বার্লিনের ডায়েরি
৬৬ পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য্য
(সমাধি নগরী পম্পেই এর পরবর্তী অংশ )
ইতিহাস থেমে থাকেনি প্রলয়ঙ্কর ধ্বংসের শেষে জীবন জাগলো অপরূপ প্রত্যাশায় নতুনের ছন্দে। অগ্নুৎপাতে বিলীন সমাধি নগরের সেই বীভৎস পুরানো স্মৃতি কে সম্পূর্ণ মুছে ফেলে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে আগ্নেয় পাহাড়ের পদতলে গড়ে উঠেছে আধুনিক শহর --নতুন পম্পেই। কালের যাত্রার গহ্বরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া মৃত নগরীর আর্তনাদ বুকে বয়ে ,তীব্র হাহাকার ক্রন্দনের নীরব সাক্ষী থেকে শান্ত স্বচ্ছতোয়া সারনো নদী ছলো ছলো চোখে আজও আপন বেগে ছলাৎ ছল শব্দে নিরবধি বয়ে চলেছে। সে ভেসে যায় প্রবাহ ভেঙে শাখা প্রশাখায় নিরুদ্দেশে পরিবর্তনের স্রোতে। সদ্য গাইডের চাকরিতে নিযুক্তা সুন্দরী মিস ব্রানটা দূরের দিকে তার মৃনাল ভুজের মত ডান বাহু টি প্রসারিত করে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের তাণ্ডব লীলার মর্মস্পর্শী কাহিনী বর্ণনা করেছিল।
ওর আবেগে ধরা গলায় প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পম্পেই নগরীর নির্মূল হয়ে ছাইয়ের স্তুপে পরিণত হওয়ার অত্যাশ্চর্য্য রোমাঞ্চকর ঘটনা শোনার আগ্রহে সব দর্শকের নীরব প্রতীক্ষা। ব্রানটা বলে অভিজ্ঞ ,বিদ্যজনের মতে সমৃদ্ধশালী রূপসী নগরীর ছাইয়ের স্তুপে পরিণত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বিস্তর পাপাচার। ইতিহাসের তথ্য ঘাটলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখাযায় ,ব্যভিচার, সমকামিতা ও পতিতাবৃত্তির কারণে অতীতে বহুজাতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞজনেদের মতে এই বিলাসী পম্পেই নগরের অধিবাসীরা নির্দ্বিধায় ঘোরতর পাপাচারে লিপ্ত ছিল। সর্বদা মত্ত ছিল অসহনীয় ব্যাভিচার দুরাচারে। বিশ্বস্রষ্টা অলক্ষ্যে থেকে তাঁর সৃষ্টির এই অবমাননা সইতে পারেন নি তাই প্রকৃতির রোষ নেমে এসেছিল এ শহরের ওপর বিধাতার অভিশাপ হয়ে । ধ্বংসের করাল গ্রাসে নিমেষে ছারখার হয়েছিল ২০০০বছরের পুরোনো পৃথিবীর প্রাচীনতম অভিজাত জনপদগুলির অন্যতম পম্পেই। মৃত নগরীর সিংহদুয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে নিয়মাফিক সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় এই বিখ্যাত নগরের রোমহর্ষক আদি ইতিহাস বিশ্লেষণ করেছিল মিস ব্রানটা।
পম্পেই নগরীর ধ্বংসাবশেষ
