জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-১১৩/রোশেনারা খান

উইমেনস কলেজের অধ্যাপকদের সঙ্গে।

যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ১১৩

অপারেশনের পর চোখটা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। অযত্ন হল কিনা জানিনা। ১৮  এপ্রিল চোখের চেকয়াপ হবে, তখন জানতে পারব।আজ বাবলি ৩০০০,০০/ টাকা পাঠিয়েছে, ওদের জন্য কিছু কিছু কিনতে হবে, নিজের জন্যও কেনাকাটা করা দরকার। আজ দেবাশীষ বাবুর সংগে কথা হল, উনি  আমার বইয়ের নাম কি হবে? কপিরাইট কার থাকবে? জানতে চাইলেন। ঋত্বিক বলছে, ‘আপনি রয়ালিটি নেবেন না.১০০ বা ২০০ কপি বই নিয়ে নেবেন। রিভিউ তে কিচ্ছু হয়না।রিভিউ পড়ে কলেজ স্ট্রিট থেকে বই কিনে পড়ে আপনাকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার দিয়েছে, তা কিন্তু নয়। আপনি বই পাঠিয়েছেন, তাতেই কাজ হয়েছে’। ইন্দ্রনীল আ যুক্তি মানছেন না। উনি বলছেন, ‘কিছু বই আপনি নেবেন, বাকি বই ওরা বিক্রি করে রয়ালিটি নেবেন’। বইয়ের কাজ শুরু হোক, তখন এসব নিয়ে ভাবব।  

      মনি ফোন করে জানালো ছোট পিসির বড়ছেলে শোভানারাদির স্বামী আজ মারা গেছেন। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।ছোটবেলার কতকথা মনে পড়ছে। দিদি তো কভিড কালেই চলে গেছে।ছোট পিসির বাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের শেষ বন্ধনটুকুও মনে হয় ছিন্ন হয়ে গেল।

      দেবাশীষ বাবুর সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম তা হল,উনি যে কোনও সময় বই প্রকাশ করে থাকেন, উপলক্ষ্যের জন্য অপেক্ষা করেন না। ২০২৪ শে ওনার এবং ইন্দ্রনীলের কাজ এক সঙ্গে চলবে বলেই মনে হচ্ছে। আমার লেখা কবে শেষ হবে? তার ওপরও অনেককিছু নির্ভর করছে।

    আমি ভেবেছিলাম  ১৮ এপ্রিল  চোখের চেকআপ, ফাইল বের করে দেখি আজই চেকয়াপের ডেট। সকাল ৮ টা ২৫ বাজে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হলাম। ডাক্তার দেখে বল্লেন,সব ঠিক আছে, শুধু পড়ালেখার সময় চশমা ব্যবহার করবেন। কথায় কথায় জানতে চাইলেন, আমি কি লিখি? বললাম কি লিখি।শুনে তাঁর সহ্যকারিণীকে বললেন, ‘উনি আসেন চোখ দেখিয়ে চুপচাপ চলে যান। এই সাধারণ সাজপসাকের আরালে যে উনি একজন অসাধারণ মানুষ, তা কাউকে

বুঝতে দেয়নি। যারা বেশি কথা বলে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করেন,তাঁদের ভিতরে কিচ্ছু নেই। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, মেদিনীপুরবাসী হিসিবে  আপনার জন্য আমার গর্ব হচ্ছে।আরও অনেক কথা বললেন। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল।বাইরে পেসেন্টরা নিশ্চয় বিরক্ত হচ্ছেন। এখান থেকে বের হয়ে আই প্যালেসে চশমা বানাতে দিয়ে এলাম ।

    ইদের বাজার করতে গেছলাম, তবে তা কয়েকজনের জন্য।মিথির আর ওর দুই ভাইবোনের জন্য,রানীর জন্য সবুজ রঙের একটা বেনারসি নিলাম, ছবির জন্য হ্যান্ডলুমের সাড়ি, জারা আর বাবলির জন্য দু’খানা ড্রেস। গুড়িয়া টাকা নিয়েছে। নিজের জন্য কিনতে ইচ্ছে করেনা, তাই কিনিনি। কয়েকটা রোজা রেখেছিলাম, শারীরিক সমস্যা হওয়াতে আর রাখিনি।আমার ইদ ও নেই। সন্ধ্যাবেলা শিবানীদি ও চন্দ্রিমা এসেছিলেন ফল, মিষ্টি ও রানীর মেয়েসহ আমাদের সবার জন্য ইদের জামাকাপড় দিয়ে গেছেন।

