জ্বলদর্চি

দূরদেশের লোকগল্পতাঁতির স্বর্গযাত্রা /পাকিস্তান (এশিয়া)/চিন্ময় দাশ

দূর দেশের লোকগল্প

তাঁতির স্বর্গযাত্রা 

পাকিস্তান (এশিয়া)

চিন্ময় দাশ 


গাঁয়ের এক মাথায় তাঁতিদের পাড়া। বেশ কয়েক ঘর লোকের বাস সেখানে। কাল রাতে কিছু একটা ঘটে থাকবে। থেকে থেকে কান্নার রোল উঠছে পাড়াটা থেকে। কে জানে, হয়তো কেউ মারা পড়েছে।

সকাল হতে ব্যাপারটা জানা গেল। তাঁতিদের পাড়ার সবচেয়ে বয়স্ক যে লোকটি, সে মারা গেছে। মসজিদের চাতালে জড়ো হয়েছে গাঁয়ের লোকজন। কেউ বলল-- আহা, বড় ভালো মানুষ ছিল গো। কেউ বলল-- হাতের কাজই বা কী ছিল মানুষটার, সেটা বলো? তাঁতে বসলে, কথা বলতো তার হাত। কেউ বলল-- বড্ড ভুগছিল গো। গেছে, ভালোই হয়েছে।

বুড়ো ইমাম সাহেব মসজিদের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে। হঠাৎই মানুষটা হেসে উঠলো। সবাই বলল-- কী হলো, ইমাম সাহেব? হাসলে কেন তুমি? 

ইমাম বলল-- তোদের কথা শুনলে, কার না হাসি পায় বল? 

সবাই একসাথে বলল—কেন, কেন? আমরা কী এমন বললাম যে তোমার হাসি পেয়ে গেল?

এবার উপহাসের হাসি বুড়োর গলায়—আরে, উজবুকের দল! তাঁতি আবার স্বর্গে যায় কখনো না কি? গেছে কোনদিন কি সে? 

--তাঁতি বলে, বেহেস্তে যাবে না, এ কেমন বিধান খোদার? সবাই জানতে চাইল। 

ইমাম বলল-- সব কাজে খোদাতালাকে দোষ দিস কেন? যার যেমন বুদ্ধি, তেমন ফলই তো সে পাবে, না কি?

ইমামের কথা শুনে, লোকগুলো একটু মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগলো। কিছুই মাথায় ঢুকলো না তাদের। একজন বলল-- একটু খোলসা করে বলো না, চাচা। তোমার হেঁয়ালির কথা কিছুই যে বুঝতে পারছি না আমরা।

ইমাম বলল-- বুঝতে পারছিস না, সেজন্য অবশ্য তাদের দোষ দেওয়া যায় না। ব্যাপারটা কী ঘটেছিল সেটা জানলে, তবে না বুঝতে পারবি। শোন তবে। একটা গল্প বলি।

কাজকর্ম সব গেল সাতসকালের। সবাই জমিয়ে বসে পড়ল গল্প শুনতে।

ইমাম সাহেব শুরু করলেন ঃ এক গাঁয়ে থাকত এক তাঁতি। হাতের কাজ খুব ভালো তার, খু-উ-ব ভালো। তার বোনা কাপড়ের প্রশংসা করত সবাই। লোকটা ছিল যেমন সৎ, তেমনি পরিশ্রমী। সুনাম হয়েছিল কাজে, তাতে দুটো পয়সাও জমেছিল লোকটার। 

তাঁতির বউটা ছিল বেশ বুদ্ধিমতী। সে বলল-- পয়সা চিরদিন থাকে না। বরং কিছু জমি কেনো। পয়সাও বাঁধা রইল। দুটো ফসলও আসবে ঘরে। 

