জ্বলদর্চি

মিলি ঘোষ ও সৌমেন রায়-এর অণুগল্প


মিলি ঘোষ ও সৌমেন রায়-এর অণুগল্প 

কোনও একদিন
 মিলি ঘোষ

সুপ্রিয়ার ট্রেন হাওড়া স্টেশনে ঢুকল। একই সময় চন্দন দমদম থেকে উড়ে গেল মুম্বইয়ের উদ্দেশে। সারাদিন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে রইল সুপ্রিয়া, সম্পূর্ণ অজানা এক শহরে। চন্দন এল না। 

মা দু'বার ফোন করেছিলেন। 
   দু'বারই সুপ্রিয়া বলেছে, "চন্দনদা আছে তো। চিন্তা কোরো না।"
এবার কী করবে সুপ্রিয়া ? গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। সবাই জানে চন্দন, সুপ্রিয়ার জন্য কলকাতায় চাকরির ব্যবস্থা করেছে। ছ'মাস পরে ওদের বিয়ে। 

রাত এগারোটা।
টিকিট চেকার গেটের বাইরে তাকিয়েছিলেন। 
   "দাদা, থানাটা কোনদিকে বলতে পারবেন?"
প্রশ্ন শুনে মুখ ঘুরিয়ে থমকে গেলেন ভদ্রলোক।
   "তুমি, চিন্ময়ের বোন না?"
সারাদিনের চেপে রাখা কান্নাটাকে আর ধরে রাখতে পারল না সুপ্রিয়া। 
এ কান্না কীসের? স্বস্তির, না লজ্জার?

🍂


সৌমেন রায় 

তৃপ্তি

হবু মা চঞ্চল হয়ে উঠেছে সন্তানের জন্য। রক্ত চাই - মানুষের রক্ত ! মরিয়া হয়ে দিনের বেলায়  জানালা দিয়ে ঢুকে পড়ে শিকারের খোঁজে। খাটে ফুলের মত ঘুমন্ত শিশুর দিকে তাকিয়ে  আধশোয়া হয়ে আছে বাবা। এও তো  শিশু – কিন্তু নিজের ছেলে -- ? নিরুপায় মা ঝাঁপিয়ে পড়ে শিশুর উপর।কিন্তু যতবার বসে তাড়িয়ে দেয় বাবা। জেদের বসে বাবার ঘাড়ে বসে পড়ে। জানে মৃত্যুও আসতে পারে! শুড় নাচিয়ে ,পুঞ্জাক্ষি উচি য়ে সতর্ক থাকে। না কোথায় আক্রমণ! দিব্যি জেগে আছে কিন্তু নড়ছেও না! রক্ত পান করে উড়ে যাওয়ার আগে তৃপ্ত মা দেখে বাবার মুখেও তৃপ্তির হাসি, সন্তানকে বাঁচিয়ে দেওয়ার হাসি!

Post a Comment

4 Comments

  1. AnonymousMay 04, 2024

    খুব ভালো লাগলো। দুটো দুরকম ভাবনার। তৃপ্তি টা একটু অন্যরকম। দুজনকেই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. AnonymousMay 04, 2024

      নামটা জানাবেন। কে বলছেন?

      Delete
    2. ধন্যবাদ।

      Delete
  2. AnonymousMay 04, 2024

    অনেক ধন্যবাদ

    ReplyDelete