যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ১০৯
আজ শামসুদ্দিনের লেখাটা শেষ করলাম। ওয়াহিদরা বেগম রোকেয়াকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করবে এবং একটি স্মরণিকাও প্রকাশ করবে, আমাকে একটি লেখা দিতে হবে।এই মুহূর্তে আমার পক্ষে কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তাই আমার অক্ষমতার কথা জানিয়ে দিয়েছি।
ভাস্কর আগামিকাল সকালে আসবে বলেছিল, পরে ডেট বদলে আজ সন্ধ্যায় এসেছিল, একঘণ্টার সাক্ষাৎকার নিয়ে গেল। রবিবার চন্দ্রিমাকে সঙ্গে নিয়ে মাহতাবনগর গেছলাম। বিশাল কর্মকাণ্ডের আয়োজন। রক্তদান শিবির, স্বাস্থ্য শিবির ইত্যাদি ইত্যাদি। মাদ্রাসা ও মসজিদ এক জায়গাতেই। মাদ্রাসার স্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠানটি হচ্ছিল। আমি প্রথম বক্তব্য রাখলাম, বেশকিছু এমন প্রসংগ এসে গেল যে সেগুলি বিতর্কিত মনে হলেও মোল্লা মুফতিরা কেউ আপত্তি করেননি। বরং কেউ কেউ প্রশংসা করছিলেন। অনেকে ফোন নাম্বার নিলেন। এক ভদ্রলোক (হিন্দু)আমার পাশে বসেছিলে। তিনি বল্লেন, ‘আপনার বুকের পাটা আছে মানতে হবে, এখানে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলা সহজ কাজ নয়’। আসলে এইসব মানুষের মনে মুসলিদের সম্বন্ধে এমন একটা ধারণা রয়েছে যে মুসলিম মানেই কট্টর, অসহিষ্ণু, দাঙ্গাবাজ। তবে ইয়াসিনদার কথাই ঠিক।এরা ব্যবহার জানে না। নেতা নেত্রীরা উপস্থিত হতেই তাঁদের নিয়ে ব্যস্তু হয়ে পড়ল, আমাদের ভুলে গেল।
চড়কা গ্রামের জহর আলম নামে একটি ছেলে(কম্পিউটার শিক্ষক) এসেছিল তার প্রথম কবিতার বই দিতে। বইটি ছাপার আগে আমার শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে ছিল। চন্দন বসু what,s App এ আমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়েছেন। ওঁরা ওঁদের বিজয়া সম্মেলনের দিন আমাকে সম্বর্ধনা দেবেন।
🍂
আরও পড়ুন 👇
এলো মেলো জীবনটাকে আর গুছিয়ে নেওয়া গেলনা। শুধু সংসার নয়, মনটাও ভেঙ্গে ছড়িয়ে গেছে। মূল স্তম্ভটা ভেঙ্গে গেলে সংসারটা আর কী করে দাড়িয়ে থাকে? মানুষের ঈর্ষা, আক্রোশ থেকে জন্ম নেওয়া প্রতিশোধ স্পৃহা ক্ষনিকের জন্য পথভ্রষ্ট করেছে। কিন্তু সে পথে পা বাড়াতে গিয়ে বুঝলাম, এপথ আমার নয়, আমি উজান পথের যাত্রী। সবদিন সবার ভাল চেয়েছি, ভাল করার চেষ্টা করেছি, তাদের আপনজনের মত পাশে দাঁড়িয়েছি। জীবনে বার বার নিজে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিইনি। অনেক অপমান, অপবাদ সহ্য করেছি। আমি কিন্তু থেমে যাইনি।
সন্ধ্যায় ইন্দ্রদীপ রাকিবুল আর স্বরূপ এসেছিল। ‘রক্তের রং লাল’ আমার লেখা স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনা করতে। ২৭ অক্টোবরে রিহার্সাল শুরু হবে। শুটিং আমাদের বাড়িতেই হবে। রাত সাড়ে আটটার দিকে চোখ লেগে গেছল। চন্দন বসুর ফোনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। উনি ক্ষমা চেয়ে নিয়েই বললেন, ‘দেরি হয়ে গেল, আপনার বাড়ির ঠিকানাটা যদি বলেন, তাহলে আমন্ত্রণ পত্রটি এখুনি দিয়ে আসব। কালকের অনুষ্ঠানে DM ম্যডাম আসতে রাজি হয়েছেন, উনিই আপনার হাতে মানপত্র তুলে দেবেন’। বিশিষ্ট সমাজসেবী, গবেষক স্বর্গীয় গণপতি বসুর সুযোগ্য সন্তান চন্দন বসু বাবার নামে যে ‘গণপতি বসু স্মৃতি সদন’ প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেখানেই ‘বিজয়া সম্মেলনী’ হবে।
