কবি, তোমার দেওয়া কৈফিয়তের এত বছর পরে,
সমাজটা আজও তেমনই আছে, যেমন গিয়েছ ছেড়ে।
হয়তো কাঠামো গেছে একটু আধটু বদলে,
কবিতা নিয়ে আঁতেলপনায় আজও সবাই মেতে।।
নতুন কবি আজও নবিশ, হাসাহাসির পাত্র —
"আরে, কবিতা লিখছ যে বড়!
পড়েছ ক'টা বিলেতি কাব্য?
কিম্বা কতদূর পড়ালেখা? ক'টা দিয়েছো পাস?
কবিতা লিখতে চালচলন চাই, সব এলিট ক্লাস!"।।
ঢুকতে গেলে তাদের দলে বুঝতে হবে রয়্যালটি,
তাদের হাতেই রয়েছে যেন কবিতা লেখার পেটেন্টটি।
থাকতে হবে অবশ্যই দু-চার মেডেল, ডিগ্রি,
বসার ঘরে গীতবিতান আর সঞ্চয়িতার সাথে হুইস্কি।।
"কে ভাই তুই? অকবি, ছন্দ ছাড়া!
জানিস নাকি তুই ভাই, এটা কাদের পাড়া?"
বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী শোনায় রোজ ভবিষ্যতের বাণী,
বর্তমানের গান গেয়ে তুই হোস যে অভিমানী।
"ক'টা লিখেছিস সস্তা কবিতা, যার নেই কোনো লক্ষ্য?" —
এসব প্রশ্ন, কটাক্ষ বিঁধবে যে তোর বক্ষ।।
কবিতা পড়ে কেউ বা নিরাশ, কেউবা বলে "সাবাস!"
গুরু বলে, "খালি হোস না রে তুই এক্কেবারে হতাশ!"
তোর কবিতা আগুন হয়ে জ্বালাক ওদের দর্প,
যারা আছে মেতে খালি করতে নবীনের লেখা খর্ব।
সুপ্ত মনে আঁক রে তুই নব কাব্যের উলকি,
একলা হেঁটেই পথ পেরো — আনবে না কেউ পালকি।।
বাংলা ছাড়া অন্য ভাষা সবই বড়ই তুচ্ছ,
কবিতায় যদি মেলে আন ভাষা, সে কবিতা হবে যে ম্লেচ্ছ!
যাই হোক, তবু অসাম্যের গল্প হোক আমার কবিতা,
আমার কবিতা হোক চারণের গাথা।
হাততালি সব তোমরাই নিও কুড়িয়ে
আমার কবিতা খালি ধুলো নিক মাথা ভরে।
লিখব আমি কবিতা আমার মনের ভাষায়
দেব না আমি কৈফিয়ৎ, তাই থেকো না তার আশায়।
🍂
0 Comments