যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ১১৪
কবিতিকার প্রকাশক কমলেশ নন্দ রুপকথার গল্পের সঙ্কলন করতে চায়। বইয়ে পড়া গল্প নয়, যেসব গল্প ঠাকুমা দিদিমা, বা অন্য কারো মুখ থেকে শোনা।যা আমরা শুনেছি। সে সময় অনেকে এই গল্প বলায় পারদর্শী ছিলেন।আমি ঠাকুমা দিদিমা কাউকেই দেখিনি। মেজদির বাড়ি গেলে দিদির শাশুড়িমা রূপকথার গল্প শোনাতেন। ছোট বড় সবাই মুগ্ধ হয়ে গল্প শুনতাম। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হলে, বই কেনা হতনা বলে ক্লাসে পড়াও হত না। তখন কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন, যেমন, পণ্ডিত স্যার, রোহিণী স্যার, মহাদেব স্যার, এঁদের কাছে আবদার করলে আমাদের রুপকথার শোনাতেন। এছাড়াও শাশুড়ি মায়ের কাছেও গল্প শুনেছি। শ্বশুর মশাইয়েরও গল্প পড়া ও গল্প শোনানোর নেশা ছিল। তাঁর কাছে আরব্য উপন্যাস, পারস্য উপন্যাস, এমন কী রামায়ণও ছিল। সন্ধ্যাবেলা দলিজের সামনে কেউ গরুরগাড়িতে,কেউ জলচৌকিতে, অনেকে খাটিয়াতে বসে গল্প শুনতেন। যাইহোক, আমি কমলেশকে দুটি রুপকথার গল্প পাঠিয়েছি, ওর ভাল লেগেছে।
সন্ধ্যায় বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা আমার স্নেহভাজন সুতপা বসু এসেছিল ওর ডাক্তারি পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে। ছেলেটি খুবই সভ্য, ভদ্র।বাবা-মায়ের বাধ্য ছেলে, আমার খুব ভাল লেগেছে। সুতপারা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে বর্ধমানের মেমারি থেকে সানাউল্লা নামে এক ভদ্রলোক ফোন করেছিলেন।আলিয়া সংসদ থেকে প্রকাশিত ‘উজ্জীবন’ পত্রিকায় আমার লেখা ‘কেন আমরা পিছিয়ে’ লেখাটি পড়ে ওনার খুব ভাল লেগেছে। উনি বেথুন সাহেবের মৃত্যু সম্বন্ধে কোন এক পত্রিকায় ভুল কিছু পড়েছেন। তাই আমার লেখার রেফারেন্স দিয়ে উনি সেই পত্রিকায় চিঠি পাঠিয়েছেন।
প্রলয় ও গানের ভিডিওর কলাকুশলীবৃন্দ।
আসাদুলকে পাঠানো মেসেজগুলি আজ খোকনকে(FRKhan)পাঠিয়েছিলাম।ও শুধু লিখেছে, ছিঃ।আমি ভেবেছিলাম, ও মেয়েটাকে কিছু বলবে। ২ পক্ষের কথা শুনেছে, কিন্তু কে সত্যি বলছে, কে মিথ্যে বলছে, সেটা যাচাই করে দেখল না। সে যাক, কষ্ট হচ্ছে মনির জন্য। ছেলে মেয়েকে মানুষ করার জন্য সারাটা জীবন একা কাটাল। যাতে ওরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে। সেই বাবা মাকে লুকিয়ে ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করে ওরা বিয়ে দিয়ে দিল। ও জানতে পেরে কেঁদে ফেলে বলেছে, আমার সুখের সংসারটা ছারখার করে দিল।
আজ চন্দ্রিমা একটা সুখবর দিল, ওর মেয়ে ডল গুজরাটে চাকরি পেয়েছে। বলতে গেলে চন্দ্রিমা একা মেয়েকে বড় করেছে। হ্যাঁ, টাকা দিয়েছে বাবা। কিন্তু টাকা দিয়ে সব হয় হয় কি?
