার মধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। ওরা এল রাত ৮ টায়, গেল রাত ১০ টায়।
🍂
খুবই ব্যস্ততার মধ্যে দিনগুলো কাটছে। আগামীকাল অনলাইনে একটি মিটিং আছে। আজ প্রান্তিক এর একটি অনুষ্ঠানে গেছলাম। এরা বস্তির বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে। এদের মধ্যে সরস্বতী নামে একটি মেয়ে ‘ইউকে, ইণ্ডিয়া ও ইউ এস এ’ এই তিনটি দেশের মধ্যে একটি ড্রইং প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়েছে ।তার হাতে পুরস্কার তুলে দিলাম আমি ও আধিকারিক সৌমনা ব্যানারজি। প্রান্তিকের বাচ্চারা নানারকম পারফর্মেন্স দেখাল। বেশ ভাল লাগল।
প্রতিদিনের জীবনযাপন এতটাই কর্মময় বা ঘটনা বহুল যে রোজনামচার মত প্রায় প্রতিদিনের কথা লিখতে হচ্ছে।।সেটাও অনেক কেটে ছেঁটে লেখার চেষ্টা করছি তবে আজ বাইরে যাওয়ার নেই। নিজেকে বেশ হাল্কা মনে হচ্ছে। কিন্তু আমার এ জীবনে তা হয়ার নয়। হঠাৎ করে সবিতা সামন্ত ফোন করে বলল, ১৭ নভেম্বরের পরিবর্তে ৩ নভেম্বর লেকচারটি দিতে পারলে ওদের সুবিধা। আজ ১ নভেম্বর, মাঝে একটি দিন। তবুও আমি রাজি হলাম, কিছুটা চাপ কমবে বলে। প্রস্তুতির একেবারেই কোনও প্রয়োজন নেই, তা নয়।তাই কিছু বইখাতা ঘাঁটতে হচ্ছে।
মনির(ভাই) টিউমার অপারেশন হবে ৬ নভেম্বর, কিন্তু আজকেই অ্যাডমিশন হতে হবে। মেদিনীপুর হাসপাতালেই হবে। তাই আমার কাছে এসে স্নান খাওয়া করে হাসপাতাল গেল। সন্ধ্যাবেলা প্রদ্যোত স্মৃতিমন্দিরে ‘ষোলবিট ড্যান্স একাডেমির ‘সারদ সম্মান প্রদান’ অনুষ্ঠানে গেছলাম। ওরা খুবই আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানায় ।আমার হাত দিয়ে বেশ কয়েকটি পুজো কমটিকে পুরষ্কার দেওয়া হল।
গতকাল থেকেই একটু চাপে ছিলাম। আসলে কাগজ দেখে আমি কোনসময়ই বলতে পারিনা। সকালে কয়েকটা পয়েন্ট লিখে নিলাম।বিষয় ‘নারীশিক্ষা’ অনলাইনে অনুষ্ঠান শুরু হলে গ্রন্থিকা প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে আমার বিষয়ে বলেই গেলেন। ‘উনি স্বশিক্ষিত, নিজেকে নিজে শিক্ষিত করেছেন,’ ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি নিজে লজ্জা পাছিলাম। আমার বক্ত্যব্যের শেষে শুধু স্টুডেন্টরা নয় একজন অধ্যাপকও প্রশ্ন করেছিলেন এবং আমার উত্তরে সহমত হয়েছিলেন। পরদিন সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন।
এখন নিজেকে অনেকটা হাল্কা মনে হচ্ছে। বাসবীর সঙ্গেও কথা হয়েছে, রবীন্দ্রভারতীতে ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ নিয়ে বলতে হবে। ওকে ডিসেম্বরের তারিখে ডেট করতে বলেছি। এখন অনেকটা হাল্কা বোধ করছি।
