শঙ্কর ঘোষ
আজি শিবরাত্রি
তুমি ভোলানাথ তুমি আশুতোষ
তুমি ধরিত্রীর সৃষ্টি মনোতোষ।
মহা মিলনের আজি শিবরাত্রি
অগ্রগতির প্রতি পার্বতী পতি।
মহাবিশ্বের নৈরাশ্র সংযুক্তির শক্তি
ত্রিশুল আয়ুধা ডমরুধারি ভক্তি।
অন্যায় অবিচার দৃষ্টির জাদু
তোমার অবচেতনায় সবাই কাবু।
বিশ্বজোড়া আজ তোমার নাম
বিশ্ব জগৎবাসী নারী শক্তিধাম।
মাথায় জট পাকানো সাপ
ছাইয়ে ঢাকা শরীরের পাপ
টোটো ওয়ালা
টোটো ওয়ালা রাস্তার প্রতীক
সম্বল নেই কোনদিন দিক।
পেটের জ্বালায় টোটো চালায়
ঘুরে ঘুরে চারিদিকে বেড়ায় ।
টোটোর সামনে একটি চাকা
মধ্যে খানে তার ফাঁকা।
পেছন তার দুটি চাকা
মাথায় ছাউনি দিয়ে ঢাকা ।
যাত্রী থাকে ছয় জনাতে
আনন্দে দিন কাটে রাস্তাঘাটে ।
শহর আমার শান্তি প্রিয়
যাত্রী আমার স্নেহের ভাই ।
টোটো চালিয়ে আমার সংসারতে
মোদের কোন অভাব নাই ।
জীবনটা আমার ধন্য হলো
টোটোর সিটে কেটে গেল ।
বৃক্ষচ্ছেদন
জঙ্গল সাপ কেটে পরিষ্কার,
হচ্ছে ঘরবাড়ি বাগান ফার্নিচার।
লোক সংখ্যা বৃদ্ধির শহর
গাছ কেটে করছে উপনগর
পায়ে মারছি কুড়ুল হেঁকে
আনছি আপন মরণ ডেকে
পাহাড়ের সকল বরফ গলে
নামছে সব সাগরে জলে
জলস্ফীতিতে সাগর করছে গ্রাস ক্রমশ স্থল ভূমিতে হ্ণাস
তিন ভাগের এক স্থলভুমি
জলের তলায় তলিয়ে মালভূমি।
গাছ বা জল ছিল সর্বদাই প্রাণীকুলের জন্য মঙ্গল খোদাই
বোকা মানুষ,বুঝলোনা আজ প্রানদায়ী জঙ্গলের সকল কাজ।
উষ্ণতা বাড়ছে প্রাণ যাচ্ছে,
আজ প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারাচ্ছে
জলের তলায় যাবেই ভূতল
প্রাণীকুলকে বাঁচাতে চাই সমতল।
মা
মা একটি ছোট্ট শব্দ
অথচ এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে
কত গভীর মমত্ব।
স্নেহময়ী মা এর হাত ধরে
সন্তান বড়ো হয় ধীরে, ধীরে
সন্তানকে মানুষ করতে
সহ্য করতে হয় মাকে
কতো দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা
সবাই এর মর্ম বোঝে না।
মা এর প্রতি যার যত ভক্তি
সেই সন্তান হয় ততোই কৃতী
মা যদি হয় আদর্শবান ও নীতিপরায়ন
তার সন্তান হবে ততো কতর্ব্যপরায়ন।
মা হওয়া নয় মুখের কথা
দশমাস, দশদিন গর্ভে ধারণ করে
অসহ্য প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করে
আনলো যাকে পৃথিবীর পরে
বড়ো হয়ে সেই সন্তান
মাকে অবহেলা করে
তবুও মা কিন্তু সন্তানের মঙ্গল কামনা করে।
রবীন্দ্রনাথের প্রতি
বিশ্ব বরেণ্য কবি কুলবতী তিনি জগতের কবি
এই ভুবনে সবার ঘরে ঘরে তোমার ছবি ।
জোড়াসাঁকর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে
জন্ম নিলেন জ্ঞানের দীপশিখা জ্বালাবার তরে ।
সমাজের কল্যাণের প্রতীক তুমি আজ ঘরে ঘরে
চতুর্দশ সন্তান রূপে এলে তুমি দেবতার বরে।
ঠাকুরবাড়ির বৃত্ত চিত্তে ছায়া নীড় বটবৃক্ষ
মানুষের মনের উক্তির আজ তোমার প্রমূখ্য ।
মানের ভূমি বোলপুরেতে গড়লে শান্তিনিকেতন
ছাতিম তলায় পাঠে করলে নব পরিবর্তন।
তোমার লেখার শক্তিতে হল গীতাঞ্জলি
নোবেল পুরস্কার পেয়ে কত যে অঞ্জলি।
সোনার তরী, ঘরে বাহিরে, নৌকাডুবি ,তোমার নৈবিদ্য
চোখের বালি ,গোরা ,মালঞ্চ, রক্তকরবী আছে আরও অনবদ্য।
লেখার সৃষ্টির ইতিহাস করলে আজ রপ্ত
দুনিয়ায় সেমিনারে হলো না আজও সমাপ্ত।
মুখে তোমার এক গোছা দাড়ি মাথায় লম্বা চুল
সৃষ্টির ইতিহাসে করলে না আজও ভুল
ভাঙ্গনে তুমি আশার আলো দেখাও নতুন কুল
মনের অন্ধকারে দীপশিখা হয়ে ফুটাও অনেক ফুল।
একান্তে
পাহারা দার হয়ে নিঃশব্দে নির্জনে
দাঁড়িয়ে আছি প্রান্তে প্রাপ্তির গর্জনে ।
তোমার জন্য পথের সুপ্ত ধুলো
প্রতীক্ষায় ক্লান্ত আমার কি হলো।
মনের ভিতর আগুন লাগা তরঙ্গ
হৃদয় হয়ে গেছে আজ স্ফুলিঙ্গ।
শান্ত মম অমৃত সম অঙ্গে
জন কলরব সুপ্তি এখন গঙ্গে।
তোমার চোখের আলতো ছোঁয়ার আশা
আজো পথে দাঁড়িয়ে তোমার ভালোবাসা।
মনে পড়ে অনাবৃত বৃষ্টির মুষলধারা
বুক ফাটা আর্তনাদ আজ দিশেহারা।
সেই সাঁঝের বেলায় তুলসী তলায়
প্রদীপ জ্বেলে গোধূলি রঙের মেলায়।
ধ্রুবতারা দূর আকাশের পানে
বিরহ বেদনা হতাশা আজও শোনে।
🍂
0 Comments