বউয়ের কথা কোনদিন ফেলত না সে। জমানো টাকা দিয়ে জমি কিনেছিল লোকটা। যত্ন করে চাষবাসও করত। কিন্তু এমনই দুর্ভাগ্য, প্রতিদিন রাতে তার খেতের ফসল কেউ এসে, সব খেয়ে ঘেঁটে তছনছ করে দিয়ে যেত। সকালবেলা সেসব দেখে, কপাল চাপড়ে হাউ-হাউ করতে বসতো সে।

তাঁতির কিছুই মাথায় আসে না। কী হতে পারে ব্যাপারটা? কে এমন ক্ষতি করতে পারে তার? তার বউ বললো—বুঝলে, নিশ্চয় ধোপাপাড়ার গাধাটার কাজ। বুড়ো হয়ে গেছে। ভার বইতে পারে না আর। তাই মালিক তাড়িয়ে দিয়েছে। হতভাগা আমাদের খেতটাকেই বেছে নিয়েছে পেট ভরাবার জন্য। 

তাঁতি বলল—তাই কি? বুড়ো গাধাটা? 

বউ বলল—দ্যাখো না, দিনের বেলা চুপচাপ মসজিদের সামনে শুয়ে থাকে গোবেচারার মতো। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়। নিশ্চয়ই রাতের বেলা ঐ গাধাটাই যায় আমাদের খেতে। 

সারাটা দিন গজগজ করতে লাগলো বউটা—আমি বলছি তোমাকে। নিশ্চয়ই এটা ওই গাধাটার কাজ। ও ছাড়া আর কারো কাজ নয়।

বউয়ের মন্তব্য সেঁধিয়ে গেছে মাথায়। তাঁতি করল কী, পাড়ার সকলের সাথে আলোচনা করে, দড়ি দিয়ে গাধাটাকে নিমগাছের সাথে বেঁধে রাখল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কিছু লাভ হয়নি। একই অবস্থা খেতের। ফসল সব তছনছ। বেশ বোঝা গেল, এ অন্য কারো কাজ। গাধার নয়। 

এবার সবাই আলোচনা করে, সব গেরস্তবাড়ির গরু ছাগল গাধা সব মসজিদের সামনের মাঠে নিয়ে এসে বেঁধে রাখলো। ভাবল, এতে বোঝা যাবে, রাতের বেলা কে ফসল নষ্ট করছে। কিন্তু তাতেও কিছু লাভ হলো না। গাঁয়ের সব গরু ছাগল গাধা মাঠে আটকা। সকালে দেখা গেল, খেতের ফসল সাবাড়। তাঁতি আর কী করে? কপাল চাপড়াতে লাগলো বসে বসে।

কিন্তু এভাবেই বা কতদিন যেতে পারে? কত মেহনতের ফসল। কত খরচাপাতি হয়। এভাবে সব নষ্ট হয়ে গেলে, কারই বা চাষ করতে ইচ্ছে করে? তাঁতি ঠিক করল, নাহ আর চাষবাস নয়। ফসলের একটা দানাও যদি ঘরে না আসে, চাষ করে লাভটা কী?

দেখেশুনে তার বউ বলল-- হাল ছেড়ে দিয়েই বা কী হবে? কত খরচা করে জমি কিনলাম। এমনি পড়ে থাকবে? 

তাঁতি বলল-- কী করব বল? শুধু শুধু গতর খাটিয়ে কী লাভ? 

বউ বললো-- তার চেয়ে আমি বলি কী, চলো, একদিন রাতের বেলা পাহারা দিই দুজনে। কে ফসল নষ্ট করছে, সেটা তো দেখা দরকার। ধরতে পারলে, তখন ইমাম সাহেবের কাছে যাওয়া যাবে। গরীব বলে, কেউ বিচার করবে না?

