জ্বলদর্চি

বার্লিনের ডায়েরি -১৯ পর্ব। চিত্রা ভট্টাচার্য্য

বার্লিনের ডায়েরি -১৯ পর্ব। চিত্রা ভট্টাচার্য্য     
এলবে নদীর জলে রাতের শহরের প্রতিবিম্ব

ড্রেসড্রেন শহরের শেষ পর্ব

 নীলপাহাড়ের মায়াময় আলিঙ্গনে এ শহর প্রহরাবৃত। |স্তব্ধ বিস্ময়ে গাড়ির জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে শ্রীময়ী । রাস্তার দুই দিকে নতুন পুরোনো মেশানো বাড়ি ঘর রেস্তোরাঁ বাঁকা নদীর ধার দিয়ে গাড়ির গতি সোজা  চলছে। ড্রাইভিং সীটে বসে প্রথম দেখা এ শহরের নানা অভিজ্ঞতার গল্প বলছে মল্লিকা। ওরা বিস্ময়ে উৎকর্ণ হয়ে শুনছে, সমৃদ্ধময় শহর টির পুরোনো আভিজাত্যের স্বাক্ষর বহনের গল্প। এই শান্ত ,নিরিবিলি শহরটির চওড়া রাস্তা থেকে প্রশস্ত চত্বর, চৌমাথা বা তেমাথার মিলন ক্ষেত্রে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে কেমন এক রাজকীয় মহিমা। এক সময় এ শহরে  পোলিশ রাজতন্ত্রের পারিবারিক আসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। বারোক এবং রোকো সিটি সেন্টারের কারণে শহরটিকে সেই সময়  জুয়েলবক্স বলা হতো। 

শ্রী বলে world history তে পড়েছি , বহুশতাব্দী আগের থেকেই এর বিশ্ববন্দিত নান্দনিকতায় মোহিত হয়ে এই শহর কে তৎকালীন সময়ে "এলবের ফ্লোরেন্স" নামে ডাকা  হতো। কিন্তু একদিন মানুষের কপটতা, হিংস্রতা ,  লোলুপতার আক্রোশ,স্বাধিকার বোধ ,ক্ষমতা লোভের লড়াই , ষড়রিপুর আদিম প্রবৃত্তির তাড়নায় , মিত্র শক্তির অভ্যুত্থান ও গভীর চক্রান্তের ফলে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত দুঃস্বপ্নের এক মর্মান্তিক রাত নেমে এসেছিল ড্রেসড্রেনের শান্তিপ্রিয় জনজীবনে। বিশ্ব ইতিহাসের কালিমালিপ্ত সেই ঘোর অন্ধকার ময় দিনটি ছিল 1945 সালের  unlucky 13th February .এই  অসামরিক স্নিগ্ধ সুন্দর প্রকৃতির কোলে লালিত শহরটি যখন ছিল সুপ্ত। গভীর নিদ্রায় অচেতন। ওরা আগ্রহে শ্রীময়ীর দিকে তাকিয়ে থাকে । 
ড্রেসড্রেন নাগরিক জীবন।