বাজার করার জন্য ব্যাগ নিয়েই বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে গেলাম। আজ ১৯ মে’র ভাষাদিবস, আসামের বরাক উপত্যকায় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে যারা আন্দোলন করেছিলেন, শিলচরে ১৯৬১ সালে তাঁদের ১১ জন পুলিশের হাতে প্রাণ দিয়েছেলেন।আসামের বাঙ্গালিরা আজকের দিনটি মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করেন। পশ্চিমবাংলার মানুষও এই দিনটি পালন করে থাকেন। আমরাও আজ সেই উদ্দেশ্যে এখানে উপস্থিত হয়ে, কাজি নজরুল ইসলামের পাদদেশে ফুল দিয়ে পদযাত্রা শুরু হয়ে পঞ্চুর চকে রবীন্দ্র মূর্তির সামনে শেষ হল। এখানেও কবির মূর্তির পাদদেশে ফুল দিয়ে আমরা কয়েকজন এই বিষয়ে বললাম। আমাকে ওঁরা হাঁটতে দেয়নি, টোটোতে নিয়ে এসেছিল। এখান থেকে ফেরার সময় রাজাবাজারে বাজার করে বাড়ি ফিরি।
🍂
সন্ধ্যাবেলা ADM অফিস থেকে ফোন আসে। টাউন চন্দ্রকোনার বিলকিস নামে একটি মেয়ে নিজের বিয়ে আটকে খবর হয়েছিল। তাকে DM অফিস থেকে সম্বর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল। এখন নাকি ওর মা বিয়ে ভাঙ্গার জন্য ওকে কথা শোনাচ্ছে। আমাকে ওর মাকে বোঝাতে যেতে হবে। সেই সঙ্গে ওখানে একটি ক্যাম্প হবে। আমাকে সেখানে বক্তব্য রাখতে হবে।
আমি আগে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন নাম্বর নিয়ে ফোন করতে মেয়েটির মা রিসিভ করে। তিনি এ বিষয়ে যা বললেন তার সারমর্ম হল, মেয়েটি একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। ছেলেটি ভাল নয়, কিন্তু মেয়েটি বাবা, মায়ের নিষেধ মানছে না। তাই ভাল ছেলে খুঁজে ওর বিয়ের ব্যবস্থা করেন। মেয়েটি তখন থানায় যায়। বর্তমানে সে কাকাদের বাড়িতে ঠাকুমার কাছে থাকে। মায়ের কাছে থাকেনা যখন, তখন কী ভাবে ওকে বকাবকি করবেন? পরে ADM অফিসে জানালাম এটা বিলকিসের নাম্বার নয়। সঠিক ফোন নাম্বার ওখানকার BDO র থেকে নিয়ে দিলে বিলকিসের সঙ্গে কথা বলে সিরিয়াস কিছু মনে হল না।
রাতে ইন্দ্রনীলকে ফোন করলাম, উনি জানালেন ওনার দুই ছাত্রকে(অধ্যাপক) আমার পাঠানো লেখা(আত্মকথার নির্যাস)পাঠিয়ে বলেছিলেন প্রকাশকদের পাঠানোর জন্য একটা খসড়া তৈরি করে দিতে। তাঁরা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ লেখার নির্যাস না হলে খসড়া ঠিকভাবে লেখা সম্ভব নয়। তার মানে লেখা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে হবে।
মাঝে মাঝে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু গরম কমছে না। আজ ছোটোমাসির কাজ। ছবিকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছলাম। ১২টায় ফিরেছি।মনি ওর বৌকে মাসির বাড়িতে ছেড়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। ওর শ্যালকরা মুন্নার বিয়ে দিচ্ছে।মনির এই বিয়েতে মত নেই জেনেও। ছেলের বিয়ে যে কেউ দিতে পারে, মেয়ের বিয়ে দিলে না হয় বুঝতাম।ও চলে গেলে আমি আর ছবি মাসির বাড়ি গেলাম।
