জ্বলদর্চি

বার্লিনের ডায়েরি-২৩ পর্ব /চিত্রা ভট্টাচার্য্য

লাল মুনিয়া


বার্লিনের ডায়েরি
২৩ পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য্য 

টিয়ারা পার্ক গার্টেনের শেষ পর্ব।

শীতের সূর্য পশ্চিমের দিকে বাগানে সার দিয়ে দাঁড়ানো নারকেলের গাছ গুলোর ঝিরঝিরে পাতার ফাঁকে টুকটুকে লাল সিঁদুরের বড়ো এক উজ্জ্বল টিপের মত দেখা দিয়ে মিলিয়ে গেল।  আজকালের সর্বক্ষণের সঙ্গী ডায়েরি টি হাতে নিয়ে শ্রী ছাদ থেকে নীচে নেমে এলো।সেই প্রায় দশ বছর আগে টিয়ার গার্টেনএ দেখা মাছের একুইরিয়ামের পাতা টা পড়া এখনো শেষ হয় নি। চিড়িয়াখানার অনেক পথ পরিক্রমা বাকী আছে। 

শ্রীর আজো মনে আছে ,মাছদের আড্ডা খানায় অন্যপ্রান্তে শুধুই ছোট বড়ো টলটলে জলের পুলের মেলায় অসংখ্য প্রকারের রুপালি জলকন্যাদের লেজের ঝাপ্টানি পুলের জলে ঘাঁই মেরে তরঙ্গ তুলে ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য। কম করেও ষোলো সতের কে,জি র চার পাঁচ টি মাহি মাহির হাঁ মুখ গপগপ করে কেঁচো ও ছোট মাছ গিলে দল বেঁধে মনের সুখে ভাসছিল। সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের জন্য মোটরের সাহায্যে সব সময় জলে আলোড়ন তোলা হচ্ছে। ঢাউশ আকারের ক্যাটফিশ গুলো গায়ে পুরু শ্যাওলার কম্বল জড়িয়ে নিশ্চিন্তে ছপছপ শব্দে সাঁতরে বেড়াচ্ছে।

 পুলের জল তোলপাড় করে চারটে মাঝারি সাইজের শঙ্কর মাছ ,পুলিশি কায়দায় তাদের চাবুকের মত লম্বা লেজের আঘাতে ইচ্ছে মত জলে  আলোড়ন তুলছিল। ঋষভ সব চৌবাচ্চা গুলো দেখে বিস্মিত হয়ে শ্রী কে বলে ,ষ্টার বনিটো ,স্কিপ জার্ক ,থ্রেডফিন ,স্মেল্ট থেকে শুরু করে দেশের মত করতি  ,চেলা ,ফ্যাসা ,ভেটকী ,চিংড়ি ,পম্পেট চাঁদার মত দেখতে মাছেদের এখানে নতুন নামে ডেকে কত যত্নে রাখা হয়েছে দেখ। শ্রী ভাবে হয়তো বড়ো মাছ গুলোর খাদ্য হিসেবেই এই ছোট মাছ গুলোর ভবিষৎ নির্ভর করছে--ওরা যে দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে।  

এবারে পাশের হল ঘরটির বিরাট পুলে দেখা গেল ছোট সাইজের প্রায় চার টন ওজনের সাদা কলোয় মেশানো  কিলারহোয়েল বা অর্কা, মটকা মেরে ,অচেতনের মত পড়ে আছে। ওর ঢিবির মত পিঠ টা কেঁপে উঠছে। বিভিন্ন আকারের কাঁচের চৌবাচ্চায় রয়েছে অজস্র  সী অটার ,স্টেলার সীকাউ ,ক্যারিবিয়ান শিল, ক্যালিফোর্নিয়ার সী লায়ন ,এলিফ্যান্ট শিলের একটা বড়ো অংশ। তারা জীবন সম্বন্ধে নির্বিকার।বেশ আরামে নিশ্চল স্থবিরের মত পরে আছে। কুত কুতে চোখ মেলে ইতি উতি সরোজমিনে তদন্ত করছে। এখানে এদের বংশ বৃদ্ধি ও প্রজনন সমান তালে হয়ে চলেছে। মাছের গায়ের আঁশটে গন্ধ বাতাস ভারী করে আছে।  
ব্রাজিলিয়ান ট্যানাগর