বিকেলে চন্দ্রিমাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হলাম। তখন স্টেজ সাজানো হচ্ছে আমাদের নিয়ে গিয়ে একটি রুমে বসানো হল।ইয়াসিনদা আগেই পৌঁছে গেছেন। সুদীপ, শুভ এল। কলকাতা থেকে কয়েকজন ছেলেমেয়ে এসেছে, এখানে গান গাইবে। অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হচ্ছে দেখে চন্দ্রিমা বাড়ি চলে গেল। একসময় আমাদের ডাকা হলে বাইরে বেরিয়ে দেখি লোকজনের উপস্থিতি ভালই। DCCI এর সভাপতি সম্পাদক, এবং শিল্পপতিরা উপস্থিত হয়েছেন। শহরের বাইরে থেকে অনেক ব্যবসায়ীরাও এসেছেন। এক এক জনের নাম পরিচয় ঘোষণা করে আমাদের মঞ্চে বসানো হল। দেখলাম কোনও মহিলার উপস্থিতি নেই, একমাত্র অনুভবের মা ছাড়া। ওর বাবাও এসেছেন। অনুভব আবৃত্তি শোনাল। ওর চিকিৎসা কতটা ব্যয়বহুল সে সম্পর্কে ওর বাবা বললেন। শিল্পপতিরা অনেকেই সাহায্যের আশ্বাস দিলেন।
এরমধ্যে DM ম্যাডাম আয়েশা রানী এসে পৌঁছেছেন। ওনাকে বরণ করার সময় আমার হাতে একটি সাল দেওয়া হয় ওনাকে পরিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি সালটি ম্যাডামকে পরাতে যেতে উনি বলে উঠলেন, ‘আরে এটাতো আমার আপনাকে পরানোর কথা’! একটা হাসির রোল উঠল’, আমি বললাম, ‘এটা আপনার জন্যই’।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শুভ। নাম ঘোষণা করলে আমি সামনে এসে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা, লড়াইও বেদনার কথা শুনে কখনো লজ্জা পেলাম, কখনো চোখ জলে ভরে উঠল। এর পর শুভ মানপত্রটি পড়ে শোনানোর পর DM ম্যডামকে সবিনয়ে অনুরোধ করলেন মানপত্রটি আমার হাতে তুলে দেবার জন্য। উনি আমাকে উত্তরীয় পরিয়ে মানপত্র তুলে দেওয়ার সময় মঞ্চের অতিথিরা চেয়ার ছেড়ে আমার পাশে দাড়ালেন। এরপর DM ম্যাডাম ছোট্ট করে বক্তব্য রাখলেন। রাকিবুলকে ডেকেছিলাম, ও পুরোটা ভিডিও করেছে।
এরপর সম্বর্ধনা দেওয়া হল ‘কর্নেলগোলা আদি দুর্গাপুজো কমিটি’ কে।ওখানে ডিনারের ব্যবস্থ্যা ছিল বুফে সিস্টেমে। খাবার সরবরাহ করেছে শহরের নাম করা রেস্টুরেন্ট ‘আড্ডা’। ম্যানেজার আমাকে দেখেই এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, খাবার কেমন হয়েছে? আমার প্লেটে জোর করে এটা ওটা দিতে চাইছিলেন, আমি নিইনি। আমার পাশেই কয়েকজন মুসলিম ভদ্রলোক আলাপ করতে এসে জানালেন, ওনাদের বাড়ি কেশপুরে। কেশপুরে আমার শ্বশুর বাড়ি শুনে, ওনাদের সে কী আনন্দ! চন্দন বাবুকে বললেন, ওনার শ্বশুরবাড়ি আমাদের এলাকায়, উনি আমাদের। চন্দন বাবু শুনে বললেন, তা কী করে হয়? উনি আমাদের, আমরা দুজনেই গড়বেতার। আমি খাওয়ার পরেই বাড়ি চলে এসে ছিলাম। পরদিন চন্দনবাবু ফোন করে খবর নিয়েছিলেন আমার কোনও অসুবিধা হয়েছিল কিনা। আরও নানা বিষয়ে কথা হয়।