     জলি আজ ফোন করে বললেন, বইটা পড়া হয়ে গেছে, পুরনো একটি মিটিঙের ডেট আছে বৃহস্পতিবার, যদি সময় থাকে তাহলে এই বিষয়টি তুলব। আমার এত সৌভাগ্য হবেকি? অস্থায়ী উপাচার্য যদি রাজি না হন?আর ভাবতে পারছি না। যা হবার তা তো হবেই।

   প্রচণ্ড গরম পড়েছে, মেঘের দেখা নেই অনেকদিন। আজ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রী ।এই গরমে কষ্ট রোজদারদের। এভাবেই মনে হয় ঈদটা কাটবে।গরমের মধ্যে  খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ পড়তে হবে। আবার বৃষ্টি হলেও মুশকিল, মাঠ কাদা হয়ে যাবে। দেখা যাক, ওপরওয়ালা কী করেন।

      শুনছি আগামিকাল ঈদ। আমার তো কোনো আয়োজন, নতুন আবরণের প্রয়োজন নেই। এতদিন সুধু ভাত রান্না করতাম।রানীর বিয়ের পর কিছু একটা করতেই হয়। এবার ছবি আছে, গোটা মাস রোজা রেখেছে। ওর জন্য তো কিছু করতেই হবে।এদিকে রানী ফোন করে বলল, ‘আন্তি, আলেমাদি আজ বাড়ি চলে যাবে । আমি বাচ্চা নিয়ে একা কী করে পারব? তাই বলছি তুমি যদি সিমাইটা রান্না করে পাঠাও’। বাধ্য হয়ে সব কিনে আনলাম।রমজান মাসে পরিবারে যত জন সদস্য জনপ্রতি প্রত্যেকে ফিতরা (দান) দিতে হয়। যার আছে সে দেয়, যার নেই সে নেয়। এ ছাড়াও ধনসম্পত্তির মালিক যারা তাদের সম্পত্তির হিসেব মত একটা অংশ গরিব-দুখিদের বিতরণ করাকে জাকাত বলা হয়।আরবি শব্দ জাকাত হল নিজেকে এই দানের মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা।  

🍂

    সকালে উঠে স্নান করে রান্নায় বসলাম। রানীর শ্বশুর বাড়ির জন্য আলাদা রান্না করলাম, আমাদের আলাদা। অনেকেই খাবার চাইতে আসে, বিশেষ করে যারা এই শহরের রাস্তা ঘাট পরিস্কার রাখে,তারা। ওপরঅয়ালা রোজদার দের ওপর  রহম করেছেন। বৃষ্টি হয়নি, অথচ  তাপ প্রবাহের পরিবর্তে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে! গতরাতে দুধ মেরে রেখেছিলাম্‌,আজ পায়েস বানালাম, পোলাও ও চিকেন রান্না করলাম। কাবাব তৈরি করলাম।ছবি তো আছেই, রানীও আসবে আজ। ওর শ্বশুর বাড়ির সবাই আজ দেশের বাড়ি যাবে। ছোটবাচ্চার এই গরমে কষ্ট হবে। তাই ও যাবে না।সাহবাজ এল দুপুরে, এখানেই লাঞ্চ করল।ফিতরা সবাই দিয়ে থাকলেও ‘জাকাত’ সবাই দেন না। দিলেও সম্পত্তির হিসেব মেনে দেন না।আমি নিজেও ধর্ম মেনে দান করতে পারি না। যখন যেখানে দেওয়া উচিত বলে মনে করি, সেখানেই দিয়ে থাকি।

    তন্ময়দা আসেছিলেন ওনার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে।আমার ফিক্সট ডিপোজিট থেকে ইনকাম ট্যাক্স কাটছে, সেটা আটকানোর জন্য একটা  ফরম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে। সেই জন্যই তন্ময়দা কে ডেকেছিলাম।উনি একটা ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে গেলেন। এটা দেখে বাকি দুটো আমি করে নেব।

