বাগদি চরিত ( ত্রয়চত্বারিংশতি পর্ব )
শ্রীজিৎ জানা
ভগী খুড়ার উপরে আর কোন কথা বলে না লোখা। মাঠে তেমন কাজও নেই তার। পেটে তার খিদা আঁচড়কামড় কচ্ছে। ঘরে ফিরে যেতেই মনস্থির করে সে। খুড়ার কথা তার কতকটা মনে ধরে, আবার কতকটা ধরেও না। মাঝে মাঝে ভগী খুড়াকে সে চিনতে পারে না। খগেন মাস্টারকেও পারে না। এরা দুজনেই লোখার কাছে বড় রহস্যময়। উল্টাপথের লোক। লোখা যা ভাবে,গটা ঢোল যা ভাবে, এরা ভাবে তার বিপরীত। তবে প্রতিবারই সেই ভাবনার ভিতর ঢোলের কোন অনিষ্ট থাকে না। কারুর কোন অমঙ্গল হয় না। তবে প্রথম দিকটায় তাদের কথাকে নিয়ে সে কি লেটকা লড়াই বাঁধে গ্রামে। এবারেও লোখার মনের ভিতরে ভাল মন্দের ঘোর লড়াই বাঁধে। খুড়া যতই বলুক, এটা তো ঘোর অনাচার। ঘরের একটা বউড়ি,গিন্নিবান্নি বলা যায়,ছেনাপেনার মা,সে যদি অমন ব্যাভিচার করে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। তা ভগী খুড়া যতই সাফাই দিক। ঘরমুখা হাঁটতে হাঁটতে নিজেই বিড়বিড় করে,
—লোকে ঠিকই বলে,বুড়া হলে বোব্বল হয়। খুড়ার হইচে সেই দশা। কুনটা মন্দ কুনটা ভাল,বাছবিচার কত্তে পারেনি এখন। নাইলে একটা বৌমা এরকম করেঠে তবু তার হোয়েই সাওকারি দেয়ঠে। মোদের জাতের কুনু কি মানইজ্জত নাই! একটা শাসনটাসন থাকবেনি!
খিদাটা তার ভালোই পেয়েছে। খর খর করে হাঁটতে পারে না লোখা। খগেন মাস্টারকে সে একবার বলতে শুনেছে,
—বুইলু লোখা মন শরীরকে টানতে পারে কুন্তু শরীর কুনু দিন মনকে টানতে পারবেনি। অথচ দেক্ শরীরের ভিতরেই মন বসে আছে। কুন্তু শরীরের কুন কলঙায় বোসে আছে কেউ জানেনি। আবার জানেনি বোলিঠি কেনে! যেরা সাধনভজন করে ত্যারা জানে। উ সব মোদের মুরাদে কুলাবেনি।
🍂
আরও পড়ুন 👇
লোখার মনে হঠাৎ করেই কথাটা ভেসে ওঠে। সে ভাবে সত্যিই তো,মন ভাল থাকলে শরীরে জ্বরজ্বালা হলেও খাটাখাটনিতে কিছু মালুম হয় না। আর মন খারাপ থাকলে,শরীর যতই চনমনা থাক কেন, সহজে যেন নড়তে চায় না। আজকে যেন তার সেই দশা হয়েছে। বারবার তার সেজবৌদির মুখটাই মনে ভেসে উঠছে। তাকে সে কত উচ্চসনে বসিয়ে রেখেছিল। তার সেজদা যেমনটি ঠিক তেমনটিই ছিল তার সেজবৌদি। মুখে সাত চড়ে রা কাড়েনা সহজে। সারাক্ষণ ঘরকুটালির কাজে করে। বেশিরভাগ সময় ছাগল নিয়ে কালসাবাকে চরাতে যায়। পুজা-আজায় সেই নিজের হাতে সব করে। ময়নাকে করতে দেয় না। বাগদি ঘরের সব আচারবিচার তার নখদর্পণে আছে। সেজদার কাছ থেকে অনেককিছুই সে