অরূপ তোমার বাণী থুড়ি জীবনী
(সপ্তম পর্ব)
অরূপ পলমল
নারী প্রীতি! এ পুরুষ জাতির চিরন্তন আলু-পটল জনিত দুর্বল রোগ! নারীর... বলনে...চলনে...ছলনে...দুঃখে...কান্নায়…
নিজেকে সঁপে দেওয়া! হৃদয় উন্মুক্ত করা! হৃদপিণ্ডের দরজাটা সদা হাট করে খুলে রাখা... এই...এই..."মে হু না"- ভাবটা!
আবার যদি নারীর চোখে জল দেখা দেয়...শত শত সাধু-সন্ন্যাসী পর্যন্ত আজও টাল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে 100%. এই তো যথার্থ সময়! হৃদয় চিরে দেখানোর... "hey hey hey hey hey hey/ la la la la la eh hey hey hey hey…/ hey hey hey hey hey hey/ la la la la la eh hey hey hey hey.../ ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil… ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil...
diljalo ka hai ye thikana, ye mohabbat ka hai divana aake isame phir tum na jana ho…ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil ashikana, ye dil…” হা...হা...হা...
হঠাৎ ! সাথে সাথে আমাকে নিয়ে মিটিং বসানো? বোন পাতানো? বোনের মতো... চোখের জলে হৃদয় ভেসে যাওয়া-- "হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দার জলে..."! ফেমিনিস্ট চেতনার 'গুষ্টির পিন্ডি' চটকে দিতাম হেড মাস্টারের! (সেদিন যদি আজকের মূর্তিটা ধরে রাখতাম বা পেতাম তাহলে দেখিয়ে দিতাম- কারে কয় হেডমাস্টারগিরি?)
কী করতাম? এই একমাস আগে সাতশোলের এক প্রিয় ছাত্রকে বলছিলাম ফোনে! শুনবি? না থাক! বলবো না! ফোনের কথায় কান পাতালে প্রাইভেসি নষ্ট হয়! শুনে কাজ নাইক!
বলছিলাম "তোর হেডমাস্টারের যেখানে-যেখানে যত চুল ছিলো না- সব ছিঁড়ে দিতাম! নুচে ফালা ফালা করে দিতাম!" আসলে একা হয়ে গিয়েছিলাম। একা! একা! একাই ছিলাম--একে বলে রে "বিদেহী আত্মারূপী যক্ষ বিরহিনী প্রিয়া” একা হয়ে যাওয়ার ইতিকথা…. গল্পকথা…. মোর মন খারাপের পদাবলী।
আবার-শোন শোন...একজন জীবন আবার বিজ্ঞানের ম্যাসটর ছিলো (সব জান্তা)!- তাঁর কোন উপমা হয় না! অনুপমা! উনি নিজেই নিজের উপমা! তুলনাহীন! সে আবার আমার personal লাইফ নিয়ে বিশাল কৌতূহলী ছিলো! আমার সন্তান-বৌ - সাল-মাস তারিখ- এইসব নিয়ে নাকি সে কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারতো না। আমার বৌ-এর বিয়ের তারিখ ও সন্তানের জন্মের তারিখ কিছুতেই মিলিয়ে ও হিসেব করে উঠতে পারতো না। সারা বছরেও। নিজে নয় শুধু- দুজন বয়স্কা ম্যাডাম ও অংকের মাস্টার এবং ইংরেজির মাস্টার মশাই লাগতো - আমার প্রতিরূপের জন্মের জন্ম-কুণ্ডলী বানাতে। প্রায় সারাবছর। আমায় আবার শুনিয়ে শুনিয়ে- হাসি ও ঠাট্টা ও মশকরা করে করে- আমায় শুনিয়ে শুনিয়ে। আমায় শুনিয়ে শুনিয়ে দাঁত কেলিয়ে কেলিয়ে আমার বৌ-ছেলে নিয়ে ব্যাংগ ও কটুবাক্য প্রয়োগ করতো প্রায় তার গ্রুপের (মহিলা পরিবৃত) সাথে। মানসিক টর্চার করতো বছরের পর বছর। এরাই মানুষ গড়ার কারিগর! দেশের ও জাতির মেরুদণ্ড এরা! হায়! ঈশ্বর-”এ মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না!”