শ্রী বিকেলের হাতের কাজ দ্রুত এগিয়ে  নিয়ে আবার স্মৃতির সাগরে ডুব দিয়েছে। 
সেদিন চিড়িয়াখানার বনে লাঞ্চ কখন সেরে ছিল এবং মেনুতে  কি ছিল?  মনে নেই কিন্তু   আকাশস্পর্শী এক ঝাকড়া মাথা এঞ্জেল ওকের তলে বিশ্রামের জন্য কাঠের বেঞ্চে জুতো মোজা পড়া ক্লান্ত অবসন্ন পা দুটি ছড়িয়ে বসেছিল যে সে কথা বেশ মনে আছে । অবাক হয়ে ভাবে পশুপার্কের এত মাইলের পর মাইল রাস্তা সেদিন বিরাম হীন হেঁটে ছিল। শব্দ দূষণ ও পশু পাখিদের নিশ্চিত আরামের কারণে পার্কটি তে তখন ও কোনো ব্যাটারি কার বা গাড়ির ব্যবস্থা ছিল না। শ্রী ভাবে বর্তমানে  বোধহয় হাফমাইল ওর পক্ষে  পায়ে হাঁটা সম্ভব নয়।

শীতের বিষণ্ণ ধূসর সন্ধ্যা ঝুপ করে নেমে এলো। অতীতের স্মৃতি চারণ নিয়ে দু দন্ড বসে ভাবনার  অবকাশ নেই। খোলা ডায়েরির পাতা গুলো ওর পিছু ছাড়ে না ,এখন মধ্য রাত। শ্রীময়ী নিশ্চিন্তে পাতা  ওল্টায়। 

🍂
 ওরাং ওটাং শিম্পাঞ্জি বেবুন হনুমান বাঁদর বনমানুষের সাথে গরিলাদের ও প্রত্যেকের স্বতন্ত্র খাঁচা রয়েছে।বিরাট বিরাট খাঁচা গুলোর সামনে এলে,দেখা গেল অনেক উঁচুতে সার্কাসের ট্রপিজের খেলা দেখানোর মত লম্বা সরু দড়ি বাঁধা আছে এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। এবং তার ওপর দিয়ে ওরাংওটাং শিম্পাঞ্জি হনুমান দের বিরাম হীন নামা ওঠার খেলা চলছে। ওরা কেউ সিলিঙের রড ধরে ঝুলছে , কেউ বা গাছের ডালে দোল খাচ্ছে। কারো মুখটা কালো ,কেউ বা লাল মুখো। কালো কুচকুচে লোমশ গরিলা থপথপ করে হাটছে ,বড়োরা  আবার স্নেহাদরে ছোটদের  গায়ের পোকা  সন্তর্পনে বেছে মুখে পুড়ছে। শ্রী র মত অনেক দর্শকের সাথে শ্রী ও গভীর  মনোযোগ দিয়ে ওদের কান্ড দেখছে। মা হনুমান টি বাচ্চাটি কে কোলে আঁকড়ে ধরে খাঁচার শেষ মাথায় নীরব দর্শকের মত বসে রয়েছে। এদের ক্লান্তিহীন শারীরিক কসরৎ শিখিয়ে পড়িয়ে দেওয়া ডিগবাজি খাওয়া গাছের মগ ডালে চড়ে বসা , ঝুলনায় ঝোলা দোল খাওয়া সব ভারী মজার। ওরা বেশ জানে কেমন করে দর্শকদের মনোরঞ্জন করতে হবে।
রবিন
                           