  ইতিহাসের ক্লাসে পড়া মুখস্ত করা সেই  চ্যাপ্টার , বহু পুরোনো দিনের কথা শ্রীর স্মৃতির পাতায় ভাসে।    উত্তেজিত হয়ে  বলে , মানুষ কত অত্যাচারী ,কত  নির্মম ,কত পাশবিক প্রবৃত্তির ধারক হলে ,এক রাতের বোমার আঘাতে ২৫০০০  মানুষ এক লহমায় প্রাণ হারিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের  নিশানা এই দেশ ভুলে যায়নি ,  ঐ  বিধ্বংসী প্রাসাদের ধ্বংস স্তূপে কিছু সিম্বলিক অংশ আছে।  ব্রিটিশ রয়াল এয়ারফোর্স ও ইউনাইটেড ষ্টেটস আর্মি এয়ার ফোর্সের নিরলস আক্রমণে ধ্বংস হয়েছিল এই শহরের সমস্ত ষ্ট্রাটেজিক ট্যাঙ্ক ও বিমান কারখানা গুলো। বিভিন্ন ঐতিহাসিকের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে অকস্মাৎ বোম্বিংয়ের  ফলে  ১৫০০০ফিট উঁচু স্থান জুড়ে ও বিশাল অগ্নিঝড়ের প্রকোপে ধোঁয়াতে ড্রেসড্রেনের  আকাশ বাতাস কালো কুণ্ডলি পাকানো বিষাক্ত শ্বাসরোধকারী বায়ুর প্রভাবে জর্জরিত হয়ে উঠেছিল। এবং তার ঠিক অল্প সময়ের ব্যবধানে ১৮০০টন বোমা ফেলে ইউস্যাফ। তারই আঘাতে সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয় এই 'হপ্টবান হপ'  প্রধান রেল ষ্টেশন টির সাথে শহরের প্রাকৃতিক প্রাণ কেন্দ্র 'গ্রসার গার্ডেন'ও । তিনদিনের মধ্যে প্রায় ৪০০০টন বোমার অনবরত আঘাতে অন্ততঃ আশি হাজার ঘরবাড়ির সাথে বিখ্যাত  ফ্রাউনকারসার চার্চ , সেম্পের অপেরা, বিখ্যাত জুইঙ্গার প্রাসাদ ও অসংখ্য স্থাপত্য শিল্প ধ্বংস প্রাপ্ত হয়ে গুড়িয়ে বিলীন হয়।  এই পিশাচী রক্তক্ষয়ী বিশ্বযুদ্ধের বিধ্বংসী  লীলায় স্বপ্নের প্রাসাদ নগরীটি বোমার আগুনে পুড়ে রাতারাতি একেবারে ভস্মীভূত হয়ে নিঃস্ব রিক্ত বিভীষিকাময় অগ্নিদ্বগ্ধ নগরীতে পরিণত হয়েছিল। 

মল্লিকা অগস্টাস ব্রিজের আশেপাশে পার্কিংজোন খুঁজে বেশ কিছুক্ষনের জন্য গাড়ি পার্ক করে  চলে   , এক রাজপ্রাসাদের ভগ্নস্তূপে । ওরা পায়ে পায়ে হেঁটে ইতিহাসের সেই ধ্বংস প্রাপ্ত ভগ্ন স্তূপের hখন্ডাহারের মধ্যদিয়ে হেঁটে চলেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিধ্বংসী লীলা ভগ্ন স্তূপের চত্বরে বিভিন্ন ফলকের গায়ে স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে মুদ্রিত ঘটনা গুলো দেখে প্রতিমুহূর্তে বিষাদের করুণ সুর প্রতিধ্বনিত হয়ে যায় ছড়িয়ে থাকা ভাঙা ইমারতের ভিতে ,দেওয়াল সিলিঙের গায়ে। অজস্র প্রশ্ন  মাথায় ঘুরে বেড়ালে ও  কিছু ঐতিহাসিক অনুমানের তথ্য ছাড়া সঠিক সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় নি , কারণ সে বিভীষিকাময় রাতে প্রতক্ষ্যদর্শীরা বোমার বিষাক্ত গ্যাস ও জ্বলন্ত আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল। ঋষভ বলে অবিশ্বাস্য লাগে , এই যে বিশাল ধ্বংস স্তূপ দেখছো এ শুধুই ঐতিহাসিক স্মারক চিহ্ন হয়ে আছে। ইতিহাসের এই নগ্ন কাহিনী ভগ্ন স্তূপের দালানে গম্বুজে মেঝেতে দরবারে বিভিন্ন জায়গায় স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে জার্মান ভাষায় ফলকের গায়ে মুদ্রিত হয়ে রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে সেখানে বদ্ধভূমির এক করুণ দীর্ঘশ্বাসে ভরা ব্যথাতুর জীবনের কান্না রুদ্ধ আবেগে    বাতাসে বয়ে চলেছিল।                 রাজপ্রাসাদের তোরণ দ্বার
                                                                         কিছুটা হেঁটে ব্রীজ টির থেকে মোড় ঘুরে ডান দিকে  চলার পথে এবারে দেখা গেল এই শহরের সেই পুরোনো নিদর্শন গুলো। বিশাল আকারের স্যাক্সন স্থাপত্য চার্চ ,প্রাসাদ --ভাবতে অবাক লাগে যে স্থাপত্য গুলো ১৯৪৫সালে একরাতে ধূলিসাৎ হয়েছিল ,তাকেই এতো সুন্দর নিখুঁত করে পুনরায় গড়ে তোলা হয়েছে। পুরোনো গৌরব যথাযথ ভাবে প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে উন্নত শিরে দাঁড়িয়ে আছে নাগরিক জীবন।  ঋষভ অনেকটা সময় ধরে এই আশ্চর্য্য স্থাপত্য ও ইমারত গুলোর স্ট্রাকচার কে পর্যবেক্ষণ করে শ্রী কে বলেএকদিন যাকে স্বমূলে ধ্বংস করা হয়েছিল আজ দেখো ঠিক তারই নিখুঁত প্রতিরূপ গড়ে উঠেছে।  আশ্চর্য্য হতে হয় জার্মানি দের নিরন্তর অধ্যাবসা ও শৈল্পিক সাধনায় আবার প্রাচীন কীর্তিকে কয়েক বছরের মধ্যে পুনরায় রূপদান করে যথাযথ ভাবে প্রতিস্থাপন করার প্রয়াস। কুর্নিশ জানাই তাদের পুনর্নির্মাণ শিল্পে একনিষ্ঠতা ও সাফল্য কে।   

