জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /পারমিতা রায়

গুচ্ছ কবিতা 
পারমিতা রায়
      
      
চলার পথে 
 
চলার পথে অনেক প্রিয় সঙ্গীই হারিয়ে যায়, 
ক্ষণিকের পথ চলা হলে ফোরায় সাথীর হাত ধরা, 
পথের ধুলো পরে থাকে পথের বাঁকে, 
থাকে একলা আকাশ, 
থাকে এক চিলতে রোদ্দুর, 
অনেকের ভিড়ে, 
যখন চাইনি প্রিয় সঙ্গীকে, 
একলার আকাশে 
আর নেই সেই 
সঙ্গীর হাতখানি, 
সুন্দর পৃথিবীতে, 
অনেক সৌন্দর্য
দূর থেকেই মুছে যায়, 
ছোঁয়া পাওয়া যায় না 
সেই সৌন্দর্যতার, 
কর্মরত ব্যস্ত জীবনে 
আমরা ভুলে যাই, চাওয়া-পাওয়ার 
বাইরের , নির্মল সুন্দর কোমল জীবনযাত্রাকে, 
 মানুষের ভালোবাসাকে।
অর্থ সম্পদ , সবই থেকে যায় 
 ফুরিয়ে যায় ভালোবাসা, 
হাতছানি দেয় একাকীত্ব। হাতছানি দেয় 
একার নীল আকাশ।।

     
পিতার ছায়া 

পিতার  ছায়া , সারা জীবন আগলে রাখে কন্যা সন্তানকে 
পিতার ছায়া অত্যন্ত দৃঢ়, 
অত্যন্ত মধুর, খুবই সংবেদনশীল, যার দৃষ্টান্ত কোথাও মেলা ভার, 
পিতা এক অদৃশ্যমান শক্তি 
পিতৃক্রোড়, এক ভয়হীন ভরসা, ছায়া, পিতৃক্রোড় এক আগলানো,শীতল আচ্ছাদন, গভীর  ভালোবাসা, নির্ভেজাল ভালবাসা, যার তুলনা সে নিজেই মাত্র।
পিতৃহীন দিনগুলি 
শূন্যতায় ভরা প্রতিদিন।
প্রতি মুহূর্ত চায় 
পিতার আলিঙ্গন, 
পিতার নিঃস্বার্থপর, ভালবাসা, পিতার স্নিগ্ধ ছায়া পিতার নিষ্পাপ,
নিঃস্বার্থপর ভালোবাসা,  অমূল্য, অবর্ণনীয়।।
              

🍂

    

বন্ধুত্ব কি
   
 বন্ধুত্ব মানে কি, 
 তা নিয়ে অনেকের মনে অনেক রকম প্রশ্নই জাগে। আমার কাছে, বন্ধুত্ব মানে একটা খোলা জানলা, বন্ধুত্ব মানে এক প্রাণ খোলা আকাশ , এক প্রাণ         খোলা বাতাস, বন্ধুত্ব মানে আমি যেমন আমাকে সেভাবেই গ্রহণ করে নেবে অপরজন। 
বন্ধুত্ব মানে আমার কাছে 
একটা খোলা বারান্দার মত, 
যেখানে আমি গরমের সময় 
খোলা হাওয়া খেতেও যেতে পারবো, আবার বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ শুনবার জন্যও দাঁড়াতে পারবো, শীতের সময় মিষ্টি রোদ পোহাতে যেতে পারবো। বন্ধুত্ব আমার কাছে, যেখানে আমাকে কোন কিছুর রাখঢাক করতে হবে না, যেখানে আমি নিজেকে নিজের 
মতো করেই প্রকাশ 
করতে পারবো।।

বাবার জন্মদিনে 

আরো কিছুদিন থেকে গেলে পারতে বাপি, কত কথা বলার ছিল , এক বুক ব্যথা, জমা করে রেখেছি। কথা বলার সঙ্গী নেই আজ তোমাকে হারিয়ে। কোথায় আছো জানি না তা, কেউ আর আজ চুল আঁচড়ে দেয় না, কেউ নতুন জামা বের করে বলে না এটা ভালো লাগবে পরলে, কেউ ডাকে না শুকনী বলে, তোমার ডাকটা একবার শুনতে মন হয়। তোমার গলার স্বরটা সব সময় যেন ডাকে। আমি জানি তোমাকে নিশ্চয়ই কেউ আবার মত করেই আগলে ধরে রেখেছে, ভালোবাসায় রেখেছে। দোকানে লুঙ্গি দেখলেই মনে হয় তোমার জন্য তিন চারটে কি দেরি কিন্তু মনে পড়ে যায় তুমি তো নেই। ছোট সরু সুন্দর চিরুনি আর, ছোট্ট আয়না দেখলে মনে হয় নিয়ে যাই সাথে করে কিন্তু তখনো মনে পড়ে যায় তুমি তো পাশে নেই ‌আর। 
সন্ধ্যেবেলায় মনে হল পোস্ত দিয়ে ভাত খাই , তুমি কত ভালবাসতে পোসতো দিয়ে ভাত, খেতে, আর শেষ পাতে দুধ ভাত পোস্ত, সেই মনে পড়ে যায়। কত মিষ্টি থাকতো ঘরে, দরবেশ, রসগোল্লা  নারকেল নাড়ু, মিষ্টি দই কত কি. আজা আর মিষ্টি অতো থাকে না ঘরে। তোমাকে আর একবারটি দেখতে ইচ্ছে করে বাপি। জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। আরো কিছুদিন থেকে যেতে পারতে। তুমি তো ঠাকুরের কাছেই আছো, ঠাকুরকে জানিও এ জন্মে  না হোক পরের জন্মে যেন আমাদের দেখা করিয়ে দেন। 
এখানে আছো সেখানে ভালো থেকো তুমি, তোমার পথে অনেক আলো থাক অনেক ভালোবাসা থাক। খুব ভালো থেকো, তুমি আনন্দে থেকো।
প্রণাম নিও।

Post a Comment

0 Comments