বউয়ের বুদ্ধির উপর বরাবর খুব ভরসা। একথা শুনে, তাঁতির বেশ উৎসাহ হল মনে। খুশি হয়ে বলল-- ঠিক বলেছিস, বউ। আমি আজই রাতে পাহারা দিতে যাব।

তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়া সেরে, একটা ঝোপের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে বসে রইল তাঁতি। রাত যখন দু’ প্রহর হলো, তাঁতির চক্ষু স্থির। বিশাল এক হাতি কোথা থেকে এসে ফসল নষ্ট করছে।

কিন্তু কোথা থেকে এলো? কোন দিক দিয়ে এলো? টেরটিও পায়নি সে। এদিকে, হাতির চেহারা দেখে, ভয়ে তার হাত-পা শিথিল। তাড়াতে যাবে, এমন সাহস হলো না। 

চুপিসারে ঘরে ফিরে এসে, বউকে সব কথা জানালো। বউ তাকে তো হাঁদারাম, বোকা, ভীতুর ডিম, আরো কত কি বলে, খুব গালমন্দ করল।  তারপর বলল-- চলো তো, দেখি কেমন সে হাতি, কার হাতি! 

দুজনে যখন আবার খেতে ফিরে এলো, কোথায় কী? কোথাও হাতির চিহ্নটুকুও নাই। অত বড় একটা হাতি যেন উবে গেছে কোথায়! বউ কিন্তু এবার মোটেই বকাবকি করল না। তার মন বলল, কথাটা নিশ্চয়ই মিথ্যা নয়। মুখে বলল-- ঠিক আছে, চলো ঘরে যাই। কাল আবার আসব দুজনে।

পরদিন সন্ধ্যা না হতেই, দুজনে এসে সেই আড়ালে বসে রইল চুপটি করে। দেখতে দেখতে কতক্ষণ গেল। রাত সাঁই-সাঁই করছে। চারদিক শুনশান। তাঁতির বউ কিন্তু সতর্ক। হঠাৎ তার চোখে পড়ল, বিশাল আকারের কালো মতো একটা কিছু সোজা আকাশ থেকে নেমে আসছে। একেবারে নিঃশব্দে এসে, তাদেরই খেতের উপর নেমে পড়ল সেটা। দুজনেই দেখলো, আর কিছুই নয়, আস্ত একটা হাতি! এভাবে আকাশ থেকে হাতি নেমে আসে, কে কবে শুনেছে? আবার, নিজের চোখের সামনে সব ঘটতে দেখছে। বিশ্বাস করবে না, তারই বা উপায় কি?

তাঁতি বলল—চল, চল। তাড়াই বেটাকে। সব খেয়ে নষ্ট করে দেবে না হলে। 

বউ বলল—না, না। দাঁড়াও। ব্যস্ত হয়ো না। আমার কী মনে হয় জানো? এ হোল স্বয়ং খোদার জীব। সেজন্যই সোজা বেহেস্ত থেকে নেমে এলো আকাশ থেকে। একে তাড়িয়ো না গো।

বউয়ের এমন কথা শুনে, তাঁতি তো রেগে কাঁই। বলল—স্বর্গের হোক বা নরকের, আমার কী লাভ তাতে? অতো মেহনতের ফসল আমার, সব খেয়ে গেল।

অতি বড় বুঝদার তার বউ। তাড়াতাড়ি তাতির বুকে হাত চাপা দিয়ে, বলল-- এভাবে গালমন্দ করো না। আল্লাহর বাহন বলে কথা। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। গোল করো না। যা বলছি, শোনো মন দিয়ে।। 

🍂

রাগ করুক, আর যাই করুক, বউয়ের বুদ্ধির উপর তাঁতির বরাবরই খুব ভরসা। সে একটু পুলকিত হয়ে বলল—বল, কী বুদ্ধি শুনি। 

বউ বলল-- খেয়ে দেয়ে পেট ভরলে, হাতি তো আবার বেহেস্তে ফিরে যাবে। আমরাও তার সাথে চলে যাব।

তাঁতি বলল-- হাতি তো বিধাতার বাহন। যেমন এসেছে, তেমনটি ফিরে যাবে। আমরা কী করে যাব সেখানে? আমাদের কি ডানা আছে না কি? 