ছবিকে নিয়ে ডেন্টিস্ট অর্ক মহাপাত্রের কাছে গেছলাম, অর্ক আমাকে দেখে খুব খুশি, জোর করে চা খাওয়াল। বলল, আমি নিয়মিত আপনার ফেসবুক ফলো করি। আমার শর্টফিল্ম ও বিজ্ঞাপনের ভিডিওগুলো পাঠাতে অনুরোধ করল। আরও বলল, ‘ম্যাডাম আপনি খুব ব্যস্ত থাকেন জানি, তবুও সময় পেলে আসবেন’।এরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই দেন্তিস্ত।নাম মনে পড়ছে না। দুজনেই অল্পবয়সী। রাতে শুয়েছি, ফিল্ম মেকার সুদীপ্ত মেসেজ পাঠিয়েছে, দিদি, এখন একটু কথা বলা যাবে? ফোনে বলল, ‘মশালা দরবার’ রেস্টুরেন্টের পোস্টারের জন্য দুটো লাইন লিখে দেবেন? বেশ কয়েকটা তখুনি লিখে দিয়েছিলাম।
শাহবাজ ও নাতাশার বিয়েতে শাহাবাজের বাবা মা ও আমি।
ওরা আজ রানীকে নিয়ে খড়গপুর গেছে বিয়ের বাজার করতে। এদিকে মনির অপারেশন হয়েছে, অক্সিজেন, সেলাইন চলছে। আমি পড়েছি উভয় সঙ্কটে, যে ভাবে হোক কাজে নেমেছি যখন, তখন উদ্ধার হতেই হবে। কাছের মানুষরা ভরসা দিচ্ছে, ‘ভাল কাজে হাত দিয়েছ, ঠিক উদ্ধার হয়ে যাবে’।ওদের বিয়ের বাজার হয়েই গেছে, সাহবাজ যায়নি বলে ল্যাহেঙ্গার অর্ডারটা দেওয়া হয়নি। আমি ফোনে এবং What’s App এ নিমন্ত্রণ সারছি। ছবি ওর দাদা ও ছোটভাইকে বিয়েতে আসার জন্য বলেছিল, তখন হ্যাঁ বলেও পরেরদিন বাহানা দেখিয়ে দুজনেই জানিয়ে দেয় আসতে পারবে না। এটা আমি জানতাম, পরে কিছু না বলতে পারে, তাই আমিই বলতে বলেছিলাম। গিফট দেবার ভয়ে ওরা আসবে না।
মনটা খারাপ, মনির অপারেশন চলাকালে ডাক্তার জেনেছে, শ্বাসনালীতে আরও একটি টিউমার আছে, সেটা মনি জানেনা। খোকন মুস্কানকে বলেছে। দেখা করতে গিয়ে দেখলাম, ও ফোন ঘাঁটছে। কাল রিলিজ করে দেবে। কাল চন্দ্রিমার জন্মদিন, ও কিছু করতে না করেছ্বে। কিন্তু কিছু তো করতেই হবে।
করোনা শরীরটাকে ঝাঁজরা করে দিয়েছে। একটা না একটা লেগেই থাকছে। ভীষণভাবে মাথার চুল উঠছে। গতকাল রানীর জন্মদিন ছিল, চন্দ্রিমা অনেক আয়োজন করেছিল। আমার লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হয়ে গেছে, আজ রানীর পরীক্ষা শেষ হল। আজ পাঞ্চালির সংগঠন অদ্বিতীয়ার অনুষ্ঠানে গেছলাম।খুব ভাল লাগল। বেশিরভাগ মানুষই আমার পরিচিত। সা রে গা মা পা র শ্রেয়ান এসেছিল। ওর মা অদ্বিতীয়ার সদস্য।ছেলেকে নিয়ে এসে আমাদের প্রণাম করাল। শ্রেয়ান গানও শোনাল। আমি কিছু পরেই চলে এসেছিলাম। খোকন কখন মেসেজ করেছে জানি না, বিয়ের দিন ও হয়ত আসতে পারবে না। ওর অপারেশন আছে। এদিকে রানীর ছুটি নিয়েও সমস্যা হচ্ছিল। প্রিন্সিপ্যাল ছুটি দিতে চাইছিলেন না। লক ডাউনের জন্য ঠিকমত ক্লাস হয়নি। তবে শেষপর্যন্ত ছুটি দিয়েছেন।
সময় তার কাজ করে চলেছে, আমি আমার কাজ করে চলেছি। আজ স্বপ্নার বাড়িতে রানীর আইবুড়ো ভাতের নেমতন্ন ছিল। আমি সঙ্গে গেছলাম। গিয়ে দেখি নন্দিনী বসে আছে। ও জানত না কেন ডাকা হয়েছে, আমিও জানতাম না ও আসবে বলে। যাইহোক, স্বপ্না নিজে সব রান্না করেছে। ভালই কাটল দুপুরটা। দুখানা সাড়ি নিয়ে এসে ওকে একটা পছন্দ করে নিতে বলল। একই সাড়ি, রং আলাদা। দ্বিতীয় সাড়িটি আর একটি মেয়ের বিয়েতে দেবে।