ইতালির তৎকালীন রাজা ওস্কান খ্রীষ্টপূর্ব ছয় থেকে সাত শতাব্দীতে এই শহরের গোড়াপত্তন করেছিলেন। এরপরে ইউরোপে সংঘটিত বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতা দখল ও রাজনৈতিক দ্বন্দ যুদ্ধ বিগ্রহের ফলস্বরূপ খ্রীষ্টপূর্ব ৮০ শতাব্দীতে এই শহর রোমান সাম্রাজ্যের দখলে এলে এখানে গড়ে ওঠেছিল রোমানদের অন্যতম শিল্পবন্দর। ভূমধ্যসাগরের উপত্যকায় সুপ্ত আগ্নেয়গিরির পাদদেশে নেপলস শহরের পাশে সমকালীন বিশ্বের অন্যতম বিলাস ব্যসন ও বৈভবে পূর্ণ সমৃদ্ধশালী শহর পম্পেই পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছিল রোমান এবং গ্রীক বণিকদের ব্যবসা বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র। এবং ধীরেধীরে বিশ্বখ্যাত হয়েছিল শ্রেষ্ঠ তম বিলাস বহুল বিনোদন নগরীর পরিচয়ে। শ্রীময়ী তন্ময় হয়ে শুনছিল তার এক লহমায় ধ্বংসের মর্মান্তিক ইতিবৃত্ত ।
🍂
সেই মুহূর্তে বহু শতাব্দীর পথ পেরিয়ে শ্রী তুরন্তগতিতে মানস কল্পনায় পৌঁছে গিয়েছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত প্রাচীন নগরীর রুদ্ধদ্বারে। এক মর্মস্পর্শী হৃদয়বিদারক ছবি ওর মনের ক্যানভাসে আঁকা হয়ে যায়। বীভৎস এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য ওকে তাড়িয়ে বেড়ায়। শহর নগর জনপদ উজাড় করে ক্রমশঃ ভলকানিক অ্যাস তথা ছাইয়ের স্তূপে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ছে চারিদিক। বিষাক্ত গ্যাসের কুন্ডলী পাকানো কালো ধোঁয়ার রাশিতে অসময়ে অন্ধকার নেমে এসেছিল পৃথিবীর বুকে।
মৃত নাগরিক
''ঘুমন্ত ভিসুভিয়াস রাগে ফুঁসছে। তার প্রবল গর্জনে শতশত দুরন্ত লেলীহান অগ্নিশিখা সহস্র নাগিনীর মত উদ্ধত ফণা তুলে তড়িৎগতিতে সর্বস্য গ্রাস করে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে ছুটছে। ধরণী ধূলিকণার ওপর প্রতি মুহূর্তে প্লাবিত হয়ে আছড়ে পড়ছে ফুটন্ত তরল লাভার স্রোত দিকে দিকে সহস্র ধারায় তীব্র গতিতে প্রবাহিত হয়ে পলকে ঢেকে ফেলছে চতুর্দিক। একে একে শহর নগর জনপদ উজাড় করে ক্রমশঃ বায়ুমন্ডল জুড়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল শ্বাসরোধ কারী অজানা গ্যাস। দমবন্ধ হয়ে দিশাহীন ভয়াৰ্ত মানুষেরা পালাবার পথ পায় নি। মুহূর্তে ঢলে পড়েছে মৃত্যুর কবলে। বহুদূর ব্যাপী আগ্নেয় গলিত লাভা আগুনের শিখা ও গ্যাসের ধোঁয়ার আবর্তে সুদূর প্রসারিত হয়ে নির্দয়ের মত নিঃশেষে কেড়ে নিয়েছিল প্রাণবায়ু ,অসহায় সেই মানুষগুলোর অন্তিম নিশ্বাস। '
মিষ্টার অড্রিনের মনে অনেক প্রশ্ন ভাঙা ভাঙা ইংলিশে কত কিছু বলতে চাইছে ওর স্প্যানিশ টোনে। শ্রী বা ঋষভের বোধগম্য হয় না কিন্তু মিস গাইড ঠিক বুঝে নিয়েছে। সে বলে তোমরা কিছুতেই অনুমান করতে পারবেনা ভয়াবহ সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা।