শ্রী যখন বেবুন আর শিম্পাঞ্জির বন্ধুত্ব দেখতে মুগ্ধ, ঋষভ তখন লম্বা পা ফেলে একেবারে পৌঁছে গিয়েছে সরীসৃপের খাঁচার সামনে। কত রকমের বিষাক্ত সাপ।শ্রীর সব দেখা হয়নি। তবে বিশাল দেহী পাইথনের গাছে পেঁচিয়ে থাকা আর আস্ত একটা হাঁস এক নিশ্বাসে গেলার ছবিটা চোখের ওপর এখনো ভেসে বেড়ায়। কাঁচের ঘরে কমলা কালোয় রাঙা বিচিত্র হিলহিলে সরু দেহী খুব বিষাক্ত সেন্ট্রাল মার্কিন কোরাল স্নেক গুলোর এক ধার ঘেঁষে রোষে শরীর বাঁকিয়ে  চলা সদ্য বনের মুক্ত জীবন থেকে এমন যত্নের বন্দী জীবন পেয়ে তারা রীতিমত রাগান্বিত। এখনো পর্যন্ত মোট ছয়টি প্রজাতি কেই  দেখা যাচ্ছে। তবে কাছাকাছি কপারহেড, রাটেলস্নেক ,কটনমাউথ, স্পিটার স্নেক দের মত বিচিত্র প্রজাতির সাপদের কত যে বংশ বৃদ্ধি হয়ে রয়েছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। ব্ল্যাকমাম্বারের মিশকালো ভয়ানক হাঁ মুখের ছবি টা কেমন বীভৎস ছিল, ভাবলেই সারা শরীর শিউরে ওঠে। লিজার মনিটার ,লিজার হিলা ,মনস্টার ইত্যাদি সরিসৃপ দের ও পরপর খাঁচার পাশে দেশের পরিচিত গোসাপ ও  আর্জিনার খাঁচা টি শ্রী কে  বেশ বিস্ময়ান্বিত করেছিল।  

 দূর থেকে অশান্ত সমুদ্রের গর্জনের মত  ঢেউয়ের ক্রমাগত ছুটে এসে আছড়ে পড়ার জোরালো আওয়াজ শান্ত নিস্তব্ধ প্রকৃতি কে কাঁপিয়ে তুলছে।  শ্রী উত্তেজিত হয়ে বলে ঋষভ, এখানে সমুদ্র কোথায় ? এতো যে গর্জন ?  ঋষভ হেসে বলে সমুদ্রের ঢেউ নয় গো ! সামনে তাকিয়ে দেখ ! শ্রী চমকে ওঠে প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা এক 'সিংহ মশাই এর গগণ ভেদী হুঙ্কার। পার্কের পূর্ব দিকের  শেষ প্রান্তে  বিরাট এক কৃত্রিম পাহাড়ের গুহা থেকে বেরিয়ে আশে পাশে  সদর্পে ঘাড় সোজা করে কেশরে ভরা গম্ভীর মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার হুঙ্কারের বজ্র নিনাদে যেন পূর্ব রাগের ভূমিকা। এখানেও কৃত্রিম গুহা এবং ঝোপের আড়ালে বাচ্চা সমেত সিংহী পরিবার আগলে রয়েছে। একটা উঁচু পাথরের আড়ালে সদ্য যুবক সিংহটি  ও তার যুবতী সিংহীর বিশেষ অনুরাগ দূর থেকে দেখে  ঋষভ বলে কী  দারুণ ! চকচকে ব্রাউন রঙ্গের মেদ হীন অপরূপ চেহারা। এরা সব দোর্দন্ড প্রতাপ আফ্রিকান সিংহের প্রজাতি।                                                                           
  রোড ম্যাপ অনুযায়ী এই বনের সীমা চলে গিয়েছে অন্ততঃ আরো মাইল পাঁচেক  দূরে। একধারে রয়েছে পশুদের চিকিৎসালয়। সেখানে এম্বুলেন্সের মত খাঁচার গাড়ি দাঁড়ানো।শ্রী ভাবে বিশাল এই পৃথিবীতে প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ মানুষ। ,কিন্তু কোথাও বুঝি তার এতো মূল্য নেই যেখানে মনুষ্য কুল কে এতো ভীষণ যত্ন করে  এমন  সেবা করা হয়। 