শিখেছে। বাপের বাড়িড় থেকেও শিখেছে কতকটা। সেজদা দেশান্তরি হলে লোখাকে তার সেজ বৌদিই হাতে ধরে কতকিছু শিখিয়েছে। চাঁদ বাদানির দিনে কি করতে হয়। গোরুকে কবে চান করাতে হয়। আউনিবাউনি কবে, কিভাবে পাকাতে হয়। পোষ সংক্রান্ির খামার পুজায় সার দেওয়া,লেবা দেওয়া কিভাবে করতে হয়। জমিতে একনাধুঁয়া কখন দিতে হবে, নল সংক্রান্তির সময় নল কখন দিতে হবে, সেইসব লোখা জেনেছে তার সেজ বৌদির কাছ থেকে। নল বাঁধতে অত ধরনের যে মশলা কুড়াতে হয় লোখা সেইসব কখনোই জানত না। একটি একটি করে গাছ,লতাপাতা চিনেছে তার সেজ বৌদির থেকেই। সেই সেজবৌদি এরকম বেআক্কেল কাজ করবে লোখা ভাবতেই পারে না। তাকে আবার ভগী খুুড়া সমর্থনও করছে। কালিতলা থেকে লোখার ভিটা বেশিদূর নয়। বড়দোলইদের ভিটা পেরিয়ে সাঁতরা পুকুরের পাড় ধরে কিছুটা গেলেই হবে। অথচ এই মুহুর্তে যেন মনে হচ্ছে,সে অনেকটা রাস্তা হেঁটে ফেলেছে। ভাবনা তার মথার ভিতর থেকে কিছুতেই সরছে না। ময়না এখন ঘরে কি করছে কাে জানে! তবে বিপদ কিছু হলে এতক্ষণ তার কানে ঠিক খবর পৌঁছে যেত। তবে এখন ঘরে ফিরলে ময়না আবার কি মূর্তি ধরবে কে জানে! ময়নার কথাকে সে একেবারে ফেলে দিতে পারে না। মেইয়ায় মেইয়ায় প্রচন্ড হিংসাহিংনি আছে। ওটা মেইয়াদের জন্মগত শত্রুতা। কিন্তু এর আগে কোনদিনও তো ময়না তার সেজবৌদিকে নিয়ে কোন বদনাম করেনি। লোখা কিছুটা ময়নার প্রতি নরম হয়। তারপর তার রাগ পড়ে খুদার উপর।
—বেদাশালাটা! গুনিনি করেঠে! পঁদ মারানার জেয়গা পায়না। বউকে দিয়ে আবার গনায়ঠে। শালা,কি যেন মনসার ভক্ত! শালাটা এগবারে মোদের জাতের আলা! মুখে চাট্টি কথা শিকে রেখেচে,ব্যাস্! অইটুিকুই! তাও আবার বোটা গুনীনের দৌলতে। তার নখের যোগ্গতা উ হতে পারবেনি। লোকে বলে মেইয়া মানুষ নাকি বার হাত কাপড়েও ন্যাংটা। লদীর জাত অরা। যখন যেদিকে পারবে বেঁকে যাবে,বাঁধ ফাটিয়ে ভাসি দিবে! আর তুই! তুই ত একটা পুরুষ মানুষ! তোর বিবেচনা নাই! তোর কুনু মানসম্মান নাই। একটা ভাদর বৌউকে লিয়ে টানুঠু! এখন কিচ্ছুটি বোলবোনি। আগে বউটাকে এট্টু বাগে আনি। তারপরে নিজে এগবার নজর রাখব। আর যেদিন হাতে নাতে পাব,সেদিন অর নবযাংটামি ঘুচি দুব। শালা,বংশের নাম ডুবাতে এসচ। আর খুড়াকেও বোলিহারি! কথা দিয়ে মোর দাদুর নামে একটা বদনাম জুড়ে দিল। গুরুজন লোক হয় বলে মুখ সামলে লিলম,নাইলে আমিও লোখা বাগদি রেগে গেলে কুনু গুরু-পীর মানি নি। আমিও কেটাল তুলতে জানি!