নিজে সব পারলেও সব করা যায় না। কিছু কাজের দায়িত্ব বোনঝি জামাই ফয়েজকে দিয়েছি, কিছু দায়িত্ব সৌনক, সুদীপ, আসাদুল, ফয়জল ও আর এক জামাই আবুকে দিয়েছি। ওদের বলেছি, বিয়ের দিন তাড়াতাড়ি আড্ডাতে পৌছাতে হবে। আমার তো মনেই ছিল না আজ ২৫ নভেম্বর এই অভাগিনীর জন্মদিন।সবাই ভুলে গেলেও চন্দ্রিমা ভোলার পাত্রী নয়। যা যা করার সবই করল। রানী আইবুড়ো ভাত খেতে যাওয়ার সময় পাইনি বলে খাবার নিয়ে এসেই খাওয়াল। এদিকে হঠাৎ সকালবেলা তানি এসে বেল বাজাচ্ছে। আজ আসছে বলে আমাদের জানায়নি, একাই ফ্লাইটে করে মাঝরাতে দমদম পৌঁছে এয়ারপোর্টে থেকে ওলা ধরে হাওড়া স্টেশন, সকালে মেদিনীপুর। মেয়েটা চালু হয়ে গেল। পরিস্থিতি মানুষকে সব শিখিয়ে নেয়।
আজ(২৬/১১/২১) রানীর মেহেন্দি, হলুদ।ও বাড়ি থেকে ভাল তত্ব পাঠিয়েছে ।ফল, মিষ্টি, দই,মাছ, প্রসাধন সামগ্রী গায়ে হলুদের ও বিয়ের সাড়ি, ল্যাহেঙ্গা ইত্যাদির সঙ্গে গহনাও পাঠিয়ে দিয়েছে। সকালে একজন মেহেন্দি পরিয়ে দিয়ে জন্মগত ভাবেই শিল্পী। কোথাও না শিখেই সুন্দর মেহেন্দি পরাতে পারে, আঁকার হাত খুবই ভাল। কলেজে প্রতিবার রঙ্গলিতে প্রথম এবং আলপনাতে দ্বিতীয় পুরষ্কার পেয়েছে.২০১৯ শে পুলওয়ামা হামলার ছবি রঙ্গলিতে ফুটিয়ে তুলে বীর সহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছিল। সেই রঙ্গলি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। জানি এসব গুণের মর্যাদা শ্বশুরবাড়িতে মিলবে না। তবুও লিখলাম।
বিকেলে রানীকে গায়ে হলুদের সাড়ি পরিয়ে প্রথমে হলুদ লাগাল ওর মা মেজমাসি, আজরা মাসি, মিতু মামি, মিলিদি, চন্দ্রিমাদি,তানি, মুসকান, রোজা ও আরও ২/৩ জন। এরপর হবে ক্ষীর খাওয়ানো হবে।তার জন্য ওদের পাঠানো সাড়ি পরে প্রায় কোনে সাজিয়ে খেতে বসানো হল। তার আগেই খাঞ্চাতে(বড়থালা) পায়েস ফল মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। সবাই এক এক করে ওর মুখে পায়েস তুলে দিল। হাতে দিল কেউ টাকা কেউ গহনা।
অনেক বাধাবিঘ্ন, টাল মাটালের, আজ রানী সাহবাজের আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হতে চলেছে। এত বড় দায়িত্ব আকা নিয়েছি, জানিনা কী হবে। বাবলি দীপ জারা, ওরা আসতে পারল না। ওরা উপস্থিত থাকলে আমাকে একা চিন্তা করতে হত না। বর আসতে অনেক দেরি করল, কথা ছিল, বিয়ে পড়ানোর পর কোনে সাজানো হবে। কিন্তু তা আর করা গেলনা। তবে ডেকোরেশন থেকে খাওয়াদাওয়া আপ্যায়ন ,কোনও কিছুতেই ত্রুটি ছিলনা। মেয়েরা ছেলেরা প্রস্তুত ছিল। বর বসানোর জায়গা, বরকনে বসার ও বরযাত্রী বসার সুন্দর ব্যবস্থা করা হয়ে ছিল। খাবারের জবাব ছিলনা। চারখানা গোটা মুরগি রোস্ট করে বরকে থাল দেওয়াও হয়েছিল। ছোটখাটো বিষয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা সফল হয়নি। বরকনে বিদায় দিয়ে আমরা বাড়ি ফিরলাম ভোররাতে।
আজ ওদের রিসেপ্সন পার্টি। বিশাল আয়োজন। খোলা মাঠে দারুণ ভাবে সাজিয়েছে, স্টেজে নাচগানও হল, ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ এ অংশগ্রহণকারি আকিবকে আনা হয়েহিল। এভাবেই নাতাশা সাহবাজের বিয়ে সম্পন্ন হল। এক এক করে সবাই চলে যাচ্ছে। রানী সাহবাজও জোড়ে এসে ফিরেগেছে। রানী কলেজ যাচ্ছে নিয়মিত।
