জ্বলদর্চি

বার্লিনের ডায়েরি-৫৫পর্ব/চিত্রা ভট্টাচার্য্য

সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকা

বার্লিনের ডায়েরি 
৫৫পর্ব      
চিত্রা ভট্টাচার্য্য 
(ভ্যাটিকান সিটির পরবর্তী অংশ )

বিশাল সিংহদুয়ারের বাধা পেরিয়ে পায়ে পায়ে ভ্যাটিকান সিটির অন্দরে প্রবেশ করে শ্রীময়ী এক মখমলী গাঢ় সবুজে ঘেরা কর্নার দেখে হাতের ম্যাপ খুলে সেখানেই বসে পড়েছিল। দূরে টাইবার নদীর স্বচ্ছ জলধারা তরতরিয়ে বয়ে যায়। বেপরোয়া ভেজা বাতাস নিরন্তর ছুটে এসে পাহাড়ের পাথুরে কোণে ধাক্কা খেয়ে জানিয়ে যায় সে আজো অতীতের মতই পুঞ্জীভূত স্মৃতির রাশি বুকে বয়ে বেড়ায়।  যদিও তীব্র শীতল হাওয়া বইছে কিন্তু মাথার ওপর মধ্যাহ্নসূর্যের প্রখর উজ্জ্বলতা ও বেশ আরামদায়ক। শ্ৰীময়ী মন দিয়ে ম্যাপ দেখে ঋষভ ও  তিতির কে বলে, মনে হচ্ছে আমরা রয়েছি উত্তর পশ্চিম রোমের ভ্যাটিকান পাহাড়ের ওপর ত্রিকোণ বিশিষ্ট এক ত্রিভুজাকৃতির  জায়গায়। 

  টাইবার নদীর পশ্চিম তীরে গড়ে উঠেছে এই ছোট্ট ছিমছাম সুন্দর ভ্যাটিকান শহর টি তাই ইটালীয়ানরা এই সিটি কে বলেন  '' সিটা ডেল ভ্যাটিকানো।''        দক্ষিণ পশ্চিমে পিয়াসা সান পিয়েত্রো বা সেন্ট পিটার চত্বর বাদ দিয়ে অন্য বাদবাকি চতুর্দিকে এই শহরটি মধ্যযুগ ও রেনেসাঁর সময় থেকেই নির্মিত উঁচু প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত করে ভ্যাটিকান সিটি কে রোম শহর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে দিয়েছে।

   ঋষভ উত্তেজিত হয়ে বলে একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেখো শ্রী --এই দেশের অভ্যন্তরে ঢোকার তিনটি প্রবেশ দ্বার  ব্রোঞ্জডোর ,আর্চ অফ দি বেলস ডোর , এবং সেন্টয়্যানে গেট ।  তিতির বলে আমরা যে সিংহ দুয়ার  দিয়ে ঢুকলাম তার ওপরে ইংলিশে ব্রোঞ্জডোর লেখা ছিল। এক উঁচু প্রাচীরের ধার ঘেসে ওরা এগিয়ে চলেছিল।একটু এগিয়েই দেখতে পেয়েছিল এখানে ও  রয়েছে আগের লাইন টি র ই অংশ খুব ধীরে লাইন এগোচ্ছে। অজস্র দর্শনার্থী এগিয়ে চলেছে তারা সকাল থেকেই অপেক্ষারত। 
ভ্যাটিকান সিটি

