পর্ব - ২০
মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া
|| খুলে দিলাম জানলা ||
ক্লাস ফোর হয়ে গেল ঝিনির।মায়ের কড়া নিয়ম আর গুপীদার ক্ষুর থেকে একটুখানি ছাড় পেয়েছে চুলগুলো। বিকেলে ফিতে দিয়ে শক্ত করে দুটো ঝুঁটি বেঁধে দেয় বকুলদি। চুলের গোড়ায় জ্বালা করে খুব ,অত এঁটে বাঁধিস নে।থাক, চুল বাড়বে বলে বকুলদি আরো একটু টাইট করে দেয়।
রুবিদির বিয়ে হয়ে গেছে বলে বড় মাসি এই বকুলদিকে পাঠিয়েছে।রুবিদি যাওয়ার আগের দিন ঝিনি তার সঙ্গে কথা বলেনি। যাবার আগে লুকিয়ে কাঠ ঘুঁটে রাখার চালা ঘরটার মধ্যে সেঁধিয়ে বসেছিল ঝিনি।ভগমান! এহেনে কী অরতিছিস ?লকড়ি ঘরে ঢুকতি তোরে বারণ দিছি না?চেলা বিছে কিনা কি থাহে এহেনে কেডা কবে সাপও থাহে কিনা নাম করেই আস্তিক মুনির নাম নিলো তিনবার তারপর থুক করে থুতু ছিটিয়ে হাত ধরে টান দিল। তাকে আদর করল খুব; ঝিনি তাও মুখ গোঁজ করে বসেছিল।ওরম অরলি যাই কেম্বায় ? হাউস করি কি যাতিছি ? কতাও কতিচিস নে তার কী অরি ক'দিনি?ছোটর থে খাওয়ায় মাখায় তোরে বড় কললো কেডা, সেইডে খালি কয়ে দে? কয়ডা কাউয়া কোন পিলে মললি পরে মাইয়ে জনম হয় কেডা ক'বে!মাইয়ে মানসির জেবন তাগের হাতে থাহে না বুনডি।বুকি পাতর বাইন্দে দোজবরের সঙ্গে বিয়ে নবো।ভিটেখানের বন্দক ছাড়ায় দিতিছে, দলিল কাগজ পাকা করি আনতিছে তারির কতা শুনি বিয়ে না বসলি কেম্বায় কী অরবো!কানতি কানতি অন্দ হইয়ে গিলিও বেটালোক যা ক'বে মাইয়েগের তাইই শুনতি অবেনে। আ্যন্নে ঠাওর কততি পাততিছিস না আরো বড় অইয়ে ওট;ডাঙ্গর হলি ত্যাহোন গে বুঝতি পারবিনে।
রুবিদির মাকে ক'মাস ধরে বোঝানোর চেষ্টা করে করে হাল ছেড়ে দিয়েছে মা বাপি। তারপর রুবিদিকে বিয়ের শাড়ি,সোনার দুল আর রুপোর হার বানিয়ে দিয়েছে। ওর টাকাগুলো গুনে নাও রুবির মা।এই শাড়ি,দুল আর রুপোর মালাটা ওর বিয়ের উপহার। রুবিদি প্রণাম করে মাকে । মা তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,ভালো থাকিস মা । এ বাড়ির বিপদের সময় তুই অনেক করেছিস।
কী কতিছো মাসি?রুবিদি কাঁদতে কাঁদতে বলে,ওপারের থে সাতঘাটের জল খাইয়ে আসিছিলাম যহন,তোমাগের নাহান আফন আমি কোয়ানে পাতাম? বাফ মায়ের থে বেশি তোমরা।কত তো বারণ দিয়েলে দোজবরে না দিতি। পোড়া কপাল নিয়ে জম্মাইছি! প্যাটের মাইয়ের থে নাভ নোসকান আ্যন্নে পুষোয় নিতিছে বাফ-মা। মনে কয় কফালখান ঘসি আর দেহি আর কী কী আছ কফালে!