এই সবকিছুই শরীর খারাপ নিয়েই করলাম। একজন মনোবিদকে দেখাতেই হবে। আমি তো ডাক্তারদের খোঁজখবর রাখি না বললেই হয়।তটিনী যার কথা বলেছেন, তিনি কল্যাণীতে বসেন। কলকাতা ছেড়ে কল্যাণী যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। এসব যখন ভাবছি, ডঃ সুচন্দ দাসের কথা মনে পরল। ওনাকে ফোন করে পেলাম না।পরে রিং ব্যাক করতে ডাক্তারের খোঁজ চাইলাম। উনি আগামীকাল জানাবেন বললেন। পরদিন Fortis Haspital এর এক মনোবিদ সঞ্জয় গরগ এর এপোয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য ফোন নাম্বার দেন। সেই নাম্বারে যোগাযোগ করতে, ওরা বলে জানুয়ারির মাঝামাঝি যোগাযোগ করতে। ডঃ দাসকে জানাতে উনি ১৬ ডিসেম্বর ডেট নিয়ে দিলেন এবং বললান, আমি যতদিন বেঁছে আছি, আপনার পাশে আছি জানবেন। কথাটা শুনে অনেকখানি নিশ্চিন্ত বোধ করলাম।
অনেক রাতে বাবলিকে ফোন করলাম, ও বলল, ‘মা তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করেছ, এবার নিজের কাজে মন দাও। সবার আগে ডাক্তার দেখিয়ে এসো’। মেদিনীপুর নারী সুরক্ষা কমিটির ডাকে গোলাপিচকে একটি অনুষ্ঠানে গেছলেম। এই কমিটি গোড়ে তুলতে ওদের অনুপ্রাণিত করেছে বরুণ বিশ্বাস। বরুণ বিশ্বাসের ছবিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সমাজকর্মী ঝর্ণা আচার্য ও শিক্ষিকা নবনিতা মিশ্র ও আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ডিসেম্বরে অনেকগুলিই প্রোগ্রাম আছে। লিখে না রাখার জন্য সমস্যা হচ্ছে।আজই ফয়জল এসে ছিল। ১০ ডিসেম্বর চন্দ্রিমার মেয়ে ডলের জন্মদিন উপলক্ষে ওর স্কুলের বাচ্চাদের খাওয়ানো হবে। সেই বিষয়েই কথা বলতে এসেছিল। ও চলে যাওয়ার পরেই সংকল্প ফাউণ্ডেশনের পিন্টু গিরি কার্ড দিতে এসেছিল।১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পোর্টস কমপ্লেক্সে বডি বিলডারদের ভার উত্তোলন প্রতিযোগিতা রয়েছে।গেস্ট হিসেবে উপস্থিত থাকতে হবে।
ডলের জন্মদিনে আমরা সবাই ফয়জলের স্কুলে গিয়েছিলাম। ১১ ডিসেম্বর বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে ‘সার্ধ শতবর্ষে বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগো’ উদযাপন অনুষ্ঠানে গেছলাম। দীনেন রায় (খড়গপুরের বিধায়ক) আলাপ করে বললেন, অনেকদিন থেকে আপনার নাম শুনে আসছি, আজ আলাপ করার সৌভাগ্য হল। এই অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক মন্ত্রী মানস ভ্যুইয়া এসেছিলেন। এই নেতা মন্ত্রীদের থেকে হাত দূরে থাকতে চাইলেও পারিনা। কারণ এদের বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান করার কথা কেউ ভাবতে সাহস দেখায় না।১২ ডিসেম্বর বাচ্চাদের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের( কিডজিহার্ট) উদ্বোধনে গেছলাম।
0 Comments