জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-১০৪/রোশেনারা খান

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান

পর্ব ১০৪

সুমন পাত্র ওর স্কুলের বসন্ত উৎসবে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। আজ সন্ধ্যাবেলা  জানিয়ে দিলাম যাওয়া হবে না। বসে লিখছিলাম, রাকিবুলের ফোন এল, ওর  সমস্যা আমার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়।আমি নিজে প্রচুর ঝামেলার মধ্যে আছি। আবার একই দিনে দোলযাত্রা ও শবেবরাত পড়েছে। শবেবরাত হয় পূর্ণিমার পরদিন। কিন্তু আজ কেন হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। চাঁদের পূর্ণিমা প্রাপ্ত হওয়া আর পূর্ণিমা ছেড়ে যাওয়ার সময়ের ওপর নিরভর করে হয়ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া  হয়েছে।
আমি বড়দি, মেজদি ও ছোটবোন ছবি।

 আজ(২০ মার্চ) আড়ায়টাতে সারদাকল্যাণ ভাণ্ডারের মিটিং আছে। আগে অগাস্ট মাসে এই মিটিং হত, করোনার কারনে সময় বদলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাচিক শিল্পী মৈথেলি বার দুই ফোন করেচ্ছে। ওর আজ রবীন্দ্র নিলয়ে আবৃত্তির অনুষ্ঠান আছে।

      মিটিং থেকে ফিরে মৈথেলির অনুষ্ঠানে গেলাম। অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। আমার মত আরও ২/৩ জন যারা দেরিতে এসেছেন তাঁদের মঞ্চে বসিয়ে সম্মান জানালো। ছোট্ট বক্তব্য ও একটি কবিতা শোনালাম। কিছুক্ষণ শুনলামও।

    বিশ্ব কবিতাদিবস  উপলক্ষ্যে আজ রোড চন্দ্রকণা এসেছিলাম ‘গণতান্ত্রিক শিল্পী সংঘ’র আমন্ত্রণে। ফেরার তাড়া থাকায়  অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে  পড়েছিলাম। তার আগে ছোট্ট বক্তব্য, কবিতা পাঠ ও দুপুরের খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এখানে রেহান কৌশিক ও আরও কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হল। বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার হাজির হলাম পঞ্চুর চকে। আমাকে নিতে গিয়েছিল একটি ছেলে। এখনো লোকজন তেমন আসেননি। কে যেন বললেন, মাইকেল মধুসূদন নগরে গিয়ে কবির মূর্তিতে মালা দিয়ে আসতে পারলে ভাল হত।  সেই ছেলেটির সঙ্গে গিয়ে দেখি নৃত্য শিল্পী রিমা কর্মকার তার স্টুডেন্টদের প্র্যাকটিস করাচ্ছে। যাইহোক মাল্যদানের পর রিমা আমাদের আমন্ত্রণপত্র হাতে দিয়ে ২৯ মার্চ ওর অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বলল।
অদ্বিতীয়ার রক্তদান শিবিরে

 জীবনটা কেমন একটা উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়েছে। কাজ তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ালে, বা কাজে ডুবে থাকতে পারলে ঠিক আছে। কিন্তু কখনো না কখনো নিজের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। তখনিই সব স্বপ্ন, ইচ্ছ্‌ তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে  পড়ে। আমি অসহায়ের মত কাঁদতে থাকি। নদীর মতই জীবন যে কখন কোন খাতে বইবে, আমরা কেউ জানি না।

      সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সেমিনার নিয়ে আজ(২৩ মার্চ) খুব টেনশনে কেটেছে।  সময় ছিল সন্ধ্যা ৬ টা। বক্তা ছিলেন  অনন্যা চ্যাটারজি, সুদেষ্ণা রায়, আমি ও পিয়ালি ব্যানারজি। অনন্যাদি আমার পূর্ব পরিচিত। সুদেষ্ণা রায় একজন অভিনেত্রী ও চিত্র পরিচালক। বর্তমানে রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন। এক সময়ের সাংবাদিক অনন্যা চ্যাটারজি এতদিন এই পদে ছিলেন। এখন উনি শিশু সুরক্ষা কমিশনের একজন সদস্য। বিষয় হল ‘নারীবাদ ও মানবী বিদ্যাচর্চআ’। প্রথমে বললেন, অনন্যাদি। সবার শেষে আমি। যিনি যোগাযোগ করেছিলেন, দেবাশীষ বাবু  বললেন, আপনি আপনার বক্তব্যে একটা নতুন দিক তুলে ধরেছেন।