এবার আপরাহ্ণ শেষে গোধূলির আকাশ লাল ,দিনের সূর্য বিদায়ের পালা এসে গিয়েছে। মল্লিকা আবার গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে বলে কাছেই ফ্রাউনকারসায় একটি দর্শনীয় চার্চ আছে বিকেল ৬টায় বন্ধ হয়ে যাবে। এখোনো এক ঘন্টার ওপর সময় আছে ,আমরা অনায়াসে পৌঁছে যাবো। এবং ওল্ড টাউনের অপূর্ব সুন্দর ক্যাথলিক চার্চ টি তে কিছু পরেই যখন পৌঁছে গেল, সূক্ষ্ণ স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন বিশাল উঁচু চর্চটিতে সান্ধ্য উপাসনার বিরাট ঘণ্টাটি ঢঙ ঢঙ করে বেজে দূর দূরান্তে প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছিল। বিশ্বশান্তির মহান স্রষ্টা কে ওরা প্রণাম জানায় ,চার্চে ও প্রেয়ার শুরু হয়।  স্থাপত্য শিল্পের প্রতীক সেম্পের অপেরার প্রাসাদোপম বিল্ডিংটি বাইরে থেকে ঘুরে দেখে এবারে শ্রীর ক্লান্ত চরণ দুটি অবশ হয়ে ছুটি চাইছিল।  ও সেখানেই অচল হয়ে বসে পরে।      

  মল্লিকা বাতাসে এলোমেলো হয়ে যাওয়া কপালের সামনের চুল গুলো হাত দিয়ে গুছিয়ে নিয়ে বলে, ড্রেসড্রেন প্রাসাদ, জিউঙ্গার শোলস ,ব্রূলসটেরাস, আলব্রেখসবার্গ   সম্রাট অগস্টাসের মূর্তি সহ নিউমার্কেট স্কয়ার জাদুঘর এবং আর্ট গ্যালারী  ইত্যাদি সব একের পর একপ্রাচীন স্থাপত্যের শৈল্পিক সৌন্দর্য ভরা নিদর্শন গুলো ঘুরে দেখবে, চল যাই।  শ্রী আপত্তি জানায় আজ আর নয় , আগামী কালের জন্য কিছু বাকী থাক। এই সব জায়গা গুলো মল্লিকার পরিচিত ,গেষ্ট এলেই তাদের নিয়ে বেড়াতে যেতে ভাললাগে ।অবশেষে ধীর পায়ে সাঁঝের গাঢ় আঁধার নেমে এলে এলবের আর এক প্রান্তের নদীর পাড়ে  এক নিরিবিলি কফি শপের টেবিলে  কাপুচিনো কফির সাথে স্ন্যাকস বিস্কিট ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়ে বসে ।   