বউ হেসে বলল-- সে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি সেই বুদ্ধিও ভেবে রেখেছি। খাওয়া দাওয়া সেরে, হাতি যখন ফিরবে, আমরা দুজনে ওর লেজ ধরে ঝুলে পড়বো। সোজা বেহেশতে গিয়ে হাজির হয়ে যাব।

কথাটা বেশ মনে ধরল তাঁতির। বউ তো দারুন কথা বলেছে ! এমনিতে কি আর কোনদিন স্বর্গে যাওয়া হবে? সে সৌভাগ্য কি আর আছে কপালে? সে বলল-- এখন ঘরে ফিরে যাই চল। খালি হাতে কি আর আল্লাহর কাছে যাওয়া যায়? কিছু একটা নিয়ে যেতে হবে তো। 

বউ বলল-- ঠিক বলেছ। সেটাই ভালো। 

ঘরে ফিরে এসে, সুন্দর একটা কাপড় বুনল যত্ন করে। ঘর ভর্তি লোকজন সেই কাপড় দেখে, সবাই অবাক। সবাই তাকে জিজ্ঞেস করতে লাগল-- এমন কাপড় সে কার জন্য বুনেছে? কে তাকে বুনতে বলেছে? এসব হাজারো প্রশ্নে জেরবার হয়ে গেল তাঁতি। বাধ্য হয়ে সব কথা খুলে বলে ফেলল। 

শুনে তো চোখ চকচক করতে লাগল সকলের। তার বুড়ো বাপ বলল-- স্বর্গে তো আমারই যাওয়ার বয়স হয়েছে, বাপ। আমাকে ছেড়ে তুই কী করে যাবি?

তার মাও ছিল সেখানে। সে বলল-- বয়সটা আমারও হয়েছে। তাছাড়া, বুড়ো মানুষটাকে একলা ছাড়ব কী করে? আমাকেও নিয়ে চল, বেটা।

একটা ছেলেও ছিল তাঁতির। সে বলল-- আমি তোমাদের একমাত্র ছেলে। আমাকে ফেলে তোমরা বেড়াতে যাবে। তা কী করে হয়? আমিও যাব তোমাদের সাথে। 

অবস্থা দেখে, তাঁতির বউমা ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। বলল-- ঘর শুদ্ধ সবাই চলে যাচ্ছো। কোলে কচি বাচ্চা নিয়ে, আমি একলা মেয়েমানুষ কী করে ঘরে থাকবো? আমিও যাব তাহলে। 

পরদিন রাত হলে, সবাই এসে ক্ষেতের পাশে লুকিয়ে রইল। যে যার পছন্দ মতো জিনিসপত্র পুটলি বেঁধে সাথে নিয়েছে। রাত গভীর হলে যথারীতি আকাশ থেকে হাতিয়ে নেমে এলো। কারো মনে আনন্দ যেন আর ধরে না। কখন স্বর্গে গিয়ে পৌঁছবে, সেই একটাই ভাবনা সবার মনে। হাতির যেই যাওয়ার সময় হলো, এক এক করে সবাই এসে হাতির লেজ ধরে ঝুলে পড়ল।

প্রথমেই লেজ ধরল তাঁতি নিজে। তার পা ধরে ঝুলে পড়লো তার বাবা। তারপর তার মা। তার পরে তাঁতির বউ, তাদের ছেলে, সব শেষে বাচ্চা কোলে নিয়ে বৌমা। হাতি কোন কিছু গ্রাহ্য করল না। খাওয়া দাওয়া শেষ করে, অবলীলায় আবার উপরে উড়ে চলল। 

নিজেদের জমি ছেড়ে, আকাশে উঠে পড়েছে সবাই। বুড়ো বললো, আহা, বেহেস্ত যাচ্ছি। এমন নসীব কজনের হয়? কী অপূর্ব সুন্দর জায়গা! সে কী খাওয়া -দাওয়া সেখানে! কত সুখ, কত আরাম! কেউ কোনদিন মরে না সেখানে! এমনকি কেউ কোনদিন বুড়ো হয় না শুনেছি। তোর জন্যই আজ কপাল খুললো রে আমাদের।