 এখানে গীর্জার উত্তরদিকে প্রশাসনিক সদনগুলো সারিসারি দাঁড়িয়ে রয়েছে।নিরাপত্তার বেষ্টনী তে পাসপোর্ট দেখিয়ে আইনি বিধির ঝামেলা উৎরে প্রাচীরের অভ্যন্তরে মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বিস্ময়ে তিনজনেই অভিভূত হয়ে গিয়েছিল।  শ্রীর মনে হোলো ওরা যেন এসেছে মর্ত্যের মানুষেরই নিজের হাতে তিলে তিলে  গড়ে তোলা এক স্বর্গের উদ্যানে। চলার পথে  চারিদিকে ছড়িয়ে আছে  সব বারোক ও রেনেসাঁ শিল্প শৈলীর অপরূপ ভাস্কর্য্য কালজয়ী স্থাপত্য। এই উদ্যানের পশ্চিমদিকে আছে ধর্ম গুরু পোপের সারিসারি প্রাসাদরাজি। এর পরেই রয়েছে ছোট্ট টিলার মত ভ্যাটিকান হিল টি সহ ভ্যাটিকান উদ্যান। সবুজ শ্যামলিমায় ফলে ফুলে সমৃদ্ধ এই দৃষ্টি নন্দন বেলেভেদিয়ার উদ্যানটির আয়তন প্রায় ৫৭ একর,পাশদিয়ে প্রবাহিত স্বচ্ছ ধারার সুনীল হ্রদটি । স্বনাম ধন্য শিল্পী দের সৃষ্টি ভাস্কর্য্য় গম্বুজ ও ফোয়ারা বাহারী সব পিয়াজ্জার সারি বা বিশালাকার  চত্বর দিয়ে সাজানো ভারী সুন্দর মন মুগ্ধকর পরিবেশ। সাথে রয়েছে এখানের সব চেয়ে প্রসিদ্ধ পিয়াজ্জা টি -- সেন্ট পিটারের ব্যাসিলিকা যা রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান গীর্জার প্রাঙ্গণ।                                                                                      
 সব শহরের গড়ে ওঠার  নেপথ্যে একটি  বিশেষ গল্প বা কাহিনী থাকে ভ্যাটিকান সিটির গড়ে ওঠার পিছনে ও একটি প্রসিদ্ধ গল্প প্রচলিত রয়েছে। ভ্যাটিকান সিটির পবিত্রতার সম্পর্কে শ্রীর বহুদিন আগে পড়া এক ঐতিহাসিক ঘটনা মনে পড়লে ঋষভ বা তিতির কে সে গল্প শোনানো -চাই ই -চাই ।

🍂

 তিতির বলে, তোমার ঐতিহাসিক গল্প বলো,শুনতে শুনতে রাস্তা চলতে থাকলে পথ আর লম্বা মনে হবে না। শ্রী ও বলা শুরু করে,-- অনেক কাল আগে, খ্রীষ্ট ধর্মের প্রবর্তনের সময়ের ও আগের থেকেই এই স্থান টুকুকে ভীষণ পবিত্র রূপে মানা হতো। কথিত আছে  , রোম নগরীর এই অংশ  টুকু তে কখনোই কোনো বসতি গড়ে ওঠেনি। এমন কি কোনো মানুষ ও কখনো চাননি এখানে বাসস্থান গড়ে তুলে সংসার পেতে বাস করতে।  রোমান সাম্রাজ্যের শাসন কালে এই স্থানে ফ্রিজিয়ান দেবী সিবেল এবং তার স্বামী আটিসের উপাসনা করা হতো। খ্রীষ্ট পূর্ব প্রথম শতাব্দীতে কোনো এক সময়ে আগ্রিপিনা দ্য এলডার এই পাহাড়ি অঞ্চল কেটে একটি বিশাল উদ্যান নির্মাণ করে ছিলেন। সেই থেকেই এই জায়গাটিকে বিশেষ পবিত্র বলে রোমান বাসীরা মনে করতেন। 

পরবর্তীকালে সম্রাট ক্যালিগুলা এখানে একটি সার্কাস তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যেখানে সম্ভ্রান্তবংশের বা সম্প্রদায়ের ক্রীড়া বা রাজাদের রথের দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। সম্রাট ক্যালিগুলার মৃত্যুর পর অসমাপ্ত কাজ সম্রাট নিরোর দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল বলে সেই সার্কাস টি কে নিরোর সার্কাস নামে খ্যাত ছিল । বর্তমানে সেখানে সেই ভ্যাটিকানের একটি মাত্র ভগ্নাবশেষ দেখা যায় "ভ্যাটিকান ওবেলিস্ক "যেই স্থাপত্যটি বহু প্রাচীন শতাব্দী আগে সম্রাট ক্যালিগুলা হেলিওপোলিস থেকে ভ্যাটিকানে নিয়ে এসেছিলেন।  