 মেঘ মুক্ত রাতের আকাশের পূর্ণ চাঁদ এলবের জলে পানসী ভাসিয়ে তিরতির করে এগিয়ে চলেছে। হিমশীতল জলে চাঁদের ছায়া কাঁপছে। দূরে কোথাও সাক্সসনি দের লোকসংগীত ডফলি আর গীটারের বাজনার সাথে ভেসে আসছে। সন্ধ্যালোকে সারা শহর ক্রমশ বৈদ্যুতিক আলোক মালায় সেজে উঠছে। বিগত কালের সকল বেদনা মুছে ফেলে সুন্দরী মোহময়ী  শহরের প্রতিবিম্ব নদীর জলে ভাসছে। কৃত্রিম আলোর বাহারে আকাশের চন্দ্রিমা বনের আড়ালে মুখ লুকিয়েছে। শ্ৰীময়ীর বিধ্বস্ত মনের দৃশ্য পটে অনেক সময় নিয়ে অতীতের সেই অগ্নিদগ্ধ  ধ্বংসের ছবি জীবন্ত হয়ে উঠেছিল।  ঘন্টা খানেক রেস্তোরাঁর উষ্ণতায় কাটিয়ে মলির অডি এবারে ছুটতে শুরু করেছে পিরানার পথে। ওর ঘরের নির্দিষ্ট ঠিকানায়।  

        বেশ রাতে প্রায় ন ' টা নাগাদ --পাহাড়ের কোলে কিছুটা উঁচুতে উঠে দুই পাশে ধাপে ধাপে পাহাড়ি সবুজের মাঝে ডল'স হাউজের মত বাড়িটি মল্লিকার একা থাকার সংসার। ; চন্দ্রিমার স্নিগ্ধ আলোয় পাহাড়টির গা বেয়ে রাস্তা ধরে গাড়িটি ওপরের দিকে উঠলো । রাতের নির্মল আকাশে এক রাশ ঝিকিমিকি তারার মিছিল ,আলাধারিতে অজস্র তারার প্রদীপ জ্বলছে । 

  একটু ফ্রেস হয়ে  ডিনার টেবিল গুছিয়ে ফেলেছে মল্লিকা। টেবিলে সাজানো ,এগকারী, মিক্সড ফ্রায়েডরাইস, চিকেন মশালা ,পালকপনির, চিংড়ি ভাপের সাথে চাটনী ফ্রুট কাস্টার্ড দেখে শ্ৰীময়ীর 'চক্ষু চড়ক গাছ '  ,--এতো আয়োজন !  এত সব রান্না কখন হলো ? মৃদু হেসে মলি জানায় গত দুদিন ধরে  সকাল বেলায় বেরোনোর আগে রাইস টা। মল্লিকার এতো নিখুঁত ব্যবস্থাপনা ও নিবিড় আন্তরিকতায় ওরা মুগ্ধ।  শ্রী ঋষভ কে বলে দেখো , বাঙালি মেয়েরা আজকাল কত এগিয়ে গিয়েছে ; সুযোগ পেলে ওরাও কত আত্মনির্ভর হতে পারে। এই বিদেশ বিভুঁই এ সম্পূর্ণ একাকী থেকে বিদেশিনী দের সাথে প্রতিযোগিতায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঘরে বাইরে সমান দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে । ঋষভ বলে এই নবীন প্রজন্মের মেয়েদের দেখলে শ্রদ্ধায় আনন্দে স্নেহে মন আপনা থেকেই পূর্ণ হয়ে ওঠে। নিজের রিসার্চ লেখাপড়া পড়ানো  ইত্যাদির সাথে ঘরের কাজ নিপুন ভাবে সামলানো যেমন তিতির কে ও দেখছি।  
সুন্দর প্রকৃতির মাঝে ড্রেসড্রেন