মনি আজ অসিত দাসের অফিস থেকে আমার ভিসা আর দেবাশীষ বাবুর অফিস থেকে মহিলা কমিশনের ক্যালেন্ডার নিয়ে এসেছে। আমি এখনো হাতে পাইনি। কলকাতায় প্রচণ্ড গরম। মনি খুব কষ্ট পেয়েছে।
আজ সকালে একটা খুবই খারাপ খবর পেলাম, প্রলয় মারা গেছে। ওর সঙ্গে একটি গানের ভিডিওতে কাজ করে ছিলাম। কত আর বয়স? ৫০/৫২ হবে। এর থেকেও বড় দুঃসংবাদ পেলাম সন্ধ্যায়। বালেশ্বরে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় প্রচুর মানুষ হতাহত হয়েছেন। সন্ধ্যার অন্ধকারে মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে কয়েকটি বগি মালগাড়ির ওপরে উঠে উল্টে যায়।সেইসময় আর একটি ট্রেন এসে ধাক্কা দিলে তারও দুটি বগি উল্টে গেলে মৃতের সংখ্যা এখনই ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। কত মানুষ আহত হয়েছে তার হিসেব নেই।
খবরের কাগজ খুল্লেই খুন, ধর্ষণ, যুদ্ধ, নেতা মন্ত্রীদের দুর্নীতি,এইসব খবরেই পাতা ভর্তি। দেশটা একেবারে রসাতলে যেতে বসেছে, ‘শুধু ঠকিয়ে নেওয়ার চাল’।মানুষের মধ্যে সততা, বিশ্বাস, ক্রমশ উবে যাচ্ছে। বাড়ছে লোভ, স্বার্থপরতা, লালসা, ঈর্ষা।সবকিছুর মধ্যে একটা লোক দেখানো ভাব, নিজেদের মধ্যেই অসুস্থ প্রতিযোগিতা সম্পর্কগুলোকে বিষাক্ত করে তুলছে। অনেকে এগুলোকে পাশ্চা্ত্য সভ্যতার প্রভাব বলে থাকেন। কিন্তু আমি তা মানতে পারিনা। ওই সব দেশে ছেলে মেয়ে বাবা মায়ের থেকে আলাদা থাকলেও তাঁদের প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল।দাদু ঠাকুমারা সপ্তাহে একবার হলেও নাতিনাতনিদের সঙ্গে সারাদিন সময় কাটাতে পারেন। আমাদের দেশে বেশিরভাগ ছেলে একবার দূরে গেল বাবা মায়ের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব বাড়িয়ে নেয়। ছেলেমেয়েকে ঠাকুমা ঠাকুরদার সঙ্গে পরিচয়ই করায় না।
আজ মিটার রিডিং দেখতে এসেছিল। বিল আমাকে দিলেন না। বললেন অফিসে গিয়ে বিল নিতে হবে। গতবার দরজা লক থাকায় মিটার দেখা হয়নি, তাই গত বছর এই সময় যে অঙ্কের বিল হয়েছিল, এবার সেটাই দেওয়া হয়েছে। বাড়তি টাকাটা পরে পরে বিলের সঙ্গে এডজাস্ট হয়ে যাবে।জুনের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল, বৃষ্টি বর্ষা কারো দেখা নেই। প্রায় সারাদিন AC চলছে, রাতে তাপ কমলে ফ্যানের বাতাসে চালিয়ে নিতে হয়।
এদিকে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানি চলছে। এক দেহের দুজন দাবিদার, সবিই ক্ষতিপূরণের টাকার লোভে। তবে এইসময় মানুষ চেনা যায়, সত্যিকার মানুষ যারা, তারা উদ্ধারে ব্যস্ত, অমানুষরা চুরিতে ব্যস্ত।
আজ ১১ জুন মনিকে বাদ দিয়ে মনির একমাত্র ছেলে মুন্নার(আয়ান খান) বিয়ে হয়ে গেল। ছেলেটার জীবন বরবাদ হয়ে গেল। মনি বলেই এতবড় আঘাত সহ্য করতে পারছে। ও আজ সকালেই মেয়ে বৌকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।