মাথা আর চোখের কারণে কাজ করতে পারছি না। এইটুকু করে কাজ করলে হবে না। অনেক বেশি বেশি কাজ করতে হবে। আজ ভাস্কর ফোন করে জানাল, ও জ্বলদর্চিতে যে আমাকে নিয়ে ‘মেদিনীপুরের রত্ন’ লিখেছিল, সে লেখাটি বাংলাদেশের ‘দৈনিক গণমুখ’ সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়র পৃষ্ঠায় পুনঃ প্রকাশিত হয়েছে।
জারা স্কুল থেকে কোথায় যেন গেছে, আজ নদীতে নৌকো বাইছে দেখলাম। গতকাল জঙ্গলে ১৮ কিমি হাঁটতে হয়েছে। মেয়েটা পারেও বটে। অন্ধকার জীবনে ওইটুকুই তো খুশির আলো। ভাবনার জাল ছিন্ন করে কলিংবেল বেজে উঠল। কোলাঘাট থেকে আজ সমীরণ চট্টোপাধ্যায় আসবে, আমি ভুলেই গেছলাম। বিজয়ার প্রণাম জানাতে আর ওর নতুন কবিতার বই দিতে এসেছে। আমার ঘরের সব দেওয়ালের ছবি তুলল। অনেকক্ষণ কথা হল। মানুষের এই শ্রদ্ধা ভালবাসার থেকে বড় পুরষ্কার আর হয় না।
সেজভাই মনি(মনিউর রহমান খান) আর কয়েকদিন পরে ৩১ অক্টোবর চাকরিজীবন থেকে অবসর নেবে। ও ছবি কে যেতে বলেছে। আমাদের সমাজে আজও মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের সামান্য হলেও সমীহ করে চলতে হয়। তার একটাই কারণ সে বাড়িতে মেয়ে থাকে। আমি এখনো শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ফর্মালিটি বজায় রেখে চলার চেষ্টা করি। কারণ আমি এই বংশের বড়বৌ। সম্পর্ক রাখাটা আমার কর্তব্য বলে মনে করি। যাই হোক আজ রানীর বড় শ্বশুরের নাত্নির বিয়েতে গেছলাম। মেদিনীপুর শহরের অদূরে কোলসাণ্ডায় এত সুন্দর পরিবেশে রেস্টুরেন্ট হয়েছে জানা ছিলনা। মেয়ের বাবা বৌভাতে যাওয়ার জন্য অনেক করে ধরেছিল, আমি রাজি হইনি।
আনেকদিন পর তৌফিক আজ ফোন করেছিল। কলকাতার একটি পত্রিকার জন্য কবিতা চেয়েছে। বিনোদও কবিতা চেয়েছে।পরে জানলাম দুজনে একই পত্রিকার জন্য কবিতা চেয়েছে। কবিতা সেভাবে লিখে উঠতে পারিনা। কেউ চাইলে তখন খুঁজি কোথাও কোনও অসম্পূর্ণ কিছু লেখা আছে কিনা। তারপর সেটা পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত করে কবিতার আকার দেওয়ার চেষ্টা করি।
আজ মনির ফেয়ারওয়েল ছিল, অফিস থেকে ওর ফ্যামিলিকে ডেকেছিল। এবার ও কোথায় থাকবে কে জানে? গ্রামের বাড়িতে না খড়গপুর নিজের বাড়িতে? ছবি বলছিল, ও নাকি গ্রামেই থাকবে। খরগপুর ওর ভাল লাগে না। এখানে ক্ষেতভরা সবজি, ধান, আলু, পুকুর ভরা মাছ, এসব নিয়েই থাকতে চায়। সপ্তাহে একদিন খড়গপুর যাবে। এটারও প্রয়োজন হত না, ওর স্ত্রী যদি ওর সঙ্গে গ্রামে থাকতে রাজি হত। কিন্তু স্বামী অসুস্থ হলেও সে যায় না। স্বামীর প্রতি তারও যে দায়িত্ব কর্তব্য আছে, সে বোধটাই তার নেই।
আজ সকালেই অধ্যাপক আবুল ফোন করে জানতে চাইলেন, আমি আজ বাড়ি থাকব কিনা? থাকব জেনে বললেন, আমরা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলের সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ ও অস্তিত্বের খোঁজে পত্রিকার পক্ষ থেকে আপনাকে সম্বর্ধনা জানাতা চাই। কিন্তু বেসিরভাগ সদস্য শহরের বাইরে থাকের কারণে সময় হচ্ছে না। তাই ঠিক করেছি আমি আর আসলাম(কেশপুর কলেজের অধ্যাপক) গিয়ে অপনাকে সম্বর্ধনা জানিয়ে আসব। ওরা সকাল নটার দিকে এসে উত্তরীয় পরিয়ে, ফুলের তোড়া, মেমেন্টো ও মিষ্টির প্যাকেট আমার হাতে তুলে দিয়ে ছবি তুলল।