 লিখতে বসে শ্রী এক অদ্ভুত শিহরন অনুভব করে। ওর মনে পড়ে সেদিন গল্পের পাতায় পড়া  জায়গাটির কাছে ওরা গিয়ে কেমন রোমাঞ্চ অনুভব করেছিল। এখোনো ভাবলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে   জায়গাটিতে পৌঁছে ঋষভ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টি তে অনুসন্ধান করে। ওর মনে হয়েছিল সেখানের ঐতিহ্য সব শিল্প কর্ম স্থাপত্যগুলো এত প্রাণবন্ত সজীব যে স্পর্শ করে দেখবে সেখানে প্রাণের সঞ্চার রয়েছে  কিনা                                                                                                                    

 ভ্যাটিকানের  অনন্য সম্পদ  অশ্বক্ষুরাকৃতির কালো পাথর বাঁধানো প্রশান্ত, শান্তির প্রতীক  পিয়াজ্জা। অপূর্ব সুন্দর কারুকার্য্যময় অট্টলিকা সেন্টপিটার্স ব্যাসিলিকাটি ।  ১৬৫৬ সালে বিশ্বের এই অসাধারণ সুন্দর চত্বরটির নির্মাণের যে কাজ শুরু হয়েছিল এবং তার পূর্ণতা পেয়ে সমাপ্ত  হতে প্রায় এক যুগ লেগেছিল। এই ব্যাসিলিকার চত্বর বা সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারটি রেনেসাঁ যুগের এক অন্যতম স্মরণীয় শিল্পী বার্নিনির অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছিল। এরই এক মাথায় স্থাপিত সেন্টপিটার্স ব্যাসিলিকা ,দুইদিকে পরপর সাজানো সাদা ধবধবে গোলাকার থাম অৰ্দ্ধচন্দ্র বা অর্দ্ধবৃত্তের মত, দুইপাশে পরপর সাদা ২৮৪টি শ্বেত পাথরের চকচকে স্তম্ভ যার মাথার ওপর দাঁড়িয়ে আছে ১৪০ টি  ধর্ম যাজকের মূর্তি । শ্বেত পাথরের গোল গোল থামে ঘেরা চত্বর ,বড় দিনের উৎসবে যাকে টিভিতে বহুবার ওরা দেখেছিল। সেদিন হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে  প্লাবিত নীরব প্রার্থণার সংগীতে উদ্বেলিত হয়েছিল ভ্যাটিকানের আকাশ বাতাস।

এই প্রাঙ্গণটির অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে আরো একটি অপূর্ব সুন্দর  পৌরাণিক কারুকার্য্য খচিত অট্টলিকা  "প্রাচীন সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা " গীর্জার  যার সৃষ্টি কাল আনুমানিক  ১৪২৬ সালে। এরই বিশাল চত্বরের কেন্দ্রে  আকাশ ছোঁয়া বিশ্বের সব চেয়ে দ্বিতীয় তম উঁচু ওবেলিস্ক টি।সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে একটি স্তম্ভ ছিল "দ্য উইটনেস " ৮৪ফুট উচ্চতার এক ওবিলিস্ক স্তম্ভ টি। ২০০০ বছর আগে মিশর থেকে লুট করে আনা স্তম্ভ টির সাথে কুখ্যাত রাজা ক্যালিগুলা ও অন্যান্য আরো অনেক ঐতিহাসিক খল নায়কের  চরিত্র জড়িত।

শ্রী ভাবে পরীক্ষার সময় মুখস্ত করে মনে রাখলেও  আজ আর সে সব নাম মনে পড়ে না।গম্বুজ টির সামনে দাঁড়িয়ে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ  শ্রী ও অদ্রিজাদের মত আরো বহু দর্শনার্থী।  ঐতিহাসিকদের মতে প্রকৃত পক্ষে গীর্জাটি "গাইউসের স্মারক " এবং  মন্যুমেন্ট বা স্মৃতি স্তম্ভ টি হলো বহু বছর ধরে অর্জিত ইতালীয়ান শৈল্পিক শ্রেষ্ঠত্বের একটি অনবদ্য নিদর্শন। গীর্জাটি ইতালীর সবচেয়ে বিখ্যাত "শেফস- ডি- উভ্র্র" বা শিল্পী দের আবাস স্থল। যার মধ্যে ইতালীয়ান চিত্রকর মাইকেলেঞ্জেলোর "পিয়েতা" ভাস্কর্য্যটি আছে। আর এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী বার্নিনির শামিয়ানা "ক্যানপি "বেদীর ওপর স্থাপিত আছে।