      গতকাল রোটারি ক্লাবে গিয়ে চোখের দুটো টেস্ট করিয়ে এসেছি। আজ কাশীনাথ বাড়ি থেকে ব্লাড নিয়ে গেছে টেস্টের জন্য। রাতে রিপোর্ট দিয়ে যাবে। স্পন্দনে এই সুবিধাটা রয়েছে। তাছাড়া নির্ভরযোগ্যও, তবে বিশ্বাসের ব্যপারও আছে। যাইহোক, ব্লাড টেস্টের রিপোর্ট নর্মাল।

    ইদ সংখ্যার জন্য লিখছিলাম। রানী ফোনে বলল, আজ অনলাইনে গার্জেনস মিটিং আছে, আমি যেন যোগ দি। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়ে এসে  সিপাইবাজারে কিছু পেপারস জেরক্স করে বাড়ি ফিরলাম। সময়মত তৈরি হয়ে B Ad কলেজের অনলাইন মিটিঙে যোগ দিলাম। কেউ কিছু বলছেন না দেখে অধ্যক্ষ আমাকেই কিছু বলতে বললেন। বেশ কিছু বিষয় বললামও। গার্জেনদের পক্ষ থেকে কেউ কিছু না বললে ভাল দেখাত না।                                                                                                                                         তানি এসেছে ওকে নিয়ে সবলা মেলা দেখে এলাম। আজ আনন্দপুর গেছলাম জমি রেজিস্ট্রির জন্য। আজ রেজিস্ট্রি অফিস গিয়ে রেগে গেছলাম। সই না করে ফিরে আসতে চেয়েছিলাম। কেন? বিস্তারিত লিখছি না। সই করেদিলে আমার ক্ষতি জেনেও ওদের কথা ভেবে সই করে এলাম। খান সাহেব বার বার বলা স্বত্বেও এসব ঝামেলার ফয়সালা করে যান নি, আজ আমাকে তার মুল্য  চোকাতে হচ্ছে। রেজিস্ট্রি অফিসে থাকা কালেই ক্যানবেরা থেকে আলি সাহেবের ফোন পেলাম, মাস্কুরা অনেকদিন যোগাযোগ করেনি। আমি বল্লাম ও বিয়ে করে নিয়েছে। বকেছি বলে কি না জানি না, তারপর আর যোগাযোগ করেনি। বিয়ের কথা শুনে ভদ্রলোক কষ্ট পেলেন। বললেন, ‘বিয়েতে আমাকে বলল না’!

   অনেকদিন বড়দির সঙ্গে দেখা হয়নি। দিদির শরীরও ভাল নেই। তাই আগামিকাল বড়দির বাড়ি যাব। মিলি যেতে পারবে না, এখান থেকে আমি রানী গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম। চান্দাবিলাতে মেজদি উঠল। মঙ্গলাপোতা থেকে ছবিকে ক নিয়ে শিলাবতী নদী পার হয়ে ভেদুয়া চললাম। ছোটবেলার কত কথা মনে পড়ছে।  ১ মাঘ থেকে চারদিন ভেদুয়াতে মেলা হয়। আমরা পায়ে হেঁটে বড়দির বাড়ি যেতাম। বড়দির মেয়ে লাইলি আর আমি বন্ধু ছিলাম। দুজনে মেলাতে ঘুরে বেড়াতাম, কত কি কিনতাম। তবে বড়দির ছোট দেবরটির ভয়ে ভয়ে থাকতাম। যেদিন   শুনেছিলাম ও আমাকে বিয়ে করতে চায় বলে বড়দিকে জানিয়েছে। সেসব দিন আজ অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। জানিনা মালদায় থাকাকালে সদা হাস্যময় মানুষটা কোন মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যা করেছিল চাকরি জীবন শেষ হওয়ার আগেই। ডাক্তার হিসেবে যে খুব নাম ডাক ছিল, তা আনন্দবাজার পড়ে জেনেছিলাম। কুনালদার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর আমার এক কাকা(আমার সহপাঠী) বলেছিল, ‘বেবির ভাগ্য ভাল্, ওখানে বিয়ে হয়নি।সেদিন আমার দুর্ভাগ্য অলক্ষ্যে হেসেছিল। তারপর যা ঘটল, ......,থাক সে প্রসঙ্গ।