তাগেদা চল রুপি। বেলা যাতিছে কলাম। দেরি হলি মসলন্দপুরির থে ত্যাহোন বাস পাবনানে।রুবিদির মা টাকার রুমাল ব্লাউজে গুঁজে ,আমাগে বাড়ি তালি যাইয়ো দিদি বলে হাত ধরে রুবিদিকে টেনে নিয়ে চলল। দৌড়ে গিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ল ঝিনি। রাত্তিরে কেউই তাকে খেতে ওঠাতে পারল না। তার কিছুদিন পর এল এই বকুলদি।
বাংলাদেশ থেকে মাঝেমধ্যেই চিঠি আসে মার নামে।মামু লেখে কল্যানীয়াষু বীণা, আশা করি সকলের কুশল।তোমার বৌদিদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল তবে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়া পাইবার আশা করাই বাতুলতা।ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একাধিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ সেই রূপই কহিয়াছেন। মায়ের শরীর একরূপ ভালোই ।অধিক কী কহিব। পরম ঈশ্বরের কাছে তোমাদিগের কল্যাণ কামনা করি।
ইতি আশীর্বাদক: তোমার হতভাগ্য দাদা সুখরঞ্জন রায়।
তপনদা চয়নদা বেলাদিরাও লেখে। মামু কখনো দাদা দিদিদের নিয়ে কখনো বা দিদুনকে নিয়ে এসেছে এ দেশে বেড়াতে। কিন্তু সোনা মামীকে কখনো আনেনি। অবশ্য ঝিনিরাও কখনো যায়নি।চয়নদার এনভেলাপের মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ সে পাঠায় রেশমী রিবন।তার রঙে চোখ ধাঁধিয়ে যায় ঝিনির। রঙিন ফিতেটাকে নিয়ে সে দৌড়ে বেড়ায় সারা বাড়ি যেন ওপার থেকে ফিতে নয় ডানা জুড়ে গেছে তার পিঠে এক্ষুণি সে উড়ে যাবে সেই দেশে যেখান থেকে উড়ে এসেছে এই রঙিন পাখা।
বাংলাদেশ কেমন দেখতে মা?ও আবার কেমন কথা?একই রকম দেখতে।একটাই তো দেশ ছিল। কাঁটাতার দিয়ে ভাগ করে দিলেই কি দেখতে আলাদা হয়ে যায় দেশ? কারা আলাদা করে দিল মা?কেন দিল গো? ছোড়দা এসে তার দুই ঝুঁটি ধরে টান দিয়ে বলল "দুয়োরে খিল/টান দিয়ে তাই খুলে দিলাম জানলা/ওপারে যে বাংলাদেশ এপারেও সেই বাংলা...!"
তপনদা এসে খুব মজা করেছিল সেবার। বিকেল বেলায় তপনদা এক বোঝা কচু পাতা কেটে এনে খেজুর কাঁটা দিয়ে অনেক ফুটো করে করে রাখল। আশ্বিনের শেষ দিকে নছিম চাচা এসে তাদের খেজুর গাছ ঝুড়ে খেজুরের বেগো আর গামড়া ফেলেছিল অনেক। সাঁঝ লাগলে খেজুরের সেই লাল বাকল যাকে গামড়া বলে সেগুলোয় আগুন ধরিয়ে চটপট কচু পাতায় মুড়ে বেঁধে ফেললো তপনদা আর সেটাকে কলার ছেটোয় বেঁধে ঘোরাতে শুরু করল যেই কচু পাতার অজস্র ফুটো দিয়ে আগুনের ফুলকি ঝরে ঝরে পড়ছিল। সন্ধের আঁধারে মস্ত কালো চাদরে ফুলঝুরিগলোকে সোনালি সুতোয় কারুকাজ করা আলোর ঝালর লাগছিলো। তপনদাকে খুব লম্বা আর বড় মনে হচ্ছিল যেন কোনো ম্যাজিশিয়ান।মনে হচ্ছিল চার ধারে তার জোনাকিরা গোল হয়ে উড়ছে, ঝরে পড়ছে অজস্র তারার কুচি।খানিক পরেই তা ফুরিয়ে গেল যদিও তবু খুব অলৌকিক ছিল সেই কয়েক মিনিটের ম্যাজিক সন্ধে।
আশ্বিনের সংক্রান্তিতে জুজোহো হয় তো।ওইদিন নাকি মা লক্ষ্মীর সাধ। রুবিদি বলতো প্যাটে বাচ্চা আলি মাইয়েগে খুব নোভ হয় খাতি।আ্যহোন মা নক্ষীও তো মাইয়ে মানুষ।গভ্যবতী
হইয়েছেন।সাধ দেবার নাগে তাই। গভ্যবতী মানে কী রে?ওই যে কলাম প্যাটের খোলে বাচ্চা আলি তারির কয় গভ্যবতী!এই পিলে ধানের শীষি দুধ ভরি আসতিছে আ্যন্নে।কাতিমাসখান যাতি দেও;অগঘানে দেকতি পাবা পাকা শিষি ঘসা লাগলি ছুম ছুম ছুম ছুম অরি নক্ষীর নুপুর কেমন বাজব্যান!
