জ্বলদর্চি

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (১লা মে)/দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (১লা মে)
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা সাধারণত মে দিবস নামেও পরিচিত । প্রতিবছর ১লা মে তারিখে বিশ্বব্যাপী দিনটি উদযাপিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদযাপনের দিন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিত ভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বর্তমানে ভারত সহ বিশ্বের প্রায় আশিটি দেশে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়।

আজ ১লা মে "আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস", পৃথিবীর বহু দেশে মে মাসের প্রথম দিনটিতে শ্রমিক দিবস পালিত হয়। তায় এই দিনটি সরকারিভাবে ছুটির দিন।

১৮৮৬সালের ১লা মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে আট ঘন্টা শ্রম দিনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানো হলে, ১১জন শহীদ হন, তবে আমেরিকা ও কানাডাতে এই দিনটি পালিত হয় না। 

আগে শ্রমিকদের বহু পরিশ্রম করতে হতো, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা এবং সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করেও পারিশ্রমিক মিলতো নগণ্য। আগে শ্রমিকেরা অত্যন্ত দারিদ্র্যতার সঙ্গে জীবন যাপন করতো। এমন অবস্থা ছিল, যে ক্ষেত্রবিশেষে তা দাস বৃত্তির পর্যায় পড়তো। ১৮৮৪ সালের আমেরিকার শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক, দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন এবং তাদের এই দাবি কার্যকর করার জন্য তারা সময় বেঁধে দেয়, ১৯৮৬ সালের ১লা মে। কিন্তু কারখানার মালিকগণ এই দাবি মেনে নেন না। ৪ঠা মে ১৯৮৬ সালের সন্ধ্যেবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে শিকাগোয় হে মার্কেট নামক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে একত্রিত হন। তারা ১৮৭২ সালে কানাডায় অনুষ্ঠিত শ্রমিকদের এক বিশাল শোভাযাত্রার সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হন। আগস্ট স্পীজ নামের এক নেতা একত্রিত হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন, ঠিক সেই সময় হঠাৎই দূরে দাঁড়ানো পুলিশ দলের  কাছে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় একজন পুলিশ নিহত হন। পুলিশ বাহিনীর তৎক্ষণাৎ শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে, যা পরে বিশাল আকারের রূপ নেয়। এই ঘটনায় এগারোজন ১১ জন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। পুলিশ এই হত্যা মামলায় আগস্ট স্পিজ সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। এক প্রহসন মূলক বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে, ৩ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। শ্রমিকদের মধ্যে লুইস লিং নামে একজন ফাঁসির একদিন পূর্বেই কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যা করেন। অন্য একজনের পনেরো বছরের কারাদণ্ড হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহণের পূর্বে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, "*আজ আমাদের এই নিঃশব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে"*। ২৬ শে জুন ১৮৯০সালে ইলিনয়ের গভর্নর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা করেন  এবং রায়ের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয় বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনো প্রকাশ পায়নি।

🍂

শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার দাবি অফিশিয়ালি স্বীকৃতি পায়, সেই সঙ্গে ১লা মের মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায়, যা বিশ্বে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের দিন হিসেবে পরিচিত এবং বিশ্বের শ্রমিক দিবস হিসেবে পরিচিত।

শ্রমজীবী মানুষদের আন্দোলনের এই গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণ করে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছরের ১লা মে, "মে দিবস" বা "আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস" হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পহেলা মে আমাদের মনে করিয়ে দেয় শ্রমিকদের সেই আন্দোলনের কথা। ১৯৯০ সালের ১৪ই জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোসালিস্ট কংগ্রেসে ১লা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এইভাবে তখন থেকেই বহু দেশে শ্রমিক শ্রেণী কর্তৃক এই শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

রাশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য অর্জন করে। জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে। শুধু তাই নয় সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের অধিকারের সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে সেই সঙ্গে সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের তা মেনে চলার আহ্বান জানায়। মে দিবস এইভাবে শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করে।
মে দিবসের দিন সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ, বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ছুটি থাকে।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সাধারণত মে দিবস নামে পরিচিত । প্রতিবছর ১লা মে তারিখে বিশ্বব্যাপী দিনটি উদযাপিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদযাপনের দিন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিত ভাবে মিছিল শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বর্তমানে ভারত সহ বিশ্বের প্রায় আশিটি দেশে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়।