১১টায় বেরিয়ে PNB তে টাকা তুলে ইলেকট্রিসিটি অফিসে গিয়ে বিল নিলাম। ওষুধ কিনলাম। হঠাৎ মনে পড়ে গেল ১২ টার সময় ঋত্বিক আসবে। তাড়াতাড়ি বাড়ির পথ ধরলাম। দূর থেকেই ঋত্বিকে দেখতে পেলাম। ওকে গাছের আম দেব বলে ডেকেছিলাম।জুন মাসের অর্ধেক হয়ে গেল, বর্ষা আসেনি, এখন বৃষ্টি পেলেই ২/৩ দিনের মধ্যেই সব আম ঝরে যাবে।
আমাকে ধিরে ধিরে সব গুছিয়ে নিতে হবে। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে দুটি কাজ করতে হবে। সম্রাটের নেমপ্লেটটা সিমেন্ট দিয়ে গাঁথতে হবে আর সিঁড়ির সামনের কয়েকটা টাইলস খসে গেছে লাগাতে হবে। ডেক্সটপটা খুব ভোগাচ্ছে। একটা ল্যাপটপ কিনব ঠিক করেছি। এই সন্ধ্যাবেলা ঝড় উঠেছে, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। আজ সুচিক্ষণকে ফোন করে জানলাম, গত শনিবার আমার লেখা বেরিয়ে গেছে। আমাকে বললেন, ‘আপনি কাগজ দেখেন না কেন’? আনন্দবাজার রাখি।একটার বেশি কাগজ রাখা সম্ভব নয়। আজ বুধবার, পাঁচদিন আগের পেপার কোথাও পাওয়া যাবে না। ঋত্বিক নেট থেকে ছবি পাঠিয়েছে।
ইন্দ্রনীলকে আজ ফোন করে জানলাম, ওনার হিটস্ট্রোকের মত হয়ে ছিল। বাড়িতে রেস্টে আছেন। আত্মকাহিনীর বিষয়ে বললেন, বাংলায় গ্রন্থ আকারে প্রকাশ হলেই ওনার ছাত্ররা প্রাথমিক কাজ শুরু করবেন। আরো বললেন, এসব প্রতিবাদী লেখা ছাপতে সবাই রাজি হবেন না। দিল্লির একটি প্রকাশনা আছে,তারা এই ধরণের বই করেন। পেঙ্গুইন ও করে।
দুপুরের সময় কৃষ্ণপুর থেকে মোতাহার( ফেসবুক ফ্রেন্ড) ফোন করে জানায়, তার ২২ বছরের ভাইঝি ২ জুন বাড়ি থেকে নিখোঁজ। দুপুরে সবাই গরমের কারণে দরজা বন্ধ করে যে যার রুমে ছিলেন। সেই সময় কী হয়েছে কেউ জানেনা। মেয়েটি বাবার মত ন্যালাভোলা টাইপের, তবে লেখাপড়া জানে। থানায় কমপ্লেন করা হয়েছে। কিন্তু আজ ১৫ দিন হয়ে গেল OC কোনও স্টেপ নিচ্ছেন না। রোজ ঘোরাচ্ছেন। থানার তদন্তকারী অফিসার মেয়েতির পরিবারকে জানিয়েছেন যে তিনি ফোন ট্যাপ করে জেনেছেন, মেয়েটি সরসুনায় আছে। কিন্তু OC তাকে ওখানে যাওয়ার পারমিশন দিচ্ছেন না।এই পরিস্থিতিতে ওদের এক জ্যাঠতুতো দাদা অবসর প্রাপ্ত আধিকারিক।তিনি আমাকে চেনেন। তিনিই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন।
সবটা শোনার পর আমি রুরাল ডেভেল্যাপমেন্ট অফিসার সৌমনা ব্যানারজি্র সঙ্গে রাতে কথা বলে ছবিসহ মেয়েটির ডিটেলস ও GD র কপি What’s APP এ পাঠিয়ে দিলাম। সৌমনা আগামিকাল দুপুরের মধ্যে একটা কিছু খবর দিতে পারবে বলে বলল। রবিবার(১৮জুন) মোতাহারের ফোন পেলাম। চন্দ্রকোনা থানা থেকে আজ ফোন করে বলেছে, আগামিকাল ওরা সরসুনা যাবে, বাড়ির লোক যেতে চাইলে ওঁদের সঙ্গে একজন যেতে পারেন। মোতাহার ও আরও কয়েকজন অন্য গাড়িতে পুলিশের সঙ্গে সরসুনা গিয়ে মেয়েটির খোঁজ করে, কিন্তু পাওয়া যায় না। একদিন আগে এখান থেকে বেরিয়ে গেছে। জানা যায় মেয়েটির সঙ্গে একটি যুবক একজন মাঝ বয়সি মহিলা রয়েছে। ঠিক তখনি শরসুনা থানা থেকে ফোন আসে, একটি গাড়ি একটি মেয়েকে থানার সামনে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত গতিতে পালিয়ে গেছে। আমাকে জানানোর তিন দিনের মধ্যে মেয়েটি উদ্ধার হয়।