সেই দুর্বিষহ ভলকানিক টানাপোড়নের সময় ভিসুভিয়াস পর্বতের আগ্নেয়গিরিতে শুরু হয়েছিল ক্যাটাস্ট্রোফিক অগ্নুৎপাত। পর্বত মুখ থেকে আগুনের গোলা আর অগ্নিবৃষ্টি লাগাতার ঝরে পড়তে থাকায় নিমেষে কেড়ে নিয়েছিল এই শহরের ২০ হাজার তরতাজা নাগরিক প্রাণ। এক মর্মস্পর্শী হৃদয় বিদারক স্পষ্ট ছবি কল্পনায় মনের ক্যানভাসে ভেসে উঠেছিল। কোনো কোনো ঐতিহাসিক ভূতত্ত্ববিদের মতে প্রথম দফায় টানা আঠের ঘন্টা পিউমিস রেইন চলেছিল এবং ১৩ থেকে ২০ফুট পর্যন্ত ভলকানিক অ্যাশ এবং পিউমিস স্টোনে পুরু ছাইয়ের প্রলেপে স্তরেস্তরে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল সমগ্র অঞ্চল । ভূতাত্ত্বিক দের মতে সাধারণতঃ কোনো অঞ্চলে অগ্নুৎপাতের কিছুক্ষণ আগে ঐ অঞ্চলের পশু পাখিদের আচরণের মধ্যে এক ধরণের পূর্ব সংকেত লক্ষ্য করা যায়।পম্পেই শহরে আগ্নেয়গিরির এই জাগরণের বেলায় তার কিছুই সম্ভাবনা পাওয়া যায় নি।পরপর দুই দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ৬০থেকে ৭০ ফুট অগ্নির লাভা আর ছাই ভস্মের নীচে বিলীন হয়ে গিয়ে নিমেষে জীবন্ত সমাধি হয়ে ছিল অপামর শহুরে জীবনের সাথে প্রাণী ও উদ্ভিদসম্ভারের। বন থেকে বনান্তর ,নদ নদী ছাড়িয়ে সাগরের মধ্যে ও প্রায় নয় মিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছিল আগ্নেয় লাভার গলিত তরল পদার্থ।
শ্রী বাকরুদ্ধ হয়ে ঋষভ ও তিতির কে বলে আমরা যেন ইতিহাসের তীর্থপথে অজানার সন্ধানে চলেছি। পলেপলে দেখছি প্রতিটি পথের বাঁকে গভীর রহস্যের আদিম গন্ধ জড়ানো। গা ছমছম করা শিহরিত দৃশ্য। সেই প্রাচীন যুগের মৃত মানুষের মমি হয়ে যাওয়া নিশ্চল সব মূর্তি। তাঁরা প্রাণহীন দেহ নিয়ে কেউ শুয়ে,কেউ বা ঘুমিয়ে ,কেউ বসে কেউ বা দাঁড়িয়ে আপন কর্মে ব্যস্ত। একঘরের দাওয়ায় দেখা গেল যুবতী মা তার শিশুটিকে নিয়ে মগ্ন। পরম নিচিন্তে মাতৃ ক্রোড়ে শিশুটি স্তন্য পানে রত। কেউ বা তখন পরিবারের সদস্যদের সাথে দ্বিপ্রাহরিক ভোজনে ব্যস্ত। ডিনার টেবিলে সারি সারি প্লেট সাজানো। কারো বা হাতে ধরা বড়ো পাউরুটি , ছুড়ি দিয়ে টুকরো করছিল । বাটিতে স্যুপ প্লেটে স্যালাড,ডেজার্ট স্যান্ডউইচ , রান্না মাংস ডেজার্ট অবিকল যেমন ছিল। সবই আছে একবারে নিটোল পূর্ববৎ শুধু সেই সময়ের মানুষগুলো জড়বৎ প্রাণহীন মূর্তি ,পাথরের স্ট্যাচু তে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এই দৃশ্য ভারী মর্মান্তিক অদ্রিজা ,ইরিনার চোখ ভরা জল, মুখে গভীর বিষাদের ছায়া। শ্রী স্তব্ধ হয়ে ভাবে কি নির্মম এই প্রকৃতির খেয়াল। মৃত দেহের গায়ে জড়ানো গরম জামা,কাপড়ের পোশাক এবং ব্যবহারিক জীবনের নানা প্রমান দেখে বিজ্ঞানীরা সহজেই অনুমান করেন এই ভয়াবহ তান্ডব লীলার সময় টি ছিল কোনো শীত কালের দ্বিপ্রাহরিক বেলা।