আজ ১লা মে আন্তর্জাতিক দিবস, যা মে দিবস নামেও পরিচিত। পৃথিবীর বহু দেশে মে মাসের প্রথম দিনটিতে শ্রমিক দিবস পালিত হয়। সরকারি হবে তাই সব দেখেই এই দিনটি সরকারিভাবে ছুটির দিন।

১৮৮৬সালের ১লা মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে আট ঘন্টা শ্রম দিনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানো হলে ১১ জন শহীদ হন, তবে আমেরিকা ও কানাডাতে এই দিনটি পালিত হয় না। 

আগে শ্রমিকদের বহু পরিশ্রম করতে হতো, প্রতিদিন ঘরে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করেও পারিশ্রমিক মিলতো নগণ্য। আগে শ্রমিকেরা অত্যন্ত দারিদ্র্যতার সঙ্গে জীবন যাপন করতো। এমন অবস্থা ছিল যে ক্ষেত্রবিশেষে তা দাস বৃত্তির পর্যায় পড়তো। ১৮৮৪ সালের   আমেরিকার শিকাগো শহরে একদম শ্রমিক দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন এবং তাদের এই ভাবি কার্যকর করার জন্য তারা সময় বেঁধে দেয় ১৯৮৬ সালের ১লা মে, কিন্তু কারখানার মালিকগণ এই দাবি মেনে নেন না। ৪ঠা মে ১৯৮৬ সালের সন্ধ্যেবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে শিকাগোয় হে মার্কেট নামক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে একত্রিত হন। তারা ১৮৭২ সালে কানাডায় অনুষ্ঠিত শ্রমিকদের এক বিশাল শোভাযাত্রা সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হন। আগস্ট স্পীজ নামের এক নেতা একত্রিত হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন, ঠিক সেই সময় হঠাৎই দূরে দাঁড়ানো পুলিশ দলের  কাছে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় একজন পুলিশ নিহত হন। পুলিশ বাহিনীর তৎক্ষণাৎ শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে যা পরে বিশাল আকারের রূপ নেয়। এই ঘটনায় এগারোজন ১১ জন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। পুলিশ হত্যা মামলায় আগস্ট স্পিজ সহকার জনকে গ্রেফতার করা হয়। এক প্রহসন মূলক বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে।     জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। শ্রমিকদের মধ্যে লুইস লিং নামে একজন ফাঁসির একদিন পূর্বেই কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যা করেন। অন্য একজনের পনেরো বছরের কারাদণ্ড হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহণের পূর্বে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, "আজ আমাদের এই নিঃশব্দতা তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে"। ২৬ শে জুন ১৮৯০সালে ইলিনয়ের গভর্নর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা করেন  এবং রায়টের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয় বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনো প্রকাশ পায়নি।

শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার দাবি অফিশিয়ালি স্বীকৃতি পায়, সেই সঙ্গে ১লা মের মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায়, যা বিশ্বে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের দিন হিসেবে পরিচিত এবং বিশ্বের শ্রমিক দিবস হিসেবে পরিচিত।

শ্রমজীবী মানুষদের আন্দোলনের এই গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণ করে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছরের ১লা মে, "মে দিবস" বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পহেলা মে আমাদের মনে করিয়ে দেয় শ্রমিকদের সেই আন্দোলনের কথা। ১৯৯০ সালের ১৪ই জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোসালিস্ট কংগ্রেসে পহেলা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এইভাবে তখন থেকেই বহু দেশে শ্রমিক শ্রেণী কর্তৃক এই শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

রাশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য অর্জন করে। জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে। শুধু তাই নয় সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের অধিকারের সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে সেই সঙ্গে সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের তা মেনে চলার আহ্বান জানায়। মে দিবস এইভাবে শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করে।
মে দিবসের দিন সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ, বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ছুটি থাকে।

Post a Comment

0 Comments