বৃষ্টির কার্পণ্য আর সহ্য হচ্ছে না। এখন আগের মত চাষিদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভ থেকে জল তুলে সারা বছর ধান, আলু, বিভিন্ন সবজ্ ডাল, চাষ হচ্ছে। তবে এর একটা খারাপ দিকও আছে। এক বৃষ্টি পাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, তার ওপর অধিক পরিমাণে জল তুলে নেওয়ার ফলে জলস্তর ক্রমশ নেমে যাচ্ছে। ভুবিজ্ঞানীদের মতে অদূর ভবিষ্যতে ভীষণভাবে জলের আকাল দেখা দেবে।
গতকাল একটা ল্যাপটপ কিনলাম, ৫০,০০০/ এর মত দাম পড়ল।একমাস মত রানী ও মিঠি আমার কাছে ছিল, আজ চলে গেল। মনটা তাই ভারাক্রান্ত। আবার সম্পূর্ণভাবে নিজের জগতে প্রবেশ করলাম। তরুণ কবি অভিনন্দনের আমন্ত্রণে ফিল্ম সোসাইটি হলে সিনেমা দেখতে গেছলাং ’তরঙ্গ’ নামের সিনেমাটি পুরুলিয়ার মুখোশ শিল্পীদের জীবনযাত্রা নিয়ে তৈরি।
ফিল্ম সোসাইটি হলে সুদীপ (শিক্ষক ) আমি ও বন্ধু সর্বশ্রী(অধ্যাপিকা)।
২৯ জুন ইদ-উল-আযহা, আজ ২৭ জুন। বিকেল ৫ টার দিকে আজকাল এর অফিস থেকে সুচিক্ষণ ফোন করে বললেন, পরশু ইদুল আযহা, এই ইদের সামাজিক তাৎপর্য নিয়ে একটা লেখা দিন না, কাল বিকেল ৩ টের মধ্যে দিলেই হবে। এত অল্প সময়ে কী করে সম্ভব? বললেন, আপনি পারবেন, ৭০০ শব্দের হলেই চলবে। রাজি হলাম। রাতে ডেক্সটপে লিখতে বসলাম। বেশ কিছুটা লেখার পর এমন যান্ত্রিক সমস্যা দেখাদিল যে মেকানিক ডেকেও ঠিক করা গেলনা। পার্টস চেঞ্জ করতে হবে। সেটা সকাল ১০ টার আগে সম্ভব নয়। আমার তো মাথায় হাত। সুচিক্ষন কে মেসেজে সমস্যার কথা জানালাম। উনি বললেন, আপনি হাতে লিখে ছবি তুলে what’s app এ পাঠিয়ে দিন। আমি পরদিন সকালে চা পানের পর লিখতে বসলাম, একেবারে ৮০০ শব্দের লেখা শেষ করে উঠলাম।সময়ের অনেক আগেই লেখা পাঠিয়ে দিলাম।
আজ ইদ-উল-আজহা। গুড়িয়া খুব ভোরে কাজ করে চলে গেছে।আমার কাছে কোনও উৎসবই উৎসব নয়।তবুও সামান্য সিমাই রান্না করলাম।সকালেই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে সবাইকে ইদের শুভেচ্ছা জানালাম।সুদিন স্যার লিখলেন, ‘দিদি, কিছু মনে করবেন না, আমি ধর্মের নামে পশুহত্যা পছন্দ করিনা।হিন্দুদের বলি বা মুসলিমদের কোরবানি যাই হোক না কেন। আপনি পালন করেন, আপনাকে শুভেচ্ছা’। কোরবানি কেন দেওয়া হয়, যতটা সম্ভব লিখে ওনাকে বোঝালাম। উনি বুঝলেন এবং নিজেও শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দিলেন। আজকাল এ আমার লেখাটি ‘ইদ-উল-আজহা নিজেকে কলুষ মুক্ত করার দিন’ শিরোনামে আজ প্রকাশিত হলে আমি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করি। লেখাটি পড়ে অনেকের ভুল ধারণা দূর হয়। প্রচুর মানুষ সে কথা লিখে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ক্রমশ
সংগ্রহ করতে পারেন 👇
0 Comments