শালা ধড়কচা! মহিলা-পুরুষের মাঝামাঝি! অনুপমা! অতুলনীয়া! (একবার তো পিটব বলে ভেবেছিলাম শালবনীতে / টার্গেট ফিক্সট ছিলো/ক্ষুদিরাম এর মতো ছক বানচাল। বেণুবাবু সাক্ষী! মা কালীর দিব্বি)আরে…পুরুষরাও কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের দ্বারা টর্চার হয়--কবে বুঝবি রে? ফেমিনিজমের ধ্বজাধারী তোরা? আর নিজের প্রিয় ভাইটার(চব্য) টর্চার ভুলে গেলি? সেও একজন টর্চারকারী পুরুষই ছিলো। অত্যাচারী পুরুষ! গ্রাম্যতার - সরলতার সুযোগ নিয়ে সেদিন টর্চার করেছিলো তোর ভাইকে। ছেলেটার জীবনের ও জীবন- প্রবাহের ধারাটাই কেমন বদলে গেলো– চেনা ছকের বাইরে! ছেলেটা বধির হয়ে গিয়েছিল দু - চার বছর। দেখিস নি? শুনতে পাস নি? বধির কে রে…? তোরা? হ্যাঁ...তোরা? বুঝলি-- 'হেডফোন' আর 'সোনার দুল' ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে– কালা… এক একটা আস্ত কালা হয়ে উঠেছিস।
আমাদের কথা কে শুনবে রে…? কোথায় যাবো…? বিচারের আশায়…? বলে দে তো…? তোরা ফেমিনিস্ট-এর পতাকা উড়াবি পত পত করে তোদের আকাশে- অথচ তোদের ফেমিনিস্ট বলা যাবে না। যেমন করে রিজার্ভেশন- এর "কোটা"-তে চাকরি করবি কিন্তু তোদের "কোটায়"-চাকরি পেয়েছিস বলা যাবে না। মানবি না। শুনতে না রাজ। অনেক হয়েছে...এবার একটা গান করি চল—
[আমার এই পথ-চাওয়াতেই আনন্দ। খেলে যায় রৌদ্র ছায়া, বর্ষা আসে বসন্ত॥/ কারা এই সমুখ দিয়ে আসে যায় খবর নিয়ে, খুশি রই আপন মনে--বাতাস বহে সুমন্দ॥]
একা হয়ে গিয়ে কী থেমে গিয়েছিলাম?
শেষ হয়ে গিয়েছিলাম? না! দমে থাকবার 'পাত্র' আমি কোন কালে ছিলাম না। শেষ কাজটা করেই বসলাম একদিন-- 'কারেন্ট' বা 'বিদ্যুৎ বিভ্রাট'! তোর ভাই মানে "চব্য" হয়তো তখন দশম শ্রেণি। পুরো সাতশোল গ্রামে বিদ্যুৎ আছে। লাইট পাখা চলছে। স্কূল-এও আছে। শুধু স্টাফ রুমে। পাখা ঘুরছে। আমাদের সেম্পু করা চুল ফুরফুর করে বাতাসে উড়ছে বছরভর। উড়ে উড়ে কয়েকজনের তো টাক পড়ে গেলো দেখলাম। তবুও মানে অথচ ছাত্র-ছাত্রীরা পচছে পচা ভাদ্রে। সারা বছর ক্লাস রূম গুলোতে গুমোট গরম ও ভ্যাপসা গন্ধ। ছেলে-মেয়েদের মুখ-এর দিকে তাকাতে লজ্জা করতো। ওই যে বলেছিলাম কোথায় এসেছি ঈশ্বর? কোন পাপের প্রায়শ্চিত করতে সাতশোলে এলাম? এসেছিলাম? আস্ত একটা অচলায়তন! স্থবির! অনড়!