এ তো ভারি মুশকিল।এই বলছে ধানগাছ মেয়ে। ধানে দুধ ভরে এলে সে গভ্যবতী আবার পাকা শীষ তার নুপুর।মা তাকে বুঝিয়ে বলে মায়েদের পেটের মধ্যে বাচ্চা বড় হয়ে ওঠে বলে নানা রকম খাওয়ার ইচ্ছে হয়। আসলে তার ভেতরে আরও একটা শরীর বেড়ে ওঠে তাই তার খিদে এবং খাওয়ার ইচ্ছেও বাড়ে।
শ্বশুরবাড়িতে মেয়েদেরকে আলাদা করে আদর করে খাওয়াবার কেউ থাকেও না। গর্ভের সাত মাস পূর্ণ হলে তাই মেয়েদের সাধ মিটিয়ে ভালোমন্দ খাওয়ানো হয় বলে তাকে সাধ দেওয়া বলে। চাষ আমাদের দেশে খুব বড় জীবিকা বলে ধান পরম আদরের।আশ্বিনের শেষাশেষি গোছ মোটা হয়,ধানের থোড়ে দুধ ভরে ওঠে। ওইদিন চাষিরা আসলে মা লক্ষ্মী বলে মাটি মাকে পুজো করে ।
ঝিনিরা থাকে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়। কিন্তু চাষিবাসি মানুষেরা হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে এই জুজোহো করে। ভোরবেলা উঠে পাটকাঠির মশাল জ্বেলে ছোটরা ঘোরাতো আর ছড়া কাটত আশ্বিন যায় কার্তিক আসে/মা লক্ষ্মী গর্ভে বসে/মা তুমি সাধ খাও/বর দাও জুজোহোওওওও...! ঝিনিদের চাষবাস জমিজমা ছিল না। কিন্তু মজার খেলার সুযোগ পেলেই হলো।
পাটকাঠি জ্বেলে তারাও তিন ভাইবোন পাড়ার ছেলেপিলের সাথে ছুট দেয় মাটির আলপথে।
সেবার পুজোর ছুটির মজা একেবারে আলাদা এক রাস্তা ধরে এলো।কদিন ধরেই অন্য রকম এক উত্তেজনায় তারা সবাই ছটফট করছে।মা বাপি পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে ছুটোছুটি করছে খুব, কলেজে ছুটিও পড়ে গেছে বাপির। মহুলকে রাঙা মেসোর কাছে জিম্মা করে হেম এলো শুধু সানাকে নিয়ে।সবাই মিলে তারা যাবে বাংলাদেশে মামার বাড়ি। ভাই না আসায় খানিক মনমরা লাগলো তার। নাকি দুজনকে সামলে উঠতে পারবে না হেম। ঝিনি কি নেই নাকি।হেমও আজকাল বড়দের মতো বেয়াক্কেলে হয়ে গেছে দেখে রাগ ধরে যায় ঝিনির। তবু ভালো সানাটাকে সঙ্গে করে এনেছে।
🍂
আরও পড়ুন 👇
যাওয়ার আগের দিন,বনগাঁয় বড়মাসির বাড়ি গিয়ে থাকল সবাই। মা মাসির গল্পতো ফুরোতেই চায় না,বড় মাসিই তাড়া লাগালো সবাইকে,নে অইসে,বইয়া বইয়া প্যাঁচাল পোটলেই অইব ? কাইল যাওনের ধগল নাই তগো?খাইয়া ল অহন। রাতে তো উত্তেজনায় ঘুমই আসতে চায় না।
এবার একখানা ভ্রমণ কাহিনি লিখে ফেলব ছোড়দাকে ফিসফিস করে দাদামণি জানায়। বাপির পুরনো সবুজ ডায়রিটা ব্যাগে ভরে নিয়েছি। তুই বাপির ডায়রি নিয়েছিস বলে দেবো বাপিকে? ছোড়দা উত্তেজিত। আমি তো চেয়ে নিয়েছি।বাপিও বলেছে ভালো করে লিখতে। ভ্রমণকাহিনি কী রে দানি?এই যে বেড়াতে যাচ্ছি কী কী দেখব কাদের সাথে কী কথা হবে সেই সব লেখাকে বলে। বকবক না করে ঘুমো সব। খুব ভোরে উঠতে হবে।মা চাপা গলায় ধমক দিল।
আচ্ছা দানি,তোর ভ্রমণ কাহিনি... চুপ একদম চুপ। একটা কথাও যেন না শুনি। এবার মা'র জোরালো ধমকে চুপচাপ হয়ে গেল তারা। তবু ধুকপুক করছিল বুক।কখন নিঃশ্বাস ধীরে হয়ে এল আর ঘুমিয়ে পড়ল সবাই কে জানে। উঠে পড়লো হেমের ডাকে। হুড়মুড়িয়ে দাঁত মেজে জামা জুতো পড়ে সব রেডি।
