দুটি কবিতা
কমলিকা ভট্টাচার্য
তুমি বলবে কবে?
তুমি বললে বৃষ্টি হয়ে ঝরতে পারি,
হতে পারি পাতার শেষের জলবিন্দু,
তিরতির করে বয়ে যাওয়া জলের ধারা,
যে ধারায় ভাসে তোমার ইচ্ছার নৌকা।
বাতাস এসে বলে গেছে অনেক কথা,
তবু তুমি বলবে কবে?
আমি চেয়ে ঐ আকাশের সীমান্তে,
স্বপ্নের মেঘে তোমার ছবি এঁকে রাখি।
তুমি বলো, আমি চাঁদের আলো হয়ে
তোমার পথের সাথী হয়ে উঠি।
হৃদয়ের কোণে জমা থাকা যত গান,
সব তোমার নামে সাজিয়ে রাখি।
তুমি একবার ইশারায় ডাকলেই,
বকুলের মালা গাঁথবো তোমার জন্য।
তোমার মুখের এক টুকরো হাসি
হবে আমার প্রেমের একমাত্র ঠিকানা।
তুমি বললেই, আমি পৃথিবীর সব ছেড়ে
তোমার হৃদয়ে মিশে যেতে পারি।
একা বসে আছি অপেক্ষার রঙিন চাদরে,
তুমি বলবে কবে?
বলো, তোমার ভালোবাসা—
আমার হৃদয়ের চিরন্তন বাসা।
কিন্তু তুমি বলবে কবে?
🍂
স্বভাব যাবে না মরেও
আকাশ জুড়ে জলের ছাপ,
একপশলা বৃষ্টি হঠাৎ।
জানলা গলে সুরুৎ করে,
একটা পাখি ফুড়ুৎ করে
ঢুকলো এসে ঘরে।
ঝাপটে ডানা জল ঝরিয়ে,
মেঝে খানা দিল ভরিয়ে।
কায়দা করে লেজ নাড়িয়ে
বলল, “চা এককাপ দে চড়িয়ে"
আমি বোকা বোকা, থাকি চেয়ে।
এলিয়ে গা কেদারায়,
ডাকলো আমায় ইশারায়।
“চিনিস না তুই আমায়?
তোর রাজ্যের মন্ত্রীমশায়,
মরে ছিলাম গত করোনায়।”
বুক কাঁপে, ঠোঁট কাঁপে,
ভয়ে ভয়ে জিগাই তাকে,
“কেন তবে আমার বাসাতে?
থাকার কথাতো স্বর্গতে!”
হো হো করে উঠল হাসি,
“স্বর্গের ভিসা এত সহজ নাকি?
চিত্রগুপ্তের লম্বা খাতায়,
নাম আছে যে সব ধারায়।
ঠকবাজি, তোলাবাজি,
রাহাজানি, খুনোখুনি,
ধর্ষণ থেকে অপহরণ,
সবেতেই আমি অসাধারণ।”
বলি করে ইতস্তত,
“নরকের দ্বারতো ছিল প্রশস্ত!”
“আরে আরে সব কবো,
আগে আদা দিয়ে চা খাওয়াতো।”
চা বিস্কুট খেয়ে
উঠল সে চাগিয়ে।
বলল, “কথা হল এই ষোলো ভাগ,
মরলেও কি যায় স্বভাব?
নরকেতে যেই ঢোকা,
মিলে গেল এক বোকা।
হয়েছিলাম নর্দমার পোকা খানা,
ঠকিয়ে নিলাম তার পাখির ডানা।
নরকের দ্বারে দিলাম ঘুষ,
বেরিয়ে এলাম উড়ে ফুড়ুৎ।”
“কি দিলে ঘুষ?
হল যে তারা খুশ?”
“ওঠার আগে চিতেতে,
ডোমের পকেটেতে
মিলে ছিল দুটো বিড়ি,
তাই দিয়ে এলাম উড়ি।”
বৃষ্টিটা ঝরেছে বটে,
আজ তবে পড়ি কেটে।
পিছনে নরকের সিবিআই,
0 Comments