ঋষভ ,শ্রী কে বলে  ভ্যাটিকানের মিউজিয়াম দেখতে অনেক সময় লাগবে। প্রথমে সে সব দেখে এসে রোড ম্যাপ অনুযায়ী ব্যাসিলিকা চার্চ দেখবো সব শেষে। এক জায়গায় বেশী সময় থাকলে চলবে না ,সব দেখতে হলে মাইলের পর মাইল রাস্তা হাঁটতে হবে , সময় খুবই কম। 

 চত্বরের আরেকটি পাশে রয়েছে  ১৬১৩ সালে শিল্পী বর্ণিনীর নির্মিত এক বিশালাকার অপরূপ সুন্দর উচ্ছল স্বচ্ছ নীল জলের ঝর্ণা ধারা। আজো সে পূর্ণ বেগে ধাবমান হয়ে নিরন্তর বয়ে চলেছে।                      অদ্রিজা বলে মা এইসময় কোর্ডিলিয়া থাকলে ছুটে গিয়ে ঝর্ণার জলে হাত ডুবিয়ে ওর ভাষায় বলতো হোলী ওয়াটার।  রোমের পথেপথে এবং পিয়াজ্জাগুলোতে ও দেখেছিলাম জলের ফোয়ারা ,জল রাখা থাকে রাস্তার ধার ঘেঁষে আর পাথর টি সরিয়ে দিলে অবিরাম উপচে পরে ঝর্ণার মত স্বচ্ছ বারি ধারা। অঞ্জলি ভরে সেই জল পান করে পিপাশা মেটায় পথচারি  শ্রান্ত  ক্লান্ত পথিকদল এবং মাতা মেরী তুষ্ট হন সন্তানের মুখে তৃষ্ণার জলটুকু সঞ্চার করে। খ্রীস্টান ধর্ম সংস্কৃতিতে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল পিপাসার্ত কে জল দান করা অর্থাৎ আসলে সে জল শুধু তৃষ্ণার বারি নয় দয়া মায়া প্রেম ভালোবাসা ভক্তি করুণার অনন্ত অমৃত পুণ্য ধারার প্রতীক জল বা ''য়্যাকোয়া বেনে দেত্তা " বা  হোলী ওয়াটার।  

শ্রী  ভ্যাটিকান সিটিতে ও দেখেছিল  পথের ধারে ও স্কোয়্যার গুলোতে সুন্দর প্রবহমান ঝর্ণার ধারায় অপরূপ সেজেছে নগরী। বেশ কিছুটা টা সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু কড়াচোখে সময় তাড়া করে বেড়াচ্ছে।  মিউজিয়াম দেখা শেষ হয়ে গেলে ফেরার পথে আবার এখানেই আসবো! কিন্তু গাইড ম্যাপ বলছে , এই পথে ফেরা যাবে না -এ পথ শুধু  প্রবেশের। ঘড়িবাঁধা সময় অনুযায়ী সব কিছুই এক ঝলক হলেও দেখতে পাবো,দ্বিতীয় বার দেখা মুস্কিল।      
                                                                                                                                                                                         আজ চলার পথে বারবার ক্যাপ্টেন মল্লিক, আলেক্সেই, ও কোর্ডিলিয়ার  কথা খুব মনে পড়ছিল। এই কদিন ভ্রমণ পথেরসাথী হয়েছিল ওরা, যাদের শ্রী  কোনোকালে ও চিনতো না। আজ তারা আসেনি , হৈচৈ তাই হচ্ছে না। যদিও এখানে উচ্চস্বরে কথা বলা নিষেধ ।  বিদেশীদের মধ্যে উচ্ছাস প্রকাশের প্রবণতা নেই । শ্রী ভাবে এত যে রাস্তায় বেড়ালাম আশে পাশের দর্শনার্থী কে দেখছি এরা নীরবে দেখে যায়। উচ্চস্বরে হাসি ঠাট্টার বিনিময় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলে ও তা খুব নীচুস্বরে। অদ্রিজা বলে ,আদবকায়দা ওদের সাথে মিশে আমি একটু শিখেলে ও  তোমারা  কিছুতেই  শিখছো না। শ্রী বলে ভারতীয় রা খুব উচ্ছাস প্রবন মিশুকে জাতি। মানুষ কে কাছে টেনে নিয়ে একসাথে চলার ক্ষমতা ভাতৃত্ব বোধ তাদের  চিরন্তন  প্রবৃত্তি। এই বিদেশী রা কয়েক জন ছাড়া সব্বাই বড্ডো গোমড়ামুখো। প্রাণ খোলা মানুষ নয়। 

