সৌমেন রায় ও সন্দীপ দত্ত-র অণুগল্প
দর্পচূর্ণ
সৌমেন রায়
মুখে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে বিচারে বসেছেন যমরাজ।শাস্তি,পরজন্ম নির্দিষ্ট হয়েই আছে। খুচরো পাপগুলি ঘোষণা করে মজা করছেন। দেবতার খেয়াল!
সামনে এসে ঘাড় উঁচু করে দাঁড়াল পাঁচু। ‘পাঁচু, বলি তাহলে!’ যমরাজ বলেন।
‘ বলার কি আছে? মনে মনে পরস্ত্রীতে লোভ, দুচারটা মিথ্যে বলা ওসব সবাই করে।এই মাত্র আপনি বাতকর্ম করে চিত্রগুপ্তের নামে চালিয়ে দিলেন।তার বেলা?’
‘ ঠিক আছে,ঠিক আছে। তুই কি তোর জন্মভূমিতেই পুনর্জন্ম চাস? একটা অফার চলছে,তাই বলছি।
পাঁচু বললে , ‘আজ্ঞে,নূতন জায়গা,নূতন মানুষই আমার পছন্দ।‘ যমরাজ বললেন,’আচ্ছা, বউ এর কি করবি?’
‘বউয়ের পিলের ভয়ঙ্কর ব্যামোটা কি থাকবে?' যমরাজের মুখে বাঁকা হাসিটি ফিরে আসে। রোগ বালাই থাকলে মানুষের ভালোবাসা ফুড়ুৎ। বললেন, ‘ ধর, যদি থাকে।‘
‘তাইলে ওকেই দেবেন। আমি ছাড়া কে আর দেখবে!’
🍂
খবর
সন্দীপ দত্ত
ভিজে বাতাসের কামড় সহ্য করতে গিয়ে চোখে জল আসছিল রুমার। কিন্তু এটা কান্নার সময় নয়। সে এখন মরিয়া। তাকে একটা জায়গা খুঁজে নিতে হবে বসবার জন্য। সদাশিবজেঠুর কাছ থেকে কিনে নেওয়া একডজন খবরের কাগজ এখন তার হাতে ধরা। আজই প্রথম বাবার কাজ তার নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার দিন। বাবা আর কোনওদিন কাজে বেরোতে পারবে না। যে সাইকেলটা নিয়ে বাবা রোজ সকালে কাগজ ফেরি করত,সেই সাইকেলটার চাকা দাদা কাল দুপুরে লাথি মেরে বাঁকিয়ে দিয়েছে। বাঁশ দিয়ে মেরে ভেঙে দিয়েছে বাবার কোমর। ভেঙেছে ডান পা'টাও। সেই দাদা,যে সরকারি চাকরিজীবীর সুনাম নিয়ে পাড়ায় সমীহ আদায় করে রোজ।
বউছেলের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে রুমার বাবা নৃপেন,মা ইন্দিরা। এ গাঁয়ে যা আগে কোনওদিন হয়নি। এসব শহরে হয়।
0 Comments