বাপের কথা শুনে তাঁতিও বেশ পুলকিত। সে বলল-- আচ্ছা আব্বা, আমরা যদি আর না ফিরি? ধরা যাক, সেখানেই রয়ে গেলাম। 

তাঁতির বউ বলল-- সে আর বলতে। এমন সুন্দর জায়গা হলে, আমি বাবু ফিরছি না। তেমন বুঝলে, সত্যি সত্যিই রয়ে যাব চিরদিনের মত। সে তুমি যাই বলো আর তাই বল।

বাকি সকলেরও সেই ইচ্ছা। কেউ আর পৃথিবীতে ফিরতে চায় না। সকলেরই মনে হলো, বেশ ভালো কথা তো। ফিরেই বা কি হবে? স্বর্গসুখ হাতছাড়া করে কী লাভ? 

এসব ভাবতে গিয়ে, হঠাৎ তাঁতি বলল-- কী আহাম্মক আমি। সবাই নিজের নিজের দরকারী জিনিস নিয়ে এলো পুঁলি বেঁধে। তাহলে আমি কেন তাঁতটা নিয়ে এলাম না? সেখানে বসিয়ে বসিয়ে কে খাওয়াবে আমাকে?

মনের আক্ষেপে, হায়-হায় করে দু’হাতে কপাল চাপড়াতে গেলো সে।

স্বর্গ আর তাঁতের ভাবনা ভাবতে ভাবতে, তাঁতির খেয়ালই নাই, সে হাতির লেজ ধরে ঝুলে আছে। না ভেবেই কপাল চাপড়াতে গেছে। আর, হাত ছাড়লে যা হয়। বাড়িশুদ্ধ সব্বাই এতগুলো লোক ধপ-ধপ ধপ-ধপ করে নিচে এসে পড়তে লাগলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেদের খেতের উপরেই আছড়ে পড়লো সবাই।।

তার পর? তার পর আর কী? হাত ছেড়ে দেওয়ার জন্য খুব আফসোস হলো সকলের। তাঁতির বুড়ো মানুষ বাপ বলল— শোন, ব্যাটা। মন খারাপ করিস না। আবার হাতি আসবে। কালকেই আবার যাব আমরা। তবে, তাঁতের কথা আর মনেও আনা চলবে না তোর। তাহলেই আর কপাল চাপড়াবার ভাবনা মনে আসবে না। তাহলে, নিশ্চিন্তে স্বর্গে পৌঁছে যাব সব্বাই।  

সবাই মিলে ঠিক হলো, কাল রাতেই আবার যাওয়া হবে। এবারে কোন কারণেই আর হাত ছাড়বে না তাঁতি। 

কিন্তু পরের দিন সারা রাত জেগেও, হাতির দেখা পাওয়া গেল না। এমনকি, তার পরের দিন, তারও পরের দিন হাতি আসেনি। অনেক অনেক দিন ধরে রাত জেগে অপেক্ষা করেছে সবাই। কিন্তু খোদার জীব হাতি আর কোনদিন আসেনি নীচে। খেতের ফসল আর নষ্ট হয় না বটে, কিন্তু তাদের স্বর্গে যাওয়াটা হয়ে ওঠেনি আর কখনও।

এখন তাঁতি সারা দিন বসে মন দিয়ে তাঁত বোনে। সময় পেলে, খেতে ফসল ফলাতে যায়। সুখেই দিন কাটে তার। শুধু একটাই খেদ, যখন তখন তার বউ সেদিনের ঘটনার কথা তুলে গঞ্জনা দেয় তাকে। 

গল্প শেষ করে, বুড়ো ইমাম সাহেব বললো—তাহলে, এবার বুঝলে তো। এজন্যই কথায় বলে-- তাঁতি কখনো স্বর্গে যায় না। যতদিন বাঁচে, তাঁত বুনে সুখেই দিন কেটে যায় তার।

Post a Comment

0 Comments