       অনেকদিন পর চারবোন একসাথে হলাম। বড়বউ বিরিয়ানি রান্না করেছিল। তার সঙ্গে আরও অনেকপদ। গ্রামের মানুষের আতিথেয়তার জবাব নেই।বড়দির বাড়ি থেকে পাশের গ্রাম উত্তরবিলে লাইলির বাড়ি গেলাম। পুত্র সন্তানের কামনায় ওদের ৪টিই কন্যা সন্তান, প্রত্যেকেরই সুপাত্রে বিয়ে হয়ে গেছে। লাইলিরা স্বামী স্ত্রী দুজনেই নানারকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছে। ওখানেও লাইলি চায়ের সঙ্গে নানা ধরণের খাবার আয়োজন করে রেখে ছিল। দেশি গরুর দুধের চা, তার স্বাদই আলাদা।

    এখান থেকে রওনা হয়ে প্রথমে বড়দিকে ভেদুয়াতে নামিয়ে দিয়ে আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে। পশ্চিম দিকে লাল টকটকে সূর্যটা ক্রমশ ঢলে পড়ছে। নদী  পাড়ের উর্বরা জমিতে এখনো শীতের ফসল ফলে আছে। নদীর চরে বসে একজন  মাছ ধরছে। এই নদীর স্রোতে কতদিন ভেসে বেড়িয়েছি। ভাবনা ছিন্ন করে গাড়ি এসে দাঁড়াল আমার নাড়ি পোঁতা আছে যেখানে, সেই বাড়ির সামনে।এখানে ছবিকে  নামিয়ে মনির সঙ্গে দেখা করব বলে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্কের আজ ইয়ার এন্ডইংয়ের দিন, তাই ক্যাশিয়ার হয়ে ওর আসা সম্ভব হয়নি। আবার রওনা হয়ে মেজদিকে ওর বাড়ির সামনে নামিয়ে আমরা বাড়ি পৌঁছালাম রাত ৮ টার  পর।

     আবার শুরু হল জীবন যুদ্ধ। আজ আমাদের জারা সোনার শুভ জন্মদিন। দুপুর ১টার দিকে ওকে ফোন করব। সকাল থেকেই আজ লিখতে বসেছি। কণ্ঠস্বর এর লেখাটা শেষ করতেই হবে। সবসময়  ঘুম পাচ্ছে। এসব ওষুধের প্রভাব। প্রায় ১০ থেকে ১২টা ওষুধ খেতে হয়। শুধু ঘুম পাওয়া নয়, এই সমস্ত ওষুধ খাওয়ার ফলে মুখের ভিতর শুকিয়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য তো আছেই। এসব নিয়েই বাঁচা  মরা। আজ শান্তনুকে ফোন করে জানলাম, আমার কবি বাইরনকে নিয়ে লেখা প্রবন্ধটি ওদের পত্রিকায় প্রকাশিত হবে। গোটা দুই ছবি হলে ভাল হত, কিন্তু খুঁজে পাচ্ছি না।                                    
        না গেলেই নয়, তাই অদ্বিতীয়ার রক্তদান শিবিরে গেছলাম। অতিথির সংখ্যা প্রচুর। বিধায়ক অজিত মাইতি, জেলা সভাধিপতি, আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত, সমাজসেবী চন্দন বোস, সত্যব্রত দলুই, আনন্দগোপাল বাবু প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন। পুলিশ  অফিসার কবিতা দাসকে সম্বর্ধনা দেওয়া হল। তিনি তাঁর কাজের জন্য  এই বছরই (২০২২) রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৩ তে পেয়েছেন ‘চিফ মিনিস্টার মেডেল ফর বেস্ট ইনভেস্টিগেসন অফিসার’। ২০১১ ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সেবা মেডেল’। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওইরকম মহিলাদের উপস্থিতি পরবর্তী  প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে। ওনার সঙ্গে কথা বলে ভাল লাগল।ব্যস্ত মানুষেরা আগে  বক্তব্য রেখে চলে গেলেন। আমি বলতে উঠে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে প্রথমেই বললাম, ‘আমি কিছুই বলবনা , কেউ তো শুনছে না, শুধু চিৎকার  চেঁচামেচি করছে’।তার পর কিছুটা শান্ত হল। সত্যব্রত দলুই বলেন, ‘দিদি আপনি সামনে দাঁড়িয়ে বলুন’। আমি মায়েদের রক্তাল্পত, অপুষ্টি ইত্যাদি বিষয়ে বললাম ।  ইতিমধ্যে দীনেন রায় এসে পৌঁছেছেন। আমার পর বক্তব্য রাখতে উঠে উনি বলতে শুরু করলেন এই বলে, ‘আমার দুর্ভাগ্য আমি রোশেনারাদির বক্তব্য সম্পূর্ণ শুনতে  পেলাম না।
🍂
     এখন এপ্রিল মাস, প্রচণ্ড গরম। অনেকেই এই গরমে চোখ অপারেশন করতে নিষেধ করছেন। গরমের জন্য বাইরে বের হতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু কাজ থাকলে তো বের হতেই হবে। গোপাল সাহার সঙ্গে বেরিয়ে ‘আধার কার্ড’ এ জন্ম তারিখ বসিয়ে নিয়ে এলাম। গোপালবাবু যা করছেন, তথাকথিত নিজের লোকেরাও  এত করত না। শুধু দিদি বলে শ্রদ্ধা করেন তাই।