প্রতিদিনের রোজনামচায় শ্রী সেদিন রাতে লিখেছিল--- ''এই শহরের পথ পরিক্রমায় পম্পেই এবং হারকুলেনিয়ামের অমলিন দৃশ্য। রাস্তার পাশে বাসভবন সুদৃশ্য বিপণির কেন্দ্র। দোকান বাজার সরাইখানা খাবার ঘর শোবার ঘর বিছানা আসবাব পত্র রান্নাঘর উনুন ও রান্নার পাত্র। পান্থনিবাসে বিশ্রামের খাট এবং দেওয়ালের লিখনে এখনো জেগে আছে তখনকার নির্বাচনের খবর , বিদ্যাচর্চার পরিচয়। আগন্তুকদের হাতে লেখা মন্তব্য ইত্যাদি যা কিছু নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে সবই দৈনন্দিন জীবন যাত্রার প্রয়োজনীয়। মনেই হচ্ছে না যে এই ঘটনাগুলো ঘটেছিল ২০০০ বছর আগের এক প্রাচীন পৃথিবীতে। মুছে যাওয়া অতীতের নীরব সাক্ষী হয়ে চাপা পড়েছিল আগ্নেয়গিরির রাশাকৃত ছাইয়ের পাহাড়ের তলে। আর ধনী বাড়ির প্রাচীরের গায়ে আঁকাছিল সুখী মানুষের দিনযাপনের ছবি। ''
পাথরের বাঁধানো পথে সাবধানে পা ফেলে এগিয়ে চলার সময় ঋষভের চোখে পড়েছিল অদ্ভুত সব অক্ষরের দেওয়াল লিখন। ইরিনা বলেছিল এটা ল্যাটিন ভাষায় লেখা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিজ্ঞাপন। কাছেই ছিল এক প্লাজা ওপেন থিয়েটারস্টেজ এবং ক্রীড়া প্রাঙ্গণ। সারিসারি স্তম্ভ পলেস্তরা খসে পড়া দেওয়াল এখোনো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশালাকার অজস্র মন্দির। তিতিরের বিস্ময়ের ঘোর কাটেনা,বলে এতকাল পরেও ছাদগুলো কত মজবুত ! পাথুরে পথে গরু ঘোড়া গাধা বা খচ্চর জাতীয় প্রাণীতে মালবাহী গাড়ি টানা ভারী গাড়ির চাকার ঘর্ষণে কয়েক জায়গায় অগভীর গর্ত। সারা রাস্তাজুড়ে রয়েছে তার নিদর্শন।
গাইড সাহেবা বলেন ,এইখানে যত দেওয়াল লিখন বা পাথরের ফলক লিপি পাওয়া গিয়েছে সবই ল্যাটিন ভাষায় -- সে কারণে ঐতিহাসিক দের পক্ষে সামাজিক নিয়ম কানুন রাজনৈতিক তথ্য পাঠোদ্ধার করে ইতিহাস জানার কাজটি ও খুবই সহজ হয়েছিল । আরো একটু এগিয়ে এক সুবিস্তীর্ণ বিশাল খোলা প্রাঙ্গণের এক টুকরো সবুজের মাঝে শ্রী দাঁড়িয়েছিল। দূরের দিকে নজর পড়তেই ঋষভ কে হাতের ইশারায় দেখায় আকাশের দিকে মাথা তুলে নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে আছে সুদূর বিস্তৃত নীলাভো মেঘে ঢাকা আপাতঃ নিরীহ সুপ্ত পাহাড় । গভীর ঘুমে অচেতন বিধ্বংসী কর্ম কাণ্ডের নায়ক হয়ে আবহমানকাল ধরে এখন শান্ত --সগৌরবে বিরাজমান।
ভস্মিভূত পম্পেই এর মানুষ।
