জ্বলদর্চি

বিশ্ব নৃত্য দিবস (২৯শে এপ্রিল)/দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

বিশ্ব নৃত্য দিবস (২৯শে এপ্রিল)
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

সারা বিশ্বে ২৯শে এপ্রিল দিনটিকে বিশ্ব নৃত্য দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই দিনটি পালিত হয়। এই দিনটিকে পালন করা হয়, ব্যালে নৃত্যের স্রষ্টা জ্যা জর্জ নভেরের জন্মদিনে অর্থাৎ ২৯ শে এপ্রিলে। ১৯৮০ সালে তাঁর জন্মদিনের দিনটিকে (২৯শে এপ্রিল) ইউনেস্কো "আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস" হিসেবে ঘোষণা করে,তখন থেকে পৃথিবী ব্যাপী ২৯শে এপ্রিল দিনটি বিশ্ব নৃত্য দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।

নৃত্য' শব্দটি সাধারণত শারীরিক নড়াচড়ার প্রকাশভঙ্গিকে বোঝায়। এই প্রকাশভঙ্গি প্রধাণত সামাজিক, ধর্মীয় কিংবা মনোরঞ্জন ক্ষেত্রে দেখা যায়। গীতি-বাদ্যের ছন্দে অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে, চিত্রকল্প উপস্থাপনের ললিত কলায় হলো নৃত্য বা নাচ।
নৃত্যকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন- কোরিওগ্রাফি, নাচের ধরন, ঐতিহাসিক সময়কাল বা উৎপত্তিস্থল ইত্যাদি।

নৃত্য কলার ইতিহাস জানতে গেলে একটু অতীতের দিকে যেতেই হয়।
প্রাচীন মানুষের ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন বস্তু নিদর্শন এর মতো নৃত্যকলার তেমন কোনো বস্তু নিদর্শন পাওয়া না গেলেও, নৃত্যকলা যে প্রাচীন মানুষের নানা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হতো তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে মিশরীয় দেওয়াল চিত্রে এবং ভারতের গুহাচিত্রে (যেমন অজন্তা- ইলোরা) যে ভঙ্গির চিত্রগুলি পাওয়া যায়,তা যেন নৃত্যকলাকেই নির্দেশ করে, যদিও মনে করা হয়, সেই সময়ে বিভিন্ন রাজবংশের কাহিনী নির্দেশ করার জন্যই এই ভঙ্গিমাগুলি খোদাই করা হয়েছে। এটা অবশ্যই বলা যায় যে, লিখিত বর্ণমালা সৃষ্টি হওয়ার অনেক আগে থেকেই নৃত্য ভঙ্গিমার মাধ্যমে বংশ পরম্পরা যে গল্প তা বোঝানো হতো।

🍂

নৃত্য কলার আরো একটি প্রাচীন প্রকাশ পাওয়া যায়, অতীন্দ্রিয় চেতনার কুপ্রভাব থেকে মুক্ত করার বিভিন্ন আচার -অনুষ্ঠানে। আজও নৃত্যকলার এই ব্যবহার ব্রাজিলীয় চিরহরিৎ বনাঞ্চলের সংস্কৃতি থেকে কালাহারি মরুভূমির সংস্কৃতি পর্যন্ত বিস্তৃত।

মঞ্চে পরিবেশিত নৃত্য গুলির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রদর্শনী, একে সঙ্গীতানুষ্ঠানের নৃত্যও বলা যায়। এই ধরনের নৃত্যগুলিতে কোনো না কোনো গল্প থাকে। এই গল্পগুলি বলা হয় নৃত্যের সাহায্যে, মুকাভিনয় ও সঙ্গীতের মাধ্যমে। নৃত্যের আরো বিখ্যাত ধরন গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য  হলো, পাশ্চাত্যের ব্যালে, আধুনিক নৃত্য, ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য যেমন- ভারতনাট্যম। চীন ও জাপানের গান ও নৃত্যনাট্য যেমন -ড্রাগন নৃত্য, এই ধরনের নৃত্য সংগীতের সঙ্গে নাচের উদাহরণ। বেশিরভাগ শাস্ত্রীয় নৃত্য, নাচের জন্য হলেও, পরিবেশনের জন্য নৃত্য অপেরা এবং অন্যান্য সংগীত প্রধান নাট্যে পরিবেশিত হয়।

আধুনিক নৃত্যশিল্পীদের লক্ষ্য হলো, সারা বিশ্ব জুড়ে নৃত্যকে সকল প্রকারে প্রচার করা।
সকল প্রকার নৃত্যের মূল্য সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।নৃত্য সম্প্রদায় তাদের কাজগুলোকে ব্যাপকভাবে প্রচার করে, যাতে সরকার এবং সাধারণ মানুষ নৃত্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়।

Post a Comment

0 Comments