হেডমাস্টার একদিন স্কূল-এ অনুপস্থিত। আমিই দশম শ্রেণির ছেলেদেরকে দিয়ে একটা চিঠি লিখিয়ে পুরো স্কুল-এর ছাত্র- ছাত্রীদের স্বাক্ষর করিয়ে বিদ্যালয়ের সেক্রেটারি মহাশয়ের বাড়ি ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে ছিলাম মিছিল করে। তবে বিষয়টায় আমি আড়ালে ছিলাম। প্রকাশ্যে যেন কিছুতেই না আনা হয় এটা দশম-এর বাচ্চাগুলোকে পইপই করে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই যে কবি বলিয়াছেন - "গোপন কথাটি রবে না গোপনে "! মীরজাফর সর্বত্র! সর্বকালে! বিরাজমান! ছিলো! আছে! থাকবে!
সারা রাত খোঁজ খোঁজ। বাচ্চাদের এতো সাহস কী করে হয়? মিছিল? স্বাক্ষর চিঠি?এতো আমরা বুড়ো ধেড়েরা করি না আজও শত অন্যায়েও? সেক্রেটারির বাড়িতে সে দিন বোম পড়েছিল...তার শব্দ চন্দ্রকোনা রোড পর্যন্ত সাথে সাথেই শোনা গিয়েছিল। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
CID লাগানো হয়েছিলো। দলের সর্দার এর সন্ধানে। অচল- অধম- অনড়- অচলায়তনে অরূপটা কে? কে সেই পঞ্চক?
আজ বলছি। হ্যাঁ! প্রকাশ্যে বলছি। আমিই ছিলাম। আমিই ছিলাম সেই দিনের পান্ডা! কান্ডারী! ওই কর্মকান্ডের "বাপ "! তোদের (ছাত্রদের) বাপ! আমার সোশাল মিডিয়ার লোগোটা দেখে ও মনে রাখিস-"আমি পৃথিবীর কবি,যেথা তার যত উঠে ধ্বনি/ আমার বাঁশির সুরে সাড়া তার জাগিবে তখনি!” কুড়িবছর ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের ভগবান বলে ও লিখে আসছি। সেবা করে আসছি। ভক্ত সেজে। নীরবে ও সোচ্চার। ইহাই মোর রাজকীয় স্টাইল। সিক্রেট পলিসি। No LIC Policy. No banking ক্রেডিট কার্ড এজেংট!
সেক্রেটারি স্কুল-এর বাচ্চাদের বিকালের মিছিল দেখে বোধহয় চমকে গিয়েছিল। যদিও শুনেছিলাম- চিঠিটা সেদিন মিছিল বাচ্চারা ওনার "স্ত্রী" হাতে দিয়েছিলেন। যথার্থ placement. উনি তো "মা"! বাচ্চাদের কষ্ট ওনার থেকে কে বুঝবে আর বেশি এই পৃথিবীতে? ওই মিছিলে তাঁর দুটো নিজের বাচ্চাও ছিলো। সেদিন বোম ফেটেছিল। কেশপুর বোম। কেশপুরের ছেলেরা বোম বাঁধাই করে ও ফাটায়। ক্ষুদিরাম আমাদের তাই। তাই আমাদের ক্ষুদিরাম। কেশপুরের। সেদিনও বোম পড়েছিল- কেশপুরে। ফেটেছিল সাতশোলে। দিনে- দুপুরে। অপরাহ্নে বোম ফেটেছিল। রাতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল নিশ্চয় ভাবতে পারি। হেডমাস্টারকে ফোন...ইত্যাদি ইত্যাদি…
পরের দিন যথাসময়ে স্কূল যাই। প্রার্থনার পর আবার সেই হেডমাস্টারের হঠাৎ ডাকা মিটিং- মিছিল। উনি হেডমাস্টার না হলেও ভবিষ্যতে দক্ষ রাজনীতিবিদ হতে পারতেন-এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। সেদিন এক ঘণ্টা আমায় বসিয়ে পুরো সমস্ত স্টাফদের কাছে শুনিয়ে শুনিয়ে আমায় কাঁদিয়ে দিয়েছিলেন। ভনিতা মারিয়ে মারিয়ে। ভণিতার এমন একজন পান্ডা ও ওস্তাদ লোক আমি জীবনে দুটো দেখিনি। তারিফ করার যোগ্য! সাবাস! হেডমাস্টারের দাবী ছিলো আমার কাছে--- "যে স্যার ছেলে-মেয়েদের খেপিয়ে বিদ্যুতের জন্য আমায় টপকে সেক্রেটারির কাছে ছেলেদের মিছিল পাঠাতে পারে....সেই দরদী স্যারের কাছে আমাদের সবার আর্জি- উনি নিজের টাকা খরচ করে বিদ্যালয়ের ফ্যান ও কারেন্ট -এর অন্যান্য সামগ্রী স্কুলকে দান করুন। স্কুল-এর অত পয়সা নেই।...ইত্যাদি ইত্যাদি!”