বকতে বকতে কখন ভিটার কাছে এসে পড়েছে লোখা খেয়াল করেনি। পৈঠা ভেঙে ভিটায় উঠে। উঠানকে এসে দেখে তখনো ঘরটা থমথম করছে। লোখাকে দেখে তার বড় বেটা ছুটে আসে। বলে,
— জানো, বাবো, মা মোদেরকে খেতেও দ্যায়নি,নিজেও খায়নি। ভাই কাঁদছিল বলে,আমরা দুজনে পান্তা বেড়ে পিঁয়াজ দিয়ে খেই লিইচি।
— তোর সেজ বোড়োমা এখনো মাঠ থিকে এসেনি?
— না, এসেনি এখন।
— মা কুথা তোর?
— অই ত রান্নাশালের দিকে খুঁদি ঘরটায় শুয়ে আছে। ইবার খেলতে যাব? তুমি ত এসে গেছ।
—- চোল যা। ভাইকে লিয়ে খেলবি।
লোখার বড় ছেলে চোঁচা মেরে দৌড় দেয়। পেছন থেকে লোখা চেঁচিয়ে ওঠে,
— ওরে আস্তে যানা রে,ঝুঁট খেয়ে মুখ থাবড়ি লিয়ে পোড়লে নাক মুক থেঁতা হই যাবে রে। তোর ডিংরা ছেনার কি বোলেচি যে যা।
বলেই ধীর পায়ে খুঁদি ঘরের দিকে পা বাড়ায়। লোখা ঠিক জানে, তার বউ কোন মতেই ঘুমায় নি। রাগে চন্দ্রবড়া সাপের মতো ফুঁসছে ভিতরে ভিতরে। কিন্তু সে জানে কিভাবে বশ করতে হয় বড়াসাপকে। ময়নার রাগকে জল করার কায়দা তার নখদর্পণে। শুধু কটা মিথ্যা কথা আউড়াতে হবে আর কি। সেইসঙ্গে একটু ছলও করতে হবে। তবে মেজাজটা নরম করা চলবেনা মোটেই। আবার গলায় খুব বেশি ঝাঁঝ রাখাও যাবে না। আড় কপাট খুলেই এমনভাবে হাঁক দেয় যেন কিছুই হয়নি।
— কিরে ময়না! এখন শুয়ে আছু? কটা বেজেচে জানু! খেতেটেতে দিবিনি নাকি বল দিখি! রাঁদবিই বা কখন? ছেনা গুলানকেও ত খেতে দেউনু, শুনলম। বোড়ো কোচা বল্লে, অরা ত নিজেরাই পান্তা বেড়ে খেইচে। উঠ দিখি, উঠ। খাবি চল। মোকেও খেতে দে দিখি। অ্যাকে ত মোর ঘুরমার ধাত। তার উবরে পৈঠা দিয়ে উঠার সময় টলে পড়ে যেতম এট্টু হলে। খিদার জন্নেই হবে বোধায। নাকি প্যাসার বাড়ল! কে জানে পাল্লে!
কথাগুলো বলতে বলতে লোখা ঘর থেকে বাইরে আসে। কিন্তু আড়চোখে লক্ষ্য রেখেছিল কাত হয়ে শুয়ে থাকা ময়নার দিকে। দুয়ারে এসে তালচাটি পেতে বসে পড়ে। সে জানে বউ তার উঠে এল বলে। মাথা ঘুরমার কথা শুনামাত্রই তার রাগের অর্ধেক উবে গেছে। বাকিটাও একটু পরে থাকবে না।
রান্নাঘর থেকে বাসনের ঝনঝান আওয়াজ কানে আসে লোখার। এই ঝনঝান শব্দ আসলে শুভ ইঙ্গিত। যুদ্ধের শেষে সন্ধির আগাম বার্তা। লোখার মন অনেকটা হাল্কা লাগে। কাপাস তুলার মতো একটু হাওয়াতেই উড়ে যায়। দলদলা পাঁক মাটির মতো মনটা তার গলে যায়। ময়নার উপর থেকে সব রাগ- বিরক্তি,ভাতের হাঁড়ির ঢাকনা ঠেলে যেভাবে ভাপ বেরোয়,ঠিক সেভাবেই উবে যেতে থাকে। নিজেই নিজেকে বোঝাতে থাকে,