     চন্দ্রিমার সঙ্গে বালাশহীদ বাবার(ফকির কুয়া) দরগা গেছলাম। ওখানেই এক অচেনা ভদ্রমহিলা ফোন করেছিলেন ,আমি তাঁকে একঘণ্টা পরে ফোন করতে বললাম। বাড়ি ফেরার  সঙ্গে সঙ্গে আবার ফোন। এক পরিচিত সাংবাদিক বললেন, দিদি আমি ABP আনন্দ থেকে বলছি। আপনার সঙ্গে একটু কথা বলা যাবে? অসুবিধা নেই, বলাতে বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইল।আমি বুঝতে পারিনি যে আমার মতামত নিতে আসছে। যেমন ছিলাম, তেমনই বসে গেলাম ক্যামেরার সামনে। সম্প্রতি মেদিনীপুর শহরের ‘ডায়মন্ড’ গ্রাউন্দের অপর যে ফতোয়া জারি হয়েছে, মেয়েরা সন্ধ্যা ৬ টার পর ওই মাঠে থাকতে পারবেনা। ছেলেরা ৮ টা পর্যন্ত থাকতে পারবে, এই সিধান্ত কি ঠিক ? আমি বলেছিলাম সবার আগে ওই মাঠটিকে সমাজবিরোধীদের থেকে মুক্ত করতে হবে। মাঠের নিরাপত্যা ব্যবস্থা কঠোর করতে হবে। যাতে সব বয়সের নারী পুরুষ ওই মাঠে ৮ টা পর্যন্ত বসতে পারেন। ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে এভাবে অধিকার মত পার্থক্য সৃষ্টি করা ঠিক নয়।

খড়গপুরে একটি কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ছিল,ইচ্ছে করেই যাইনি। সব অনুষ্ঠষ্ঠানে  যাওয়া সম্ভব নয়।  ‘আজকাল’ সংবাদপত্রের জন্য একটা লেখা সুরু  করেছি, কি ভাবে শেষ হবে কে জানে? ৪০০ শব্দ লেখা হয়েছে আরও ৪০০ শব্দ লিখতে হবে।

     সকালে রোটারি ক্লাবে গিয়ে ৬ এপ্রিল অপারেশনের ডেট নিয়ে এসেছি।  দুপুরে পাহাড়িপুর বালিকা বিদ্যালয় যাওয়ার আছে ছড়া ও কবিতার অপর একটি কর্মশালায় যোগ দিতে, ঠিক একটায় গাড়ি এল, দেখলাম আমার আগেই বিনোদ মণ্ডল, ঋত্বিক ত্রিপাঠি, প্রদীপ দেব বর্মন এসে গেছেন। শুরুটা আমিই করলাম।  ছাত্রীরা আমার বক্তব্যের সঙ্গে ছাত্রীরা কিছুক্ষণের মধ্যে একাত্ম হয়ে উঠল। ওরা প্রশ্নের উত্তর দিল, কবিতা শোনাল। প্রদীপবাবু যখন বোঝাছিলেন, সেই সময় পাওয়ার চলে গেল। অন্ধকার ও গরমের মধ্যেই ঋত্বিক ও বিনোদ অনুষ্ঠানটি এগিয়ে নিয়ে গেল এবং শেষ করল। পাওয়ার এল অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর।