পাক্কা এক ঘণ্টা! তখন ক্লাস বন্ধ হয়নি? আর বাকিরা- যারা মহিলা কান্নায় বিগলিত হৃদয় হয়ে উঠেছিল একদিন! তারা নীরব দর্শক ও শ্রোতা! মজা লুটছিলো! ইগো সান্ত্বনা হচ্ছিল। তারা কেউ-এই মূর্খ ও অধমের চোখের জল দেখতে পায়নি? মাধ্যমিকের বই পড়ে চাকরি পাওয়া- মাসে আশি হাজার টাকার ম্যাসটর না? সারাদিন কেঁদেছিলাম। অনেক চোখের জল সাত্শোল নিয়েছে রে আমার…. এখনো নিচ্ছে। তোদের নীরবতায় এই মুর্খের আজীবনের কান্না। আত্ম-চিৎকারের হাহাকার! সারা জীবনের মোর ব্যর্থতা। গ্লানি! পরাজয়! আত্ম-ঘৃণা! আত্ম- পীড়ন! আত্ম- প্রায়শ্চিত্ত। প্রায়শ্চিত্ত! তোদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত! অন্ধকার! তাল তাল অন্ধকার! চারিদিক অমাবস্যা! অন্তত অন্ধকার! অন্ধত্ব! জন্মান্ধতা! মূর্খতাই অন্ধত্ব! মূর্খতাই স্মার্ট! চারিধার স্মার্ট! অন্ধকার!
স্টুডেন্টদের চিঠিতে-এও লেখা ছিলো যে ছাত্ররা সকলে কিছু কিছু চাঁদা দিতেও প্রস্তুত। তবুও রূমে- রুমে বিদ্যুৎ-সংযোগ হোক। পাখা ঘুরুক! স্টাফ রূম ছাড়িয়ে ছাত্র- ছাত্রীদের অভাগা মাথায় মাথায়। ঘাম ও ঘাম গন্ধ সবার এক। ঘামের দম ও দাম সবার এক।
যাইহোক। এই ঘটনার পর- দিন পনেরোর মধ্যে বিদ্যালয়ের সর্বত্র আলো ও পাখা ঘুরতে থাকে। কোথা থেকে বা কীভাবে?- তা আমি জানি না। অন্তত এই কিপটে তো দু-টাকাও দিইনি। হলফ করে আজ কইতে পারি প্রকাশ্যে হাজারবার। আমি কান্না ভুলে গিয়েছিলাম তোদের হাসি আর উজ্জ্বল মুখগুলো দেখে। অবশ্য কেউ বলেনি যে- এতে আমার কোন ভূমিকা আছে। স্বীকারও করেনি। আমিও কোনরূপ বিশ্বাসী নই। কিন্তু ওই বন্ধু বেণুবাবু তখন বলে বসেছিল- একবার যে - "যাক তোর জন্য অন্তত বাচ্চাগুলো গরমের হাত থেকে স্বস্তি পেলো!" টেলিভিশনের রামানন্দ সাগরের 'মহাভারত'-এর আকাশবাণী না- সেদিন আমার হৃদয়-আকাশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিলো আর এক ঈশ্বরের বাণী - "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি ধাই--কোথাও দুঃখ, কোথাও মৃত্যু, কোথা বিচ্ছেদ নাই॥/
হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে যাহা-কিছু সব আছে আছে আছে--/ নাই নাই ভয়, সে শুধু আমারই, নিশিদিন কাঁদি তাই।/ অন্তরগ্লানি সংসারভার পলক ফেলিতে কোথা একাকার
জীবনের মাঝে স্বরূপ তোমার রাখিবারে যদি পাই ॥"
আচ্ছা! তোরা কারা? পাঁচশ- সাতশ জন ছেলে-মেয়ে পড়তো! তার মানে পাঁচশ- সাতশ জন অভিভাবক। তাদের কাজ কেন আমায় একা করতে হয়েছিলো? বল? আমায় একবার বল? কেন তোদের সাত্শোলবাসীর এতো ঘুম? আজও একইরকম। কেনো? নাকি কেশপুরের সব গ্রামই সাতশোল? ঘুম আর ঘুম। অতল ঘুম। গভীর নিদ্রা! তাই তো একজন বিনিদ্র মানুষ বিবেকানন্দকে চিৎকার করে গলা ফাটাতে হয়েছিলো- “জাগো! জাগো!” হায়! ঘুমপিপাসু খড়গোসদের দল। ঘুমাও। আরও আরও…