  নিস্তব্ধ বনের পথে একটানা  কিচির মিচির সুরেলা কণ্ঠের ডাকে মোহিত হয়ে ওরা শুকনো পাতা    মর্মরিয়ে চলতে শুরু করেছে।এদিকটায়  দিগন্ত জুড়ে পাখিদের অঙ্গন। পাইন দেওদার ,ওক রেইন ট্রী বটলব্রাশ ম্যাপেল ,হিকারীর সাথে ওর চেনা মেহগিনী , শিরীষ ,কৃষ্ণচূড়ার মত ঝিরি ঝিরি পাতার গাছ গুলো শীতের হাওয়ায় কাঁপন তুলে অঝোরে ঝরছে । গাছ ছাড়া পাখিরা থাকবে কি করে ? কত পাখি গান গেয়ে শিস দিয়ে রঙিন পাখা মেলে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।  পাখিদের রাজত্বে এসে শ্রী পাথরের খন্ডের ওপর জাঁকিয়ে বসেছিল। বার্লিনের এই জাতীয় উদ্যান টি ভরে আছে অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য মূল্যবান গাছেদের সম্ভারে।মিলন পিয়াসী পাখিদের গাছের ডালে বসে মধুর কুজনে মনের সুখে ভাব  জমিয়ে তাদের পরস্পরের প্রেম নিবেদন চলছে।  

 একটা  বিশাল আকারের ইনল্যান্ড রেডউডের ডালে  বিরাট আকারের  গোল্ডেন ঈগল কে পরিবার সহ গাছের মাথায় ঘর বাড়ি সাজিয়ে বিরাজ করতে দেখে ঋষভ  বলে টঙে বাসা বেঁধে পাখির রাজা তার রাজ্য পাটের ওপর নজর রাখছে। যদিও ঈগল জার্মানিদের জাতীয় পাখি তার যত্ন রক্ষনা বেক্ষনের জন্য ওরা বিশেষ ব্যাবস্থা করবেই। সেই সাথে বাজ ,শকুন, চিল ইত্যাদিরা ও ছিল অন্য পোশাকি নামে বিশাল গাছের মাথায় তাদের পাকা বাসস্থান টিতে। নীচে হাঁস মুরগী টার্কি পেঁচা পায়রা সব আছে তাদের  স্বীয় বিচরণ ক্ষেত্রে। বিদেশী পাখিদের ও অঢেল সম্ভার। 
 কোয়েল ,ম্যাকাও ,কার্ডিনাল ,জয় ,টোগান ,ট্যানাগার ,মটমট রেড মুনিয়া ব্রডবিল ,থ্রাস, রেডবিল ইত্যাদি কত বিভিন্ন প্রকারের নানা নামের পাখি গুলো যে যার নিজের মত হাসছে খেলছে গাইছে। 

, একটা পাইন গাছের মোচা নিয়ে তিন চারটে ঝুঁটি বাঁধা লাল ও গ্রে রঙের কার্ডিনালের বেশ চুলোচুলি লেগেছে , নিঝুম পরিবেশ ওদের কোলাহলে গমগম করছে। ছোট্ট একটা ব্ল্যাকবেরীর গাছের ওপর সমান হামলা চালাচ্ছে লাল কালোয় মেশানো ব্রাজিলিয়ান ট্যানাগার। লালমুনিয়া নিঃসঙ্গ ভাবে গাছের ডালে বসে সঙ্গী কে করুণ সুরে ডেকে চলেছে।  ছোট্ট রবিন মনের খেয়ালে ঘুরে ঘুরে প্রানপন শিস দিয়ে ডাকছে তার প্রেয়সী কে। দল বেঁধে হ্যামিংবার্ড পাখা ফড়ফড়িয়ে লাল ফুলের গাছে মধুসংগ্রহে মনোযোগ দিয়েছে। কেউ বা আবার বেগুনি রঙের পপি ফুলের গাছ গুলোর  ওপর গোল হয়ে হামলা চালাচ্ছে।

