জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা- ৩০/ শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা- ৩০/ শুভশ্রী রায়

নদী জানে

কেউ কি জানে এমন নদীটি কার আয়না?
কখনো কেন যে ডাকে না আমাকে, কাছে আয় না!

বিনা ডাকেই চিত্ত কী তার কাছে যায় না?
মন যাক না যাক, তটিনীর কিচ্ছুটি আসে যায় না।

সে কখনো হাল্কা কখনো সজোরে যায় বয়ে,
কে তাকে নিয়ে লিখছে, ভাবতে তার গিয়েছে বয়ে।

এই জলধারা আর তার মোহরূপ ছোঁয়া বাকি,
আকাঙ্খিতা নির্বিকার, আমি পদ্য লিখলেই বা কী?


অচিনপুরের যাত্রী

দাও আমায় কাগজ, বানিয়ে নেব নাও,
তারপরে কেমন করে আমার হদিস পাও!
সেই নৌকোয় চড়ে দেব অনেক দূর পাড়ি,
নতুন নতুন দেশ দেখার শখ আমার ভারি।
তোমরা তো নিয়ে যাবে না কোথাও দূরে,
নিজেকেই বেরোতে হবে, যাব অচিনপুরে।
অচিনপুর বহু দূর, নদীর ধারে শান্ত নগর,
হয়তো আমি সেইখানেই বানিয়ে নেব ঘর,
এইখানে একভাবে অনেক হ'ল বেঁচে থাকা 
এবার যাব অচিনপুর, নদীর তীরে আঁকা!
কত জায়গা দেখতে দেখতে সেখানে থামব,
নৌকোটাকে বেঁধে রেখে চিরতরেই নামব।

🍂

তিরতির নদী

নীলকালো স্রোত, তিরতির করে বয়ে যায় ধারা,
নদীর কাছাকাছি লোকজনের একটুও নেই তাড়া,
সময় সেখানে ধীরে পা ফেলে অসীম মমতা নিয়ে,
নির্জনতাকে কেউ করে না ভঙ্গ শব্দের ভীড় দিয়ে।

সে নদী বেশ খানিক বয়ে সাগরে মিশে গিয়েছে,
গতিপথ জুড়ে কে যেন খন্ড স্বর্গ সাজিয়ে দিয়েছে,
ছোট্ট ছোট্ট নির্জন গ্রাম, সাজানো তুলিতে সবুজ; 
কাছে গিয়ে তার ফিরে আসবে কি, এ হিয়া অবুঝ! 


মৎস্যকন্যার প্রতি

মৎস্যকন্যা, রহস্যে ভরা তুমি সত্যি নাকি কল্পনা?
চিরকাল তোমায় নিয়ে চলে আসছে জল্পনাকল্পনা!
বড় হয়ে ইচ্ছা- তোমার খোঁজে এবার ছাড়ব ভূমি;
সমুদ্দুরে যাব, আশা একবার কাছে আসবেই তুমি।

যদি জাহাজ থেকে তোমায় দেখি একটি বারও,
সাগ্রহে ডাকব, বিনা দ্বিধায় কাছে আসতে পারো,
অসামান্য তুমি, আধা নারী, বাকি অর্ধেকটা মাছ;
অবয়বে রূপো রূপো আলো আর ফেনার নাচ!

তোমায় দেখে চোখ দুখানি আমার সার্থক হবে,
এখন খালি অপেক্ষা, পাব তোমার দেখা কবে!
তবে দেখার পরেও আমি তুলব না তোমার ছবি;
জানি তো, প্রমাণ রাখতে নেই অপূর্বতার সবই।


Post a Comment

0 Comments