      সেদিনের মিটিংএ জলি আমার বইয়ের অনুবাদের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়কার অস্থায়ী উপাচার্য রাজি হননি। আজ ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কথা হল,উনি একটি প্রকাশনা সংস্থার কথা বললেন, নাম ‘স্ত্রী সাম্য’।ওঁরা প্রান্তিক মহিলাদের বিষয়ে লেখা বই প্রকাশ করেন। এখন কিছুদিন আপেক্ষা করি। জলি কিছু ব্যবস্থা করবেই, ওনার কথায় সেরকমই আশ্বাস পেয়েছি।

    অসিত দাস যা দরকার হবে না, সে সবও নিয়ে যেতে বলেন। আমার কত টাকা জমা আছে, সেটার প্রমান পত্রও দিতে হবে। সেসব জেরক্স করে  ব্যাঙ্কের স্ত্যাম লাগিয়ে ম্যানেজারকে দিয়ে সই করিয়ে জমা দিতে হবে। এতে নাকি আমার ওয়েট বাড়বে। যত সব ঝামেলার কাজ। তবুও ছোটাছুটি করে করলাম।

   আজ(২৭ এপ্রিল)ভিসার জন্য কলকাতা যাব বলে রেডি হয়ে বেরিয়েছি,গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। রানীকে ফোন করতে বিক্রম গাড়ি নিয়ে আসে। এটা অটোমেটিক  গাড়ি আমাদের ড্রাইভার বলল ও মুম্বাইয়ে চালিয়েছে। একবার বার দেখিয়ে দিলে ও পারবে। তাই হল, কোনো সমস্যা হল না। আমরা শ্যামবাজারে কারিগর এর অফিসে  গেলাম। দেবাশীষবাবু আমার সঙ্গে সাক্ষ্যাতে কথা বলতে চেয়েছিলেন। ভদ্রলোক ভীষণই অমায়িক। কথা বলে মনে হল যেন কতদিনের পরিচয়! অনেক কথা হল, আমি একখানা বই(আমি নারী) নিয়ে গেছলাম ওনার জন্য।উনি আমাকে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি বই উপহার দিলেন। আমার বইটির সূচিপত্র দেখে বললেন, ভাল ভাল লেখাগুলো অন্যদের দিয়ে বই করিয়ে নিয়েছেন। কথা প্রসঙ্গে আমি ওনাকে  মহিলা কমিশনের ক্যালেন্ডারের কথা বললাম। উনি তখুনি ফোন করে জানলেন আমার ও আর একজনের ছবি ২০২৩ এর ক্যালেন্ডারে রয়েছে। উনি আমার এককপি ওনার কাছে পৌঁছে দিতে বললেন। একটা কথা বলা হয়নি, সঙ্গে ভাগ্নাকে নিয়ে আসেছি। দেবাশীষবাবু দারুণ স্বাদের মিষ্টি খাইয়ে ছিলেন।

      ভিসা অফিসের ভিতরে যাওয়ার সময় হয়নি বলে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হল। বাকি কাজ অতি দ্রুত হয়ে গেলে আমরা ফেরার পথ ধরলাম। মাঝে একটি রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করেনিয়েছিলাম। দিল্লী থেকে যে কুরিয়ারে ভিসা আসবে তা মেদিনীপুর যাবে না। তাই অসিত দাসের ঠিকানা দিয়েছি।

     চন্দ্রিমা খুব অসুস্থ, আমি কিছুই করতে পারছি না। কাছে হলে অন্তত   খাবারটা দিতে পারতাম। সন্ধ্যাবেলা আজ ওকে দেখতে গেছলাম। খুব রোগা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় ওকে কখনো দেখিনি। শিবানীদি নিজেই অসুস্থ, চন্দ্রিমা মাকে কোনও কাজই করতে দেয় না, আজ তাঁকেই রান্না করে খেতে হচ্ছে।

   আজ জলিকে ফোন করে জানলাম, এখন কিছু করা যাবে না। ইন্দ্রনীল যা বলেছেন, সেটাই আসল কারণ।নতুন VC অল্প সময়ের জন্য এসেছেন বলে এসব কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন।