আমি কী তোদের বাপ? আমি কী অন্যদের থেকে বেশি বেতন পাই? বা পেয়েছিলাম? নিয়েছিলাম? আমি তোদের কথা ভাবতে গিয়ে আমায় কাঁদিয়ে দিয়েছিলো তোদের মহান হেডমাস্টার। ঘর সুদ্ধ সবাই মজা লুটেছিলো। কেও তোদের বা আমার হয়ে একটা কথাও উত্তর করেনি। গরম কী শুধু শালা আমার লাগে রে? লাগছিলো সেদিন? দু -চার জন (মহিলা আর হাফ-মহিলা যুক্ত পুরুষরা) তো হাত পাখা না নিয়ে ক্লাসেই যেতো। আমি তো কোনোদিন হাত পাখাই ধরিনি। এখনো অভ্যাস নেই।
দুর্গাপুজো, চাঁদা তুলে হতে পারে কিন্তু তোমাদের বাচ্চাদের জন্য বিদ্যালয়ে কারেন্ট নয় কেনো? এই তো দেখ না এতো এতো বন্যা- বিপর্যয় সারা বংগ জুড়ে! কিন্তু পুজোর আনন্দের আমাদের কোন ঘাটতি থাকবে না। নিজেরটুকু আমরা সবাই কড়াই গন্ডায় বুঝে নেবো। পনেরো দিন পরই মা আসছেন- দেখবি চোখ কান জুড়িয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে। কে ডুবল কে মরলো- আমাদের প্রিয়া প্রিয়া "বিদেহী আত্মার" তাতে কী বলতো? আমার নিজের আনন্দের কী এসে যায়? কেনো ভাববো ওদের সবার কথা? তাতে কী আনন্দ পাওয়া যাবে? আমিই বা কেনো ভাববো? আমি তো আজ প্রতিষ্ঠিত! অথচ মাধ্যমিকের সিলেবাসে আমরা সবাই মার্কস পাওয়ার জন্য চিৎকার করে পড়বো....”স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে/ সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে!” - তখন ভাবের শেষ নাই! গদগদ! বন্যা! আইলা! ফণী! মার্কসের বান! ৯৯.৯৩%. মার্কস নিয়েই ফার্স্ট বয় ও ফাস্ট গার্ল! সোনার টুকরো! সব হীরের টুকরো। জ্বলজ্বলে স্টার…হা হা হা… অনেক হয়েছে…হা হা হা…
চল! ভাই...গান শুনি--"কূল নাই, কিনার নাই, নাইকো দরিয়ার পাড়ি/ কূল নাই, কিনার নাই, নাইকো দরিয়ার পাড়ি/ সাবধানে চালায়া মাঝি আমার ভাঙা তরী রে
অকূল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে... / আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে/ অকূল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে…/ আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে/ অকূল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে"!
{তা ধিন ধা…তেরে কেটে ধিন ধা…তাক তাক… তেরে তেরে কেটে কেটে... ধিন ধা… তাক তাক ধিন ধা… তেরে কেটে ধিন ধা…কেটে ধি ধি ধা… ধা…}
[ধারাবাহিক/ পরবর্তী অংশ বিরতির পর]
0 Comments