জ্বলদর্চি

আমার অনুভূতিরা পর্ব - ৮(তিনটি কবিতা ) কলমে - সুবর্ণা নাগ

আমার অনুভূতিরা  পর্ব - ৮

(তিনটি কবিতা ) 
 সুবর্ণা নাগ 


বিদীর্ণ 

                 
অনন্ত যৌবনের বুকে 
আছড়ে পড়ে সহস্র মিসাইল,
যুদ্ধকাতর মাটিতে বসে 
মা শিশুকে দুগ্ধপান করায়!
 তৃপ্ত শিশু ডুকরে কেঁদে ওঠে।
সদ্যজাত ভয় দেখায় 
আসন্নকে , বলে যায়- 
'যদিও বেঁচে থাকি,
মৃত আগামীর কোলে শুয়ে 
দোল খাবো,
আকাশের দিকে দৃষ্টি আর 
পচা সবজির ঝোল খাবো।
তবু বোরখার নিচে আমার 
মাকে সুরক্ষিত দেখবো?
এখন ধূসর জন্মভূমি মুখরিত;
গোলার শব্দ শুনতে পাচ্ছ?
মাংসের দলা মানুষ অথবা বোবা! 
আমার জন্য আর কেউ অঙ্গীকার করে না ,
ধ্বংস স্তুপে, আবর্জনায় বসে 
দাহ্য নিয়ে খেলি। 
ছাড়পত্র ছিঁড়ে গেছে সেই কবেই' ।।



অভিমান, অভিযোগ নয় 

ব্যাক্তিগত আর কিছু নেই, 
সবটাই আজ খোলা পাতা,
সেদিন এক আকাশ বৃষ্টি
তুমি, আমি আর একটা ছাতা। 
গোপন ছিল রঙিন মোড়ক,
নীরব ছিল দেয়া নেয়া, 
আজ খবরে সবটা জাহির 
ডুবেই গেছে চিঠির খেয়া।
সেদিনের সেই উষ্ণ পরশ 
স্টেশনে সেই ছেড়ে যাওয়া -
আশা মাখা মন খারাপের 
আজ কেন গো বয়না হাওয়া?
অভিমানে দিন কাটতো,
রাত কাটতো সেই নালিশেই,
আজকে তুমি ঘুমিয়ে আছো,
এই তো আছো এক বালিশেই।
বাদ পরে যাক সব সংবাদ,চাই 
নুনের মতো আদর-সোহাগ 
অনুভূতির তারে বাধা 
প্রেমের রাগ ইমন, বেহাগ।।

🍂


রাখালরাজা..

পিরিত পিরিত নীল যমুনার জল!
সখী পা ভেজাস না।
ঐ কালো জলে কালো কানাই, 
করতে পারে এমন ছল।
সখী পা ভেজাস না।
পিরিত পিরিত নীল যমুনার জল!

অন্তর অন্তরে থাকে, 
সে যে বড়ো মায়াবী,
চোখের অমন নেশার ঘোরে 
কূল-মান সব হারাবি।

আঁধার রাতে  বাঁশির সুরে 
বৃন্দাবনে নাচবি চল।

পিরিত পিরিত নীল যমুনার জল, 
সখী পা ভেজাস না।
পিরিত পিরিত নীল যমুনার জল!

গোঠের রাখাল, নন্দ দুলাল 
যশোরানীর বুকের ধন, 
প্রাসাদ যে তার নিরুপম 
ব্রজবাসীর যতেক মন! 

 প্রেম দিয়ে যে যায় সে চলে, 
  ব্যাথা কোথায় রাখি বল?

পিরিত পিরিতে নীল যমুনার জল, 
সখী পা ভেজাস না।
পিরিত পিরিত নীল যমুনার জল!

Post a Comment

1 Comments