   শ্রমিক দিবস আজ, তাই সব ছুটি।ভদ্র লোকেদের অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ ছুটি। যারা প্রকৃত অর্থে শ্রমিক তাঁরা ছুটি চান না। কলকারখানায় যে সংখ্যার শ্রমিক কাজ করেন, অসংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা তার তুলনায় অনেক বেশি। এরা ছুটি চান না।কাজ বন্ধ মানেই সংসারে অনটন বাড়া। আবার কেউ কেউ ছুটি চেয়েও পান না। যেমন কাজের মাসি। কারো কারো এদের পরিচারিকা বা কাজেরমাসি বলতে বাধে, এদের নতুন পরিচয় ‘সহায়িকা’। নাম পরিচয় বদলে ফেললেও এঁরা কাজের মাসিই থেকে যান,কোনো পরিবর্তন হয় না।

    ধিরে ধিরে ইংল্যান্ড যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। নানান চিন্তা ঘিরে রেখেছে। ইলেকট্রিক মিটার দেখতে এলে কে দেখাবে? গতবার এ নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল,  বিল করেছিল অনেক অনেক টাকার। গ্যাস নিতে পারবে না, আমার ফোনে DAC নাম্বার আসে, ফোন তো আমি নিয়ে চলে যাব। আরও অনেক সমস্যা রয়েছে।  এসিটা কিছুতেই সারানো যাচ্ছে না। ঠাণ্ডা হচ্ছে না।

      আজ ইন্দ্রনীল ফোন করেছিলেন। অনেক কথা ছিল। উনি লেখাগুলো PDF করে পাঠাতে বলছেন। তার আগে দুটি জিনিস পাঠাতে হবে। ৩০০ শব্দের মধ্যে আমার নিজের সম্বন্ধে লিখে পাঠাতে হবে। আর একটি আমি কবে কীভাবে লেখালিখি শুরু করলাম? এছাড়া আমার বইয়ের তালিকা, প্রকাশনার নাম, বিশেষ বিশেষ প্রবন্ধ ও নিবিন্ধর নাম ও কোথায় প্রকাশিত হয়েছে? লিখে পাঠাতে হবে।

     দুপুরে  উইমেন্স কলেজ থেকে নীলাঞ্জনা ফোন করেছিলেন, ২৭ বৈশাখ রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করবেন, আমাকে অতিথি হিসেবে চান। ওইদিন কোনও কাজ নেই, তাই রাজি হয়ে গেলাম। এদিকে ইন্দ্রনীল যেগুলো চেয়েছেন,সেগুলো ৩০০ শব্দের মধ্যে লেখা সম্ভব হচ্ছেনা। আজই অসিত দাস জানালেন আমার ভিসা এসে গেছে। মহিলা কমিশন থেকে দুটি ক্যালেন্ডার কারিগর এর অফিসে পৌঁছে দিয়েছে। ভিসা আর ক্যালেন্ডার মনিকে পাঠিয়ে আনিয়ে নেব।

      দীর্ঘদিন রোগ ভোগের  পর ছোটমাসি আজ(৭ মে) চলে গেলেন। খুব কষ্ট পাচ্ছিলেল।খবর পেয়ে গেলাম। দেখে মনে হল,কঙ্কালের ওপর চামড়া জড়ানো রয়েছে। মাসির ৪ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে(তার কথা আগেই বলেছি) আর ছোট মেয়ে কলকাতায় থাকে। বড়ছেলে আসেনি, ও নাকি কেরালা গেছে। ওর স্ত্রী ও এক মেয়ে এসেছে। ছোটমেয়ে একা এসেছে। আমার মায়ের তরফের আমরা দুই বোন ছাড়াও মায়ের দুই ছেলে-বউ এসেছে।মায়েরা ৬ ভাইবোনই চলে গেলেন। সম্পর্কগুলো আর আগের মত টেকসই নয়, ১.২ পুরুষের বেশি তিকছে না।মা ও ছোট মাসির সঙ্গে মামাদের কোনও যোগাযোগ ছিল না। স্বভাবতই আমরা অনেক দূরের।
রবীন্দ্রনাথের  প্রতিকৃতিতে মাল্যদান।
    