দু'দেশের চেক পোষ্ট পেরিয়ে,বাস পাল্টে খুলনার স্টিমারে উঠতে বেলা গড়ালো। রেলিং ধরে ডেকে দাঁড়ালো সে,জল কেটে এগিয়ে যাচ্ছে স্টিমার আর সূর্যের থালাটা জলের মধ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বিকেলের কিনার ঘেঁসে। নাম কি নদীটার? নদী নয়রে,এ হল ভৈরব নদ। এখন চলো, সবাই মিলে খেয়ে নিই। কলা পাতায়, গরম ভাত,আলুভাজা, ডাল আর ইলিশ মাছ খিদে পেটে কি যে ভাল লাগলো। ঝিনি, শুতে চল। হেম, সানাকে নিয়ে কেবিনে ঢুকল। দাদাদের নিয়ে বাপি, চাদর বিছিয়ে ডেকেই বসেছে। এখানেই শুই না মা? দেখছো না কত অচেনা মানুষ শুয়ে আছে,বড় হচ্ছ, বোঝার চেষ্টা করো ঝিনি, মা চাপা গলায় ধমক দেয়। তালে আর একটু থাকি ? মা চলে যেতেই ছোড়দার পাশে টানটান হয় সে। খোলা আকাশে অগুনতি তারা, কাঁপছে, দুলছে, মিটমিট করছে। বাপি চেনাচ্ছে,ওই ধ্রুবতারা দেখে জাহাজের দিক ঠিক করত নাবিকরা। জিজ্ঞাসা চিনহের মত ওই সপ্তর্ষি, লালচে মঙ্গল গ্রহ ওটা,অই দ্যাখো জুপিটার, কালপুরুষের পাশেই বসে আছে,শিকারি কুকুর লুদ্ধক। খোলা হাওয়ায়, এঞ্জিনের আওয়াজে বাপির কথা ভেসে যাচ্ছে। ছায়াপথ ধরে আরও কতদূর সে যাচ্ছে, আচ্ছা,সবারই কি এমন হয়? এই যে দুরের মত কি এক অচেনা তার ভেতর ঢুকে পড়ছে,ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে তার চারপাশ,পরক্ষনেই ভরে উঠছে আবার, এ'রম লাগে সবার? একেই কি বড় হওয়া বলে?
স্টিমার থেকে নেমে ভোর ভোর ছই দেওয়া এক নৌকো চড়েছিল তারা। গনগনে সূর্য যখন মাথার ওপরে,সে নৌকো গেল চড়ায় ঠেকে। মা মাসির মুখ শুকিয়ে গেল। সানাকে দেখিয়ে বাপি বড় মাঝিকে বললো কিছু করুন দাদা,দুধের শিশু পর্যন্ত সঙ্গে, বোঝলামতো হগগলডি,করুম কি? জোয়ারের লাইগ্যা বইয়াই থাওন লাগব অহন। হইছেডা কি? ও মাজিবাই? নদীতে স্নান করছিল কিছু লোক, ছেলেপুলেরা ঝাঁপাই জুড়েছিল,কাপড় কাচা থামিয়ে বউঝিরা অবাক হয়ে দেখছিল। যাইবেন কই? নরের কাডি,রায় বাড়ি। অরে অই আলি,কুদ্দুস,বোলা দেহি হগগলরে,ঠ্যালতে অইব নাওডারে। মাজি বাই, গুন লইয়া ছ্যামরাডারে লামাইয়া দ্যান,অয় টান দিক। আট দশজন মিলে চড়া পার করে দিল তারা। বড্ড উপকার করলেন ভাই, কন কি? মোগো দ্যাশের জামাই আফনে। দুফ্যারে পোলাপান লইয়া দুগগা ডাইলবাত,বাপি হাতজোড় করে বলে, আবার আসব।
বুঝলেন অনির্বাণবাবু,দাদামনিকে ডেকে বাপি বলল,এই আমাদের দেশ। দানি বলে,সেরা দেশ, সোনার দেশ,ফলন্ত,ফুটন্ত বাংলাদেশ। বুড়ো আংলা থেকে ঝাড়ছে, ছোড়দা ফুট কাটলো।
ঠিক জায়গায় ঠিকঠাক ঝাড়াঝাড়ি খুবই ভাল আর কল্লোলবাবু,আরও ভাল,সেটা আপনি বুঝেছেন তবে মানুষ ছাড়াতো দেশ হয় না বাবা।
সোনার দেশই বটে,অন্যকে আপন করে নেবার মত,অন্যের বিপদে বুক দিয়ে আগলাবার মত মন আছে যাদের, সেইসব সোনার মানুষ নিয়ে এই দেশ,শুধু তাদের খেপিয়ে তোলে দুষ্টু কিছু লোক।
0 Comments