সে রাতে সারাদিনের পর বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই সব নিমেষে ঘুমের দেশে। পরদিন সকাল ৮টায়   ব্রেকফাস্ট সেরে তৈরী হয়ে পিরানার পথে বেরোলে মল্লিকা চলেছে ড্রেসড্রেন প্রাসাদে । পাহাড়ের গায়ে নদীর উপকূলে গড়ে ওঠা এ শহর কে দেখে অদ্রিজা বলে ঠিক যেন   ছোটোবেলায় শ্রাবনী পূর্ণিমার  ঝুলনে সাজানো পাহাড়ের গায়ে গড়ে তোলা  কৃত্রিম শহরের ছবি টার মত লাগছে। তখন আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে পাহাড়ের কোলে ঘর বাড়ি সবুজ ঘাসের মাঠ বন জঙ্গল ফুলের বাগান ,নদীর কিনার, রাস্তা কত কি বানাতাম । এ শহর সেই খেলা ঘরের  স্মৃতির মত সাজানো।   

🍂

সকালের নরম মেঘ ছেঁড়া আলোয় সবুজ কার্পেটে  ঢাকা এ পাহাড়ি জনপদ অদ্ভুত এক স্বপ্নের মায়াজাল বিছিয়ে দেখা দিলো। ড্রেসড্রেন শহর পরিক্রমায় এলবে নদীর ধার ঘেঁষে পথ , কোথাও পাহাড়ের গা বেয়ে এঁকেবেঁকে রাস্তা সুদূরে মেলাতে গিয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে। শ্লেট নীল সাদা মেঘে ঢাকা আকাশের ক্যানভাসে ঢেউ খেলানো পাহাড়ি উপত্যকায় অথবা নদীর তীরের চারধার ঘিরে গড়ে ওঠা জনজীবন।  পাহাড়ের ধাঁপে ধাঁপে  সুন্দর ছোট্ট ছোট্ট ঘীয়ে রঙের বাড়ি গুলোর  মাথায় লাল টালির মুকুট পরে বসে আছে।  প্রকৃতির স্নেহমাখা শান্ত সবুজ আঁচলের তলে নিবিড় ছায়ায় সোনালী স্বপ্ন দিয়ে সাজানো মানুষের হাতে গড়ে তোলা সুদৃশ্য ছবির মত সুন্দর ঘর বাড়ি।  

 এরপর  কাছাকাছি দ্রষ্টব্য স্থান আলবার্তিয়ান সিটি,মিউজিয়াম  এবং  জিউঙ্গার শোলস ব্রূলসটেরাস  কয়েকটি  প্রাচীন স্থাপত্যের শৈল্পিক সৌন্দর্য ভরা নিদর্শন দেখে বিকেল চারটে নাগাদ হপ্টবান রেল ষ্টেশন ওরা এসে গিয়েছে।  ভারাক্রান্ত মন নিয়ে মল্লিকার কাছ থেকে বিদায় নেবার পালা।  আবার দেখা হবার আশা নিয়ে  অদ্রিজা  শ্রীর হাত ধরে ব্যস্ত প্লাটফর্মের দিকে এগিয়ে চলেছে। একরাশ ভালো লাগার সাথে বিদায় ব্যথার করুন সুর বেজে উঠলো রেলের বাঁশির তীক্ষ্ণ হুঁইসেলে। মল্লিকার একাকী ব্যস্ত জীবন রেলের বাঁশির তীব্র হুঁইসেলে  দূর থেকে দূরে  মিলিয়ে গেলো। মলির আতিথেয়তার কথা ভাবলে আজো শ্রীময়ীর মন খুশিতে কানায় কানায় ভরে ওঠে। একরাশ ভালো লাগার সাথে বিদায় ব্যথার করুন সুর বেজে উঠলো রেলের বাঁশির তীক্ষ্ণ হুঁইসেলে। ট্রেন চলতে শুরু করলে  মল্লিকার একাকী ব্যস্ত জীবন দূর থেকে দূরে ছোট্ট হয়ে মিলিয়ে গেলো।  

 আজ বেলাশেষে  শ্রীময়ীর  সুদূরের পিয়াসী মন সে রূপকথার মায়াবী শহর কে কল্পনায় সযত্নে মনের অন্দরমহলে গভীর মমতায় সযত্নে সাজিয়ে রেখেছে কোনো একটা ছবিও যেন হারিয়ে না যায় ।
                                                                               ক্রমশঃ

বাড়িতে বসেই সংগ্রহ করতে পারেন 👇


Post a Comment

0 Comments