আজ রবিবার(৬ নভেম্বর)কুইকোটার একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকদের সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে গেছলাম। বেশিরভাগ প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা আমার পূর্ব পরিচিত। আবার কয়েকজনের সঙ্গে প্রথম আলাপ হল। বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মালা পরিয়ে, প্রদীপ জ্বেলে, চারাগাছে জল সিঞ্চন করে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করলাম। বক্তব্যও রাখলাম।
আজ সারাদিন লিখতে বসা হয়নি। সাড়িতে এমব্রয়ডারি করছিলাম। সেলাইয়ের নেশাও যে ছাড়তে পারছি না। নভেম্বরের ৭ তারিখ হয়ে গেল, লাইফ সার্টইফিকেট জমা দিতে হবে। তন্ময়দাকে ফোন করে জানতে চাইলাম কি কি লাগবে? বললেন, পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্কের পাশবুক আপডেট করে তার জেরক্স লাগবে। তিন কপি ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে।PNB তে টাকা ঢুকছে কিনা সেটাই জানা হয়নি। এখানে সার্টইফিকেট জমা দেওয়ার কাজটা করতে পারলে একটা ঝামেলা কমবে।
মাননীয়া জেলাশাসক আয়েশা রাণী মানপত্র তুলে দিচ্ছেন আমার হাতে।
আজ অনেকগুলো কাজ করলাম। YiFi আর কেবল এর বিল মেটালাম, মঙ্গলা স্টোরে মাসকাবারির দাম মিটিয়ে ব্যাঙ্কে গেলাম। প্রচণ্ড ভিড়। তিনটে লাইনের একটাতে পাসবুকে বারকোড লাগানো হচ্ছে। আর একটাতে পাসবুক আপডেট হচ্ছে, মাঝখানটাতে লাইফ সার্টিফিকেট জমা নেওয়া হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে আগে বারকোড লাগিয়ে পাসবুক আপডেট করলাম। টাকা জমা পড়ছে কিনা এনিয়ে মনে সন্দেহ ছিল। জন্ম তারিখ ভুল থাকায় টাকা বন্ধ হয়ে গেছল। তারপর পেনসন অফিসের সহায়তায় একটি application হেড অফিসে পাঠিয়ে ছিলাম গত মারচে, অফিসার বলেছিলেন, ২/৩ মাসের মধ্যে আবার চালু হয়ে যাবে। কিন্তু আমার আর খোঁজ নেওয়া হয়নি। আজ আপডেট করার পর দেখলাম ৩৬,৪০০ টাকা জমেছে। এখান থেকে বের হয়ে জেরক্স করলাম। তারপর রেশন দোকানে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে এলাম। গুড়িয়ে পরে এসে রেশন নিয়ে যাবে।
আগে থেকেই ঠিক করা ছিল, আজ মাড়োতলা যাব। ওখানকার বাচ্চাদের জন্য কম্বল নিয়ে গেছলাম। ওদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে নদীর দিকে গেলাম। জানতাম না এত কাছে নদী। আসার সময় ড্রাইভার বুলু বলল, তাই জান্লাম। বুলু আমাদের নদীপাড়ে নিয়ে আসে। নদীর ওপর আমাদের শিলাবতীর মত বাঁশের ব্রিজ। প্রচুর মানুষ যাতায়াত করছে।
