সুদেব কুমার ঘোষ
শরৎ
শুভ্র কাশের ঢেউ খেলিয়ে শরৎ এল বঙ্গে
মাথার উপর শুভ্র আকাশ বেড়ায় তারই সঙ্গে ।
স্বচ্ছ - জলের নদী বহে কল্লোলিনী স্রোতে
মৃদু - মন্দ বাতাস খেলে সবুজ ধানের ক্ষেতে।
ঘাসের আগায় শিশির পড়ে রবির কিরণ ঢালা
মুক্ত যেন গাঁথা আছে বিনি সুতোর মালা।
শিউলি বনে কমলা - সাদা রঙে রঙে রঞ্জিত
টগর মালতী কানাকানি করে সৌরভে সুরভিত।
আকাশে - বাতাসে আগমনী গান ধ্বনিত হয় সুরে
মা আসবেন তারই বার্তা সবার ঘরে ঘরে।
গ্রাম শহরে পুজোর কাজে ব্যস্ত সবাই লোকজন
ঘরে ঘরে চাঁদার সাথে সবারে করে আমন্
আনন্দেতে মাতবে সবাই বাজবে ঢাকির ঢাক
ব্যস্ত সবাই কেনাকাটায় পুজোর নতুন পোশাক।
কর্মচারীর মুখে হাসি পেয়ে পুজোর বোনাস
পুজোটা তাই জমবে ভালো পেয়েছে সে আশ্বাস।
গরীব লোকের যায় আসেনা পুজো কিংবা উৎসব
টানাটানির সংসারে তার নতুন পোশাক দুর্লভ।
🍂
টিভি দেখা
মায়ের ইচ্ছা সিরিয়ালে
বাবার ইচ্ছা খবরে ---
পুরনো দিনের সিনেমাতে
দাদু - ঠাকুমার নজরে।
হন্তদন্ত হয়ে ভূত
ধেয়ে এল তেড়ে ---
দাদুর হতে ছিল রিমোট
সেটা নীল কেড়ে।
বলে " সেকেলে সব বস্তাপচা ,
প্যানপ্যানানি কথা ,
নাচের কেমন ছিরি দ্যাখো ---
গানগুলি দেয় ব্যথা। "
মা এসে কয় হ্যাঁরে ভূত ,
নেইকী তোর পড়া ?
সারাক্ষণই কার্টুন দেখিস
মতি কি তোর ছন্নছাড়া ?
বাংলা ভূগোল ইতিহাসে
পাচ্ছিস কম নম্বর
গানিতেও তথৈবচ
নামবি নীচে সত্ত্বর।
গার্জেন কল হল সেদিন
শিক্ষকদের কক্ষে ---
মাথা হেঁট হল আমার
হীন সবার চক্ষে।
বাপের বাড়ির লোকজন সব
বলছে কত কথা ---
দিনে দিনে বাড়ছে মনে
পুঞ্জিভূত ব্যথা। "
দাদুর গলায় মিনমিনে সুর
বলে " কেন বকছ ?
একটু - আধটু দেখলে
কভু যাবেনা গয়ংগচ্ছ। "
মায়ের চক্ষু রক্তবর্ন
গলার সুর চড়া
বলে " তোমাদেরই অস্কারাতে
শিকেই উঠছে পড়া।
এগিয়ে সবাই ছুটবে যখন
তরতরিয়ে দূরে
দাঁড়িয়ে সবাই দেখব তখন
মাথা যাবে ঘুরে। "
দাদুর মুখ কাঁচুমাচু
ঠাকুমার চোখ ছলছল।
বাবা আছে নত শিরে
মায়ের অশ্রু টলমল।
পুজোয় গমন
গাজেন যাবে মামার বাড়ি
জিন্সের প্যান্ট পরে ।
মাসির বাড়ি যাবে শীতেশ
পাতাল রেল ধ 'রে।
এক্সপ্রেস ট্রেন চ 'ড়ে যাবে
পুটুর দাদা দূরে ---
টোটোই চেপে যাবে দুলু
কাছেই পিসির ঘরে।
এরোপ্লেনে উড়বে টুপাই
মুলুক ছেড়ে পুনে ---
স্যুট - বুট তাই কিনতে যাবে
বাবা - মায়ের সনে।
নান্টু এবার গোঁ ধরেছে
চড়বে না সে বাসে
খানা - খন্দে রাস্তা ভরা
প্রাণটি যাবে শেষে।
স্টিমারে সে যাবেই যাবে
পণ করেছে খগনা ।
জলের বাতাস খেতে খেতে
পোঁছে যাবেই কালনা।
রোপওয়েতে চড়বে মজাই
ব্রতীন এবং যতীন ।
আকাশ মাঝে থাকবে তারা
পুজোর ছুটির কদিন।
জাগাই মাধাই প্ল্যান করেছে
ছুটবে কাশের বনে
সাদা আকাশ ছুঁবে তারা
পন করেছে মনে।
তিন্নি বিন্নি বন্ধু দুজন
হলায় - গলায় মিল
ফেস বুকেতে দেখবে ঠাকুর
খুশ ভরেতে দিল।
পটলা ছুটে মাকে বলে
যাবই আমি শেষে
রকেট এনে দাওনা আমায়
যাবো চাঁদের দেশে।
0 Comments