— অমন কোরে মেজাতটা মোর না দেখালেই পাত্তম। মোকে উ খুম ভালবাসে। এট্টু কিছু হোলেই মোর জন্নে আছাড়কাছাড় খায়। মাথা গরম করে এট্টু, বুজেও কম কুন্তু মনটা নরম,সাদাসিদা। নাহ্,আর মাথা গরম কোরবোনি। তারচে কদিন উ দুটাকে চোখে চোখে রাখব।
হঠাৎ কোলের সামনে জামবাটিটা ঠক করে ধরে দেয় ময়না। লোখা চমকে ময়নার দিকে তাকায়। লক্ষ্য করে তখনো তার মুখ চোখ থেকে বিরক্তির মেঘ সরে যাইনি। আমানির টোকা গন্ধ নাকে াসতেই লোখার খিদেটা যেন দ্বিগুণ চাগড় দিয়ে ওঠে। জামবাটির পাশে বেগুনপোড়া। সে লঙ্কাপোড়া, পোড়া বেগুন, কাঁচা পেঁয়াজ আর কাঁচা সরসার তেল দিয়ে মেখে খেতে ভালবাসে। ময়না তার পছন্দমতো সবই করেছে। নুনের বাটি থেকে নুন নিয়ে পান্তাভাতের উপর ফেলে মাখাতে গিয়েও থমকে যায়। এতক্ষণ সে খেয়ালই করেনি, ময়না নিজের জন্যে পান্তাভাত আনেনি। লোখা এতটা নির্দয় নয়। সের ময়নাকে ভালবাসে। ধড়ফড় করে উঠে যায়। খুঁদিঘরটায় ঢুকে দেখে ময়না আগের মত কাত হয়ে শুয়ে আছে। তক্তপোশের ধারে দাঁড়িয়ে ঠ্যালা দেয়,
— কি রে মোকে জামবাটি ধরে দিয়ে পালি এলু? তুইও ত খাউনু! খাবিনি না কি?
ময়না কোেন রা'কাড়ে না। নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকে। লোখার নাকে আমানির গন্ধটা যেন ঘুরপটাক খেয়ে খিদার আগুনে বাতাস দিচ্ছে। লোখা আর কতক্ষণ সহ্য করতে পারবে তা সে নিজেই জানে না। তবু নিজের মেজাজকে ধরে রাখে। শান্ত গলায় বলে,
— তোকে ত বোল্লম, আমি কদিন দেখি অদের চালচোজ্জা তারপর যা কোরবার তা কোরবো। তোকে কিছু বোলতে হবে নি। সে অমানুষের মত কাজ করেঠে, কোরবে। তাকে ত কিছু বোলবো নি। বৌদিকে স্পষ্ট ভিন হয়ে খেরতে বোলে দুব। কারো কুনু ল্যাপসায় থাকবোনি। এখন চল দিখি, খাবি চল। মোকে পচুর খিদা পেইচে।
এবার যদিও পাশ ফিরে লোখার দিকে শোয় কিন্তু মুখ খোলে না। লোখা তখনো গলার স্বর নিচু করেই রাখে।
– কি হয়ঠে তোর বোলবি মোকে! কথা গুলানকি গানে যায়নি তোর। খেতে উঠবিনি নাকি বল দিখি।
— তমাকে দিইচি, তুমি ত খেয়ে লিবে। মোর জমাখরচে তমার কি এসে যায়!