ভ্যাটিকানের রাস্তায় দুপাশেই নানান মনিহারী জিনিস সাজিয়ে বিক্রীর আসর বসে গিয়েছে। রোমের অন্যান্য শহরের মত হকার দের যেমন দেখেছিলাম।  রোম ,ভ্যাটিকান সিটির মেমেন্ট , বিরাট বিরাট রঙিন ছবির পোষ্টার ,পোপেদের ছবি ,চার্চের গম্বুজের  চিত্র। হাতে আঁকা ছবিও আছে প্রাচীরের গায়ের দেওয়ালে টাঙানো , মাটিতে শোয়ানো। অন্যান্য শহরের মত ঘর সাজাবার জিনিস, সস্তার গয়না কানের দুল গলার হার ,ঘড়ি ,খেলনা ,সেল্ফিস্ট্যান্ড ,মনিপার্স বেল্ট ছাতা ইত্যাদি  কত কিছু সামগ্রী। রোমের অন্যত্র সব বেড়ানোর জায়গা গুলোতে হকার দের যেমন দেখেছিল।
পিয়াজ্জা রাতের সাজে।

 চলার পথে সদা কর্তব্য রত চমক লাগানো পোশাক ধারি বিচিত্র সাজসজ্জায়  সজ্জিত ভ্যাটিকানের সুইসগার্ড দের দেখে অদ্রিজা বলে এদের নাম দেখলাম লেখা রয়েছে  "পন্টিফিকাল সুইস গার্ড। '' সিটি রক্ষার ভূমিকায় এরা সর্বদা তৈরী থাকে। দেখ কেমন বিচিত্র সাজসজ্জায় সজ্জিত। এদের লাল নীল কমলা হলুদ ইউনি ফর্ম কেমন হাস্যকর জোকারের মত। একদৃষ্টে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছে। পোশাক গুলো দেখতে রেনেসাঁস যুগের মত। ঋষভ এতক্ষণে বলে " ১৫০৬ সাল থেকে এরা ভ্যাটিকান সিটি কে পাহারা দিচ্ছে।  মধ্যযুগে সুইৎজার ল্যান্ড থেকে এই সব সৈন্যদল ভাড়া করে আনা হতো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। পনেরোশো শতকে এরা পোপের সুরক্ষার দায়িত্বে ভ্যাটিকান সিটি তে নিয়োজিত হয়েছিল। এবং এই সৈন্য দলের নির্বাচিত ব্যক্তিদের এখনো সবাইকে সুইৎজারল্যান্ড বাসী হতে হবে। এদের বয়স ২৫থেকে ৩০এর মধ্যে হলেই সৈন্য পদে যোগদান করতে পারে। এরা নানা লড়াই গৃহযুদ্ধের মোকাবিলায় সোৎসাহে আজো ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্তের জন্য ও দ্বিধা করেনা আত্ম বলিদানে। ভ্যাটিকান সিটির রক্ষীর ভূমিকায় এরা সর্বদা তৈরী থাকে এবং পোপের দেহ রক্ষী রূপে লড়াইয়ে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। রাষ্ট্র ও প্রভুর রক্ষায় এরা নিবেদিত প্রাণ। শোনাযায় এদের এই  পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে মাইকেলেঞ্জেলো ও রাফায়েলের  আঁকা নক্সার আদল থেকে ।                                                                                                     ক্রমশ

Post a Comment

0 Comments