মীরবাজারে চন্দন ঘোষের কাছে গিয়ে আজ অনলাইনে PNB র লাইফ সার্টিইকেট জমা দিয়ে এসেছি। সুকান্ত ছুটিতে আছে, জয়েন করলে আর একটা লাইফ সার্টিফিকেট জমাদিয়ে আসব। তবে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার থেকে অন্যান্য স্টাফ, সবাই খুবই হেল্পফুল। আজ যে ‘ফিউচার কেয়ার’ এর মিটিং ছিল সন্ধ্যায়, ভুলে গেছলাম। প্রসূন পড়িয়া ফোন করতে মনে পড়ল। ওর সঙ্গেই গেলাম, মিটিং তাড়াতাড়িই শেষ হয়েছে।
আজ রানীর জন্মদিন। সকালে ওরজন্য পায়েস করে পাঠিছিলাম। দুপুরে ওদের বাড়ি থেকে বিরিয়ানি পাঠিয়েছিল। ভেবেছিলাম রানীর এই অবস্থায় আর কিছু হবে না। কিন্তু শাহবাজ শোনার বান্দা নয়, রাতে রেস্টুরেন্টে পার্টি দিল।
আজ ব্যঙ্কে গিয়ে সব কাজ করে ফেরার সময় মাটি আর কিছু ফুলের চারা নিয়ে এসেছি। বাবলি ফোন করেছিল, ওখানের ওয়েদার খুব খারাপ। রানির ও তানির খোঁজ নিল। তানি কবে আসবে বলতে পারলাম না। ওর কলেজ যা শুরু করেছে। ফাইনের নামে ১০,০০০/থেকে ৪০, ০০০ টাকা আদায় করছে। কেউ প্রতিবাদ করলে নানারকম ভয় দেখাচ্ছে। কী বাংলা, আর কী ব্যাঙ্গালুরু, সমগ্র দেশেই ব্যাঙের ছাতার মত যে সমস্ত বেসরকারি কলেজগুনি গড়ে তোলা হয়েছে, ওগুলি হচ্ছে টাকা রোজগারের কারখানা।GNM এর ৩ বছরের প্যাকেজ ৩,৫০,০০০/ টাকা ।কোথাও ১০,০০০/ কম, কোথাও বেশি।সব থেকে বেশি মেডিক্যেলের প্যাকেজ, মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। রাজ্যের ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরির আশা বৃথা। প্রধানমন্ত্রী রাম মন্দির প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। বেচারি মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জেলবন্দী নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে পাওয়া কোটি কোটি টাকার হিসেব নিয়ে নাকানি চোবানি খাচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাব্বার সময় বা ইচ্ছে কোনটাই নেই। এখন ওঁদের অবস্থা ‘চাচা আপনা প্রাণ বাঁচা’।
২৫ নভেম্বর এই অধমার জন্মদিন, চন্দ্রিমা কোনও আয়োজনের ত্রুটি রাখেনি, আমার কোনও নিষেধ শোনে না। কেউই শোনে না। স্বপ্না সন্ধ্যাবেলা ফুল মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। ও থাকা কালেই গড়বেতা থানার শ্যামনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কেয়া দিণ্ডার ফোন এল, প্রধান শিক্ষকদের সম্মেলনে আমার বক্তব্য ওঁর ভাল লেগেছিল, তাই ওঁর স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে আমাকে নিয়ে যেতে চান। আগামি জানুয়ারির ১৬/১৭ তারিখে অনুষ্ঠান হবে। স্বপ্না বলল ওর পরিচিত। রাকিবুলও ফুল আর চকোলেট এনেছিল। সৌনক এল কেক মিষ্টি নিয়ে। সুদীপ শহরে নেই মনে হয়। সর্বশ্রীও আজ ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলল, ডিসেম্বরের ফাস্ট উইকে ওদের কলেজে (পিংলা কলেজ) যেতে হবে। ও তো জানে, আমি ওর কথা ফেলতে পারব না। ডেট ২/১ দিনের মধ্যে জানিয়ে দেবে। সারাদিন অনেকেই ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সবথেকে বেশি মানুষ সোশাল মিডিয়াতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আগামিকাল আমার বাবলির শুভ জন্মদিন।
ক্রমশ
0 Comments