— সকাল থিকে তুইও ত খাউনু। পেটে পিত্তি পোড়লে অ্যাসিট কোরবে। চ খাবি চ।
এবার ময়নার তলতা বাঁশের মতো সরু অথচ গোলপারা হাতটা ধরে টান দেয় লোখা। কিন্তু ঝটকা মেরে ছাড়িয়ে নেয়। আলগা করেই ধরেছিল লোখা। এমন জোরে ঝটকা মেরে হাতটা লোখার মুঠো থেকে ছাড়ায় যে,লোখা হেসে ওঠে,
— ও! খুম যে তেজ ধরেচু। মোর মত ছেনা বোলে তোকে টেনেহিঁচড়ে খাওয়াতে যাইঠি,অন্যরা হলে কেটা ত নি।
— তুসিও কেটাও নি। তমাকে কে বোলেচে কেটাতে। ভাত বেড়ে দিচি। তারচে তুমি জিয়ে পেটসটা করে লাও।
—দয়রে তখন থিকে ভাতের জাসবাটি খুলা পড়ে আছে। মাছিয়ে মুতেঠে বোধয়। আর বিরক্তিব কোরিসি, চল, উঠ।
— বোল্লম ত খাবনি।
লোখা আর নিজেকে স্থির রাখতে পারে না। এত কথার কাটাকাটির মাঝে তার চোখ ছিল ময়নার শরীরের দিকে। দু'একবার চোখাচোখিও হয়েছে ময়নার সাথে। এমুহূর্তে সে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। বুক থেকে কাপড় কখন সরে গেছে তার। আধ ময়লা ফিনফিনে ব্লাউজ ঘনঘন উঠাপড়া লোখাকে চলৎশক্তিহীন করে দিয়েছে। পেটের খিদা ভুলে গেছে সে। এখন তার অন্য খিদা আঁচড় কাটছে ধারলো নখ দিয়ে মনের ভিতর। পেটের খিদার চেয়েও এই খিদার আগুন মারাত্মক। ময়না দু'ছ্যানার মা। তবে শরীর তার ভাঙেনি। আগাগোড়া একইরকম আছে। ছিপছিপে গড়ন। নরম পাতলা ঠোঁট। চোখের তারার দিকে তাকালে লোখা ক্যামন যেন হয়ে যায়। সারা শরীরে কোথাও অতিরিক্ত মাংসা নেই। কিন্তু চাবুকের মতো তীক্ষ্ণ, শিমূল তুলার মতো মোলায়েম। শিলাইয়ের পানসি নৌকা যেমন উজান ঠেলে তীরের বেগে ছুটে যায়, ময়নাও সেইমতো ক্ষিপ্র। শক্ত করে হাল না ধরে রাখতে পারলে সমূহ বিপদ। লোখা আর বিন্রদুমাত্র দেরি করে না। সে তো পাকা মাঝি। বাগদি ছেনা বলে কথা। কপাটে হুড়কা লাগিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ময়নার বুকে। মেইয়া মানুষের চোখ আর মনের চালচলন বোঝা মুশকিল। সেও যেন ক্ষুধার্ত ছিল দীর্ঘদিন। বেড়াকলমি লতার মতো পেঁচিয়ে ধরে লোখাকে। লোখা তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে,চুড়ান্ত আবেগ দিয়ে আদর ছড়িয়ে দিতে থাকে ময়নার শরীরে। এই শরীর তো তার কত চেনাজানা। সমস্ত অলিগলি তার পরিচিত। কত রাত,কত নির্জন দুপুর সে তো উন্মত্ত পাগলের মতো সাঁতার কেটেছে এই জলাশয়ে। তবু এই মুহুর্তে যেন নতুন করে ধরা দিয়েছে তার কাছে ময়না। এক আশ্চর্য সুখ অনুভব করে লোখা। ময়নাও চুড়ান্ত সুখের আবেশে নির্জীবের মতো পড়ে থাকে। লোখা কি যেন ভাবে মনে মনে। সে তো হামেশাই ময়নার সাথে মেলামেশা করে। শরীর যখন তখন পেতে চায় ময়নার সঙ্গ। কিন্রতু এইরকম অনুভূতি তো তার সেই প্রথম রাতের মতো। সবদিন কেন এমন সুখ সে অনুভব করে না। ভগী খুড়ার কথা মাথায় ভিড় করে।
—- লদীয়ে সোেত থাকে সবদিন। লৌকাও চালায় সবাই। কিন্রতু যেদিন জুয়ারভাটির খেল হয়,সেদিন সামালসামল অবস্থা৷ জুয়ারভাটি সব দিন আসেনি। চাঁদের সঙে পিথীর পেম হলে ইসব হয়। তরা বই পোড়েচু আকষ্যস। আসলে অকেই বলে পেম। পকিত পেমের খনে আকাশপাতাল দুলে উঠে রে। মেইয়াদের সঙে মেলামেশাও উরকম। সবদিন পেমের মিলন হয়নি রে। উ হয় খিদার মিলন। খিদা পেম বুজেনি। পেট ভোরলেই শান্তি। কুন্তু পেমের খিদা! সে জুয়ারভাটার মতো! এগবারে সামালসামাল!
0 Comments