কথার মাঝে ব্রানটা হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়ে তার মাথা ভরা সোনালী চুলের গুচ্ছরাশি নাড়িয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বলে সেকালে সংস্কৃতির একটি প্রধান গুরুত্বপূর্ণ চর্চার বিষয় ছিল দেবতাদের উপাসনালয়। সেই সময়ের পম্পেই নগরীর বেশীর ভাগ দেবদেবী ও ধর্ম বিশ্বাস প্রাকৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। তাদের উপাস্য দেবতা ছিলেন প্রাকৃতিক পাহাড় ,নদী আগুন ,সূর্য ,চন্দ্র ,বজ্র বিদ্যুৎ বৃষ্টি আকাশ ভূমি জল মাটি ইত্যাদি। এ নগরীর চারদিকে ঘিরে আছে বিভিন্ন দেবদেবীর উপাসনালয়। গ্রীকদের আকাশের দেবতা জিউসের এবং তার পাশেই মিশরীয় ধর্ম বিশ্বাসে মাতৃত্ব ,যাদু এবং উর্বরতার দেবী আইসিসের টেম্পল রয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব দুই শতকে নির্মিত সৌভাগ্যের দেবতা জুপিটারের মানে বৃহস্পতির মন্দির। যত টেম্পল দেখা গেল সবই প্রায় অনেকটা একই রকম ভগ্নপ্রায় , দেওয়ালের প্লাস্টার খসে গিয়েছে । তবে দেবালয়ের অভ্যন্তরে দেব দেবীর মূর্তিগুলো অক্ষত সাজানো অবিকল যেমন প্রাচীন কালে ছিল । পূর্ব দিকে গ্রীকদের প্রধান উপাস্য দেবতা এপেলো অর্থাৎ সূর্য দেবের মন্দির। ঐতিহাসিকদের মতে খ্রীষ্টপূর্ব ছয় শতকে এটি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই মন্দির টি ধ্বংস প্রাপ্ত হলে ও বারেবারে এই মন্দিরগুলোকে নতুন আঙ্গিকে পম্পেইয়ের সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে সযত্নে গড়ে তোলা হয়েছিল। ভগ্নপ্রায় ইটবালি খসে পড়া দেব দেউলের মাঝে জুনো এবং গ্রীকদেবী মিনার্ভার মন্দির। ইরিনা ও অদ্রিজা ঘুরেঘুরে মন্দির দেখতে শুরু করলে শ্রী ও ঋষভ ওদের অনুসরণ করেছিল।
পথে চলতে কালোপাথরের টুকরো টি কুড়িয়ে নিয়ে ঋষভ বলে ২০০০বছরের প্রাচীন নগরীর স্মৃতিটুকু আমার এ পথে চলার পাথেয় হয়ে রইলো। আশ্চর্য্য লাগছে শ্রী ভাবতে ,দুই থেকে তিনশো বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কার্য্যের ফলে আবার নতুন সূর্যালোক দেখতে পাচ্ছে এক প্রাচীন সভ্যতা। জেগে উঠেছে রাস্তাঘাট দোকানপাট ,পান্থ শালার সাথে তৎকালীন মানুষের নির্মিত ঘরবাড়ি। পম্পেই শহরের অধিকাংশ স্থানের উদ্ধারকার্য সম্ভব হয়েছে। ক্রমশঃ তারা কবর থেকে উঠে আসছে আর একবিংশ শতাব্দীর মানুষ অবাক বিস্ময়ে দেখছে খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে কেমন ছিল সেই শহর? সেই পুরাতন সভ্যতার অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবনের কান্নাহাসির গল্প।
1 Comments
এ এমনই লেখা, শুধু মনে হয় আরও পড়ি আরও জানি।
ReplyDelete