       দিন কয়েক আগে আজকাল এর অফিস থেকে ফোন পাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম একজন কৃষ্ণাঙ্গ মহলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হয়েছেন। আমাকে এই মহিলা বিচারপতিকে নিয়ে ৮০০ শব্দের একটি আর্টিকেল লিখে পাঠাতে হবে। সেই লেখাটি আজ শেষ করে সুচিক্ষনকে মেল করে ফোন করলাম।লেখাটি ৯০০ শব্দ ছাড়িয়ে গেছে। আমি এডিট করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সুচিক্ষণ নিষেধ করলে সব লেখাটাই পাঠিয়েছি। ফোনেই বললেন লেখা খুব ভাল হয়েছে দিদি, অসংখ্য ধন্যবাদ।

    কয়েকমাস আগে বাসবী মেনোপজ এর ওপর একটি লেখা চেয়েছিল, আজ মেল করলাম। ১০.১২ জন মহিলার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটিই গ্রন্থ প্রকাশ করবে। আজ  অরিজিতের অনুষ্ঠানে গেছলাম।কয়েকদিন আগে কার্ড দিতে এসে একরাশ অভিমান উগরে দিয়ে গেছে। তাই আজ আসতেই হল। কয়েকজনের সঙ্গে আমার হাতেও ‘লাইফ টাইম এচিভমেন্ট’ তুলে দিল।
অদ্বিতীয়ার রক্তদান শিবিরে

   বড় ননদের চোখ অপারেশনের জন্য বাবলি টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকার সঙ্গে ননদ ও ছেলেমেয়ের জন্য জামাকাপড় কিনে রেখেছি, কিন্তু আফগানের (ননদের ছেলে)আসার সময় হচ্ছে না। বাবার মত পার্টিই সব। আমার নন্দাই একটি মাধ্যমিক স্কুলের ক্লার্ক ছিলেন। বাম রাজনীতি করতেন সক্রিয়ভাবে। ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে স্বাভাবিক হাঁটাচলা করতে পারেনা। মাধ্যমিক পাশ।  বাবা তার জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করে যাননি। চেষ্টাই করেননি। এক ছে্লে  একমেয়ে অর্ধপাগল। বাবার মৃত্যুর  পর সরকার বদল হলে ওদের জমি কেড়ে নেয়। ছেলে বাধ্য হয় সরকারের দলে নাম লেখাতে। এখন তুখোড় নেতা।কী একটা পদে আছে।  চোখের জন্য পেনশন তলার সময় সই করতে অসুবিধা হচ্ছে,তবুও মায়ের চোখ অপারেশনের সময় হচ্ছে না। রোজ মিথ্যে বলছে। শেষে বাধ্য হয়ে মন্ত্রী শিউলি সাহাকে ফোন করলাম। কিন্তু পেলাম না। পরে উনি রিং ব্যাক করলেন। বললাম ওনাকে, অনেক কথা বললেন আমাকে। আমার সঙ্গে পার্টির মাধ্যমে যোগাযোগ নয়। আজই নাম্বার জোগাড় করে যোগাযোগ করলাম একজন সমাজকর্মী হিসেবে। 

       দুপুরবেলা আনন্দবাজার থেকে বরুন ফোন করে একটা বিষয়ে মতামত  লিখে পাঠাতে বলল। আমি শুয়েছিলাম, ওই অবস্থাতেই Whats App লিখে পাঠিয়ে দিলাম। সন্ধ্যায় ননদের ছেলে আসতে যা যা দেবার দিয়ে ওকে বললাম ‘তুই যদি তোর বড়মামার জমিটা উদ্ধার করতে পারিস তাহলে সব জমিটায় তোর মায়ের নামে লিখে দেব’। এবার ওর ইচ্ছা। চিন্তা ওই অবোধ ছেলেমেয়ে দুটিকে নিয়ে। মায়ের কিছু হয়ে গেলে ওদের কে দেখবা?

    আজ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে গেছলাম।এটা ছিল  সৌজন্য সাক্ষ্যাৎকার। কিছু ব্যত্তিগত প্রশ্নও করলেন, বাড়িতে কে কে  আছেন? ইংল্যান্ড গিয়েছি কিনা? ইত্যাদি ইত্যাদি। ১ ঘণ্টার মত ছিলাম।

                                          ক্রমশ

Post a Comment

1 Comments

  1. খুব ভালো লাগলো এই App টি Install করে।

    ReplyDelete