জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা- ২০/ শুভশ্রী রায়


গুচ্ছ কবিতা- ২০/ শুভশ্রী রায়

চির অসমাপ্ত

সোহাগী গোলাপির আভায় ফুটে ওঠার আগেই আমাদের ফুরিয়ে যাওয়া বিকেল,
অবুঝ একতরফা প্রেমের আখ্যান, 
আমাদের শেষ না হওয়া কবিতা,
সব কিছু, সমস্ত ঘোর;
যা যা ব্যথায় জীবন ভরে দিয়েছিল এক সময়,
আজ দেখি সবচেয়ে বড় সম্পদ তারাই....

অনিচ্ছায় ফুরিয়ে যাওয়ার পর,
পূর্ণতাকে বেদনার আনাচেকানাচে খুঁজে খুঁজে কখনো পাইনি 
তবু বেদনাময় অন্বেষণ থেকেই কয়েকটা পঙক্তি কলম থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে 
আর জীবন একটু একটু করে সৃজনের উপাখ্যান হয়ে উঠেছে;
চির অসমাপ্ত সুন্দরের অভিমুখী এক আয়োজন। 



পুনর্নবা 

পৃথিবী ভেদ করা আলোকরশ্মিটি কোথাও তো নিশ্চয় যায়,
কোনো গন্তব্য নিশ্চয় আছে তার
তবে এই গ্রহের জন্য আদিমায়া সে নিশ্চয় নিয়ে যায় সঙ্গে করে,
পৃথিবী ফেরত হাওয়াও নিজের মতো গন্তব্য অভিমুখী;
ফিরে গিয়েও তাদের মনে পড়ে
আমাদের পার্থিব দুনিয়াকে,
দূরে থাকতে পারে না চিরকাল;
ঘুরেফিরে আসে,
মরশুমি ছুঁচের ফোঁড়ে প্রকৃতির কাঁথায় বাহার আনে;

পুরনো নতুন হয়,
নতুন পুরনো রূপ নেয় ঘুরেফিরে আসার জন্য!



ভুল ভাঙার পর

বিনা আয়োজনে উৎসব করব,
চার দিন পর রোদ উঠেছে আজ,
ঘরে আমার ছায়ার ওপর একটা পাখি এসে বসেছে,
হৃদয়ের হ্রদে বেশ কয়েকটা ভারহীন নৌকো কোথাও না যাওয়ার জন্য রওনা দিল যে!

আলোবাতাসের সঙ্গে এই লুকোচুরি,
জগতের এমন বিচিত্র আল্পনা ক্ষণে ক্ষণে,
এর চেয়ে বেশী কী চেয়েছিলাম?
যদি বা চেয়েওছিলাম নিশ্চয় ভুল করে!



বিরহের দিনগুলো

বিরহের দিনগুলো নিজে থেকে কবিতা হয়ে যায়,
কবিতা আর বিরহ পরস্পরের মধ্যে মগ্ন,
কী করবে, কোথায় গিয়ে মিলবে বুঝতে না পেরে
শব্দের পর শব্দ বসে থাকে গালে হাত দিয়ে,
একেকটা পংক্তিতে মেঘ করে;
এলোমেলো ক্যালেন্ডারের শেকল।

সময় কবিতায় মিশে কেমন মেঘলা.........
কোনো কোনো অভিমানী শব্দের চোখ থেকে দুয়েক ফোঁটা বৃষ্টি নেমে আসে,
একেকটা পংক্তি শুষে নেয়;
নিজের ভেতর মেঘের শোক,
বিরহের তাপ নিয়ে কবিতা ভারভার শ্রাবণ আকাশ-
বর্ষা নামাতে আকাঙ্খী আগাগোড়া খটখটে তারিখেও।

🍂

Post a Comment

0 Comments