 একটু দূরে স্বচ্ছ নীল জলের এক সরোবরে  অজস্র মুক্ত স্বাধীন পরিযায়ী পাখির মেলা। ওরা বরফ জমা শীতল জায়গা থেকে একটু উষ্ণতার জন্য হাজার হাজার দূরের পথ পাড়ি দিয়ে এখানে এসে কিছুটা সময় কাটাবে। মিলন পিয়াসী মন ওদের ,ঘর বাঁধবে সঙ্গম বা প্রজননের আশায়। আরো একটু দূরে  একরাশ  মেটে সিঁদুরে রাঙা পদ্মফুল ফুটে আছে । সেদিকে শ্রী এগিয়ে যেতেই ওর ভুল ভাঙলো পদ্ম ফুলের পাপড়ির মত পাখা মেলে দাঁড়িয়ে আছে এক ঝাঁক ফ্লেমিংগো দল বেঁধে। 

পাশেই সাদা ধবধবে রাজহাঁস তার পরিবার নিয়ে বিশেষ উত্তেজিত হয়ে কত ভাষায় যে বকে চলেছিল কি জানি ? এখানে আশে পাশেই সারস , ব্ল্যাক আইবিস ,বক ,মাছরাঙা ,উডপিকার্স ,জানা ,অজানা প্রায় ৩১৯ টি প্রজাতির পাখি রয়েছে। ওদের আলাপ প্রলাপ হাসি উচ্ছাসের  আওয়াজ কান পেতে শুনে  ওরা এসে দাঁড়ালো চিড়িয়া খানার গেটে।   
গরিলা
                                                                                        সূর্য এবার অস্তা চলে , অদ্ভুত আনন্দে সারাদিন কাটলো । টিয়ার পার্ক থেকে বিদায়ের লাইনে লম্বা ভীড়। ওরা শ্রান্ত শরীরে উঁচু এক রোয়াক দেখে  বসেছিল। সেখানেও চিনচিন শব্দে  গাছেদের সেই পাতা ঝরার মেলা। মাথার ওপর দিয়ে দিগন্ত জুড়ে এক ঝাঁক সাদা বক পাখা মেলে শেষ বিকেলের মলিন আলো টুকু আড়াল করে  উড়ে যায় ওরা মুক্ত প্রাণের পূজারী। শ্রী ভাবে , চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি পাখিরা এমনি আকাশে ডানা মেলে দিগন্তে পাড়ি দিতে কবেই ভুলে গিয়েছে। ওদের উড়ে বেড়ানোর গন্ডি জাল দিয়ে ঘেরা।সে আকাশের ব্যাপ্তি সীমাবদ্ধ। দিনের শেষে অসংখ্য পাখিদের নীড়ে ফেরার এক সম্মিলিত কলকাকলী বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয় ।                                             

     ওরা পার্কের বাইরে এলো , সাঁঝের আঁধারে আলোর উৎসবে শহর  সেই চিরাচরিত সাজে অলঙ্কারের আভরণে গর্বিত এক সুন্দরী অপ্সরী হয়ে উঠেছে। বাস এসে যাওয়ায়  নির্দিষ্ট আসনে গুছিয়ে বসে শ্রী ভাবছে এতক্ষণ বুঝি ওরা কাটিয়েছে এক রূপকথার স্বপ্ননীল জগতে।                                                                                               
শ্রীর ডায়েরির পাতার চিড়িয়াখানা পর্ব পড়া শেষ হলো। তন্দ্রালস চোখে একনাগাড়ে  চাঁদ ডোবা রাতের আঁধারে ভোরের পাখির মধুর কাকলি কুজন কানে এসে বাজছে । এখোনো অন্ধকার আছে।  শ্রী পাড়ি দিলো ঘুমের সাগরে , আগামীতে বসবে আবার নতুন দেশের যাত্রার গল্পের ঝুলি নিয়ে।

Post a Comment

0 Comments