  ইন্দ্রনীল যা যা চেয়েছিলেন আজ পাঠিয়ে দিয়েছি।জানিনা ঠিক ঠাক পেরেছি কিনা।আজ (৮ মে) প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার চলে গেলেন।বয়স হয়েছিল৭৯ বছর।১৯৪২ এর ১০ মার্চ জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

     ভাল মানুষদের কেন যে ওপরঅয়ালা শান্তিতে থাকতে দেন না বুঝিনা। মনি ছেলের জন্য এমন ঝামেলায় জড়িয়েছে যে সহজে তা মিতবে বলে মনে হয় না। এরকম একটা বাজে ফ্যামিলিতে মনি যে ছেলের বিয়ে দিতে রাজি হবে না, তা বুঝেই ছেলেটাকে ভয় দেখিয়ে না জানিয়ে রেজিস্ট্রি করিয়ে নিয়েছে। মনি সেই  মেয়েকে বাড়িতে তুলতে নারাজ।

     ১১ মে গোপ কলেজে যে আমন্ত্রণ আছে, সে কথা মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে, আজ হঠাৎ মনে পরতে রবীন্দ্র জয়ন্তীতে কী বলব, ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছি। সকালে উঠে সাংসারিক কিছু কাজ করার পর, কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম। এত গরম যে কিচ্ছু ভাল লাগছে না। ১১ টার সময় সোয়েব মল্লিক নামে একটি ছেলে আমাকে নিতে এসেছিল। যাওয়ার পথে ও জানাল গত ৩ বছর ধরে রফিকের মেসে থাকে।গত জানুয়ারিতে এই কলেজে কাজে যোগ দিয়েছে।আগে থেকেই আমাকে চেনে।

     হল ভর্তি মেয়েদের দেখে মনটা ভাল ভরে গেল।মেয়েরা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। জানলাম আমিই একমাত্র বক্তা, প্রথমে রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতি মালাদিলাম প্রদীপ জানালাম। অধ্যক্ষ জয়শ্রী লাহা কিছু বল্লেন।তারপর আমি আমার বক্তব্য শেষ করলাম স্বরচিত একটি কবিতা পাঠ করে।বক্তব্য কেমন হয়েছে জানিনা, তবে কবিতা সবার ভাল লেগেছে। একজন অল্প বয়সী অধ্যাপক(কবি) আমার কবিতাটির ছবি তুলতে চাইলে,আমি লেখা কাগজটাই দিয়ে দিলাম।

     আমি কোনও কিছুই জানি না।তা স্বত্বেও শুধুমাত্র ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে পিঙ্কির মেয়ে আমাদের সম্বন্ধে আজেবাজে কথা লিখে আসাদুলকে মেসেজ করেছে।এই পরিস্থিতিতে ওগুলো জানা দরকার বলে স্ক্রিনশর্ট নিয়ে আসাদুল কে পাঠাতে বলেছিলাম। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছে আয়ানের বাবা ১০ লাখ টাকা যৌতুক ছাড়া বিয়ে দেবেন না। আমি ঠিক করেছি এই পোস্টগুলি ওদের মামুজানকে (Dr.FRKhan) পাঠিয়ে দেব।

     মে মাস, তাপমাত্রা যেন নামতে ভুলেই গেছে। আকাশের সীমানায় মেঘের ছিটে ফোঁটার দেখা নেই। পৃথিবী যে ক্রমশ উষ্ণ হয়ে উঠছে তা ভালই টের পাওয়া যায়। জনসংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে বসতি, কমছে বন জঙ্গল। কয়েক দশক ধরেই শাল, পিয়াশাল, মহুয়া, ইত্যাদি গাছ কেটে ইউক্যালিপটাসের জঙ্গল হয়েছে। এ গাছে পাখি বাসা বাঁধে না, এর পাতা ছাগল গরু খায় না, এর তলায় অন্য কোনও গাছ জন্মাতে পারে না। আনন্দবাজার পত্রিকায় এই বিষয়ে লেখা আমার একটি আর্টিকেল প্রকাসিত হয়েছিল।
( ক্রমশ)

Post a Comment

0 Comments